ব্যয় কমানো হলে সৌরবিদ্যুৎ উৎপাদনে বিপ্লব হবে

Daily Inqilab সরদার সিরাজ

২৮ মার্চ ২০২৪, ১২:০৭ এএম | আপডেট: ২৮ মার্চ ২০২৪, ১২:০৭ এএম

বায়ুম-লের উঞ্চতা হ্রাস করার জন্য জীবাশ্ম জ্বালানির ব্যবহার হ্রাস করে নবায়নযোগ্য জ্বালানির ব্যবহার বৃদ্ধি করার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে গত কয়েকটি কপ সম্মেলনে।তাই আন্তর্জাতিক আর্থিক সংস্থাগুলো জীবাশ্ম জ্বালানিতে বিনিয়োগ ও ঋণ প্রদান বন্ধ করে দিয়েছে। ফলে নবায়নযোগ্য জ্বালানির ব্যবহার বৃদ্ধি পাচ্ছে সারাবিশ্বেই। কিন্তু এ ক্ষেত্রে বাংলাদেশই ব্যতিক্রম। এখানে নবায়নযোগ্য জ্বালানির ব্যবহার ও অগ্রগতি নগণ্য। ইন্টারন্যাশনাল রিনিউয়েবল এনার্জি এজেন্সির ‘রিনিউয়েবল ক্যাপাসিটি স্ট্যাটিসটিকস-২০২৩ মতে, গত ১০ বছরে (২০১৩-২০২২ সাল) নবায়নযোগ্য বিদ্যুতের সক্ষমতা বৃদ্ধির হার বাংলাদেশে মাত্র ২.৯০%(২০১৩ সালে ছিল ৩২৯ মেগাওয়াট, আর ২০২২ সালে হয়েছে ৭৭৫ মেগাওয়াট)। অথচ, একই সময়ে চীনে ৪৫.৩%, ভারতে ৩৩.৭%, মালয়েশিয়ায় ২৩.৩%, আফগানিস্তানে ৬৪% ও ফিলিপাইনে ২৬.৪% বেড়েছে। এছাড়া, টেকসই ও নবায়নযোগ্য জ্বালানি উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (স্রেডা) গত অক্টোবর’২৩ পর্যন্ত হালনাগাদকৃত তথ্য অনুযায়ী, বাংলাদেশে নবায়নযোগ্য জ্বালানির মোট সক্ষমতা ১,১৯৫ মেগাওয়াট। তন্মধ্যে গ্রিডভিত্তিক সক্ষমতা ৩৭০ মেগাওয়াট ও অফ গ্রিডভিত্তিক বিদ্যুতের সক্ষমতা ৮২৬ মেগাওয়াট। আর বিপিডিবির হিসাব অনুযায়ী, দেশে গ্রিডভিত্তিক সৌর বিদ্যুতের সক্ষমতা ৪৫৯ মেগাওয়াট। ২০১৬ সালে পাওয়ার সিস্টেম মাস্টারপ্ল্যানে মোট বিদ্যুৎ উৎপাদনে নবায়নযোগ্য শক্তির অবদান ২০২১ সালের মধ্যে ১০ শতাংশে (২,৪৭০ মেগাওয়াট) উন্নীত করার টার্গেট করা হয়েছিল। কিন্তু তা পূরণ হয়নি। অথচ গত জানুয়ারি মাসে ইন্টারন্যাশনাল এনার্জি এজেন্সি এক বিবৃতিতে বলেছে, ২০২৩ সালে বিভিন্ন দেশে নবায়নযোগ্য জ্বালানির সক্ষমতা ৫০% বেড়ে মোট সক্ষমতা ৫১০ গিগা ওয়াটে উন্নীত হয়েছে। সোলার পিভিএ তিন-চতুর্থাংশ বেড়েছে। সক্ষমতা বৃদ্ধির এ গতি আগামী ৫ বছর অব্যাহত থাকবে। সংস্থাটির চিফ ফাতিহ বিরোল বলেন, বর্তমান নীতিমালা ও বাজার পরিস্থিতির ভিত্তিতে নবায়নযোগ্য জ্বালানির ব্যবহার ২০৩০ সালের মধ্যে আড়াই গুণ বাড়বে। তারপরও এটা যথেষ্ট নয়। কারণ, কপ-২৮ সম্মেলনে নবায়নযোগ্য জ্বালানির সক্ষমতা তিন গুণ বৃদ্ধি করার টার্গেট করা হয়েছে, যা পূরণ হওয়ার তিনটি কারণ রয়েছে বলে জ্বালানি বিশেষজ্ঞদের অভিমত। প্রথমটি হচ্ছে: বায়ুম-লের উঞ্চতা হ্রাস করা, দ্বিতীয়ত: বর্তমানে বায়ু ও সৌর বিদ্যুতের সরঞ্জামের দাম অপেক্ষাকৃত কম আর জীবাশ্ম জ্বালানি নির্ভর বিদ্যুৎ কেন্দ্রের সরঞ্জামের দাম অনেক বেশি এবং তৃতীয়ত: আন্তর্জাতিক আর্থিক সংস্থাগুলো জীবাশ্ম জ্বালানি খাতে বিনিয়োগ ও ঋণ দেওয়া বন্ধ করে দিয়ে নবায়নযোগ্য জ্বালানি খাতে বিনিয়োগ ও ঋণ দেওয়া শুরু করেছে। তাই নবায়নযোগ্য জ্বালানির নবযাত্রা শুরু হয়েছে বিশ্বব্যাপীই।

