ঢাকা   বৃহস্পতিবার, ১৬ জানুয়ারি ২০২৫ | ২ মাঘ ১৪৩১

বীর ছাত্র-জনতা এবার শুরু করেছেন অখণ্ড ভারতের স্বপ্ন চুরমার করার কঠিন সংগ্রাম

Daily Inqilab মোবায়েদুর রহমান

১০ ডিসেম্বর ২০২৪, ১২:০৩ এএম | আপডেট: ১০ ডিসেম্বর ২০২৪, ১২:০৩ এএম

তথাকথিত সংখ্যালঘু নির্যাতন নিয়ে ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে যে উত্তেজনার সৃষ্টি হয়েছে, আমার ধারণা, কিছু দিনের মধ্যে সেটি অনেকখানি শান্ত হয়ে যাবে। কিন্তু কেন এই উত্তেজনা সৃষ্টি হয়েছে, সেটি আমাদের অবশ্যই বুঝতে হবে। আর সেটি বুঝতে হলে সমস্যার শুধু ওপরটা দেখলেই চলবে না, সমস্যার গভীরে যেতে হবে। কেন এই সমস্যার উদ্ভব হলো, এর ভেতরে আরো গভীর কিছু নিহিত রয়েছে কিনা সেটি আমাদের খুঁজে বের করতে হবে। আজকের আলোচনায় আমরা সেটি বের করতে চেষ্টা করবো।

ড. ইউনূসকে এতদিন পর্যন্ত মনে করা হতো যে, তিনি একজন অরাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব। তিনি অর্থনীতি এবং দারিদ্র্য বিমোচন সম্পর্কে গভীর জ্ঞান রাখেন। নোবেল প্রাইজ তো অনেকেই পেয়েছেন। কিন্তু তাকে যখন শেখ হাসিনা একের পর এক অপমান করে যাচ্ছিলেন তখন অন্তত ১০০ জন নোবেল প্রাইজ বিজয়ী তার সমর্থনে দাঁড়িয়েছিলেন। অন্য কথায় বলা যায়, তিনি হলেন সেরাদের সেরা। এহেন অরাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব এবার সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণ করলেন যে, এই দৃশ্যমান অরাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব অসাধারণ রাজনৈতিক অভিজ্ঞানের অধিকারী। যেভাবে তিনি এই মহাসংকটে ১৮ কোটি মানুষের মাঝে শিলা অটল ঐক্য স্থাপন করেছেন সেটি আর কোনো রাজনীতিকের মধ্যে বিগত ৫৪ বছরেও পাওয়া যায়নি। তার দৃষ্টি যে বাংলাদেশের সীমানা পেরিয়ে আরো উত্তরে এবং উত্তর-পূর্বে ছড়িয়ে আছে সেটি বোঝা গিয়েছিল, বাংলাদেশের দায়িত্ব গ্রহণের পূর্বে ফ্রান্স থেকে বাংলাদেশে আগমনের পূর্ব মুহূর্তে। তখন তিনি বলেছিলেন যে, কেউ যদি বাংলাদেশকে অস্থিতিশীল করতে চায় তাহলে তাদের জেনে রাখা উচিত যে, বাংলাদেশ অস্থিতিশীল হলে সেই অস্থিতিশীলতা ছড়িয়ে পড়বে বাংলাদেশের সীমান্তের ওপারে উত্তরে, উত্তর-পূর্বে এবং উত্তর পশ্চিমে।

আমি বিগত ৫৪ বছর ধরে বাংলাদেশের রাজনীতির গতিধারা পর্যবেক্ষণ করে আসছি। শেখ মুজিব থেকে শুরু করে শেখ হাসিনা পর্যন্ত। কিন্তু বৈষম্যবিরোধী ছাত্র নেতৃত্ব এবং তাদের সংগঠন বাংলাদেশের মূল সমস্যা যেভাবে চিহ্নিত করেছেন এবং যেভাবে সেগুলোর সমাধান সংক্ষিপ্ত পরিসরে হলেও দিয়েছেন, সেই রকমটি বিগত ৫৪ বছরে আমি আর দেখিনি। তবে এর একমাত্র ব্যতিক্রম হলো দৈনিক ইনকিলাব। ৯০ এর শুরু থেকে পরবর্তী ১০/১৫ বছর দৈনিক ইনকিলাব তার পৃষ্ঠায় এমন কতগুলি অসাধারণ গুরুত্বপূর্ণ কথা বলেছে, মনে হচ্ছে যেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র নেতৃত্ব ও তাদের সংগঠন সেগুলোরই প্রতিধ্বনি করছে। তাদের বয়স অনেক কম। তাই তারা সেগুলো পড়েছেন কিনা আমরা জানি না। কিন্তু তারা যদি নাও পড়ে থাকেন তাহলে সেগুলো তারা যদি পড়েন তাহলে তাদের রাজনৈতিক আদর্শ ও দর্শন পারফেক্ট হবে এবং তারা নিজেরাও সমৃদ্ধ হবেন। কি সেই সব কথা? সেগুলোই এখন খুব সংক্ষেপে বলবো।

