পাহাড় নিধন পুরোপুরি বন্ধ করতে হবে
১১ জুন ২০২৩, ১০:০৫ পিএম | আপডেট: ১২ জুন ২০২৩, ১২:০০ এএম
চট্টগ্রামে পাহাড়কাটা বন্ধে সম্মিলিত সমন্বয়, কমিটি গঠন, বিশেষ এনফোর্সমেন্ট টীম গঠন, হটলাইন প্রতিষ্ঠা, সিডিএ কর্তৃক পাহাড়ি এলাকায় প্রকল্প অনুমোদন না দেয়া, পাহাড়ি এলাকায় কোনো ধরনের উন্নয়ন প্রকল্প গ্রহণ না করা এবং তা সুরক্ষার দাবি জানিয়েছেন পরিবেশকর্মী ও সংশ্লিষ্ট সরকারি-বেসরকারি দপ্তর ও প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিবৃন্দ। গতকাল রোববার নগরীর পর্যটন মোটেল সৈকতের সাঙ্গু হলে আয়োজিত চট্টগ্রাম মহানগরের পাহাড় কাটা রোধে মতবিনিময় সভায় এসব দাবি জানানো হয়।
প্রধান অতিথি সিটি মেয়র এম রেজাউল করিম চৌধুরী বলেন, বাস্তবে পাহাড় নিয়ে স্বাধীনতা পরবর্তীতে কোনো জরিপ হয়নি। চট্টগ্রামে বালির পাহাড়। একটু গর্ত করে দিলেই সেটা ধ্বসে পড়ে। পাহাড় প্রকৃতির সৃষ্টি পাহাড় গড়া যায় না। পাহাড়কে হত্যা করছে দখলকারীরা। আইনে পাহাড় খেকোদের যাবজ্জীবন কারাদ-ের বিধান রাখতে হবে। অনেক সময় ভূয়া দলিল করে সিডিএ থেকে প্ল্যান নেয়া হচ্ছে। সরেজমিন তদন্ত করে সিডিএ এর প্ল্যান দিতে হবে। পাহাড় রক্ষায় চসিক দায়িত্ব নিবে, তবে চসিকের ক্ষমতার সীমাবদ্ধতার কথা ভাবতে হবে। মেয়র হিসাবে ওয়াদা দিতে পারি সমস্ত সংস্থাকে একত্রিত করে কাজ করবো। দ্রুততার সাথেই আমরা একটি কমিটি করবো যাতে আর একটিও পাহাড়ে কোপ না পড়ে।
চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান (সিডিএ) এম. জহিরুল আলম দোভাষ বলেন, চট্টগ্রামে আমরা ড্যাবকে ব্যবহার করে পাহাড় কাটা কিছুটা নিয়ন্ত্রণ করতে পেরেছি। আমার সময় আমি পাহাড়ি এলাকায় কোনো প্ল্যান অনুমোদনের ক্ষেত্রে বিশেষ নজর দেব। সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টা থাকলে আমরা পাহাড় রক্ষা করতে পারবো।
সভায় সূচনা বক্তব্যে ও প্রেজেন্টেশন উপস্থাপন করেন বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতির (বেলা) প্রধান নির্বাহী সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান। এ সময় তিনি বলেন, চট্টগ্রাম নগরে যেসব পাহাড় কাটা হয়েছে তার মধ্যে ৭৪ শতাংশ পাহাড় শুধু পাঁচলাইশ মৌজাতেই কাটা হয়েছে। আমরা আশা করি আজকের মতবিনিময়ের পর খুব দ্রুততার সাথেই একটি মাস্টার প্ল্যান তৈরি হবে। পাহাড়গুলো সুরক্ষায় সাইনবোর্ড স্থাপনের যে নির্দেশনা তা বাস্তবায়ন হবে। তিনি বলেন, হাইকোর্ট এবং সরকারের বিভিন্ন সময়ে জারি হওয়া পাহাড় কাটায় নিষেধাজ্ঞার আদেশ উপেক্ষা করে চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, বান্দরবান, রাঙ্গামাটি এবং খাগড়াছড়িতে কাটা হয়েছে পাহাড়। পাহাড় কেটে কিভাবে জীববৈচিত্র্য রক্ষা হবে? ১৯৭৬ সালে চট্টগ্রামে ৩২ দশমিক ৩৭ বর্গকিলোমিটার পাহাড় ছিল। ২০০৮ সালে তা কমে ১৪ দশমিক দুই বর্গকিলোমিটারে নেমে আসে।