বাংলাদেশেও নবায়নযোগ্য জ্বালানির ব্যবহার বাড়তে শুরু করেছে। বিশেষ করে সৌরবিদ্যুৎ। কারণ, এখানে সৌরবিদ্যুৎ উৎপাদন করার মতো পর্যাপ্ত সূর্যালোক রয়েছে। তাই অনেক সাধারণ মানুষ ও ব্যবসায়ী ঘরবাড়ি ও শিল্পকারখানার ছাদে সোলার প্যানেল বসিয়ে বিদ্যুৎ উৎপাদন করে ব্যবহার করছে। যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক ইন্সটিটিউট ফর এনার্জি ইকোনমিকস অ্যান্ড ফিন্যানশিয়াল অ্যানালিসিস গত ১৮ ডিসেম্বর ’২৩ প্রকাশিত এক গবেষণা প্রতিবেদনে বলেছে, ‘বাংলাদেশে ভবন ও শিল্প-কারখানার ছাদ থেকে প্রায় চার হাজার মেগাওয়াট সৌর বিদ্যুৎ উৎপাদন সম্ভব। এর অর্ধেক অর্থাৎ দুই হাজার মেগাওয়াট সৌর বিদ্যুৎ উৎপাদন করা গেলেও বছরে বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের সাশ্রয় হবে এক বিলিয়ন ডলার। গত ১০ অক্টোবর ’২৩ পর্যন্ত নেট মিটারিংয়ের আওতায় ও এর বাইরে ছাদ ভিত্তিক সৌর বিদ্যুতের সক্ষমতা ছিল ১৬০.৬৩ মেগাওয়াট’। ইতোমধ্যেই নবায়নযোগ্য জ্বালানি উৎপাদনের জন্য দেশ-বিদেশের বিনিয়োগ হয়েছে অনেক। সরকারও এ খাতে বিপুল অংকের বিভিন্ন প্রকল্প গ্রহণ করেছে। সেচ পাম্পগুলো সৌরবিদ্যুতে চালানোর উদ্যোগ নিয়েছে। বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ গত ৪ ডিসেম্বর ’২৩ দুবাইয়ে অনুষ্ঠিত বিদ্যুৎ বিভাগ আয়োজিত ‘স্কেলিং আপ সোলার ইরিগেশন ইন বাংলাদেশ’ শীর্ষক আলোচনা সভায় বলেন, ‘বাংলাদেশের নবায়নযোগ্য জ্বালানি পোর্টফলিও সৌর মিনি-গ্রিড, ভাসমান সৌরবিদ্যুৎ, সৌর পানীয় জলের ব্যবস্থা, সোলার রুফটপ ইন্সটলেশন, সোলার এগ্রো পিভি, সৌর সেচ, বায়ু বিদ্যুৎ, জলবিদ্যুৎ প্রভৃতি বৈচিত্র্যময় করেছে। দেশে বর্তমানে ছয় মিলিয়ন সোলার হোম সিস্টেম রয়েছে। তাতে বিদ্যুৎ উৎপাদনের সক্ষমতা ১,২০০ মেগাওয়াট, যা ২০৩০ সালের মধ্যে ৫০ হাজার মেগাওয়াট ছাড়িয়ে যাওয়ার লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে। ২০৩১ সালের মধ্যে দেশে ৪.৫ লাখ সৌর সেচ পাম্প প্রতিস্থাপন করা হবে। এ কাজের জন্য ১.৮ বিলিয়ন ডলার প্রয়োজন’। সর্বোপরি সরকার বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের সৌরবিদ্যুৎ ক্রয়ের জন্য একের পর এক চুক্তি করছে।

