গাজায় অব্যাহত ইসরাইলি গণহত্যা ওআইসির নেতারা চেয়ে চেয়ে দেখছেন
২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১২:০৬ এএম | আপডেট: ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১২:০৬ এএম
হিটলার কত ইহুদি হত্যা করেছিলেন, সে সম্পর্কে মতভেদ আছে। কোনো কোনো তথ্য অনুযায়ী, তিনি কুড়ি হাজার ইহুদি হত্যা করেছিলেন এবং সমসংখ্যক ইহুদিকে গ্রেফতার করেছিলেন। হিটলারের নাৎসি বাহিনী ইহুদিদের বাড়ি-ঘর, দোকান-পাট, এবং ইমারতসমূহে আগুন ধরিয়ে দিয়েছিল।
হিটলার কেন ইহুদিদের হত্যা করেছিলেন, হিটলারের ‘আত্মজীবনী’ পাঠ করলে তা সহজে অনুধাবন করা যায়। ইহুদিদের নানা ষড়যন্ত্র, চক্রান্ত, প্রতারণা, বিশ^াসঘাতকতা এবং দুষ্টবুদ্ধি, মিথ্যাচারের বিবরণ বিক্ষিপ্তভাবে এ আত্মজীবনীতে আছে। বলতে হয়, হিটলার ইহুদি হত্যা করে বিষধর সাপের লেজে প্রাণ রেখেছিলেন। দীর্ঘ প্রায় পৌনে এক শতাব্দি (অর্থৎ ১ মে, ১৯৪৫ সালে হিটলার আত্মহত্যা করেন) পরে গত বছর ৭ অক্টোবরে গাজায় হামাস ইসরাইল যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে এযাবৎ ইসরাইলের গণহত্যা ও ধ্বংসলীলার বিবরণ প্রকাশিত হয়ে আসছে, যার উল্লেখ এখানে নিষ্প্রয়োজন। তবে এতটুকু বলে রাখা দারকার যে, হিটলার সাপ মেরেছিলেন কিন্তু সাপের লেজে প্রাণ অবশিষ্ট ছিল। মনে হয়, এতকাল পর সে বিষধর সাপ অজগর রূপ ধারণ করেছে নেতানিয়াহু রূপে এবং সে ও তার বাহিনী সম্ভবত হিটলার কর্তৃক ইহুদি নিধনের প্রতিশোধ নিতে গাজাবাসীদের গণহত্যায় মেতে উঠেছে, যদিও ফিলিস্তিনিরা হিটলারের মতাদর্শের অনুসারী নয়।
হিটলার দ্বিতীয় বিশ^ যুদ্ধের জন্য দায়ী, তিনি তার অসিয়তে এ অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। পাকিস্তানের মুলতান রোড লাহোর থেকে প্রকাশিত ‘হিটলার’-এর লেখক শাহেদ মোখতার হিটলারের এই উক্তি উদ্ধৃত করেছেন, ‘এটা সম্পূর্ণ ভুল যে, ১৯৩৯ সালে আমি যুদ্ধের প্রত্যাশী ছিলাম বরং এ যুদ্ধ শুধু এবং শুধু সে আন্তর্জাতিক পরিচালকদের ইচ্ছায়ই সংঘটিত হয়। যারা হয়ত ইহুদি বংশদ্ভূত ছিল অথবা ইহুদিদের স্বার্থের জন্য কাজ করছিল।’ একই লেখক অন্যত্র মন্তব্য করেন, ‘হিটলারকে সাধারণত অহংকারী, জালেম এবং ফেরাউন শ্রেণীর ব্যক্তি মনে করা হয়। একথা যথাস্থানে সঠিক কিন্তু এটিও একটি বিশ^স্ত কথা যে, তারই কারণে জগতে ইহুদিবাদের শক্তি দুর্বল হয়ে পড়ে এবং পাকিস্তান, হিন্দুস্থান, বার্মা এবং এ ধরনের আরো অন্যান্য ক্ষুদ্র দেশগুলির বৃহৎ রাষ্ট্রবর্গের প্রভাব হতে বের হয়ে আসার সুযোগ ঘটে। তারই কারণে বৃটেনের মতো দেশ, যার সূর্য কখনো নিমজ্জিত হতো না- ডুবে যায়।’
