‘অনিশ্চয়তার দিকে এগিয়ে যাচ্ছে দেশ’ : কুমিল্লায় জাতীয় পার্টির সম্মেলনে জিএম কাদের

Daily Inqilab কুমিল্লা থেকে স্টাফ রিপোর্টার

১১ মার্চ ২০২৩, ০৮:০৮ পিএম | আপডেট: ০১ মে ২০২৩, ১২:০০ এএম

জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জি এম কাদের বলেছেন, দেশে এখন মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ভুলুন্ডিত হচ্ছে।দ্রব্যমূল্য ঊর্ধ্বগতির কারণে মানুষের নাভিশ্বাস ওঠেছে। মানুষের আয় বাড়ছে না কিন্তু ব্যয় বেড়েই যাচ্ছে। মানুষের মানসম্মান, সম্পদ ও জীবনের নিরাপত্তা নেই। উৎকণ্ঠার মধ্যে দেশের মানুষ জীবন কাটাচ্ছে। আজকে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা, স্বাধীনতার চেতনাকে বিদায় দেওয়া হয়েছে। গণতন্ত্রের কথা বলে গণতন্ত্রকে বিদায় দেওয়া হয়েছে। আমার ক্ষুদ্র জ্ঞানে মনে হচ্ছে একটি অনিশ্চয়তার দিকে এগিয়ে যাচ্ছে দেশ। বাংলাদেশের অবস্থা অত্যন্ত খারাপ এবং সামনের দিকে আরও খারাপ অবস্থা সৃষ্টি হতে পারে বলে আমি আশঙ্কা করছি।
জিএম কাদের বলেন,এরশাদের শাসনামলকে কেউ স্বৈরশাসন মনে করে না। আজকে দেশের ক্ষমতা এখন একটি গোষ্ঠীর হাতে কেন্দ্রীভূত হয়ে পড়েছে। দেশের মানুষ অধিকারবঞ্চিত হচ্ছে। বেড়ে চলছে ক্ষমতার বৈষম্য।এজন্য তো দেশ স্বাধীন হয়নি।এখন দেশে প্রাতিষ্ঠানিকভাবে স্বৈরশাসন চলছে। গণতন্ত্র নেই। যদি থাকতো তাহলে মানুষ প্রতিবাদ করার সাহস পেতো।আজকে প্রতিবাদ করা যায় না। প্রতিবাদ করলে রাষ্ট্রদ্রোহীতার অভিযোগে মামলা খাবেন। কোথায় যাবে মানুষ।যাওয়ার পথ নেই। কারণ বর্তমান সরকার অত্যন্ত কর্তৃত্ববাদী। সবকিছু তারা নিয়ন্ত্রণে নিতে চায়। অনেক কিছু নিয়ন্ত্রণে নিয়েছে। নির্বাচন কমিশন, মানবাধিকার কমিশন বলেন, সব কমিশন এখন সরকারের নিয়ন্ত্রণে। তাহলে বুঝতেই পারেন আগামী জাতীয় নির্বাচন কেমন হবে ? আমরা চাই আগামী নির্বাচনে সকল রাজনৈতিক দলের অংশগ্রহণ থাকুক। আর তাই এমন একটি ফর্মূলায় নির্বাচন করা হোক যেটা নিয়ে কোন রাজনৈতিক দল প্রশ্ন তুলবে না।

শনিবার বিকেলে কুমিল্লা টাউনহল মাঠে কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা জাতীয় পার্টির দ্বিবার্ষিক সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এসব কথা বলেন তিনি।
জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান আরও বলেন, ৯০ সালের পর থেকে দেশের মানুষ আওয়ামী লীগ ও বিএনপির রাজনীতিতে বিতশ্রদ্ধ। মানুষ একটি পরিবর্তন চাচ্ছে। আমরা শক্তিশালীভাবে সাধারণ মানুষের সামনে বিকল্প হিসেবে দাঁড়াতে চেষ্টা করছি। আগামী নির্বাচনে ৩০০ আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতার প্রস্তুতি নিয়েই জাতীয় পার্টি এগিয়ে যাচ্ছে। মানুষের সামাজিক, সাংস্কৃতিক, অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক মুক্তি দিতেই জাতীয় পার্টির রাজনীতি। আমরা সামাজিক ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠিত করব। আমরাই দেশের মানুষকে সুশাসন দেব।

কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা জাতীয় পার্টির আহবায়ক এয়ার আহমেদ সেলিমের সভাপতিত্বে সম্মেলনে প্রধান বক্তার বক্তব্যে জাতীয় পার্টি মহাসচিব মো. মুজিবুল হক চুন্নু এমপি বলেন, আওয়ামী লীগ ভাবছে কিভাবে ক্ষমতা ধরে রেখে আরও লুটপাট করবে। আর বিএনপি চাচ্ছে কেমন করে ক্ষমতায় গিয়ে আবার লুটপাট করবে। দেশের মানুষ আর দুটি দলের লুটপাট দেখতে চায় না। দেশের মানুষ আওয়ামী লীগ ও বিএনপির হাত থকে মুক্তি চায়। আগামীদিনে জাতীয় পার্টি ক্ষমতায় এলে কর্মমুখী শিক্ষাব্যবস্থা চালু করে বেকারত্ব দূর করবে। নির্বাচন পদ্ধতি নিয়ে ভিন্ন ভিন্ন কথা বলছে ওই দুটি দল। তাই পল্লীবন্ধু হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ আনুপাতিক হারে নির্বাচনের যে ফর্মুলা দিয়েছিলেন, এখন তা সময়ের দাবি। আনুপাতিক হারে জাতীয় নির্বাচন হলেই নির্বাচন নিয়ে সব সমস্যার সমাধান হবে। আনুপাতিক হারে নির্বাচন মানেই শান্তিপূর্ণ নির্বাচন।

সম্মেলনে বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য অ্যাডভোকেট মো. রেজাউল ইসলাম ভূঁইয়া, প্রেসিডিয়াম সদস্য এস এম ফয়সাল চিশতী, পার্টির চেয়ারম্যানের উপদেষ্টা প্রফেসর গোলাম মোস্তফা, কেন্দ্রীয় উলামা পার্টির সভাপতি ইকরাম হোসেন, পার্টির কেন্দ্রীয় সদস্য আলমগীর কবীর মজুমদার।

কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা যুব সংহতির সভাপতি নজরুল ইসলাম বাববের সঞ্চালনায় জেলা-উপজেলা নেতৃবৃন্দের মধ্যে বক্তব্য দেন কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা জাতীয় পার্টির যুগ্ম আহ্বায়ক ওবায়দুল কবীর মোহন,যুগ্ম আহ্বায়ক হুমায়ুন কবীর মুন্সি,মহিলা জাতীয় পার্টির সভাপতি জোসনা আক্তার,মহানগর জাতীয় পার্টির সদস্য সচিব নাজমুল ভূঁইয়া ভুট্টু, যুগ্ম আহ্বায়ক মাহবুবুর রহমান সেলিম,বরুড়া পৌর কমিটির সভাপতি মোঃ সোহেল, লাঙ্গলকোট উপজেলার সভাপতি মোঃ জামাল হোসেন,সদর দক্ষিণ মহিলা জাতীয় পার্টির সাধারণ সম্পাদক জুবাইদা মুন্সী, বুড়িচং উপজেলার সভাপতি মোঃ জসিম উদ্দিন, ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলা জাতীয় পার্টির সভাপতি জাহাঙ্গীর আলম ও জাতীয় ছাত্র সমাজের সভাপতি মিজানুর রহমান মিজান প্রমুখ।


বিভাগ : বাংলাদেশ


মন্তব্য করুন

HTML Comment Box is loading comments...

এই বিভাগের আরও

পটুয়াখালী জেলা ছাত্রদলের আহবায়ক,যুগ্ম আহবায়ক ও সদস্য সচিবকে কারণ দর্শানোর নোটিশ
মুন্সীগঞ্জে থেমে থাকা বাসে আগুনে ঘুমন্ত হেলপারের মৃত্যু
বিলুপ্তির পথে গ্রাম বাংলার ঐতিহ্য মৃৎশিল্প
রক্তের দাগ মুছার আগেই আওয়ামী লীগ নেতা মৌলভীবাজার আইনজীবী সমিতির সভাপতি প্রার্থী
অবৈধ পথে ইনকাম করা টাকা মসজিদের উন্নয়ন কাজে দান করা প্রসঙ্গে।
আরও

আরও পড়ুন

পটুয়াখালী জেলা ছাত্রদলের আহবায়ক,যুগ্ম আহবায়ক ও সদস্য সচিবকে কারণ দর্শানোর নোটিশ