বাংলাদেশে জীবাশ্ম বিদ্যুতের ন্যায় (২০২২-২৩ অর্থবছরে বিপিডিবির প্রতি ইউনিট বিদ্যুৎ উৎপাদনে গড় ব্যয় হয়েছে ১১.৩৩ টাকা এবং লোকসান হয়েছে ৪৭ হাজার ৭৮৮ কোটি ১৭ লাখ টাকা) নবায়নযোগ্য বিদ্যুতেরও মূল্য অত্যধিক। চেঞ্জ ইনিশিয়েটিভের ২০২২-২৩ অর্থবছরের হিসাব অনুযায়ী, প্রতি কিলোওয়াট নবায়নযোগ্য বিদ্যুতের গড় মূল্য ভারতে দশমিক শূন্য ৫৩ সেন্ট, পাকিস্তানে দশমিক শূন্য ৩২ সেন্ট, ভিয়েতনামে দশমিক শূন্য ৮৪ সেন্ট আর বাংলাদেশে দশমিক ১৫৫ সেন্ট।তাই বাংলাদেশে সৌরবিদ্যুতের মূল্যও অত্যধিক। ভারতের চেয়ে তিনগুণ বেশি! এ ব্যাপারে গত ১৭ মার্চ প্রকাশিত এক খবরের শিরোনাম হচ্ছে: সৌর বিদ্যুতের ইউনিট-প্রতি ক্রয়মূল্য ভারতে ৩.৫ টাকা, বাংলাদেশে ১০-১১ টাকা। উক্ত খবরে এ ব্যাপারে বিশদ বিবরণ দেওয়া হয়েছে। এ নিবন্ধের স্থান সংকুলানের স্বার্থে তা বর্ণনা করা সম্ভব নয়। যেটুকু না বললেই নয়, সেটা হচ্ছে: বাংলাদেশে সৌরবিদ্যুৎসহ সব নবায়নযোগ্য বিদ্যুতের মূল্য বৈশ্বিক পর্যায়ের চেয়ে অনেক বেশি, যা এ খাতের অগ্রগতির চরম অন্তরায়। তাই দেশের নবায়নযোগ্য বিদ্যুতের মূল্য বৈশ্বিক পর্যায়ের করতে হবে। নতুবা ভুল নীতির কারণে জীবাশ্ম বিদ্যুৎ যেমন দেশের দীর্ঘমেয়াদী গলার ফাঁসে পরিণত হয়েছে, তেমনি হবে নবায়নযোগ্য বিদ্যুতও। তাই সৌরবিদ্যুৎসহ সব নবায়নযোগ্য বিদ্যুতের ব্যয় কমাতে হবে। এটা হলে মূল্যও কমে যাবে স্বাভাবিকভাবেই।

