বর্তমান কার্যক্রম নিয়ে দ্বিমুখী বক্তব্য
১৩ জানুয়ারি ২০২৫, ১২:০৮ এএম | আপডেট: ১৩ জানুয়ারি ২০২৫, ১২:০৮ এএম
দেশের তৈরি পোশাকখাতের ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন-বাংলাদেশ গার্মেন্ট ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিজিএমইএ) নির্বাচন চলতি বছরের এপ্রিলের তৃতীয় সপ্তাহে অনুষ্ঠিত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এমনটাই জানিয়েছে ব্যবসায়ী জোটটির অভ্যন্তরীণ কিছু সূত্র।
বিজিএমইএ নির্বাচন নিয়ে প্রশাসক আনোয়ার হোসেন গত শনিবার নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতাকারী সম্মিলিত পরিষদ ও ফোরামের শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। বৈঠকে সব পক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে সর্বসম্মতিক্রমে ঘোষণা করা হয় চলতি জানুয়ারি মাসের শেষ নাগাদ নির্বাচন পরিচালনা বোর্ড গঠন করা হবে এবং এপ্রিল মাসের শেষ নাগাদ নির্বাচন কার্যক্রম সম্পন্ন হবে। রাজধানীর উত্তরায় বিজিএমইএ কমপ্লেক্সে অনুষ্ঠিত বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন বিজিএমইএ-এর সাবেক সভাপতি কাজী মনিরুজ্জামান, এস এম ফজলুল হক, আনোয়ার-উল-পারভেজ, খন্দকার রফিকুল ইসলাম এবং সম্মিলিত পরিষদ ও ফোরামের প্যানেলের নেতারা। বৈঠকে স্বচ্ছ, অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন আয়োজন নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়। এ সময় পোশাক শিল্পকে আরও এগিয়ে নেওয়ার জন্য সবাই একসঙ্গে কাজ করবেন বলে জানান। এ ছাড়া বৈঠকে পোশাক শিল্পের সমসাময়িক বিভিন্ন ইস্যু, বিশেষ করে চলমান জ্বালানি সংকট, ব্যাংক ও এনবিআর সংক্রান্ত বিভিন্ন সমস্যা এবং শিল্পের জন্য করণীয় বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা করা হয়।
বিজিএমইএ কর্মকর্তারা বলেছেন, নির্বাচনের আগে আগামী ২৬ জানুয়ারি একটি নির্বাচন বোর্ড গঠন করা হবে। নাম না প্রকাশের শর্তে এসব কর্মকর্তারা উল্লেখ করেন, নির্বাচন বোর্ড গঠনে এরমধ্যেই বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের বাণিজ্য সংগঠন অনুবিভাগ (ডিটিও) এর পরিচালককে একটি প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে।
বিজিএমইএ’র প্রশাসক মো. আনোয়ার হোসেন বলেন, অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের আয়োজন করতে আমরা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ, যার মাধ্যমে এই ব্যবসায়ী সমিতি পরিচালনার ভার একটি নির্বাচিত কর্তৃপক্ষের হাতে তুলে দেওয়া হবে। জানুয়ারির শেষদিকে হালনাগাদ করা একটি ভোটার তালিকা প্রকাশ করা হবে জানিয়ে তিনি বলেন, সব স্টেকহোল্ডার (অংশীজন) যদি আমাদেরকে সহযোগিতা করেন, তাহলে আমরা পরিকল্পনামাফিক নির্ধারিত সময়ের মধ্যে নির্বাচন করতে পারব।
এদিকে বিজিএমইএতে প্রশাসকের কার্যক্রম নিয়ে দ্বিমুখী বক্তব্য উঠে এসেছে। একটি পক্ষ প্রশাসকের দৈনন্দিন কার্যক্রমে বিঘেœর সৃষ্টি করছে বলে অভিযোগ করছে। অপরপক্ষ সংগঠনটিতে প্রশাসক নিয়োগের তীব্র বিরোধিতা করছেন। কারণ হিসেবে তারা বলছে- নির্ভুল ভোটার তালিকার নামে সময়ক্ষেপন করছে প্রশাসক। মালিক পক্ষের একটি গ্রুপ থেকে বলা হচ্ছে, প্রশাসকের পক্ষ থেকে একটি নির্ভুল ভোটার তালিকা তৈরি করে আগামী নির্বাচন অনুষ্ঠানের প্রক্রিয়া শুরু করেছে। কিন্তু সেটিতে একটি মহল বাধা দিচ্ছে। এক্ষেত্রে স্বৈরাচার আওয়ামী লীগের দোসর ভুয়া প্রতিষ্ঠানগুলো (যাদের কারখানা নেই এবং রফতানিতে নেই) বের করার জন্য হোদা ভাসি চৌধুরী অ্যান্ড কোং-কে নিয়োগ দেওয়া হয়। প্রতিষ্ঠানটি কাজ শুরু করার পর অস্তিত্বহীন প্রতিষ্ঠানগুলো (১০টি কারখানার মালিক) ভীত হয়ে সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট ডিভিশনে রিট পিটিশন দায়ের করে। রিট পিটিশন শুনানির অপেক্ষায় থাকার মধ্যেই তারা প্রশাসকের কাছে হোদা ভাসি চৌধুরী অ্যান্ড কোং-এর কার্যক্রম বন্ধের দাবি করে।