প্রথমেই বলে রাখছি যে, শেখ হাসিনার পতন এবং চিন্ময় দাসের গ্রেফতারকে কেন্দ্র করে ভারতের উত্তর থেকে দক্ষিণে যে তোলপাড় চলছে, সেটি এই দুই ব্যক্তির প্রতি কোনো দায়বদ্ধতা থেকে নয়। ৮ ডিসেম্বর রবিবার খবরে দেখলাম, এবার বাংলাদেশের বিরুদ্ধে মাঠে নেমেছে আরএসএস স্বয়ং। আরএসএস হলো চরম হিন্দুত্ববাদী ধর্মীয় ও রাজনৈতিক মতাদর্শের ফাউনটেন হেড। অর্থাৎ উৎস মুখ। সেখান থেকে নির্গত হয়েছে বিজেপি, বিশ^ হিন্দু পরিষদ, বজরং দল, করসেবক, শিবসেনা ইত্যাদি। ভারত বিভক্তির আগে পশ্চিম বাংলায় আরএসএসের আদর্শ ধারণ করতেন শ্যামাপ্রসাদ মুখার্জী। তার দলের নাম ছিল ‘হিন্দু মহাসভা’। শেরে বাংলা এ কে ফজলুল হক শ্যামাপ্রসাদ মুখার্জীর সাথে মিলে অখণ্ড বাংলায় কোয়ালিশন মন্ত্রিসভা গঠন করেছিলেন। শ্যামাপ্রসাদ তার জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত ভারত বিভক্তি মেনে নিতে পারেননি। ৯৯ বছর আগে আর এসএসের সৃষ্টি হয়। তাদের প্রধান রাজনৈতিক উদ্দেশ্য ছিল শুধু অখণ্ড ভারতই নয়, তার সাথে আফগানিস্তান এবং ব্রহ্মদেশ (আজকের মিয়ানমার) মিলে বৃহত্তর ভারতবর্ষ গঠন। ১৯৪৭ সালে ভারত বিভাগ অনিবার্য হয়ে পড়েছিল। আরএসএস শত চেষ্টা করেও সেই বিভাগ ঠেকাতে পারেনি। কেন কংগ্রেস ভারত বিভাগে রাজি হলো সেই রাগে আরএসএস তাদের ক্যাডার নাথুরাম গডসেকে দিয়ে ভারতের বাপু মোহন দাস করম চাঁদ গান্ধীকে হত্যা করে।

পন্ডিত নেহরু ভারত ভাগ মেনে নিতে বাধ্য হয়েছিলেন। তবে তিনি বলেছিলেন যে, বাংলা ভাগকে তিনি মেনে নিয়েছেন ঠিকই, তবে তার ধারণা, পরবর্তী ২৫ বছরের মধ্যেই পূর্ব বাংলা (তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তান) পাকিস্তান থেকে আলাদা হয়ে যাবে। তার পরের ২৫ বছরে বিচ্ছিন্ন বা স্বাধীন পূর্ব বাংলা ভারতে যোগ দেবে। নেহরুর ভবিষ্যদ্বাণীর প্রথমাংশ সত্য হয়েছে। পূর্ব বাংলা পাকিস্তান থেকে আলাদা হয়ে স্বাধীন বাংলাদেশ হয়েছে। কিন্তু নেহরুর পরবর্তী ভবিষ্যদ্বাণী সঠিক হয়নি। পরবর্তী ২৫ বছর কেন, পরবর্তী ৫০ বছর পার হয়ে গেছে, কিন্তু বাংলাদেশ ভারতে যোগ দেয়নি।

