কেন মনোরোগ চিকিৎসক! কেন মনোরোগ চিকিৎসক!
০৪ অক্টোবর ২০২৪, ০৪:১৩ পিএম | আপডেট: ০৪ অক্টোবর ২০২৪, ০৪:১৩ পিএম
কথায় বলে মানুষের মন বুঝা দায়। নিজের মনকেই কি সবসময় চেনা বা বুঝা যায়! মনের কার্যকলাপ জটিল এবং বহুমাত্রিক। অন্যদিকে দেহের প্রতিটা যন্ত্র চলে নিয়ম মেনে, নিয়মের বাইরে যাওয়ার সাধ্য তার নাই। নিয়মতান্ত্রিক দেহকে নিয়ন্ত্রণ করে বহুমাত্রিক মন। বর্তমানে জীবনযাপন নদীর স্রোতের মতো সরল নয়। নিত্যদিন হাজার রকমের পরিস্থিতির মুখোমুখি হতে হতে মনেরও মন খারাপ হয়, শান্ত স্রোতে ঘূর্ণি ওঠে। মনেরও অসুখ হয়। কিন্তু দেহের অসুখ সারাতে যতটা তৎপর হয়ে উঠি, মনের অসুখ নিয়ে যেন ততই অনীহা।
ছেলেবেলা হতে জেনে এসেছি স্বাস্থ্যই সকল সুখের মূল। দেহের মতো মনকেও সুস্থ রাখতে হয়। তবেই স্বাস্থ্য হয়ে ওঠে সুখের ভিত্তি। দেহের অসুখ যতটা সহজে বুঝতে পারা যায়, মনের অসুখকে অনেকেই অসুস্থতাই মনে করতে পারি না। অথচ জীবন অসহ্য হয়ে ওঠে। ধারাবাহিক উদ্বেগ, অস্থিরতা, বিষণ্ণতা, রাগ, ট্রমা, খাওয়ায় অনীহা, একাকীত্ব, ঘুম না আসা, আতঙ্ক, আসক্তি মানসিক রোগের উপসর্গ। দীর্ঘদিন এমন অবস্থা চলতে থাকলে ফলাফল ভয়াবহ হতে পারে। এমন অসহনীয় অবস্থা থেকে উদ্ধার করতে পারেন মনের ডাক্তার, যাকে ডাক্তারি ভাষায় বলে মনোরোগ চিকিৎসক।
মনের ডাক্তার বা মনোরোগ চিকিৎসক শুধু অসুস্থ মনের চিকিৎসা করেন বিষয়টি মোটেও এমন নয়। তিনি মানসিক সমস্যা মোকাবিলা করার কৌশল শিখতে সাহায্য করেন। পারস্পরিক সম্পর্কে জেগে ওঠা অনাহূত সমস্যা, পারিবারিক অশান্তি, কর্মক্ষেত্রে চাপ, সামাজিক চাপ, অথবা জীবনধারার অন্যান্য চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় তিনি কার্যকর দিকনির্দেশনা দেন, সুস্থ ও স্বাভাবিক জীবন যাপনে সহযোগিতা করেন।
একটা সময় আমাদের দেশে মনোরোগ চিকিৎসককে মনে করা হতো পাগলের ডাক্তার। "পাগল মন মন রে, মন কেনো এতো কথা বলে!" গানের সমঝদারও মনের ডাক্তারের কাছে যাওয়াটাকে পাগল হওয়ার লক্ষ্মণ মনে করতেন। ধীরে ধীরে এই মানসিকতার পরিবর্তন ঘটছে। তারপরও অধিকাংশ মানুষ মানসিক স্বাস্থ্য নিয়ে সচেতন নয়, নিজের মানসিক সমস্যা নিয়ে ডাক্তারের কাছে যেতে আগ্রহী হন না। কিন্তু শিশু থেকে বৃদ্ধ পর্যন্ত যে কোনো বয়সী মানুষেরই মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যা দেখা দিতে পারে। এটি অস্বাভাবিক কিছু নয়। অনেক সময় কারো কারো মনের অসুখের বিষয়টি পরিবার বা বন্ধুরা আগে বুঝতে পারে। এক্ষেত্রে তাকে মনোরোগ চিকিৎসক বা বিশেষজ্ঞের কাছে যাবার জন্য অনুপ্রাণিত করতে হবে। তার সাথে সহনশীল বিবেচক আচরণ করতে হবে।
