'মিডিয়ায় মাফিয়া তাপসের উত্থান এবং হেরেমখান বৃত্তান্ত'
০৫ নভেম্বর ২০২৪, ১০:৪৫ এএম | আপডেট: ০৫ নভেম্বর ২০২৪, ১০:৪৫ এএম
বলা হয় যে শিল্পীদের কোন দল থাকে না। তাঁরা থাকেন আপন জগতে ভক্তদের হৃদয়ের গহীনে। একজন সত্যিকারের শিল্প সাধক যেমন পারেন না কোন অন্যায়ের সাথে আপোষ করতে অনুরূপভাবে জাগতিক মোহ মায়া থেকেও তিনি থাকেন মুক্ত। বাংলার সংস্কৃতি হাজার বছরের পুরনো। তবে সেই সংস্কৃতির বৃহত্তর একটি অংশই যেন গত ১৬ বছরে ছিল আওয়ামী দালালীর অন্যতম নিয়ামক।
অনেক বিখ্যাত বিখ্যাত গুণী শিল্পীরা নিজেদের মৃত্যু'র আগে ঠিকমতো চিকিৎসাও করতে পারেনি অতীতে। এমনকি এখনও বহু শিল্পী রয়েছে যারা প্রকৃত অর্থেই বাংলার আবহমান সংস্কৃতিকে ধারণ করেন। তাদের কখনও চিন্তা থাকেনা কি খাবেন বা কতটা বিলাসবহুলভাবে জীবন কাটাবেন। তারা কেবলই চিন্তা করেন নতুন কিছু সৃষ্টিতে। তাই হয়তো বিদ্রোহী কবি বলেছিলেন,
'আজ সৃষ্টি সুখের উল্লাসে–মোর মুখ হাসে মোর চোখ হাসে মোর টগবগিয়ে খুন হাসে'
যুগে যুগে নজরুলরা কেবল সৃষ্টিই করে গেছেন। নিজেদের জন্য কখনও কিছু করেননি। এমন অসংখ্য শিল্পী ছিল যাদের দুইবেলা দু'মুঠো খাবার জোটেনি তবুও নিজেদের সর্বস্ব দিয়ে গেছেন শিল্প-সংস্কৃতি,সংগীতকে ভালোবেসে। তবে আজ কেন এই ভঙ্গুর দৈন্য দশা হাজার পুরনো এই বাংলা সংস্কৃতির? আজ কোথায় হারিয়ে গেছে ভাটিয়ালি,ভাওয়াইয়া,মুর্শিদি গানের সাথে প্রাণের টান? লালন সাঁই চলে গেছেন কিন্তু লালনের আদর্শ আজ তালাবদ্ধ কেন?
কারন বলতে গেলে স্পষ্টভাবেই বলা যায় এখন অধিকাংশ শিল্পীরাই শিল্প, সংগীত, নৃত্য,গীতকে ভালোবাসে না বরং মিথ্যে অভিনয় করে। সংগীত প্রীতির নামে নিজস্ব স্বার্থ হাসিলের জন্য এদের কাছে নৈতিকতার সামান্যতম কোন মূল্য নেই। নিজেদেরকে বেশ্যার মতো বিকিয়ি দিতেও নূন্যতম কুন্ঠা বোধ করে না এই ক্লাসলেস অমানুষগুলো।
স্বৈরাচারী হাসিনা একাই কেবল দেশের অর্থনীতি, রাজনীতি, গণতান্ত্রিক অধিকার হরণ,গুম,খুন করেনি। তৃতীয় শ্রেণীর রাজনীতিবিদরা ছাড়াও তাকে স্বৈরাচার হতে উৎসাহ যুগিয়েছে বর্তমান সময়ের তথাকথিত শিল্পীরা।
দালালির মূল্য প্রাপ্তির লোভে নিজেদের আত্মসন্মানকে উলঙ্গ করতেও একটুকু বাঁধেনি তাদের। অনেকেই আবার খ্যাতির লোভে যৎসামান্য দামে নিজেকে বিক্রি করেছে চরিত্রহীন রাজনৈতিক নেতার তুলতুলে নরম বিছানায়। আর এই সমস্ত দালালের ওস্তাদ, মিডিয়া মাফিয়া খ্যাত হাসিনা লীগের নিবেদিত প্রাণ কৌশিক হোসেন তাপস।