এই একটি পয়েন্টে কংগ্রেস এবং আরএসএস বা বিজেপির মধ্যে কোনো বেমিল নাই। পন্ডিত নেহরু যে অখণ্ড ভারতের স্বপ্ন দেখতেন সেটি প্রথমে নেহরু ডকট্রিন, পরে ইন্দিরা ডকট্রিন এবং তারও পরে গুজরাল ডকট্রিন নামে পরিচিত। উল্লেখ্য, ইন্দিরা এবং গুজরাল পরবর্তীতে ভারতের প্রধানমন্ত্রী হয়েছিলেন। ইন্দিরাগান্ধী তার পিতার স্বপ্নের একটি অংশ পূরণ করেন। সেটি হলো, পূর্ব পাকিস্তান বা পূর্ব বাংলাকে পাকিস্তান থেকে বিচ্ছিন্ন করা।

॥দুই॥
কংগ্রেসের পতন হয়েছে। কিন্তু আরএসএস বা বিজেপি থেমে নেই। তাই ভারতের আইনসভায় বৃহত্তর ভারতের একটি ম্যুরাল দৃশ্যমান, যেখানে বাংলাদেশ, পাকিস্তান এবং ব্রহ্মদেশকে ভারতের অন্তর্ভুক্ত দেখানো হয়েছে। নেহরু বা আরএসএসের অবশিষ্ট স্বপ্ন পূরণে তাদের দক্ষিণহস্ত ছিলেন শেখ হাসিনা। তিনি ধীরে ধীরে বাংলাদেশকে একটি করদ রাজ্যে রূপান্তরের কাজে সফলভাবে এগিয়ে যাচ্ছিলেন। যদি তিনি এবার প্রধানমন্ত্রী হিসেবে তার টার্ম পুরা করতে পারতেন তাহলে বাংলাদেশে থাকতো শুধু একটি পতাকা আর প্রধানমন্ত্রীর কুরসি। আর বাকীটা হতো অবিকল সিকিম। শেখ হাসিনার ভূমিকা হতো সিকিমের লেন্দুপ দর্জির ভূমিকা। কিন্তু বিজেপি এবং আরএসএসের স্বপ্ন ভঙ্গ হয়ে গেল। বাংলাদেশের বীর ছাত্র সমাজ শেখ হাসিনার দেশদ্রোহী পদক্ষেপের বিরুদ্ধে মাঠে নামে। তাদের সাথে যোগ দেয় লক্ষ কোটি জনতা। আরএসএসের মোহন ভগবৎ, তার ক্যাডার নরেন্দ্র মোদি, অমিত শাহ এবং যোগী আদিত্যনাথের স্বপ্ন চুরমার হয়ে গেল ৫ আগস্ট ২০২৪-এ।

আজ বাংলাদেশকে নিয়ে ভারত যে এত ক্ষিপ্ত হয়ে গেছে, তার মূলে রয়েছে সেই স্বপ্নভঙ্গের জ¦ালা। সেজন্যই দেখা যায়, এবার আরএসএস স্বয়ং তার অঙ্গ সংগঠনগুলো নিয়ে মাঠে নেমেছে। আজ ১০ ডিসেম্বর মঙ্গলবার আরএসএসের তার ক্যাডারদের নিয়ে দিল্লীস্থ বাংলাদেশ হাই কমিশন ঘেরাও করার কথা।

॥তিন॥
আমরা শুরু করেছিলাম বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতৃবৃন্দের কথা নিয়ে। তারা বলেছেন যে, আমরা ১৯৭১ সালে স্বাধীন হইনি। আমরা আসলে স্বাধীন হয়েছি ১৯৪৭ সালে। আওয়ামী লীগ বিগত ১৫ বছরে তার মাফিয়াতন্ত্র এবং চোরতন্ত্রে (ক্লেপ্টোক্র্যাসি) একটি নতুন বয়ান বা ন্যারেটিভ দিয়ে আমাদের কিশোর এবং তরুণদের মগজ ধোলাই করার চেষ্টা করেছে। অব্যাহতভাবে বলে গেছে এবং পাঠ্যপুস্তকে লিখে গেছে যে, আমাদের স্বাধীনতা সংগ্রাম শুরু হয়েছে ১৯৪৭ সালের পর থেকে। এটি আসলে ইন্ডিয়ান ন্যারেটিভ। কারণ, আজ যেটি বাংলাদেশ, সেটিই ১৯৪৭ সালের ১৪ আগস্টের পূর্ব বাংলা বা পূর্ব পাকিস্তান। সেদিন পূর্ব বাংলা নামে যে মানচিত্রটি বিশে^র বুকে উদিত হয়েছিল আজকের বাংলাদেশ সেই পূর্ব বাংলাই। পূর্ব বাংলার জমি কম বা বেশি হয়নি। সেটিই বাংলাদেশ। সেই পূর্ব বাংলা কায়েম হয়েছিল দ্বিজাতিতত্ত্বের ভিত্তিতে। অর্থাৎ ভারতবর্ষে ধর্মীয়ভাবে রয়েছে দুইটি প্রধান জাতি। একটি হিন্দু, আরেকটি মুসলমান। মুসলিম প্রধান হিসেবে পূর্ব বাংলার সৃষ্টি হয়।

