কার হবে ডায়াবেটিস
১৭ আগস্ট ২০২৩, ০৯:০৩ পিএম | আপডেট: ১৮ আগস্ট ২০২৩, ১২:০৮ এএম
পাঁচটি বিষয়কে মামুলি মনে করলে ডায়াবেটিসের প্রকোপ অনিবার্য। জীবনশৈলীর সঙ্গে আষ্টেপৃষ্ঠে থাকা বিষয়গুলি অজান্তেই বাড়িয়ে তোলে রক্তে শর্করার মাত্রা।
ডায়াবেটিসের কারণগুলো রোজকার জীবনযাপনের সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িত। তাই বলে কি এগুলো পুরোপুরি বাদ দিয়ে জীবন কাটালে তবেই মধুমেহকে দমিয়ে রাখা সম্ভব ? উত্তর হল, না। পারিবারিক বা জেনেটিক কারণ, বয়স, মানসিক চাপ, ওজন বৃদ্ধি, ও খাদ্যাভ্যাস শত্রু শিবিরে এই কারণগুলোই প্রথম দিকে। আবার প্রতিটি বিষয়ই খুব আপেক্ষিক। তাই ঠিক কতটা হলে বা কাদের বিপত্তি বেশি- সেটা জানা জরুরি।
পরিবারের সূত্র ধরে-ডায়াবেটিসের গুরুত্বপূর্ণ ফ্যাক্টর হল, জেনেটিক ইনহেরিট্যান্স। পরিবারের সুতো বেয়ে যেভাবে ডায়াবেটিস ছড়িয়ে পড়ে পরবর্তী প্রজন্মে তা অন্যরকম। যদি কারও প্রথম সারির আত্মীয় অর্থাৎ বাবা-মা, ছেলে-মেয়ে, ভাই-বোনের মধ্যে একজনের ডায়াবেটিস বেশি থাকে সেক্ষেত্রে তাঁর ডায়াবেটিসে আক্রান্তের সম্ভাবনা ১০-১৫ শতাংশ। সেকেন্ড ডিগ্রির রিলেটিভ বা দ্বিতীয় সারির আত্মীয় যেমন, চাচা, জ্যাঠা, মামার ডায়াবেটিস থাকলেও আক্রান্ত হওয়ার প্রবণতা রয়েছে। তবে সম্ভাবনা কিছুটা কম। আরও সহজ করে বলতে গেলে বাবা অথবা মা, কারও একজনের ডায়াবেটিস থাকলে সন্তানের আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি ১০-১৫ শতাংশ। আর যদি বাবা-মা দুজনেরই ডায়াবেটিস থাকে সেক্ষেত্রে ঝুঁকি ৭০-৭৫ শতাংশ।
যাঁরাই মোটা তাঁদেরই ডায়াবেটিস? পরিবারের সঙ্গে এনভায়রনমেন্টাল ইমপ্যাক্ট বা পরিবেশগত কারণ জড়িত। অর্থাৎ, পরিবারে ডায়াবেটিস থাকার সঙ্গে একজনের ওজন কতটা তার উপর নির্ভর করে ঝুঁকি কতটা। বিএমআই বডি মাস ইনডেক্স ২১-২৩-এর মধ্যে থাকলে তা স্বাভাবিক বলা হয় কিন্তু, এই পরিমাপ ২৫-এর বেশি হলে ওবেসিটিতে আক্রান্ত বলেই গণ্য করা হয়। স্বাভাবিক ওজন কি না তা বুঝতে অঙ্ক কষে দেখুন। উচ্চতা (সেমি) - ১০০- সঠিক ওজনের মাপ স্বাভাবিক মাত্রা পেরিয়ে যাওয়া মানেই রিস্ক আছে।
বয়সের দোষ-বয়স বৃদ্ধির সঙ্গে রোগের ফিরিস্তি বাড়তে থাকে। ধীরে ধীরে চেপে ধরে নানা অসুখ। বর্তমানে ডায়াবেটিস কোনও বয়স মানছে না। খুব ছোটোদেরও হচ্ছে। বিশেষ করে পরিবারে কারও ডায়াবেটিস থাকলে সেই পরিবারের শিশুরা যদি খেলাধুলো না-করে, খাদ্যাভ্যাসে ফাস্ট ফুড, জাঙ্ক ফুড বেশি থাকে, ওজনও স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি হয় তাহলে তাদের ১০-১২ বছর বয়সেও টাইপ টু ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