যদি লিঙ্গ পরিবর্তন করে আওয়ামী নেতাদের সন্তুষ্ট করা লাগতো তাতেও বোধ হয় না বলতো না নষ্টামির এই রাজা। চরিত্রহীন এই তাপস যেন পীর হয়ে এসেছিলেন বাংলাদেশের সংগীত অঙ্গনে। মুখে দাড়ি রেখে নিজেকে ফেরেশতা রূপে প্রতিষ্ঠিত করতে চাওয়া তাপস নীল দুনিয়ার হুরপরি সানি লিওনের স্পর্শ পেয়ে এতটাই শিহরিত হয়েছিল যে সংগীত চর্চার নামে সে তৈরি করেছিল ভিন্ন রকম এক দুনিয়া।
যেখানে কেবল নারী,নেশা,দালালি,সরকারি টাকা আত্মসাৎ, কর ফাঁকি এগুলোই ছিল তিনি এবং তার সাঙ্গপাঙ্গদের প্রধান উদ্দেশ্য। স্বৈরাচারের আশ্রয় প্রশ্রয়ে দেশের মিডিয়াকে যতভাবে সম্ভব লুট করেছে এই নরপিশাচ তাপস।
কে এই তাপস, কিভাবে সংগীত জগতের মাফিয়া হয়ে উঠলেন তিনি?
এ বিষয়ে জানা যায়, একটা সময় সামন্য বেতনে চাকরি এবং প্রাইভেট পড়িয়ে জীবন চালিয়েছেন তাপস। ছিলেন দেশের একটি বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেলের তবলা বাদক যেখানে বেতন ছিল খুবই নগণ্য এমনকি সেই টাকা দিয়ে ঠিকমতো জীবিকা নির্বাহ করতে পারতেন না তিনি।
তবে তার জীবন পাল্টে যায় খালামনির বয়সী স্ত্রী ফারজানা মুন্নীর জাদুর ছোঁয়ায়। এছাড়াও শেখ হাসিনার প্রেস সেক্রেটারি আশরাফুল আলম খোকন এবং হাসিনার গর্ধব তথ্যমন্ত্রী হাসান মাহমুদের আশীর্বাদপুষ্ট হন এই মুন্নি খালার সুবাদে। জানা যায়,দরবেশ বেশধারী শয়তান তাপসের সাথে কোন এক ঘটনায় পরিচয় হয় গান বাংলা চ্যানেলের আসল মালিক আবৃত্তিশিল্পী রবিশঙ্কর মৈত্রীর সাথে। এরপর রবিশঙ্করকে বিভিন্নভাবে ব্লাকমেইল করে বেমালুম গ্রাস করে নেয় গান বাংলা।
এ প্রসঙ্গে চ্যানেলটির আসল মালিক রবীশঙ্কর একটি সাক্ষাৎকারে বলেন,' তথ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব ছিলেন হেদায়েত আল মামুন। তার পরামর্শে আমরা যাই নুর আলীর কাছে। তিনি আমাদেরকে এই কৌশিক হাসান তাপসের সাথে পরিচয় করিয়ে দেন। এরপর তাপস আমাদের চ্যানেলে যুক্ত হয়ে যায়। যুক্ত হওয়ার পরে আমাদেরকে আমার প্রতিষ্ঠান থেকেই ক্ষমতার প্রভাব খাটিয়ে একেবারে নেই করে দেয়।'
এরপর রবিশঙ্করের নামে অর্থ আত্মসাৎ, প্রাণ নাশের মামলাসহ একাধিক মামলা দায়ের করে তাপস, এমনকি রবিশঙ্করকে দেওয়া হয় প্রাণ নাশের হুমকি। এক পর্যায়ে তাপসের উৎপাতে দেশ ছাড়তে বাধ্য হন রবিশঙ্কর। আর সেই সুযোগে গান বাংলার ৭০ শতাংশ শেয়ার নিজের নামে অবৈধভাবে লিখে নেয় তাপস যেখানে সেই সুবিধা করে দেয় হাসিনার তৃতীয় শ্রেণীর চরিত্রহীন মন্ত্রীরা। এছাড়াও তাপসকে চ্যানেলটি দখল করতে সংস্কৃতি মন্ত্রনালয়ও জোর চেষ্টা চালায়।