হিন্দু এবং ইংরেজ শাসকরা মিলে মুসলমানদের বঞ্চিত ও অবহেলা করে। এই বৈষম্যের বিরুদ্ধে সংগ্রাম করে কায়েম হয়েছিল পূর্ব বাংলা। আবার ৪৭ সালের পর পশ্চিম পাকিস্তানের শাসকরা পূর্ব বাংলা তথা পূর্ব পাকিস্তানের মুসলিম জনগোষ্ঠির প্রতি চরম বৈষম্য ও অবহেলা করে। এই বৈষম্য থেকে মুক্তির জন্য পূর্ব বাংলা আলাদা হয়ে স্বাধীন হয়। কিন্তু তাদের মুসলিম জাতীয়তা ছিল অক্ষত। যদি তাই না হবে, যদি আওয়াম লীগ ও ভারতীয় বয়ান সত্যি হতো, তাহলে ১৯৭১ সালে পাকিস্তান থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে বাংলাদেশ স্বাধীন হতো না। পাকিস্তানকে পরাজিত করার জন্য ভারতের সামরিক বাহিনীকে মুক্তিযুদ্ধে নামতে হয়। যদি ভাষাভিত্তিক জাতীয়তাবাদ সঠিক হতো তাহলে ১৯৭১ সালে বাংলাদেশ ভারতের একটি অঙ্গরাজ্য হতো। যদি ভাষা ভিত্তিক জাতীয়তাবাদ সঠিক হতো তাহলে বিকল্প হিসেবে পশ্চিমবঙ্গ ভারত থেকে বেরিয়ে এসে স্বাধীন বৃহত্তর বাংলা গঠন করতো। এই স্বাধীন বৃহত্তর বাংলা গঠন করার জন্য তৎকালীন বাংলার প্রধানমন্ত্রী হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী, ড. বদরুদ্দীন উমরের পিতা আবুল হাশিম, নেতাজি সুভাস চন্দ্র বসুর ভাই তৎকালীন কংগ্রেস নেতা শরৎ চন্দ্র বসু এবং কংগ্রেস নেতা কিরণ শংকর রায় চেষ্টা করেছিলেন। মুসলিম লীগ নেতা মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ এই প্রস্তাবে সম্মত ছিলেন। কিন্তু কংগ্রেস নেতা নেহরু এবং সর্দার বল্লভ ভাই প্যাটেল ঐ প্রস্তাব তুড়ি মেরে উড়িয়ে দেন।

॥চার॥
যাই হোক, বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর সামাজিক ও অর্থনৈতিক বৈষম্য প্রকট হয়ে ওঠে। এই বৈষম্য পায় রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতা। এই রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতা শুরু করেন স্বয়ং শেখ মুজিবুর রহমান। তিনি এক দলীয়, এক নেতা নির্ভর প্রেসিডেন্সিয়াল বাকশাল কায়েম করেন। সুতরাং স্বাধীন বাংলাদেশে স্বৈরতন্ত্র বা একনায়কত্বের শুরু হয় শেখ মুজিবের আমল থেকে। সেটি ষোলকলায় পূর্ণ হয় তার কন্যা শেখ হাসিনার আমলে। ক্রণি ক্যাপিটালিজম (আত্মীয় ও স্বজন তোষণ ভিত্তিক পুঁজিবাদ) ও চোরতন্ত্রের মাধ্যমে সামাজিক ও অর্থনৈতিক বৈষম্যের ব্যবধান হিমালয় পর্বতের মতো বিশাল হয়। এই ক্রণি ক্যাপিটালিজম এবং ক্লেপ্টোক্র্যাসিকে অন্ধ সমর্থন দিতে থাকে হিন্দুত্ববাদী ভারত। ভারত এবার শেখ হাসিনা তথা বাংলাদেশের প্রভূর ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়।

