নিজ্জর হত্যায় মোদীর সংশ্লিষ্টতার দাবি কানাডার সংবাদমাধ্যমের ,‘হাস্যকর’ দাবি ভারতের
২২ নভেম্বর ২০২৪, ০৯:৫২ এএম | আপডেট: ২২ নভেম্বর ২০২৪, ০৯:৫২ এএম
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি শিখ বিচ্ছিন্নতাবাদী কানাডার নাগরিক হরদীপ সিং নিজ্জর হত্যার পরিকল্পনা জানতেন এরকম খবর কানাডার গণমাধ্যমে প্রচারিত হওয়ায় ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলেছে যে “কালিমালিপ্ত করার প্রচারণা চলছে।”
কানাডার একটি সংবাদমাধ্যমে খবর ছাপা হয়েছে যে হরদীপ সিং নিজ্জর নামে যে শিখ বিচ্ছিন্নতাবাদী নেতা গতবছর খুন হন,‘সেই পরিকল্পনার কথা ভারতের প্রধানমন্ত্রী জানতেন না, এটা ভাবা যায় না।’যদিও তারা বলেছে মি. মোদীর সংশ্লিষ্টতা নিয়ে কোনও প্রমাণ তাদের কাছে নেই।
কানাডার এক সিনিয়র জাতীয় নিরাপত্তা কর্মকর্তা ওই হত্যার ঘটনার সঙ্গে ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ'র সংশ্লিষ্টতার কথা প্রকাশ করেছেন।সেই একই ‘নামহীন’ সূত্র উদ্ধৃত করে কানাডার সংবাদপত্র ‘দ্য গ্লোব অ্যান্ড মেইল’ জানিয়েছে যে ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা ‘নিজ্জর হত্যার’ পরিকল্পনা আগে থেকেই জানতেন।
ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল বলেন, “আমরা সাধারণত সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত খবর নিয়ে মন্তব্য করি না।কিন্তু যে ধরনের হাস্যকর খবর কানাডার এক সরকারি সূত্র থেকে একটি সংবাদমাধ্যমকে দেওয়া হয়েছে, তা যথাসম্ভব অবজ্ঞার সঙ্গে খারিজ করা উচিত।”
কানাডার পত্রিকা কি লিখেছে?
‘দ্য গ্লোব অ্যান্ড মেইল’ পত্রিকাটি কানাডার এক জাতীয় নিরাপত্তা কর্মকর্তাকে নাম না করে উদ্ধৃত করে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে বলে জানিয়েছে ভারতের সংবাদ সংস্থা পিটিআই।পত্রিকাটি লিখেছে যে হরদীপ সিং নিজ্জর হত্যার পরিকল্পনাটি আগে থেকেই জানতেন ভারতের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত ডোভাল ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর।
ভারতের একাধিক সংবাদ মাধ্যম ‘দ্য গ্লোব অ্যান্ড মেইল’ পত্রিকাটিকে উদ্ধৃত করে জানিয়েছে যে ওই প্রতিবেদনে এমনটাও লিখেছে কানাডার পত্রিকাটি যে তাদের কাছে এমন কোনও প্রমাণ নেই যে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীও পরিকল্পনাটির ব্যাপারে অবগত ছিলেন।কিন্তু তারা মনে করে যে ভারতের তিনজন অতি গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব একটি ‘খুন’-এর পরিকল্পনা নিয়ে আলোচনা করবেন অথচ প্রধানমন্ত্রী সেটা জানবেন না, এটা “অভাবনীয়।”
কানাডায় শিখ-হিন্দু সংঘর্ষ
চলতি মাসের গোড়ায় কানাডার একটি হিন্দু মন্দিরের সামনে বহু শিখ জড়ো হয়ে বিক্ষোভ দেখানোর সময়ে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ বাঁধে।টরন্টোর কাছে ব্রম্পটনের একটি হিন্দু মন্দিরের সামনে হলুদ রঙের খালিস্তানি পতাকা নিয়ে অনেক শিখ বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন,এরকম বেশ কয়েকটি ভিডিও অনলাইনে ছড়িয়ে পড়ে।
ওই বিক্ষোভের মধ্যেই দু পক্ষের সংঘর্ষ হয়।উত্তর আমেরিকা ভিত্তিক শিখ গোষ্ঠী ‘শিখস ফর জাস্টিস’ দাবি করেছিল, “খালিস্তানপন্থীদের ওপরে বিনা প্ররোচনায় হামলা হয়েছে।”ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী স্বয়ং ওই সংঘর্ষকে ‘পরিকল্পিত হামলা’ বলে অভিহিত করেছিলেন।এক্স হ্যান্ডেলে তিনি লেখেন, “এ ধরনের সংঘর্ষ ভারতের অবস্থানকে দুর্বল করে দিতে সমর্থ হবে না।
কে হরদীপ সিং নিজ্জর?