এ বিষয়ে রবিশঙ্কর ২২ শে ফেব্রুয়ারি ২০২৩ সালে তার ভ্যারিফায়েড ফেসবুকে একটি স্টাটাস দেন। যেখানে তিনি লেখেন,'১০ জানুয়ারি ২০২১; তথ্যমন্ত্রনালয়ের একটি চিঠি। গান বাংলা টিভি এবং আমাকে নিয়ে যারা বিভ্রান্ত, তাদের জন্য চিঠিটা তুলে ধরলাম। আমার শেয়ার এবং পরিচালক পদ কোনটিই ছাড়িনাই,ছাড়তেও চাই না। কোন কাজে লাগবে না এই শেয়ার,তবু কোন বিনিময় মূল্যে এই শেয়ার হস্তান্তরযোগ্য নয়।'
এ প্রসঙ্গে রবিশঙ্কর আরও বলেন,'গান বাংলার কারনে আমাকে দেশ ছাড়তে হয়,জীবনের উপর হুমকি আসে। আমি বুঝতে পারি যে ঢাকায় আর আমার থাকার অবস্থা নেই।'
বিভাগ : বিনোদন
মন্তব্য করুন
এই বিভাগের আরও
আরও পড়ুন
জিন প্রযুক্তিতে ডেঙ্গু প্রতিরোধে বিজ্ঞানীদের নতুন কৌশল আবিস্কার
নেত্রকোনার মদনে রাইফেলসহ ৩ মাদক ব্যাবসায়ী গ্রেফতার
কায়রো আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে স্থান পেয়েছে ঢাকাই সিনেমা 'প্রিয় মালতি'
মাগুরায় নিত্যপণ্যের দাম কমানোর দাবিতে বাম গণতান্ত্রিক জোটের সমাবেশ
ফরিদগঞ্জে গৃহবধূ আসমার লাশ গোসলের সময় দেখা যায় আঘাতের চিহ্ন, দুই দেবর পলাতক
নির্মাণকাজে গুণগতমান নিশ্চিতের ক্ষেত্রে কোনো ছাড় দেওয়া হবে না- খুবি উপাচার্য
অন্তর্বর্তী সরকারের দুর্বলতাই কি দেশে ফেরাবে শেখ হাসিনাকে?
নিয়মিত শিক্ষার্থীদের ই সাংগঠনিক কাঠামোতে রাখা হবে- ছাত্রদল সম্পাদক নাছির
বিশ্বনাথ পৌর সেচ্ছাসেবকলীগ সভাপতির রিমান্ড মঞ্জুর
বোয়িং ধর্মঘটের সমাপ্তি,কর্মীরা ৩৮% বেতন বৃদ্ধির প্রস্তাবে সম্মতি জানালেন
গুম কমিশনে জমা পড়েছে ১৬০০ অভিযোগ
তাবলিগের বিরোধের কারণ সরকারের বোঝা দরকার : নেয়ামাতুল্লাহ ফরিদি
যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাচনে ভোট দেয়া ও গণনা হয় যেভাবে !
সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের কয়েক কিলোমিটার জুড়ে শুধুই আলেম-ওলামা
কান্নায় রয়েছে যেসব উপকারিতা
জাতিসংঘের বিশেষায়িত সংগঠন ‘ইউএনআরডাব্লিউএ' এর সাথে সম্পর্ক ছিন্ন করলো ইসরাইল
দিনাজপুরের খানসামায় ১১ বছর আগের চাঁদাবাজি ও বিএনপি'র কার্যালয় ভাংচুরের মামলা
চাঁদপুরে ডিম ছাড়ার পর ইলিশের গবেষণা
নিষেধাজ্ঞা শেষ পদ্মা নদীতে ইলিশ ধরায় ব্যস্ত জেলেরা
বগুড়ায় ২০ টাকায় পঁচা পেয়াজ কিনে ৮০ টাকায় বিক্রি, কেজিতে লাভ ৬০ টাকা