পটুয়াখালী জেলা ছাত্রদলের আহবায়ক,যুগ্ম আহবায়ক ও সদস্য সচিবকে কারণ দর্শানোর নোটিশ

দুই দিনের সফরে পাকিস্তানে প্রেসিডেন্ট এরদোগান

দুই দিনের সফরে পাকিস্তানে প্রেসিডেন্ট এরদোগান

দুবাই পৌঁছেছেন প্রধান উপদেষ্টা

দুবাই পৌঁছেছেন প্রধান উপদেষ্টা

তাইওয়ান প্রণালীতে মার্কিন যুদ্ধজাহাজ! পাল্টা হুঁশিয়ারি চীনের

তাইওয়ান প্রণালীতে মার্কিন যুদ্ধজাহাজ! পাল্টা হুঁশিয়ারি চীনের

চার লাল কার্ডের ম্যাচে লিভারপুলকে রুখে দিল এভারটন

চার লাল কার্ডের ম্যাচে লিভারপুলকে রুখে দিল এভারটন

রিজওয়ান-সালমানের অনবদ্য সেঞ্চুরিতে পাকিস্তানের রান তাড়ার রেকর্ড

রিজওয়ান-সালমানের অনবদ্য সেঞ্চুরিতে পাকিস্তানের রান তাড়ার রেকর্ড

কফিন কাঁধে মিছিল, আ.লীগ নিষিদ্ধ চাইল ছাত্র-জনতা

কফিন কাঁধে মিছিল, আ.লীগ নিষিদ্ধ চাইল ছাত্র-জনতা

শিরোপার স্বপ্ন নিয়ে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে বাংলাদেশ

শিরোপার স্বপ্ন নিয়ে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে বাংলাদেশ

মেয়েদের ক্রিকেট

মেয়েদের ক্রিকেট

এতীমের মা খ্যাত ফুলতলীর বড় ছাহেবের সহধর্মিণীর জানাযায় মানুষের ঢল : বিভিন্ন মহলের শোক

এতীমের মা খ্যাত ফুলতলীর বড় ছাহেবের সহধর্মিণীর জানাযায় মানুষের ঢল : বিভিন্ন মহলের শোক

নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি ছাড়া কেউ সংবিধান সংশোধন করতে পারে না

নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি ছাড়া কেউ সংবিধান সংশোধন করতে পারে না

মুন্সীগঞ্জে থেমে থাকা বাসে আগুনে ঘুমন্ত হেলপারের মৃত্যু

মুন্সীগঞ্জে থেমে থাকা বাসে আগুনে ঘুমন্ত হেলপারের মৃত্যু

ডেভিল হান্টে ধরা আরো ৫৯১ জন

ডেভিল হান্টে ধরা আরো ৫৯১ জন

ডেভিল হান্ট অপারেশনে আশানুরূপ অস্ত্র উদ্ধার হয়নি :গাজীপুরে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

ডেভিল হান্ট অপারেশনে আশানুরূপ অস্ত্র উদ্ধার হয়নি :গাজীপুরে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

পুলিশে আস্থা ফেরাতে ডিসিদের প্রস্তাব

পুলিশে আস্থা ফেরাতে ডিসিদের প্রস্তাব

বিলুপ্তির পথে গ্রাম বাংলার ঐতিহ্য মৃৎশিল্প

বিলুপ্তির পথে গ্রাম বাংলার ঐতিহ্য মৃৎশিল্প

নাফিজের নিথর দেহের সেই ছবির স্কেচ জাতিসংঘের প্রতিবেদনের প্রচ্ছদে

নাফিজের নিথর দেহের সেই ছবির স্কেচ জাতিসংঘের প্রতিবেদনের প্রচ্ছদে

তিন ফুট বাই এক ফুটের সেল, টয়লেট ও বিছানা

তিন ফুট বাই এক ফুটের সেল, টয়লেট ও বিছানা

আয়নাঘরেও উল্টো ঝুলিয়ে নির্যাতন করা হয় মাজেদকে

আয়নাঘরেও উল্টো ঝুলিয়ে নির্যাতন করা হয় মাজেদকে

৭০০ থেকে ৮০০ আয়নাঘর থাকতে পারে সারা দেশে :প্রেস সচিব

৭০০ থেকে ৮০০ আয়নাঘর থাকতে পারে সারা দেশে :প্রেস সচিব