গত ১৬ এপ্রিল খবরে প্রকাশ, সম্প্রতি বিজিএমইএ’র সভাপতি অর্থমন্ত্রীর নিকট প্রেরিত এক চিঠিতে বলেছেন, সোলার পিভি সিস্টেমের সরঞ্জাম আমদানিতে বর্তমানে ২৬-৫৮% পর্যন্ত শুল্ক দিতে হচ্ছে। এসব ক্ষেত্রে শুল্ক কমিয়ে ১% করতে হবে। তাহলে সোলার প্যানেল সিস্টেম স্থাপনের মাধ্যমে পরিবেশ বান্ধব শিল্পকারখানা গড়ে তোলা সম্ভব হবে। অপরদিকে, ইউনাইটেড ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির সেন্টার ফর এনার্জি রিসার্চের পরিচালক অধ্যাপক শাহরিয়ার আহমেদ বলেন, ‘বাংলাদেশে প্রতিযোগিতামূলক বাজার তৈরি করা গেলে এবং জমি ও সঞ্চালন লাইন নির্মাণে সহকারী সহায়তা দেয়া গেলে সৌর বিদ্যুতের দাম আরো কমানো সম্ভব। ভারতের ক্ষেত্রে জমি ও সঞ্চালন অবকাঠামোয় দেশটির সরকারের সহায়তা রয়েছে। তাই সেখানে সৌর বিদ্যুতের উৎপাদন খরচ অনেক কম। যুক্তরাজ্যের কার্ডিফ ইউনিভার্সিটির স্কুল অব ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের দুই গবেষক কুমার বিশ্বজিৎ দেবনাথ ও মঞ্জুর মোরশেদ বাংলাদেশের বিদ্যুৎ খাতে বিগত দশকের মূলধনি ব্যয় নিয়ে এক গবেষণাপত্রে বলেছেন, ‘বাংলাদেশের জ্বালানি তেল, কয়লা, প্রাকৃতিক গ্যাস ও পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলোর কিলোওয়াট প্রতি মূলধনি ব্যয় বৈশ্বিক গড়ের চেয়ে অনেক বেশি। গ্যাস টারবাইন প্রযুক্তিতে চালিত প্রাকৃতিক গ্যাসভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রে কিলোওয়াট প্রতি মূলধনি ব্যয়ের বৈশ্বিক গড় ৫৫১ ডলার, যা বাংলাদেশে সরকারি বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলোতে ১,১৭৭ ডলার ও বেসরকারি বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলোতে ৮১৯ ডলার’। একই অবস্থা নবায়নযোগ্য জ্বালানির ক্ষেত্রেও। তাই নবায়নযোগ্য জ্বালানির মূলধনি ব্যয় কমিয়ে বৈশ্বিক পর্যায়ের করতে হবে। এ ক্ষেত্রে জ্বালানি বিশেষজ্ঞদের অভিমত, দেশে সৌরবিদ্যুৎসহ নবায়নযোগ্য জ্বালানির পরিমাণ দ্রুত বৃদ্ধি করার জন্য বিনা ঝামেলায় ও স্বল্প সুদে চাহিদা মাফিক ব্যাংক ঋণ ও জমির ব্যবস্থা করতে হবে।