সূত্র মতে, বিজিএমইএর বিগত কয়েকটি নির্বাচনের ভোটার তালিকায় এমন কিছু কারখানার নাম যুক্ত করা হয় যেগুলোর কারখানার কোনো অস্তিত্ব ছিল না। কারো কারো কারখানা থাকলেও দীর্ঘদিন ধরে তারা রফতানির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন না। এমনকি বিজিএমইএ’র সভাপতি নির্বাচিত হয়েছেন তার কোন গার্মেন্টস ছিল না। শুধুমাত্র আওয়ামী লীগের কর্মী এবং গোপালগঞ্জ বাড়ি বলেই এস এম মান্নান কচি একক কর্তৃত্ব খাটিয়ে হাসিনার দোসর হওয়ায় সভাপতি বনে যান। বিগত সময়ে ভুয়া ভোটার তালিকায় যে নির্বাচন হয়েছে তা বহাল রাখার জন্য একটি পক্ষ উঠেপড়ে লেগেছে। তারা সরকারের সিদ্ধান্ত মানতে চায় না। ডিরেক্টরেট অব ট্রেড অরগানইজেশন এবং এনবিআরের রুলসে এ বলা আছে যে এই সংগঠনের সদস্য হতে হলে তার একটি বৈধ টিআইএন থাকতে হবে। আয়কর জমা থাকতে হবে। যা বিগত সময়ে মানা হয়নি।
গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর সংগঠনটিতে রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর ভাইস চেয়ারম্যান মো. আনোয়ার হোসেনকে বিজিএমইএর প্রশাসক হিসেবে নিয়োগ করে সরকার। দায়িত্ব নেওয়ার পরই তিনি ভুয়া প্রতিষ্ঠানগুলো বের করে দিয়ে বিজিএমইএকে প্রকৃত মালিকদের সংগঠন হিসেবে গড়ে তোলার কাজে মন দেন।
এদিকে বিজিএমইএ’র অপর একটি পক্ষ বলছে, প্রশাসক নির্ভুল ভোটার তালিকার নামে সময়ক্ষেপন করছেন। তিনি এই পদকে লোভনীয় হিসেবে দেখছেন। যা এ সংগঠনের উন্নয়ন কার্যক্রমের স্বাভাবিক গতিকে বিঘিœত করছে।
চট্টগ্রাম অঞ্চলের মালিকদের কেউ কেউ রীতিমতো সভা করে সংগঠনটিতে প্রশাসক নিয়োগের তীব্র বিরোধিতা করে আসছেন। সম্প্রতি তারা চট্টগ্রামে সভা করে প্রশাসক নিয়োগের বিরোধিতা করে অনতিবিলম্বে নির্বাচিত প্রতিনিধির কাছে ক্ষমতা হস্তান্তরের দাবি জানান। এ লক্ষ্যে তারা চট্টগ্রাম থেকে তীব্র আন্দোলন গড়ে তুলবেন বলে হুঁশিয়ারি দেন।
প্রসঙ্গত, গত বছরের মার্চ মাসে বিজিএমই’র যে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয় সেখানে সম্মিলিত পরিষদ এবং ফোরাম নামে দুটি প্যানেল প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে। সে নির্বাচনে ভোটার তালিকা থেকে ভুয়া সদস্যদের বাদ দিতে ফোরামের পক্ষ থেকে নানামুখী উদ্যোগ নেওয়া হয়। ব্যাবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআই এবং বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের বাণিজ্য সংগঠনের অফিসে আপত্তি দেওয়া হলেও সেগুলো নিস্পত্তি না করে নির্বাচন শেষ করা হয়।
বিভাগ : বাংলাদেশ
মন্তব্য করুন
আরও পড়ুন
লস অ্যাঞ্জেলসের দাবানলে হলিউড তারকার মৃত্যু
কুবিতে ছাত্রলীগ নেতাকে গণপিটুনি শেষে পুলিশে দিল শিক্ষার্থীরা
সাতক্ষীরা সীমান্তে চাষে বাধা দিয়েছে বিএসএফ
"তালেবান নারীদের মানুষ মনে করে না" : মালালা
ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে ১৩ কিলোমিটার যানজট
মোবাইল ইন্টারনেটে সুখবর ‘শর্ত শিথিল’, থাকছে ১ ঘণ্টার প্যাকেজও
গভীর রাতে গরিব অসহায় শীতার্ত মাঝে ইউএনও'র কম্বল বিতরন
বরিশালে ক্যান্সার চিকিৎসা ব্যবস্থা মুখ থুবড়ে পড়ে আছে
সেবা বঞ্চিত হলে অভিযোগ করা যাবে ইসির বিরুদ্ধে
এমপিওভুক্ত হচ্ছেন আরও ৩ হাজার শিক্ষক
চট্টগ্রাম শিক্ষা বোর্ডের নবনিযুক্ত সচিব ছাগলনাইয়ার সন্তান সামছু উদ্দিন
বাংলাদেশে শনাক্ত হলো 'রিওভাইরাস’, রোগটি সম্পর্কে যা জানা যায়
আন্দোলনের মুখে পাঠ্যবই থেকে বাদ পড়লো ‘আদিবাসী’ শব্দযুক্ত গ্রাফিতি
মাসের শেষে আবারো আসছে শৈত্যপ্রবাহ
বর্ষসেরা ফটোগ্রাফার হিসাবে পুরস্কার পেলেন, আলোকচিত্রী ও সাংবাদিক মুগনিউর রহমান মনি
রাজশাহীর সঙ্গে সারাদেশের রেল যোগাযোগ বন্ধ
বেড়া কৈটোলা নির্মাণ বিভাগের অফিসিয়াল ও উন্নয়ন কাজে স্থবিরতা
গাজায় যুদ্ধবিরতির প্রয়োজনীয়তা নিয়ে বাইডেন-নেতানিয়াহুর ফোনালাপ
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় কমপ্লিট শাটডাউন ঘোষণা
না ফেরার দেশে নির্মাতা রায়হান রাফির বাবা