সবাই মিলে এইডস নির্মুল করি
০১ ডিসেম্বর ২০২৩, ১২:৩১ এএম | আপডেট: ০১ ডিসেম্বর ২০২৩, ১২:৩১ এএম
১ ডিসেম্বর ওয়ার্ল্ড এইডস ডে-২০২৩
১৯৮৮ সাল থেকে প্রতি বছর পহেলা ডিসেম্বর বিশ্ব এইডস দিবস হিসেবে পালিত হচ্ছে। বিশ্ব এইডস দিবসে সাধারণ জনগণকে এইচআইভি সংক্রমণ সম্পর্কে সচেতন করে তোলার লক্ষে বিভিন্ন কার্যক্রম পরিচালিত হয়ে থাকে। প্রতি বছরের ন্যায় আমাদের দেশেও এটি পালন করে জনসাধারণকে সচেতন করা হয়। ২০২২ সালের ডাটা অনুযায়ী বিশ্বব্যাপী দশ মিলিয়ন বা এক কোটি মানুষ এইডস সম্পৃক্ত রোগে মারা গিয়েছে। আর এখন পৃথিবীতে প্রায় চার কোটি মানুষ এতে আক্রান্ত হয়ে আছে। এইডসের শুরু থেকে প্রায় নয় কোটি মানুষ এতে আক্রন্ত হয়েছে। প্রতি বছর বিশ্বের সবগুলো দেশ একযোগে পহেলা ডিসেম্বর এইডস্ দিবসে বিভিন্ন কর্মসূচির মাধ্যমে এইডস্ সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষে বিভিন্ন অনুষ্ঠান পালন করে থাকে। গত কোভিড-১৯ বুঝিয়ে দিয়েছে একটি মহামারী চলাকালীন সময়ে কেউই নিরাপদ নয়, যতক্ষণ পর্যন্ত না সবাই নিরাপদ। আপামর জনগণকে বাদ দিয়ে আমরা কখনই সফলতা অর্জন করতে পারব না। কোভিড-১৯ এর মাধ্যমে আমরা উপলব্ধি করতে সক্ষম হয়েছি কিভাবে স্বাস্থ্য জীবনের অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ের সাথে সম্পৃক্ত যেমন-মানবাধিকার, সামাজিক নিরাপত্তা এবং অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি। ২০২৩ সালের ওয়ার্ল্ড এইডস ডে এর থিম বা মূল প্রতিপাদ্য বিষয় হলো, “লেট কমিউনিটিস লিড”। অর্থাৎ এইডসকে জানতে, বুঝতে ও নিয়ন্ত্রণ করতে প্রত্যেকটা সমাজকেই এগিয়ে আসতে হবে। এবং এভাবেই এইডস্ রোগের সংক্রমণ শেষ করতে হবে।
এইচআইভি ভাইরাস এইডস্ বিভিন্ন রোগ সৃষ্টি করে থাকে। এ ভাইরাস একজন থেকে অন্যজনে ছড়িয়ে পড়তে পারে রক্ত সঞ্চালন, এইচআইভি আক্রান্তের সুই, অপারেশনে ব্যবহৃত যন্ত্র পুনব্যবহারে এবং অবাধ যৌন সম্পর্কের মাধ্যমে। এছাড়াও এইচআইভি বহনকারী মহিলা থেকে গর্ভাবস্থায় এবং প্রসবকালীন সময়ে তার সন্তানের নিকট এ ভাইরাস বিস্তার লাভ করতে পারে। এইডস তখনই হয় যখন এইচআইভি সংক্রমণের কারণে বা সংক্রমনের আগেই যার রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা নষ্ট হয়ে গিয়েছে।
সর্বসাধারণের সচেতনতার জন্য এইচআইভি সংক্রমণের কিছু লক্ষণ জানা প্রয়োজন যা নি¤œরূপ:
(ক) দ্রুতগতিতে ওজন কমে যাওয়া।
(খ) দীর্ঘ দিন শুষ্ক কাশি।
(গ) বার বার জ্বর আসা।