এই বিশাল রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও সামাজিক বৈষম্যের প্রতিবাদে গর্জে ওঠে বাংলাদেশের অকুতোভয় বীর ছাত্র সমাজ। তারা আন্দোলনে ঝাঁপিয়ে পড়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন নামে। শেখ হাসিনার ভয়ঙ্কর স্বৈরাচারী শাসনের বিরুদ্ধে লক্ষ কোটি মানুষ রাস্তায় নেমে পড়েন। এক সাগর রক্তের বিনিময়ে শেখ হাসিনা বিতাড়িত হন এবং বাংলাদেশ লাভ করে তৃতীয় স্বাধীনতা। ৫ আগস্ট তাই দ্বিতীয় স্বাধীনতা নয়। এটি হলো তৃতীয় স্বাধীনতা। কারণ প্রথমটি হলো ১৯৪৭ সালে, দ্বিতীয়টি ১৯৭১ সালে এবং তৃতীয়টি ২০২৪ সালে।

সুতরাং বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতারা যখন বলেন যে, তারা এমন একটি সংবিধান চান যে সংবিধান ধারণ করবে ৪৭, ৭১ এবং ২৪ এর জনগণের অভিপ্রায় তখন তারা নির্ভেজাল এবং সাচ্চা কথাই বলেন। আবার তারা যখন আওয়াজ তোলেন যে, ‘দিল্লী না ঢাকা/ঢাকা ঢাকা’ তখন তারা স্বৈরতন্ত্র ও চোরতন্ত্রের প্রভূ ভারতের প্রভূত্ব ও আধিপত্যকে (হেজিমনি) উপড়ে ফেলার কথাই বলেন। এটিও ১৮ কোটি জনগণের অভিপ্রায়। ভারত বিরোধী ১৮ কোটি জনগণের এমন ইস্পাত কঠিন মনোভাব ও ঐক্য আমি ইতোপূর্বে আর দেখিনি।

ড. ইউনূসের নেতৃত্বে এবং তুর্কী তরুণদের (ইয়াং টার্কস) সহায়তায় এবার বাংলাদেশ শুরু করেছে সেই দীর্ঘ এবং কঠিন জার্নি যা নেহরু ডকট্রিন, ইন্দিরা ডকট্রিন এবং গুজরাল ডকট্রিনকে ছিন্ন ভিন্ন করে দেবে।

আমি আগামীতে আরো কতগুলো মৌলিক প্রশ্নে যাবো যেখানে আমরা দেখবো সূর্য সেন, প্রীতিলতাদেরকে নিয়ে আওয়ামী ঘরানার বাড়াবাড়ি এবং ফেনী, চট্টগ্রাম ও পার্বত্য চট্টগ্রামের ওপর ভারতীয় আধিপত্যবাদীদের শকুনীর দৃষ্টি।

Email: [email protected]


বিভাগ : সম্পাদকীয়


মন্তব্য করুন

HTML Comment Box is loading comments...

এই বিভাগের আরও

ধূমপানকে না বলুন
জালিমের পরিণতি ভালো হয় না
অখণ্ড ভারতের নীলনকশা এবং মুখোশপরা গণশত্রুদের দাস্যবৃত্তি
মাজারে হামলা ও উগ্রপন্থা কাম্য নয়
সমতাভিত্তিক স্বাস্থ্যসেবার বিকেন্দ্রীকরণ সময়ের দাবি
আরও

আরও পড়ুন

নালিতাবাড়ীতে মোবাইল কোর্টে ৭ ব্যক্তির কারাদন্ড

নালিতাবাড়ীতে মোবাইল কোর্টে ৭ ব্যক্তির কারাদন্ড

জমির শ্রেণি পরিবর্তন করলে সে জমি খাস হিসেবে রূপান্তর করা হবে  : ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলা প্রশাসন

জমির শ্রেণি পরিবর্তন করলে সে জমি খাস হিসেবে রূপান্তর করা হবে : ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলা প্রশাসন

গণঅভ্যুত্থানের শুধু ঘোষণাপত্র নয়, ১৬ বছরের আন্দোলনের স্বীকৃতি চায় ১২ দলীয় জোট

গণঅভ্যুত্থানের শুধু ঘোষণাপত্র নয়, ১৬ বছরের আন্দোলনের স্বীকৃতি চায় ১২ দলীয় জোট

কর না কমালে সুলভ মূল্যে ইন্টারনেট দেয়া সম্ভব হবে না : মন্তব্য খাত সংশ্লিষ্টদের

কর না কমালে সুলভ মূল্যে ইন্টারনেট দেয়া সম্ভব হবে না : মন্তব্য খাত সংশ্লিষ্টদের

জমির শ্রেণি পরিবর্তন করলে সে জমি খাস হিসেবে রূপান্তর করা হবে : ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলা প্রশাসন

