এবার প্রয়াত মার্কিন পপ তারকা মাইকেল জ্যাকসনের বিরুদ্ধে করা দুই যুবকের যৌন নিপীড়নের মামলা পুনর্জীবিত হচ্ছে। শিশু বয়সে মাইকেল জ্যাকসনের যৌন নিপীড়নের শিকার হয়েছিলেন এমন অভিযোগে মামলা করা দুই ব্যক্তি এখন প্রয়াত এই গায়কের কোম্পানির বিরুদ্ধে মামলা পুনরুজ্জীবিত করতে পারবে বলে আদেশ জারি করেছে যুক্তরাষ্ট্রের একটি আদালত।

ওয়েড রবসন ও জেমস সেফচাক নামের ওই দুই ব্যক্তির বয়সই এখন চল্লিশের কোটায়। তাদের দাবি, শৈশবে তারা জ্যাকসনের কাছে যৌন হেনস্থার শিকার হয়েছেন। এবার তারা জ্যাকসনের বিরুদ্ধে করা মামলাটি পুনর্জীবিত করার আবেদন জানিয়েছিল। ১৯৮০’র দশকের শেষভাগ থেকে ১৯৯০’র দশকের শুরুর ভাগ পর্যন্ত ওই নিপীড়ন চলেছে বলেও দাবি করে ওই দুই ব্যক্তি। ওই সময় মাইকেল জ্যাকসন তার নেভারল্যান্ড র‍্যাঞ্চে বসবাস করতেন। তারা বলেছে, তাদের রক্ষা করার দায়িত্ব ছিল জ্যাকসনের কোম্পানির।

তাদের এই দাবির ভিত্তিতেই ২০১৯ সালে ব্রিটিশ চলচ্চিত্র পরিচালক ড্যান রিড ‘লিভিং নেভারল্যান্ড’ নামে একটি তথ্যচিত্র তৈরি করেন। যে তথ্যচিত্রকে ‘পাবলিক লিঞ্চিং’ বলে বর্ণনা করেছেন জ্যাকসনের পরিবার।

২০০৯ সালে মৃত্যুবরণ করেন মাইকেল জ্যাকসন। তার বিরুদ্ধে ছেলে শিশুদের ধর্ষণের প্রথম অভিযোগ উঠে সেই ১৯৯৩ সালে। যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন আদালতে জ্যাকসনের বিরুদ্ধে শিশুদের যৌন নিপীড়নের বেশ কয়েকটি মামলা হয়েছে। তবে তার আইনজীবী তাকে ‘নিরাপরাধ ও নিষ্পাপ’ দাবি করে আসছে।

জ্যাকসনের কোম্পানির বিরুদ্ধে রবসন এবং সেফচাকের মামলা এর আগে আদালত আটকে দেয়। তারমধ্যে ২০২০ সালে লস অ্যাঞ্জেলেসের একজন বিচারক এই আদেশ জারি করেন যে, সেফচাক মাইকেল জ্যাকসনের কোম্পানির বিরুদ্ধে মামলা করতে পারবেন না। কারণ, কোম্পানিগুলোর তার প্রতি দায়িত্বশীল হওয়ার দায় ছিল না। তার এক বছর পর একই বিচারক একই কারণে করা রবসনের মামলাও একই রায় দেন।

কিন্তু সম্প্রতি ক্যালিফোর্নিয়ার একটি আপিল আদালত লস অ্যাঞ্জেলেসের বিচারকের রায় নিয়ে দ্বিমত পোষন করে বলেন, “একটি কর্পোরেশন যে তার একজন কর্মীকে শিশুদের যৌন নির্যাতন করার সুযোগ দেয় তারা কোনো যুক্তিতেই সেই শিশুদের রক্ষা করার দায়িত্ব এড়িয়ে যেতে বা ক্ষমা পেতে পারে না। তার উপর কোম্পানি শুধুমাত্র যৌন নির্যাতনকারীর একার মালিকানাধীন। এছাড়া শুধুমাত্র একজন শেয়ারহোল্ডার থাকা কর্পোরেট বিবাদীর উপর ভিত্তি করে কোন ধরণের দায়িত্ব গ্রহণ না করার সুযোগ পাওয়া সঠিক সিদ্ধান্ত হবে না। তাই আমরা কর্পোরেশনের পক্ষে যাওয়া রায় বদলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত দিচ্ছি।”