গত বছরের ১৯ জুন কানাডার সারে-তে একটি গুরুদ্বারের পার্কিং লটে কেউ বা কারা খালিস্তানি নেতা হরদীপ সিং নিজ্জরকে গুলি করে হত্যা করে।হরদীপ সিং নিজ্জর ভারতের কাছে একজন ‘মোস্ট ওয়ান্টেড’ হিসেবে চিহ্নিত ছিলেন – তিনি ‘খালিস্তান টাইগার ফোর্স’ বা কানাডাতে ‘শিখস ফর জাস্টিসে’র (এসএফজে) মতো একাধিক সংগঠনেরও প্রধান ছিলেন।
৪৬ বছর বয়সী মি. নিজ্জর আদতে পাঞ্জাবের জলন্ধরের বাসিন্দা।বছরকয়েক আগে তার জলন্ধরের সম্পত্তিও ভারত সরকার বাজেয়াপ্ত করে নেয়।ভারত সরকার কানাডার কর্তৃপক্ষর কাছে এর আগে অভিযোগ জানিয়েছে খালিস্তান-সমর্থক যে ‘জঙ্গি গোষ্ঠী’টি কানাডাতে দীর্ঘকাল ধরে সক্রিয়,তাদের হয়েও প্রচুর অর্থ সংগ্রহ করতেন হরদীপ সিং নিজ্জর।
ওই হত্যাকাণ্ডে ভারতের গোয়েন্দা বাহিনীর হাত থাকতে পারে।পরে কানাডার সরকারও সে বক্তব্যকে সমর্থন করেছে।লক্ষণীয় হলো, হরদীপ সিং নিজ্জরের হত্যার ঠিক এক বছর আগে রিপুদমন সিং মালিক নামে সাবেক একজন খালিস্তানপন্থী নেতাও কানাডাতে আততায়ীদের হাতে গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হন।
১৯৮৫ সালে বোমা হামলায় এয়ার ইন্ডিয়ার বিমান ‘কণিষ্ক’ ধ্বংস হয়ে যাওয়ার ঘটনায় রিপুদমন সিং মালিক ছিলেন প্রধান অভিযুক্ত– যাতে দোষী সাব্যস্ত হয়ে তাকে বহু বছর কারাদণ্ডও ভোগ করতে হয়েছিল।
ভারত-কানাডা সম্পর্কের অবনতি
শিখ বিচ্ছিন্নতাবাদী নেতা, কানাডার নাগরিক হরদীপ সিং নিজ্জর গুরুদ্বারের সামনে খুন হন।কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো আগেই অভিযোগ তুলেছিলেন যে ওই হত্যাকাণ্ডের পিছনে ভারতের ‘সরকারি এজেন্সি’গুলির হাত রয়েছে।তারপর থেকেই দুই দেশের সম্পর্কের অবনতি হতে শুরু করে।
গত মাসে ট্রুডো নতুন করে অভিযোগ করেন যে হরদীপ সিং নিজ্জরের হত্যা মামলায় ভারত সহযোগিতা করছে না।ওই মামলা সংক্রান্ত সমস্ত তথ্য ভারতের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে।তার এই দাবি অবশ্য নস্যাৎ করে দেয় ভারত।
দুই দেশের মধ্যে সম্পর্কের এতটাই অবনতি হয়েছে যে ভারত সম্প্রতি কানাডা থেকে হাইকমিশনার সঞ্জয় কুমার ভার্মা ও অন্য কয়েকজন কূটনীতিককে ফিরিয়ে এনেছে আর কানাডার ছয় কূটনীতিককে বহিষ্কার করেছে।তবে কানাডার প্রধানমন্ত্রী তার এক সাংবাদিক সম্মেলনে দাবি করেছিলেন যে ভারতীয় কূটনীতিকদের আসলে তার দেশই বহিষ্কার করেছে। তথ্যসূত্র : বিবিসি বাংলা
বিভাগ : আন্তর্জাতিক
মন্তব্য করুন
আরও পড়ুন
মুকসুদপুরে বিএনপির দুই গ্রুপের সংঘর্ষের ঘটনায় এলাকায় উত্তেজনা, প্রতিবাদ জানালো আ.লীগ
আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে সাকিবের বোলিং নিষিদ্ধ
এই সরকার বিপ্লবের চেতনাকে পুরোপুরি ধারণ করতে পারেনি: মাহমুদুর রহমান
শার্শা থানা প্রেসক্লাবের উদ্যোগে সাংবাদিকদের মিলন মেলা
মুখ্য সংগঠক হান্নান মাসউদের ওপর ছাত্রলীগের হামলা!
সোনারগাঁওয়ে শীতবস্ত্র বিতরণ ও ফ্রি মেডিকেল ক্যাম্প অনুষ্ঠিত
রাষ্ট্র সংস্কারে ১৫ দফা প্রস্তাবনা: পৃথক শরীয়া আদালত প্রতিষ্ঠার দাবি
কলম্বিয়ায় বিমান বিধ্বস্ত হয়ে নিহত ১০
দেশের সংগ্রামের ইতিহাস-সংস্কৃতি বিশ্বে তুলে ধরার আহ্বান উপদেষ্টা নাহিদের
ভারতে চার বাংলাদেশি নাগরিক গ্রেপ্তার
পথশিশুদের নিয়ে বিপিএলের ট্রফি উন্মোচন
তামিমকে বিসিবির ধন্যবাদ
গণহত্যাকারীদের বিচারিক প্রক্রিয়া বাধাগ্রস্ত করা হচ্ছে: সারজিস
দ্বিতীয় চালানে ভারত থেকে এলো ২৭ হাজার টন চাল
গাঁজা সেবনের অভিযোগে নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ের ৪ শিক্ষার্থীকে শাস্তি
উইন্ডিজ সিরিজে পাকিস্তান দলে ৭ পরিবর্তন, নেই আফ্রিদি
সুইজারল্যান্ডে গ্লোবাল এসএমই সামিট অনুষ্ঠিত হবে আগামী ২৩-২৫ এপ্রিল
ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে প্রবাসীদের ভূমিকা অপরিসিম : সিলেটে কাইয়ুম চৌধুরী
ডার্ক ওয়েবে গ্রাহকের তথ্য বিক্রির অভিযোগ : সিটি ব্যাংকের ব্যাখ্যা
মার্কেন্টাইল ব্যাংকের ‘বার্ষিক ব্যবসায়িক সম্মেলন-২০২৫’ অনুষ্ঠিত