বিদেশ গমনেচ্ছুদের সেবা মিলছে ঘরে বসেই
১২ আগস্ট ২০২৩, ১১:১০ পিএম | আপডেট: ১৩ আগস্ট ২০২৩, ১২:০১ এএম
বিদেশ গমনেচ্ছু কর্মীরা ঘরে বসে অনলাইনেই পাচ্ছেন বহির্গমন ছাড়পত্র বা ইমিগ্রেশন ক্লিয়ারেন্স। জুলাই মাস থেকে অনলাইনে বহিগর্মণ ছাড়পত্র প্রদান শুরু করেছে ইমিগ্রেশন ক্লিয়ারেন্স প্রদানকারী সংস্থা বিএমইটি। তাদের এই উদ্যোগে একদিকে যেমন বিদেশ গমনেচ্ছুদের হয়রানি কমবে তেমনি কমবে অর্থের অপচয়। এর ফলে বছরে সাশ্রয় হবে শতকোটিরও বেশি টাকা। গতকাল বিএমইটির মহাপরিচালক মো.শহীদুল আলম গতকাল শনিবার তার দপ্তরে সাংবাদিকদের এ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
বিএমইটির মহাপরিচালক বলেছেন, ঘরে বসেই বহির্গমন ছাড়পত্র প্রদানের এই উদ্যোগটি হলো স্মার্ট বাংলাদেশের প্রতিচ্ছবি। আগে বিএমইটিতে প্রতিদিন বিকেলে যেখানে দুই হাজার মানুষের সমাগম হতো এখন সেখানে দুই’শ মানুষও আসছেন না। কারণ ঘরে বসেই ফাইল আপলোড করছে, আর ঘরে বসেই স্মার্টকার্ডটি ডাউনলোড করছে, এর চাইতে ভালো কিছু হতে পারেনা। তিনি বলেন, শুধু মাত্র স্মার্ট কার্ডকে যদি আমরা ডাউনলোড উপযোগী করি তাহলে ১২ লাখ কার্ড বেঁচে যায় এবং তার প্রিন্টিং খরচও বাঁচে। এর সাথে যে শ্রম জড়িত, সেটা বেঁচে যায়। আমরা ১‘শ টাকা করেও যদি কার্ডের মূল্য ধরি তাহলে সরকারের ১২ কোটি টাকা সাশ্রয় হয়। আর একটা কর্মীকে এই কার্ডটা পাওয়ার জন্য এজেন্সি অফিসে ভিজিট, বিএমইটিতে ভিজিট বা দালালের সাথে সাক্ষাত করার একটা বড় বড় প্রক্রিয়া ফেস করতে হতো। এটা ফেস করতে যদি ৫’শ টাকা করেও খরচ হয়, তাহলে খরচ হয় আরো ৬০ কোটি টাকা। সে হিসাবে একেবারে জেনুইন খরচ অন্তত ১’শ কোটি টাকা; এরফলে সেই অর্থ যেমন সাশ্রয় হবে, তেমনি বাঁচবে সময়ের অপচয়ও।
বিএমইটির বহির্গমন শাখার পরিচালক আব্দুল হাই জানান, গত জুলাই মাসে ইমিগ্রেশন ক্লিয়ারেন্স পেয়েছে ১ লাখ ২৫ হাজার ৮৫০ জন। যা রেকর্ড সংখ্যক। তিনি বলেন, ‘আমাদের একটা শ্লোগান আছে- ‘ঢাকা আসার দরকার নাই, ঘরে বসেই ইমিগ্রেশন ক্লিয়ারেন্স পাই’, ভিসা যার ইমিগ্রেশন ক্লিয়ারেন্স তার, অর্থাৎ আপনি যদি ভিসা পেয়ে যান বা আপনার বৈধ কাগজপত্র থাকলে বাংলাদেশের যে কোন জায়গায় বসে মোবাইলেই আপনি ডিজিটালি