দেশে নবায়নযোগ্য জ্বালানির মূলধনি ব্যয় কমিয়ে বৈশ্বিক পর্যায়ের করা হলে মানুষ এদিকে, বিশেষ করে সৌরবিদ্যুতের দিকে ব্যাপকভাবে ঝুঁকে পড়বে। দেশি-বিদেশি বিনিয়োগও ব্যাপক হবে। কারণ, দেশে সৌরবিদ্যুৎ উৎপাদনের অফুরন্ত সুযোগ রয়েছে। যেমন: অসংখ্য ঘরবাড়ি ও শিল্পকলকারখানার ছাদ, সড়ক, পাহাড়, কৃষি জমি, বিল-হাওর ও রেললাইন রয়েছে, যাতে সোলার প্যানেল বসিয়ে সৌরবিদ্যুৎ উৎপাদন করা যাবে। এছাড়া, উদ্যোগ নেওয়া হলে দেশের বিশাল উপকূলকে নবায়নযোগ্য জ্বালানির হাবে পরিণত করা সম্ভব। যেমন: সমগ্র উপকূলে একটু পরপর অসংখ্য ত্রিকেন্দ্রিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র তথা শক্ত পিলার স্থাপন করে তার উপর নির্মিত কেন্দ্রের নিচে পানির ঢেউ থেকে, মাঝখানে টারবাইন বসিয়ে বায়ু থেকে এবং উপরে সোলার প্যানেল বসিয়ে সৌরবিদ্যুৎ উৎপাদন করা যাবে। এতে সংশ্লিষ্ট এলাকায় মৎস্য আহরণ ও নৌ চলাচলের কোনো ক্ষতি হবে না। এছাড়া, নৌযানেও সোলার প্যানেল বসিয়ে সৌরবিদ্যুৎ উৎপাদন করে তা দিয়ে সংশ্লিষ্ট যান চালানো যাবে। সর্বোপরি সেচ যন্ত্র থেকে সেচের সময় ছাড়াও বাকি সময় বিদ্যুৎ তৈরি করে ব্যবহার করা যাবে। এসব করা হলে অতিরিক্ত জমি ছাড়াই মোট বিপুল পরিমাণে সৌরবিদ্যুৎ উৎপাদন করা সম্ভব। সর্বোপরি সাগর, নদী, হাওরে ভাসমান সোলার প্যানেল স্থাপন করে বিপুল পরিমাণে সৌরবিদ্যুৎ উৎপাদন করা যায়। পর্তুগালসহ অনেক দেশে এটি করা হচ্ছে। এসব দেশে বেসরকারিভাবে না হলে সরকারিভাবেই করতে হবে। উৎপাদিত অতিরিক্ত সৌরবিদ্যুৎ সংরক্ষণ এবং পরে বিতরণ করার পদ্ধতি আবিষ্কার হয়েছে দেশে। সোলশেয়ার নামে একটি স্টাটঅ্যাপ দিয়ে মাইক্রোগ্রিডের মাধ্যমে বিদ্যুৎহীন স্থানে সৌরবিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়া হচ্ছে দেশে। অর্গানিক সোলার সেল প্রচলিত সোলার প্যানেলের তুলনায় ১০ গুণ হালকা। বসানো সম্ভব যেকোন জায়গায়। জার্মানির একটি কোম্পানি এমন সোলার ফয়েল উৎপাদন করছে। বিশ্বের নামীদামি বহু প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান তাদের গ্রাহক।