একজন মনোরোগ চিকিৎসক তার রোগীকে লক্ষ্য নির্ধারণ করতে, শক্তি বৃদ্ধি করতে এবং সম্ভাবনাময় জীবনকে সমৃদ্ধ করতে সর্বোচ্চ সহায়তা করেন। তিনি আত্ম-সচেতনতা বৃদ্ধি করতে এবং আরও সচেতন সিদ্ধান্ত নেওয়ার কৌশলে দক্ষ করে তোলেন। সকল মনোরোগ চিকিৎসক ও বিশেষজ্ঞ রোগীর তথ্য, মানসিক সমস্যা এবং সমস্যা উদ্ভূত সংকটগুলি অন্যদের কাছ থেকে সম্পূর্ণরূপে গোপন রাখেন। মনোরোগ চিকিৎসককে এই দায়বদ্ধতা রক্ষা করতে হয়।
মনোরোগ চিকিৎসক শুধু রোগ নিরাময় করেন না, জীবনের প্রতি নতুন দৃষ্টিভঙ্গি এনে দেন। মনের অসুখকে অবহেলা না করে, সময়মতো চিকিৎসা গ্রহণ করে জীবনে ফিরিয়ে আনা যায় শান্তি, স্বস্তি এবং ভারসাম্য। নিজের এবং প্রিয়জনের মানসিক স্বাস্থ্য নিয়ে সচেতন থাকা প্রয়োজন। সুস্থ জীবন যাপন নিশ্চিতে মনের যত্ন নিন, দেহের অসুখের মতো মনের অসুখকেও "না" বলতে শিখি, সুস্থ দেহ আর সুস্থ মন মিলেই সুস্বাস্থ্য। আর সুস্বাস্থ্য যে সকল সুখের মূল সে তো আমরা ছেলেবেলা থেকেই শুনে এসেছি, জেনে এসেছি।
বিভাগ : স্বাস্থ্য
মন্তব্য করুন
আরও পড়ুন
মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাস তুলে ধরতে হবে : তারেক রহমান
ঋণখেলাপিরা যাতে মনোনয়ন না পায় চেষ্টা করবো : মির্জা ফখরুল
অর্থনৈতিক বৈষম্য দূর না হলে রাজনৈতিক সংস্কার টেকসই হবে না : বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি
টিসিবি’র এক কোটি ফ্যামিলি কার্ডধারীর মধ্যে ৩৭ লাখই ভুয়া: বাণিজ্য উপদেষ্টা
ভোজ্যতেলের সরবরাহ নিশ্চিতে কারখানা পরিদর্শন ভোক্তা অধিকারের
গণপরিবহনে শৃঙ্খলায় কাউন্টার স্থাপনের পরিকল্পনা
রাজধানীর তিন পার্কে ভেন্ডারের চুক্তি : শর্ত ভঙ্গের তদন্তে ডিএনসিসি
বাবা-মায়ের পুরোনো বাড়িতে যাই : শফিকুল আলম
জুলাই গণঅভ্যুত্থানে আহতদের চিকিৎসায় ১৫০ কোটি টাকা অনুদান
২০২৪ সালে ৩১০ শিক্ষার্থীর আত্মহত্যা
ভারতীয় ৭২ গণমাধ্যমে বাংলাদেশ নিয়ে অপতথ্য প্রচার
লেবানন থেকে দেশে ফিরলেন আরো ৪৭
প্লাটফর্ম বিষয়ক প্রশিক্ষণ অনুষ্ঠিত
শক্তিশালী অর্থনীতি ও গর্বিত জাতি গড়তে শহীদ জিয়ার দর্শন ধারণ করতে হবে : আমির খসরু
কী আছে তৌফিকার লকারে?
ঘটনার তিনদিন পর থানায় মামলা
অনিয়ম ঢাকতে তড়িঘড়ি করে নির্বাচনের পাঁয়তারা
শেবাচিম হাসপাতালের মেডিসিন বিভাগের দুরবস্থা
৯৬টি সিএনজি ভাঙ্গাড়ি হিসাবে সাড়ে ১১ লাখ টাকায় বিক্রি
৩১ দফা জনগণের কাছে পৌঁছে দিতে রূপগঞ্জে বিএনপির সমাবেশ