এবার দেখা যাক, ফিলিস্তিনে ইহুদিরা মুসলমানদের প্রথম কেবলা মসজিদে আকসায় অগ্নি সংযোগ করে সারা দুনিয়ার মুসলমানদের কীভাবে বিক্ষুব্ধ করেছিল। ১৯৬৯ সালের ২ আগস্ট। ইহুদিরা মসজিদে আকসায় অগ্নিসংযোগ করে এবং এর ফলে মসজিদের যে মিম্বরটি ধ্বংস হয়, তা ছিল সুলতান নূরুদ্দীন মাহমুদ জঙ্গী (৫৬০ হি., ১১৬৪ খ্রি.) নির্মিত। তিনি এর নির্মাণ কাজ সমাপ্ত করতে পারেননি। তার পুত্র সুলতান ইসমাইল (৫৭০ হি., ১১৭৪ খ্রি.) সমাপ্ত করেন। সুলতান সালাহউদ্দিন আইউবী মসজিদে আকসার মিম্বর ও মেহরাব ঐ অবস্থায় রাখেন এবং ইহুদিদের হাতে সেই অবস্থায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়। সুলতান নূরুদ্দীন জঙ্গী নির্মিত মসজিদে আকসা এর মিম্বরের বিভিন্ন দিকে বেশ কিছু প্রস্তরলিপি ছিল। সুলতানের পক্ষ থেকে একটি লিপিতে ৫৬৪ হিজরীর উল্লেখ ছিল। খতীবের ডান দিকে মেহরাবে সূরা নূরের ৩৬ ও ৩৭ আয়াত এবং বাম দিকে মিম্বরের পশ্চিম দিকে সূরা তওবার ১৮নং আয়াত মিম্বরের বামে সূরা নহলের ৯০-৯২ আয়াত লেখা ছিল। এতদ্ব্যতীত মেহরাব ও মিম্বর নির্মাণকারীদের নাম-তালিকা এবং নির্মাণের হিজরী সনও লেখা ছিল। কিন্তু দুর্ভাগ্য, ইহুদিরা এই ঐতিহ্যমন্ডিত পবিত্রতম মসজিদে অগ্নি সংযোগের মাধ্যমে সুলতান নূরুদ্দীনের স্মৃতি বিজড়িত মেহরাব মিম্বর ধ্বংস করে ফেলে। এতো ছিল আগেকার ইতিহাস। বর্তমানে ফিলিস্তিনে প্রতিদিনই, প্রতিমুহূর্তই কালদিবসের সৃষ্টি হচ্ছে। ধিক্কার খুনি নেতানিয়াহুর প্রতি! ধিক্কার তার তস্কর বাহিনীর প্রতি, যারা অহরহ ফিলিস্তিনের গাজায় গণহত্যা ও মানবতা ধ্বংস করে চলেছে।
প্রসঙ্গক্রমে ফিলিস্তিনের অবিসংবাদিত নেতা মরহুম ইয়াসির আরাফাতের কথা স্মরণ করতে হয়। এ সুযোগ্য সন্তান জাতিসংঘের অধিবেশনে দাঁড়িয়ে বর্জ কণ্ঠে ঘোষণা করেছিলেন, ‘আমি আজ দৃপ্তকণ্ঠে ঘোষণা করতে চাই যে, মানবীয় ভ্রাতৃত্বের এই অতুলনীয় নমুনাকে (মসজিদুল আকসাকে) পুনরুজ্জীবিত করার জন্য আমরা তা ফিরিয়ে আনবই। ফিলিস্তিনকে কখনই জাতিসংঘের হাতে তুলে দেওয়া হবে না।’ ১৯৭৪ সালের ১২ নভেম্বর জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের মঞ্চে দাঁড়িয়ে এই গুরুত্বপূর্ণ ঘোষণা করার সাথে সাথে সেদিন তিনি বিশ্ববাসীকে হুঁশিয়ার করে দিয়ে বলেছিলেন, ‘আমি এক হাতে শান্তির পাত্র, অন্য হাতে বিপ্লবের বন্দুক নিয়ে হাজির হয়েছি। এখন এটা আপনাদের দায়িত্ব যেন আপনারা আমার হাত থেকে এই শান্তির পাত্র পতিত হতে না দেন। আল্লাহ, তুমি মুসলমানদের প্রথম কেবলা ও পাঁচ হাজার আম্বিয়ায়ে কেরামের কবর অধ্যুষিত এবং মেরাজের স্মৃতি বিজড়িত এই মহা পবিত্র মসজিদে আকসাকে তার পূর্ব মর্যাদায় সমুন্নত কর।’
বাইবেল ও কোরআনে বর্তমান ফিলিস্তিনকে ‘কেনান’ বলে চিহ্নিত করা হয়েছে। পরবর্তীকালে ক্রিট ও এপি সাগরের দ্বীপপুঞ্জ হতে আগত ফিলিস্তিনিদের নামানুসারে এই অঞ্চল ফিলিস্তিন নামে পরিচিত হয়। খ্রিস্টানদের আগমনের আগেই এরা এই এলাকায় বসতি স্থাপন করেছিল। ফিলিস্তিনিরা মূলত আগমনকারী সম্প্রদায়ের লোক, তবে তাদের অধিকাংশই আরবীয় বংশোদ্ভূত। অতঃপর খ্রিষ্টীয় সপ্তম শতাব্দীতে ইসলামের অভ্যুদয়ের সঙ্গে সঙ্গেই এরা মুসলমান হয়ে যায়। সেই হতেই এই অঞ্চল মুসলিম খেলাফতভুক্ত হয়। মাঝখানে ক্রুসেড যুদ্ধের আমলে ১০৯৬ সাল হতে ১১৮৭ সাল পর্যন্ত প্রায় ৯১ বছর ফিলিস্তিন ক্রুডেসীয় খ্রিস্টানদের দখলে ছিল। পরে একই সালে ক্রুসেড বিজয়ী বীর গাজী সালাহউদ্দীন আইয়ুবীর নেতৃত্বে অন্যান্য মুসলিম এলাকার সাথে ফিলিস্তিনও খ্রিস্টানদের কবল মুক্ত হয়। সেই থেকেই ফিলিস্তিন একটি স্বতন্ত্র মুসলিম রাজ্য হিসাবেই চিহ্নিত হয়ে আসছিল। তথ্যনুযায়ী তখন এ রাজ্যের আয়তন ছিল ১০ হাজার ১৬২ বর্গমাইল।
অতঃপর ১৮৮১ সালে যখন পাশ্চাত্য বিভিন্ন দেশ হতে প্রথম ইহুদি এদেশে আসতে শুারু করে, তখন ফিলিস্তিনের জনসংখ্যা ছিল মোট ৫ লক্ষ। কিছু খ্রিস্টান ও ২০ হাজারের মতো আরবীয় ইহুদি ছাড়া বাদ বাকী সবাই ছিল মুসলমান। এরপর ১৮৮২ হতে ১৯১৭ পর্যন্ত ৩৫ বছরে আন্তর্জাতিক ইহুদিচক্র বিভিন্ন পাশ্চাত্য দেশ হতে ৫০ হাজার ইহুদিকে এনে এখানে বসিয়ে দেয়। এতদিন যাবৎ তারা উদ্বাস্তু হিসাবেই ছিল কিন্তু ইহুদিদের মুরব্বী বৃটেন ১৯১৭ সালের ২ নভেম্বর কুখ্যাত ব্যালফোর ঘোষণার মাধ্যমে সমস্ত ন্যায়নীতিকে উপেক্ষা করে আরবদের সম্মতি ছাড়াই ফিলিস্তিনে ইহুদিদের জন্য একটি স্থায়ী জাতীয় আবাসভূমি প্রতিষ্ঠার অনুমতি দিয়ে তার পূর্বচুক্তি লংঘন করে। ইতোপূর্বে প্রথম মহাযুদ্ধের সময় (১৯১৫ সালে) স্বাক্ষরিত ‘শরীফ হুসেন ম্যাক মোহন করেসপন্ডেস’ নামীয় আন্তর্জাতিক চুক্তিনামায় হোমসের পশ্চিমে অবস্থিত কোনো কোনো জায়গা ছাড়া (যার অর্থ বর্তমান লেবানন দাঁড়ায়) বাকী সমস্ত আরবভূমিতে আরবদের স্বাধীন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়। অথচ মাত্র দুই বছর পরেই বৃটেন এই চুক্তি লংঘন করে সম্পূর্ণ অবৈধভাবে ইহুদিদের ফিলিস্তিনে আইনগত নাগরিক হিসাবে বসবাসের অনুমতি দেয়। শুধু তাই নয়, ১৯২০ সালে বৃটেন জাতিসংঘের তরফ থেকে ফিলিস্তিনের ‘অছি’ নিযুক্ত হয়ে এসে নিজেই পরিকল্পিত ইহুদি রাষ্ট্র গঠন ও তার প্রাথমিক প্রশাসনিক প্রশিক্ষণের ভার নেয়।
অতঃপর বৃটেন বহিরাগত ইহুদিদের জন্য ফিলিস্তিনের দ্বার উন্মুক্ত করে দেয়। অপমানিত ও বিক্ষুব্ধ ফিলিস্তিনি মুসলমানেরা লীগ অব নেশনসের কাছে এর প্রতিকার প্রার্থনা করলে সবকিছু অরণ্যরোদনে পর্যবসিত হয়ে যায়। ফলে তারা বিক্ষোভ ও ধর্মঘটের আশ্রয় নেয়। কিন্তু বৃটিশ বাহিনীর রক্ত পিপাসু সৈন্যরা তাদেরকে নিষ্ঠুরভাবে দমন করে। তবু তাদের কণ্ঠ একেবারে স্তব্ধ করা যায়নি। তারা বিদ্রোহ করে পর পর ১৯২০, ১৯২৯ ও ১৯৩৬ সালে। দেখা গেল আবাল বৃদ্ধ-যুবা মিলে প্রায় ৮ লক্ষ মুসলমানকে দমন করতে বৃটেন দেশীয় ও বহিরাগতসহ প্রায় ৩ লাখ ইহুদিকে অস্ত্র যোগানো ছাড়াও নিজের সেনাবাহিনীর ১ লাখ শিক্ষিত সৈন্যকে ফিলিস্তিনে মোতায়েন করে। এভাবেই গড়ে প্রতি ২ জন নিরস্ত্র মুসলমানের জন্য একজন করে সশস্ত্র সৈনিক নিয়োগ করে এবং সাথে সাথে জরুরি আইনের খড়গ চালিয়ে ফিলিস্তিনকে বৃটেন কার্যত একটা বন্দি শিবিরে পরিণত করে।
স্বাধীনতাপ্রিয় ফিলিস্তিনি জাতিকে কোনক্রমেই দমিয়ে রাখা সম্ভব নয় মনে করেই অবশেষে বৃটেন ব্যাপারটি জাতিসংঘে পেশ করে। পূর্ব পরিকল্পনা মোতাবেক বৃহৎ শক্তির ক্রীড়নক তথাকথিত জাতিসংঘ প্রধানত পশ্চিমা শক্তির চাপ ও প্ররোচনায় বিভ্রান্ত হয়ে ১৯৪৭ সালের ২৯ নভেম্বর সাধারণ পরিষদে ফিলিস্তিনের বিভক্তির সুপারিশ সম্বলিত প্রস্তাব পাস করে। উক্ত প্রস্তাবে ফিলিস্তিনকে দ্বিখ-িত করে এর এক অংশে একটি স্বাধীন ইহুদি রাষ্ট্র এবং অন্য অংশে একটি আরব রাষ্ট্র এবং পবিত্র নগরী জেরুজালেমকে একটি আন্তর্জাতিক অঞ্চল গঠনের কথা বলা হয়। ১০, ১৬২ বর্গমাইল এলাকার এই ভূখ-ের শতকরা ৫৪% দেওয়া হলো সংখ্যালঘু ইহুদিদের ও জেরুজালেমের বাদ বাকী অংশটুকু দেওয়া