(ঘ) রাতের বেলায় প্রচন্ড ঘামিয়ে যাওয়া।
(ঙ) অনবরত এবং বর্ণনাতীত দুর্বলতা।
(চ) কিছু স্থানের লসিকাগ্রন্থি ফুলে যাওয়া।
(ছ) এক সপ্তাহের বেশি সময় ডায়রিয়া চলতে থাকলে।
(জ) ব্যতিক্রমধর্মী কোনো দাগ জিহ্বা বা মুখের ভিতর দেখা দিলে।
(ঝ) স্মৃতিশক্তি ধীরে ধীরে নষ্ট হওয়া ও বিষন্নতা।
এইচআইভি আক্রান্তদের মুখের সমস্যা প্রায়ই দেখা যায়। এইচআইভি আক্রান্তদের তিন ভাগের একভাগেরও বেশি মানুষের মুখে সমস্যা থাকে। এটি হয়ে থাকে দুর্বল রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থার কারণে। এইচআইভি আক্রান্তদের মুখের সমস্যার লক্ষণসমূহ ঃ
ওরাল ক্যান্ডিডোসিস (থ্রাস)।
বার বার মুখে অ্যাপথাস আলসার।
হেয়ারি লিউকোপ্লাকিয়া।
জ্বরঠোসা।
ক্যাপোসিস সারকোমা (টিউমার)।
হারপিস সিমপ্লেক্স ভাইরাস সংক্রমণ।
লসিকাগ্রন্থি ফুলে যাওয়া।
শুষ্ক মুখ যার কারণে দাঁতে ক্ষয়, খাবার গ্রহণ এবং গলধ:করণে সমস্যা হতে পারে।
জিহ্বা বা মুখে কালো, সাদা বিশেষ ধরণের দাগ।
তার মানে এই নয় যে, উপরের মুখের ও শারীরিক লক্ষণসমূহ দেখা দিলেই কেউ এইচআইভি আক্রান্ত হয়েছেন বা এইডস্ রোগ আছে, এমনটি ভাবা মোটেও ঠিক নয়। এক্ষেত্রে আপনার চিকিৎসক প্রয়োজন মনে করলে আপনাকে এইডস্ পরীক্ষা করিয়ে নিতে পারেন । এইডস্ পরীক্ষার ফলাফল পজেটিভ হওয়ার অর্থ এই নয় যে, আপনার এইডস্ রোগ হয়ে গেছে। এমন অনেক মানুষ দেখা গেছে যারা এইচআইভি পজেটিভ কিন্তু তাদের অনেক বছর কোনো লক্ষণই দেখা যায়নি। এইচআইভি সংক্রমণের লক্ষণসমূহের উপর ভিত্তি করে সব সময় মন্তব্য করা ঠিক নয়। রুগীর ও রোগের সার্বিক অবস্থা বিবেচনা করে তবেই সিদ্ধান্ত নিতে হবে।
এইডস্ বিস্তারে বর্তমানে বাংলাদেশ দক্ষিণ এশিয়ার ঝুঁকিপূর্ণ দেশগুলোর অন্যতম। এইডস্ রোগীর পরিসংখ্যান যাই হোক না কেন এ কথা নির্দ্বিধায় বলা যায় যে, সময়োপযোগী ব্যবস্থা গ্রহণ না করলে পরিস্থিতি ভয়াবহ রূপ নিবে। কেবল সভা, সেমিনার নয় সত্যিকার অর্থে কাজ করতে হবে। একটি কথা না বললেই নয় যে, বর্তমানে মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের ১২ লক্ষ রোহিঙ্গা বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে। ইতিমধ্যে রোহিঙ্গাদের স্বাস্থ্য পরীক্ষায় বেশ কিছু এইচআইভি ভাইরাস পজিটিভ ব্যক্তিদের শনাক্ত করা হয়েছে। তবে অধিকাংশ রোহিঙ্গাদের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা হয়নি। তাই যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ না করলে আমাদের দেশের জনগণ এইডস্ -এর ব্যাপক ঝুঁকির মধ্যে পড়বে। এছাড়া মিয়ানমার থেকে ইয়াবা ট্যাবলেট পাচার বন্ধ করতে হবে, যা আমাদের দেশে মাদকাশক্তের সংখ্যা দ্রুত বাড়িয়ে তুলছে। এদের বেশীর ভাগই একসময় রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা হারিয়ে ফেলে, ফলে এইডসের মত ভয়াবহ রোগে সংক্রমিত হওয়ার ঝুঁকিতে থাকে। তাই এই বিষয়টি সবার খেয়াল রাখতে হবে। মনে রাখতে হবে মিয়ানমারে প্রচুর এইডস্ রোগীও রয়েছে।
তাই বাঁচতে হলে শুধু জানলেই হবে না, অন্যকে জানানোর মাধ্যমে সার্বিক সামাজিক সচেতনতার লক্ষে একযোগে কাজ করতে হবে। নষ্ট করার মতো সময় এক মুহুর্তও নেই। আসুন আমরা গোঁড়ামি ও চরম পন্থা বর্জন করে ধর্মীয় অনুশাসনগুলো মেনে নৈতিক মূল্যবোধ সম্পন্ন জীবন গড়ার মাধ্যমে প্রগতিশীল বাংলাদেশ গড়ার শপথ গ্রহণ করি।
ইমপ্রেস ডেন্টাল কেয়ার
মিরপুর-১৪ ব্যাটালিয়ন বউ বাজার, ঢাকা।
মোবাইল ঃ ০১৮১৭৫২১৮৯৭
ই-মেইল ঃ [email protected]
বিভাগ : স্বাস্থ্য
মন্তব্য করুন
আরও পড়ুন
আজারবাইজানে কপ-২৯ সম্মেলনে ঠাকুরগাঁওয়ের ইএসডিওর সাইড ইভেন্ট অনুষ্ঠিত
বেতন পেয়ে অবরোধ প্রত্যাহার করল বেক্সিমকোর শ্রমিকেরা
লেবাননে ইসরায়েলি বিমান হামলায় নিহত ৪৭
ট্রাম্প প্রশাসনের জন্য মনোনীত দুই সদস্যের বিরুদ্ধে যৌন কেলেঙ্কারির অভিযোগ
ট্রাম্প ব্যবসায়ী, আমরাও একজন ব্যবসায়ী পার্টনার চাই : টাইম ম্যাগাজিনকে ড. ইউনূস
আদানির দুর্নীতি : এবার ভারতেই বির্তকের মুখে মোদি সরকার
প্রেসিডেন্টর সঙ্গে তিন বাহিনী প্রধানের সৌজন্য সাক্ষাৎ
নিজ্জর হত্যায় মোদীর সংশ্লিষ্টতার দাবি কানাডার সংবাদমাধ্যমের ,‘হাস্যকর’ দাবি ভারতের
পাকিস্তানে যাত্রীবাহী গাড়িতে গুলি, নিহত ৪২
এক সপ্তাহে রিজার্ভ বাড়ল ৬ কোটি ১০ লাখ ডলার
ইউক্রেন যুদ্ধ বৈশ্বিক সংঘাতে পরিণত হচ্ছে : পুতিন
মুরগি-সবজিতে কিছুটা স্বস্তি, আলু এখনো চড়া
নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা, যা বলল যুক্তরাষ্ট্র
মার্কিন শ্রম প্রতিনিধি দল ঢাকা আসছে আজ
পার্থে শুরুতেই চাপে ভারত
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ১৮ সদস্যবিশিষ্ট কেন্দ্রীয় কমিটি ঘোষণা
সেনাকুঞ্জে খালেদা জিয়ার সঙ্গে জামায়াত আমীরের কুশল বিনিময়
সিঙ্গেল সিটের দাবিতে গভীর রাতেও হলের বাইরে ছাত্রীরা
ইসরাইলি হামলায় গাজায় নিহতের সংখ্যা ৪৪ হাজার অতিক্রম করলো
ট্রাম্প প্রশাসনের নতুন অ্যার্টনি জেনারেল পাম বন্ডি