একদিকে লাইফস্টাইল ঠিক না-থাকা ও অন্যদিকে বয়সের জাঁতাকল রক্তে ইনসুলিন নিঃসরণ এবং কার্যকারিতার পথে বাধা সৃষ্টি করে। ফলে কোনও শারীরিক সমস্যা নেই, তা সত্ত্বেও ৩০-৩৫ উর্ধ্বদের ডায়াবেটিসের ঝুঁকি দেখা দেয়। মিষ্টি খেলে ডায়াবেটিস হয়, এটার বৈজ্ঞানিক ভিত্তি জোরালো নয়। তবে প্রত্যক্ষ সম্পর্ক না থাকলেও রান্না বা তরকারিতে অধিক মিষ্টি ডায়াবেটিস বা রক্তে ব্লাড সুগারের মাত্রাকে ত্বরান্বিত করে। আর ডায়াবেটিস যাঁদের রয়েছে তাদের জন্য মিষ্টি বিপজ্জনক হতে পারে। তাই খুব কম মাত্রায় মিষ্টি খেতে হবে। কার্বোহাইড্রেট-প্রোটিন-ফ্যাটের সমন্বয়ে ডায়েট মানতে হবে। চাল-গম-ডাল পরিমাণ মেপে, শাক-সবজি, স্যালাড বেশি করে খাওয়া উচিত। আপেল, কমলালেবু ইত্যাদি টাটকা ফল খান। তেল-ঘি মাখন প্রাপ্তবয়স্কদের খুব বুঝে মেপে খেতে হবে। মিষ্টি বা চিনি খুব প্রয়োজনে বা মাঝেমধ্যে খাওয়া যেতে পারে।
মানসিক চাপে ডায়াবেটিস বাড়ে! মানসিক চাপ কতটা ডায়াবেটিসের কারণ সেই নিয়ে নানা জনের নানা মত। তবে অবসাদ যে ডায়াবেটিসের কারণ এ ব্যাপারে অনেকেই একমত। যাঁদের ডায়াবেটিস রয়েছে তাঁদের যেমন অবসাদও বেশি, তেমনি উলটো দিক থেকে যাঁরা অবসাদের শিকার তাঁদের ডায়াবেটিসের ঝুঁকিও মারাত্মক। এই সম্ভাবনাকে আরও প্রাগঢ় করে পারিবারিক ইতিহাস। কাজেই পরিবারের ভূমিকা সবক্ষেত্রেই বেশি গুরুত্বপূর্ণ। তাই এই দুই কারণ আপনার থাকলে নিজের প্রতি আরও বেশি সচেতন হতে হবে। অনিয়ন্ত্রিত ওজন, খাদ্যাভ্যাস, ধূমপান ও মদের নেশা এই সম্ভাবনাকে আরও ত্বরান্বিত করে। চিন্তা বা অবসাদ বিশেষ করে যাঁদের ডায়াবেটিসের সম্ভাবনা রয়েছে তাঁদের ডায়াবেটিসের রিস্ক বাড়ায়। ডিপ্রেশন নিয়ন্ত্রণ না-করলে ডায়াবেটিসকে বাগে আনাও বেশ কঠিন।
আফতাব চৌধুরী
সাংবাদিক-কলামিস্ট।
বিভাগ : স্বাস্থ্য
মন্তব্য করুন
আরও পড়ুন
ফ্রিল্যান্সিং প্রশিক্ষণ প্রকল্প, ব্যয় ২৯৭ কোটি ১৬ লাখ টাকা
ফ্রিল্যান্সিং প্রশিক্ষণ প্রকল্প, ব্যয় ২৯৭ কোটি ১৬ লাখ টাকা
ফসলের মাঠে দোল খাচ্ছে কৃষকের সোনালি স্বপ্ন ধানের শীষ
গুটিকয়েক ব্যবসায়ীর কাছে বাজার জিম্মি থাকবে না : চট্টগ্রামে বাণিজ্য উপদেষ্টা
থানায় অভিযোগ করতে গিয়ে গ্রেফতার, শাহজাহান ওমর কারাগারে
প্রাথমিকের জন্য ৫ কোটি ৩২ লাখ বইয়ের অনুমোদন
ছাত্র-জনতার ওপর হামলার মামলা : নড়াইলে আ.লীগ সভাপতি সুবাস চন্দ্র কারাগারে
রাসিকের মাস্টারোলে নিয়োজিত ১৬১ কর্মীকে অব্যাহতি : ৩৮ কর্মকর্তা-কর্মচারীকে শোকজ
লক্ষীপুরে গণঅভ্যুত্থানে হামলাকারীদের বিচার ও আহতদের সুচিকিৎসার দাবিতে বিক্ষোভ
মা-মেয়েসহ সড়কে নিহত ৭
ভারতে সাজাভোগ শেষে ফিরল পাচার হওয়া ২৪ নারী-পুরুষ
নায্যদামে বিক্রি করতে পেরে লাভবান কৃষক
বানরের অত্যাচারে অতিষ্ঠ
হ্যামস্টার পালানোয় বিমান গ্রাউন্ডেড
২৪ ক্যারেটের গাড়ি
ডিসেম্বরে বাংলাদেশ ও ভারতের পররাষ্ট্র বৈঠক, হাসিনাকে ফেরানো নিয়ে আলোচনা থাকবে
রামু সেনানিবাসে সশস্ত্র বাহিনী দিবস পালিত
এক সপ্তাহে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ বাড়ল ৬ কোটি ১০ লাখ ডলার
প্রবাসীদের যে জন্য সুখবর দিলো মালয়েশিয়া
জাবি শিক্ষার্থী মৃত্যুর ঘটনায় মামলা, তদন্ত কমিটি গঠন, ফটকে তালা, মশাল মিছিল