আমি প্রবাসী অনলাইনে আবেদন করতে পারবেন। জুলাই মাসে আমরা রেকর্ড সংখ্যক কর্মী ১ লাখ ২৫ হাজার ৮৫০ জন বিদেশের যাওয়ার জন্য ইমিগ্রেশন ক্লিয়ারেন্স দিতে পারছি। ম্যানুয়াল পদ্ধতিতে আগে যখন বহিগর্মন হতো তখন একজন কর্মী জানতে পারতোনা যে তার বহির্গমন ছাড়পত্রের কাজটি সম্পন্ন হয়েছে কিনা। আর এখন এটা ঘরে বসেই একজন কর্মী তার প্রত্যেক কাগজের আপডেট পাবেন।
বিদেশে জব ভিসা পাওয়ার পর একজন বিদেশগামী কর্মীর আনুষাঙ্গিক কার্যক্রম শেষ হলে বিদেশ যাওয়ার উপযোগী হিসেবে তাকে সংগ্রহ করতে হয় ইমিগ্রেশন ছাড়পত্র বা বিএমইটি স্মার্ট কার্ড। আর এই কার্ড বা বহিগর্মণ ছাড়পত্র সরবরাহ করে থাকে প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের জনশক্তি কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষাণ ব্যুরো। ম্যানুয়াল পদ্ধতিতে ২০১০ সাল থেকে ইমিগ্রেশন ক্লিয়ারেন্স কার্ডের ব্যবহার শুরু করেছে প্রতিষ্ঠানটি। যা সংগ্রহ করতে বিদেশ গমনেচ্ছুদের দিনের পর দিন ঘুরতে হতো দালাল বা এজেন্সির দ্বারে দ্বারে। আর প্রতিদিন এসে লম্বা লাইনে দাঁড়াতে হতো বিএমইটির বহির্গমন ছাড়পত্র বিভাগে। সময়মতো ইমগ্রেশন ক্লিয়ারেন্স কার্ড না পেয়ে ফ্লাইট ক্যানসেলের ঘটনাও ছিলো অহরহ। এর ফলে বিদেশ গমনেচ্ছুদের সময় যেমন অপচয় হতো তেমনি ক্ষতিগ্রস্ত হতেন অর্থনৈতিকভাবেও। একইসাথে এসব কার্ড আমদানি থেকে শুরু বিদেশগার্মী কর্মীর নামে প্রিন্ট করা পর্যন্ত বছরে খরচ হতো অন্তত ২০ কোটি টাকা। এছাড়াও বিএমইটির এই কার্ড পেতে সময়ের অপচয় থেকে শুরু করে নানা ভোগান্তিতে পড়তেন বিদেশগামীরা। যার মাধ্যমে ক্ষতি হতো আরো প্রায় ৬০ কোটিরও বেশি টাকা। এই পদ্ধতিটার ডিজিটাইলাইজেশনের ফলে এখন থেকে সাশ্রয় হবে বছরে প্রায় শত কোটিরও বেশি টাকা। আর হয়রানি এবং ভোগান্তিও নেমে আসবে একেবারে শূণ্যের কোটায়। বাঁচবে সময়ের অপচয়ও।
গত ২৪ জুলাই থেকে বদলে গেছে এই ম্যানুয়েল পদ্ধতির ইমিগ্রেশন ক্লিয়ারেন্স কার্ডের ব্যবহার। এখন ঘরে বসেই ‘আমি প্রবাসী’ অ্যাপের মাধ্যমে বিদেশগামীরা পাচ্ছেন বিএমইটির এই গুরুত্বপূর্ণ কার্ডটি। এজন্য বিএমইটিতে না এসে বাংলাদেশের যেকোন জায়গায় বসে অনলাইনে আবেদন করা যাবে বিএমইটি ক্লিয়ারেন্সের