জমির শ্রেণি পরিবর্তন করলে সে জমি খাস হিসেবে রূপান্তর করা হবে : ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলা প্রশাসন

মার্কিন নাগরিক হারুন আসাদ মির্জা আন্তর্জাতিক নারী পাচারকারী চক্রের হোতা

মার্কিন নাগরিক হারুন আসাদ মির্জা আন্তর্জাতিক নারী পাচারকারী চক্রের হোতা

কলাপাড়ায় বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ওয়েল্ডিং ফোরম্যানের রহস্যজনক মৃত্যু

কলাপাড়ায় বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ওয়েল্ডিং ফোরম্যানের রহস্যজনক মৃত্যু

শিক্ষার্থীদের হৈচৈ নিষেধ করায় আটঘরিয়া কলেজ শিক্ষককে মারপিটের অভিযোগ

শিক্ষার্থীদের হৈচৈ নিষেধ করায় আটঘরিয়া কলেজ শিক্ষককে মারপিটের অভিযোগ

বগুড়ায় সড়কে কিশোর বাইক চালকের মৃত্যু

বগুড়ায় সড়কে কিশোর বাইক চালকের মৃত্যু

যত্রতত্র অনার্স-মাস্টার্স আর খোলা হবে না : জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় ভিসি

যত্রতত্র অনার্স-মাস্টার্স আর খোলা হবে না : জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় ভিসি

সবার মতামতের ভিত্তিতে জুলাই ঘোষণাপত্র করতে চাই : প্রধান উপদেষ্টা

সবার মতামতের ভিত্তিতে জুলাই ঘোষণাপত্র করতে চাই : প্রধান উপদেষ্টা

এখানে কেউ ছোট-বড় নই, সবাই আমরা সমান   :-ডা.একেএম মাহবুবুর রহমান

এখানে কেউ ছোট-বড় নই, সবাই আমরা সমান  :-ডা.একেএম মাহবুবুর রহমান

মৌলভীবাজাররে মাদকদ্রব্যের অপব্যবহার রোধে করণীয় শীর্ষক সেমিনার অনুষ্ঠিত

মৌলভীবাজাররে মাদকদ্রব্যের অপব্যবহার রোধে করণীয় শীর্ষক সেমিনার অনুষ্ঠিত

টঙ্গীতে কারখানার ঝুট নিয়ে দুই পক্ষে উত্তেজনা পরিস্থিতি সামাল দিতে পুলিশ মোতায়েন

টঙ্গীতে কারখানার ঝুট নিয়ে দুই পক্ষে উত্তেজনা পরিস্থিতি সামাল দিতে পুলিশ মোতায়েন

১৯ বছর পর পাকিস্তানে টেস্ট খেলতে নামছে উইন্ডিজ

১৯ বছর পর পাকিস্তানে টেস্ট খেলতে নামছে উইন্ডিজ

মির্জাপুরে নদী তীর কেটে মাটি লুট দুই কারবারির  লাখ টাকা জরিমানা

মির্জাপুরে নদী তীর কেটে মাটি লুট দুই কারবারির লাখ টাকা জরিমানা

‘‘এই বাংলাদেশে হয় আওয়ামীলীগ থাকবে না হয় আমরা থাকব’’ : হাসনাত আব্দুল্লাহ

‘‘এই বাংলাদেশে হয় আওয়ামীলীগ থাকবে না হয় আমরা থাকব’’ : হাসনাত আব্দুল্লাহ

পীরগঞ্জে উদ্ভাবিত লাগসই প্রযুক্তির শীর্ষক সেমিনার ও প্রদশর্নী

পীরগঞ্জে উদ্ভাবিত লাগসই প্রযুক্তির শীর্ষক সেমিনার ও প্রদশর্নী

নাহিদকে নিজের দলে নিতে চেয়েছিলেন ইফতিখার

নাহিদকে নিজের দলে নিতে চেয়েছিলেন ইফতিখার

নানা ভাবে পূনর্বাসিত হওয়ার চেষ্টা করছে আওয়ামীলীগ

নানা ভাবে পূনর্বাসিত হওয়ার চেষ্টা করছে আওয়ামীলীগ