ফের বলা বাহুল্য, দেশে বিপুল পরিমাণে সৌরবিদ্যুৎ উৎপাদন করার সুযোগ রয়েছে। এখন প্রয়োজন সরকারি সহায়তা। তথা কয়েক বছরের জন্য সোলার পিভি সিস্টেমের সরঞ্জাম আমদানি শুল্কমুক্ত করাসহ বর্ণিত সুপারিশসমূহ বাস্তবায়ন করতে হবে যথাশিগগির। জীবাশ্ম বিদ্যুতে যে ভর্তুকি দেওয়া হচ্ছে, তার সিকিভাগ ভর্তুকি সৌরবিদ্যুতে দেওয়া হলে এ খাতে ব্যয় অনেক কমে যাবে। তাতে দেশে সৌরবিদ্যুতের বিপ্লব শুরু হবে এবং দেশের ব্যাপক কল্যাণ হবে। তাই সরকারি সব ভবন ও প্রতিষ্ঠানের ছাদে সৌরবিদ্যুৎ উৎপাদনের ব্যবস্থা করতে হবে অবিলম্বে। সরকারি জীবাশ্ম বিদ্যুতের যে প্লান্টের মেয়াদ শেষ/বন্ধ হবে সেখানে দ্রুত সৌরবিদ্যুৎ উৎপাদনের ব্যবস্থা করতে হবে। তাহলে বেসরকারি পর্যায়েও এসব শুরু হয়ে যাবে। স্মরণীয় যে, বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ গত ২ মে ’২৩ বলেছেন, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে ২০৪১ সালের মধ্যে ১৭০ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ প্রয়োজন। উপরন্তু সিপিডি গত ২২ জুন বলেছে, বিদ্যুৎ কেন্দ্র পরিচালনার জন্য প্রাথমিক জ্বালানি আমদানি করতে বাংলাদেশকে বছরে ১০ বিলিয়ন ডলার ব্যয় করতে হবে। অপরদিকে, ন্যাশনাল ব্যুরো অব এশিয়ান রিসার্চ মার্চ ’২৩ বলেছে, বাংলাদেশ দ্রুত ২,০০০ মেগাওয়াট সৌর বিদ্যুৎ ব্যবহার করতে পারলে বছরে এক বিলিয়ন ডলারের বেশি সাশ্রয় করতে পারবে। তাই দেশে সৌরবিদ্যুতের ব্যবহার ব্যাপক বৃদ্ধি করা আবশ্যক। ব্যয় কমানো হলেই তা সম্ভবপর হয়ে যাবে নিঃসন্দেহে।

লেখক: সাংবাদিক ও কলামিস্ট।
[email protected]


বিভাগ : সম্পাদকীয়


মন্তব্য করুন

HTML Comment Box is loading comments...

আরও পড়ুন

পুড়ছে শেরপুর গারো পাহাড়! সামাল দিতে বন বিভাগ জনবল সংকটে নিরুপায়!

পুড়ছে শেরপুর গারো পাহাড়! সামাল দিতে বন বিভাগ জনবল সংকটে নিরুপায়!

যানজটে ছবি কেন্দ্রে পৌঁছাতে শিক্ষার্থীদের ভোগান্তি

যানজটে ছবি কেন্দ্রে পৌঁছাতে শিক্ষার্থীদের ভোগান্তি

কোটি টাকার মাদক আইসসহ সংগীত শিল্পী রিবেল গ্রেপ্তার

কোটি টাকার মাদক আইসসহ সংগীত শিল্পী রিবেল গ্রেপ্তার

মার্কিন নেতৃত্বের প্রতি অসন্তোষ বাড়ছে বিশ্বজুড়ে

মার্কিন নেতৃত্বের প্রতি অসন্তোষ বাড়ছে বিশ্বজুড়ে

কটিয়াদীতে বধ্যভূমির স্মৃতিস্তম্ভে নাম নেই অনেক নিহতের

কটিয়াদীতে বধ্যভূমির স্মৃতিস্তম্ভে নাম নেই অনেক নিহতের

টেকনাফের বাহারছড়ায় পুলিশের অভিযানে দুর্ধর্ষ ২ অপহরণকারী চক্রের সদস্য গ্রেফতার

টেকনাফের বাহারছড়ায় পুলিশের অভিযানে দুর্ধর্ষ ২ অপহরণকারী চক্রের সদস্য গ্রেফতার

বৃষ্টি নিয়ে যে সুসংবাদ দিলো আবহাওয়া অফিস

বৃষ্টি নিয়ে যে সুসংবাদ দিলো আবহাওয়া অফিস

কুয়াকাটায় সমুদ্রের তলদেশে কাটা পড়েছে ফাইবার ক্যাবল, বন্ধ দেশের দ্বিতীয় কুয়াকাটা সাবমেরিন ক্যাবল, দেশব্যাপী ইন্টারনেটের ধীরগতি