সরকারের বিভিন্ন সময়ে জারি হওয়া আদেশ উল্লেখ করে তিনি বলেন, ১৯৮৩ সালে সরকারি আদেশ ছিল-চট্টগ্রামের কোথাও কোন পাহাড় কাটা যাবে না। ২০০৭ সালে প্রজ্ঞাপন জারি হয়েছিল- ‘জাতীয় বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ প্রয়োজন ছাড়া পাহাড় কাটা যাবে না’। উচ্চ আদালত ২০১২ সালের ১৯ মার্চ আদেশ জারি করেছিলেন, ‘চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, বান্দরবান, খাগড়াছড়ি এবং রাঙ্গামাটিতে কোন পাহাড় কাটা যাবে না’। তিনি বলেন, সরকারের বিভিন্ন সময়ে জারি করা আদেশ এবং উচ্চ আদালতের রায় উপেক্ষা করেই এই অঞ্চলে পাহাড় কাটা হয়েছে। উচ্ছেদ করা পাহাড়ে আবার গাছ লাগানোর কথাও বলা হয়েছে। পাহাড় কেটে কীভাবে জীববৈচিত্র্য রক্ষা হবে সেটি আমাদের মাথায় ধরে না।
পরিবেশ অধিদপ্তর চট্টগ্রাম নগরের উপ-পরিচালক মিয়া মাহমুদুল হক বলেন, আমরা গত কয়েক বছরে মোট ৮৫টি মামলা করেছি। এরমধ্যে শুধুমাত্র ২০২২ সালে এই মামলার সংখ্যা ২২টি। আমরা যে আইনের ভেতরে আছি তার সর্বোচ্চ প্রয়োগ করার চেষ্টা করছি। কিন্তু চসিক, সিডিএ এবং জেলা প্রশাসনসহ অন্যান্য সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলোর সহযোগিতা না পাওয়ায় আমরা সফল হচ্ছি না। সিডিএ যদি নকশা অনুমোদন না দেয় তাহলে আমরা বাধাগ্রস্ত হবো না।
চসিকের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ মোহাম্মদ তৌহিদুল ইসলামের সভাপতিত্বে সভায় ইস্ট ডেল্টা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি অধ্যাপক সিকান্দার খান, এ এল আর ডি’র নির্বাহী পরিচালক শামসুল হুদা, জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও কাট্টলী সার্কেলের এসি (ল্যান্ড) উমর ফারুক প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
বিভাগ : বাংলাদেশ
মন্তব্য করুন
এই বিভাগের আরও
আরও পড়ুন
সিংগাইরের তহরা হত্যা মামলা : শিক্ষক লালমুদ্দিনের ব্লাকমেইলের শিকার ছাত্রী আইরিন আক্তার
১৫ জানুয়ারি বিদায়ী ভাষণ দেবেন জো বাইডেন
’৭১ প্রশ্নে জামায়াতে নতুন আলোচনা, আসতে পারে সিদ্ধান্ত
ঘণকুয়াশায় ৩ ঘন্টা পর আরিচা-কাজিরহাট এবং পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া নৌরুটের ফেরি সার্ভিস চালু হয়েছে
রূপপুর বিদ্যুৎকেন্দ্রের মালামাল নিয়ে বিদেশি জাহাজ মোংলায়
চীন সফরে রেচেল রিভস , যুক্তরাজ্যের উন্নতির প্রতিশ্রুতি
দায়িত্ব পেলে আমরা ধর্ম ও দল দেখব না : জামায়াতের আমির
'মুরুব্বী মুরুব্বী কামডা করল কী'
বায়ুদূষণের শীর্ষে কলকাতা, ঢাকা দ্বিতীয়
তথ্য গোপন মামলায় ট্রাম্প দোষী সাব্যস্ত হলেও নেই কোনও শাস্তি
সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে লড়াইয়ে বিজয়ী কারেন বিদ্রোহীরা, প্রশাসন গঠনে চ্যালেঞ্জ
ভ্যাট ও শুল্ক বৃদ্ধির ইস্যুতে প্রতিক্রিয়া জানাবে জাতীয় নাগরিক কমিটি
লস অ্যাঞ্জেলেসে ভয়াবহ দাবানলে নিহতের সংখ্যা ১১, সংকট আরও বাড়ছে
মেঘনায় বাল্কহেড-স্পিডবোট সংঘর্ষে নিহত অন্তত ২, একাধিক নিখোঁজ
গাজায় টেলিকম সেবা বন্ধের আশঙ্কা , জ্বালানি সংকটে জরুরি সেবা বিপর্যস্ত
সিরিয়ায় আসাদ অনুগত কর্মকর্তার জনসম্মুখে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর
ঘণকুয়াশায় আরিচা-কাজিরহাট এবং পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া নৌরুটের ফেরি সার্ভিস বন্ধ
ইয়েমেনে বিদ্যুৎ কেন্দ্র-বন্দরে ইসরায়েলি যুদ্ধবিমানের হামলা
ইসরায়েলি বিমান হামলায় গাজায় নিহত আরও ২১, মানবিক বিপর্যয় চরমে
ফেনীর মহিপালে এক শিশুসহ ৭ রোহিঙ্গাকে আটক