হল সংখ্যাগুরু মুসলমানদেরকে (উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে মুসলমানদেরকে সংখ্যলঘুতে পরিণত করে)। এর আগে ফিলিস্তিনে মুসলমানদের সংখ্যা ছিল ১০ লাখ ও ইহুদিদের সংখ্যা ছিল দেশীয় আরব ২ লাখ ও বিদেশি অনারব ৪ লাখ। কিন্তু বৃটিশ সাহায্যপুষ্ট ইহুদিরা ১০ লাখ আরব ফিলিস্তিনিকে তাদের পৈত্রিক ভিটেমাটি হতে উৎখাত করে তাদের যথাসর্বস্ব লুণ্ঠন করে নেয় এবং মোট ৫২৪টি জনপদ দখল করে তন্মধ্যে ৩৮৫টি গ্রাম ও শহর সম্পূর্ণভাবে নিশ্চিহ্ন করে দেয়। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বৃটিশ বাহিনী সুপরিকল্পিতভাবে এসব ধ্বংসযজ্ঞে সহায়তা করে ভীতসন্ত্রস্ত নিরস্ত্র আরবদেরকে আত্মসমর্পণের নির্দেশ দেয়। এমনকি পার্শ্ববর্তী আরব রাষ্ট্রসমূহে আশ্রয় নেওয়ার জন্য তাদের ট্রাকে বোঝাই করে সীমান্তে পৌঁছে দিয়ে আসা হয়। ১৯৪৮ সালের মার্চ হতে ১৪ মে পর্যন্ত আড়াই মাস যাবৎ এই ধ্বংসযজ্ঞ চালিয়ে ইহুদিদের জন্য ময়দান খালি করে বৃটেন এবার নিজে থেকেই ফিলিস্তিনের অছিগিরী প্রত্যাহার করে নেয়। অবশ্য ইতোমধ্যে ইহুদিরা সমস্ত ফিলিস্তিনের ৮১ শতাংশ ভূমি দখল সম্পন্ন করে নিয়েছিল। অতঃপর আন্তর্জাতিক ইহুদিচক্র ফিলিস্তিনকে স্বাধীন ইসরাইল রাষ্ট্ররূপে ঘোষণা করে এবং পূর্ব পরিকল্পনা মোতাবেক এই ঘোষণা প্রকাশের মাত্র কয়েক মিনিটের মধ্যেই আমেরিকা একে স্বীকৃতি প্রদান করে। অতঃপর সোভিয়েট ইউনিয়ন ও বৃটেনসহ কিছু রাষ্ট্র ইসরাইলকে বৈধ রাষ্ট্ররূপে স্বীকার করে নেয় এবং ১৯৪৯ সালে তাদের উদ্ধৃত প্রভাব খাটিয়ে এই তথাকথিত ইসরাইল রাষ্ট্রকে জাতিসংঘের সদস্য করে নেয়। ফিলিস্তিনি আরবদের ভাগ্যবিড়ম্বনার করুণ পরিণতির সূত্রপাত এখান থেকেই। কথায় বলে, উড়ে এল চিল জুড়ে নিল বিল।
১৫ মে, ১৯৪৮ সাল। এখন থেকে ৭৬ বছর পূর্বে মধ্যপ্রাচ্যের বুকে আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে ইসরাইল রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠিত করা হয়। তাই মধ্যপ্রাচ্যের ইতিহাসে এইদিন কালো দিবস হিসেবে পরিচিত হয়ে আসছে। এ দীর্ঘ কাল ধরে সাম্রাজ্যবাদী তথাকথিত ইসরাইল সরকার তার আগ্রাসন ও সম্প্রসারণবাদী নীতির বাস্তবায়নের মাধ্যমে তার প্রভূ বৃহৎ শক্তিবর্গের সাহায্য-সহযোগিতায় মধ্যপ্রাচ্যে অব্যাহতভাবে সন্ত্রাস ও উৎপীড়ন চালিয়ে আসছে তার সর্বশেষ পরিণতি গাজা-ফিলিস্তিনে