কুয়াকাটায় সমুদ্রের তলদেশে কাটা পড়েছে ফাইবার ক্যাবল, বন্ধ দেশের দ্বিতীয় কুয়াকাটা সাবমেরিন ক্যাবল, দেশব্যাপী ইন্টারনেটের ধীরগতি

এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের শান্তি ও স্থিতিশীলতা নষ্ট করছে ‘অকাস’

এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের শান্তি ও স্থিতিশীলতা নষ্ট করছে ‘অকাস’

দুমকিতে মাহফিল কমিটি নিয়ে সংঘর্ষ আহত ১৫

দুমকিতে মাহফিল কমিটি নিয়ে সংঘর্ষ আহত ১৫

বাংলাদেশকে গ্যাস চেম্বার বানিয়েছে সরকার: রিজভী

বাংলাদেশকে গ্যাস চেম্বার বানিয়েছে সরকার: রিজভী

মহাকাশ স্টেশনে প্রবেশ করেছেন শেনচৌ-১৮ নভোচারীরা

মহাকাশ স্টেশনে প্রবেশ করেছেন শেনচৌ-১৮ নভোচারীরা

যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পর্কের ক্ষেত্রে তিনটি নীতিতে অটল থাকবে চীন

যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পর্কের ক্ষেত্রে তিনটি নীতিতে অটল থাকবে চীন

চুয়াডাঙ্গায় অব্যাহত অতি তীব্র তাপপ্রবাহে পুড়ছে ফসলী জমির ফসল;ক্ষতির তথ্য নেই কৃষি বিভাগে

চুয়াডাঙ্গায় অব্যাহত অতি তীব্র তাপপ্রবাহে পুড়ছে ফসলী জমির ফসল;ক্ষতির তথ্য নেই কৃষি বিভাগে

ইসরায়েলবিরোধী বিক্ষোভে নারী অধ্যাপককে মাটিতে ফেলে যেভাবে হাতকড়া পড়াল মার্কিন পুলিশ

ইসরায়েলবিরোধী বিক্ষোভে নারী অধ্যাপককে মাটিতে ফেলে যেভাবে হাতকড়া পড়াল মার্কিন পুলিশ

ইসরায়েলবিরোধী বিক্ষোভ দমনে মারমুখী যুক্তরাষ্ট্রের পুলিশ

ইসরায়েলবিরোধী বিক্ষোভ দমনে মারমুখী যুক্তরাষ্ট্রের পুলিশ

অবৈধ প্রভাব ও হস্তক্ষেপের অভিযোগ এনে কক্সবাজার সদর উপজেলা নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ালেন বর্তমান উপজেলা চেয়ারম্যান জুয়েল

অবৈধ প্রভাব ও হস্তক্ষেপের অভিযোগ এনে কক্সবাজার সদর উপজেলা নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ালেন বর্তমান উপজেলা চেয়ারম্যান জুয়েল

আর্জেন্টিনা, বলিভিয়া ও পেরুর পররাষ্ট্রমন্ত্রী চীন সফর করবেন

আর্জেন্টিনা, বলিভিয়া ও পেরুর পররাষ্ট্রমন্ত্রী চীন সফর করবেন

নিখোঁজের ১ বছর পর বাহরাইন থেকে মিলল থাই মডেলের মৃতদেহ

নিখোঁজের ১ বছর পর বাহরাইন থেকে মিলল থাই মডেলের মৃতদেহ

লোহিতসাগরে ভারতগামী তেলবাহী ট্যাংকারে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা হুতিদের

লোহিতসাগরে ভারতগামী তেলবাহী ট্যাংকারে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা হুতিদের