জন্য এবং ক্লিয়ারেন্স পাওয়ার পর বিএমইটিতে না এসে অনলাইনেই ডাউনলোড করা যাবে যেকোন স্থানে বসেই। এমন স্মার্ট পদ্ধতি প্রবর্তনের সুফল পাচ্ছেন বিদেশগামীরা। এতে বিএমইটি এলাকায় দালালদের আনাগোনা কমেছে। সেইসাথে ওয়ান স্টপ সিস্টেমটাও ডিজিটাল হওয়ায় সেবাগ্রহীতারা ভোগান্তি ছাড়াই ঘরে বসেই তাদের সার্ভিস পাচ্ছেন।
এদিকে রিক্রুটিং এজেন্সীর লাইসেন্স ভাড়া দেয়া ঠেকাতে কঠোর নির্দেশনা জারি করেছে বিএমইটিএ। লাইসেন্স না দেখিয়ে বিএমইটি অফিসে কেউ ঢুকতে পারবেন না। আর প্রতারণার অভিযোগ উঠলে তা নিরসনে শুনানির জন্য রিক্রুটিং এজেন্সী কর্তৃপক্ষকে যেতে হবে ভুক্তভোগীর এলাকার জনশক্তি কর্মসংস্থান অফিসে।
বিভাগ : বাংলাদেশ
মন্তব্য করুন
এই বিভাগের আরও
আরও পড়ুন
শেষ বিকেলে দ্রুত উইকেট হারিয়ে চাপে ভারত
নারীকে যৌন নিপীড়ন: খোদ মহারাষ্ট্রে ইসকন সন্ন্যাসী জুতাপেটা
অনূর্ধ্ব-১৯ নারী টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের দল ঘোষণা
আফগানিস্তানকে পেয়ে আবারও জ্বলে উঠলেন উইলিয়ামস
অস্ট্রিয়ার তিরোলে তুষারধসে বাবা-ছেলের মৃত্যু
বিয়ে-বাচ্চা সব মানুষ হওয়ায় দিছে: জেফার
নতুন শাসকদের সাথে সংঘর্ষে সিরিয়ায় আসাদ অনুসারীদের হাতে ১৪ জন নিহত
কালকিনিতে ইউপি সদস্য নিহত, আহত ১০
রাজধানীতে শীতের ছোঁয়ায় শীতল সবজির বাজার
উত্তরা ক্লাবের প্রেসিডেন্ট হলেন ফয়সাল তাহের
মাদারীপুরে আধিপত্য বিস্তার নিয়ে ২ গ্রুপের সংঘর্ষ, ইউপি সদস্যকে কুপিয়ে হত্যা
সংস্কার ও নির্বাচনী প্রস্তুতি একই সঙ্গে চলবে: প্রধান উপদেষ্টা
ইংরেজি নববর্ষে আতশবাজি ও পটকা ফোটানো থেকে বিরত থাকার নির্দেশ
ইন্টারপোলের তালিকায় হাসিনার নাম যুক্ত হওয়া নিয়ে যা জানা গেল, খোঁজা হচ্ছে আরও যেসব বাংলাদেশিকে
দক্ষিণ কোরিয়ার অন্তর্বর্তী প্রেসিডেন্টের বিরুদ্ধে অভিশংসন ভোট, মুদ্রার মান পতন
কটিয়াদীতে তুচ্ছ ঘটনায় শিক্ষার্থীকে কুপিয়ে জখম
জাহাজে ছেলে হত্যা: শোকে মারা গেলেন বাবা
ভারত থেকে অবৈধ অনুপ্রবেশকালে বিজিবি’র হাতে ১৬ বাংলাদেশি আটক
সৈয়দপুরে রাস্তা সংস্কারে নিম্নমানের কার্পেটিংয়ের অভিযোগে কাজ বন্ধ করে দিলো ছাত্ররা
শার্শায় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে ২ গ্রুপে সংঘর্ষ