নেতানিয়াহুর গণহত্যা ও ধ্বংসলিলা। উল্লেখ্য, কেবল ১৯৬৭ সালের জুন মাসের যুদ্ধেই ইসরাইল কয়েকটি আরবদেশের ২৬ হাজার বর্গমাইল এলাকা দখল করে নিয়েছিল। আরবদের পক্ষে এগুলির খুব নগণ্য পরিমাণ অংশই পুনরুদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে। আরো উল্লেখ্য, ১৯৬৯ সালে মরক্কোর ঐতিহাসিক ফেজ নগরীতে অনুষ্ঠিত মুসলিম জাহানের পররাষ্ট্র মন্ত্রীদের দশম ইসলামী সম্মেলনে একটি গুরুত্বপূর্ণ ঘোষণা করা হয়েছিল। এই ঘোষণায় জেরুজালেমকে ফিলিস্তিনের রাজধানী হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়েছিল। এখন ফিলিস্তিন ও মসজিদে আকসার কী অবস্থা? ওই বছরই ইহুদি কর্তৃক মসজিদে আকসায় অগ্নিসংযোগের ন্যক্কারজনক ঘটনাকে কেন্দ্র করে ইসলামি সম্মেলন সংস্থা (ওআইসি) গঠিত হয়েছিল। তার কী অবস্থা? ওআইসি’র রাষ্ট্রনায়করা গাজায় নেতানিয়াহুর গণহত্যা ও ধ্বংস বিনা বাক্যে অবলোকন করছেন। এর চেয়ে মর্মান্তিক ও বেদনাদায়ক আর কী হতে পারে!
বিভাগ : সম্পাদকীয়
মন্তব্য করুন
আরও পড়ুন
প্রশাসন ক্যাডার নিয়ে ষড়যন্ত্র চলছে
যুক্তরাজ্যে ট্রাম্পের বিশেষ দূত হিসেবে মার্ক বার্নেট নিযুক্ত
ফাইনালে ভারতের কাছে বাংলাদেশের হার
ফ্রেন্ডলি ফায়ার দুর্ঘটনায় লোহিত সাগরে মার্কিন যুদ্ধবিমান ধ্বংস
ইরানে যাত্রীবাহী বাস খাদে পড়ে নিহত ১০
বর্তমানে বিশ্বের সবচেয়ে ধনী নারী কে, জানেন?
বাংলাদেশি রোগী পেতে সীমান্ত পর্যন্ত মেট্রো চালু করবে ভারত
হাত ফসকে আইফোন পড়ে গেল মন্দিরের দানবাক্সে, ফেরত দিতে অস্বীকৃতি
কুয়াশায় ঢাকা-মাওয়া এক্সপ্রেসওয়েতে একাধিক দুর্ঘটনা: নিহত ১, আহত ১৫
ঢাকার বায়ুমানে উন্নতির কোনো লক্ষণ নেই, বিপজ্জনকের কাছাকাছি
উগ্রবাদী সন্ত্রাসী 'সাদ' পন্থীদের কর্মকান্ডের বিরুদ্ধে সাতক্ষীরায় মানববন্ধন
বাংলাদেশ সীমান্তে অত্যাধুনিক ড্রোন মোতায়েন ভারতের
নরসিংদীতে দুর্বৃত্তের গুলিতে ছাত্রদলকর্মী নিহত
সিনেটে প্রার্থী হতে সরে দাঁড়ালেন লারা ট্রাম্প
আমাদেরকে আর স্বৈরাচার হতে দিয়েন না : পার্থ
মার্চের মধ্যে রাষ্ট্র-সংস্কার কাজ শেষ হবে : ধর্ম উপদেষ্টা
জামালপুরে দুই ইজিবাইকের চাপায় সাংবাদিক নুরুল হকের মৃত্যু
বাংলাদেশের সীমান্তবর্তী রাখাইনের সামরিক সদর দফতরের দখল নিয়েছে আরাকান আর্মি
ব্রাজিলে বাস-ট্রাক সংঘর্ষে নিহত ৩২
নতুন পররাষ্ট্রমন্ত্রী নিয়োগ সিরিয়ায়