ঢাকা   বুধবার, ১৩ নভেম্বর ২০২৪ | ২৯ কার্তিক ১৪৩১

গারো পাহাড় সীমান্তাঞ্চলে চারণভূমি ও খাদ্য সংকটে হুমকির মুখে প্রাণীসম্পদ!

Daily Inqilab গারো পাহাড় সীমান্তাঞ্চল থেকে স্টাফ রিপোর্টার

১১ নভেম্বর ২০২৪, ০১:১৭ পিএম | আপডেট: ১১ নভেম্বর ২০২৪, ০১:১৭ পিএম

 

ইতোপূর্বে গরু-ছাগলের চারণভূমি ছিল গারো পাহাড় সীমান্তাঞ্চলের উপজেলাগুলোর বিলাঞ্চলে। কিন্ত সেই চারণভূমি বিলুপ্ত হয়ে যাওয়ায় এখন পশু পালনের একমাত্র ভরসাস্থল হচ্ছে গারো পাহাড়। ফলে চারণভ‚মি ও খাদ্য সংকটে পড়ছে প্রাণীসম্পদ। তবে গারো পাহাড়ি উপজেলাগুলোয় কৃষকদের সংকট কাটিয়ে উঠার বিকল্প পথই হচ্ছে একমাত্র গারো পাহাড়। প্রান্তিক চাষীদের গরু-ছাগলের সর্বশেষ চারণভূমি বলতে গেলে এই বিশাল গারো পাহাড়ই শেষ ভরসা। গারো পাহাড়ি উপজেলা ঝিনাইগাতী, শ্রীবরদী ও নালিতাবাড়ীর গ্রামাঞ্চলের কৃষকদের গরু-ছাগল পালনে শেষ ভরসা এখন এই বিশাল গারো পাহাড়। প্রান্তিক কৃষকরা সেই বাপ-দাদার আমল থেকে শুরু করে এখনো গরু-ছাগল পালন, কৃষির পরই আয়ের একমাত্র বড় উৎস। তাঁরা পশু পালন করেই বড় বড় সমস্যার মোকাবেলাসহ জীবিকা নির্বাহ করে থাকেন। তবে চারণভ‚মি কমে যাওয়ায় এবং খাদ্য সংকটে ক্রমাগত কমে যাচ্ছে গরু- ছাগলের সংখ্যা। এক সময় এসব পশুর বড় বড় দল চোখে পড়তো হরহামেশাই। শত শত লোকের হাজার হাজার গো-মহিষ ও ছাগলের পাল ছিল চোখে পড়ার মত। বিলাঞ্চলের জেগে ওঠা চর ব্যবহার হতো চারণভ‚মি হিসেবে। কিন্তু বর্তমানে বেশীর ভাগ বিলাঞ্চল শুকিয়ে ফসলি জমিতে পরিণত হওয়ায় খাদ্য সংকটে এসব পশুর সংখ্যা দিন দিন কমতে শুরু করেছে। কমে গেলেও এখনও অনেক কৃষকই গরু-ছাগল পালন ধরে রেখেছেন।

এখন ও এমন কৃষক বাড়ি নেই, যে বাড়িতে কমপক্ষে ২-৪ টি দেশীয় গরু-ছাগল না রয়েছে। গারো পাহাড়ে গিয়ে দেখা গেছে, দলবেঁধে শতাধিক গরু-ছাগল বনাঞ্চলে গজিয়ে ওঠা ঘাস খাচ্ছে। প্রত্যেকের গরু-ছাগলের পেছনে ১ জন করে রাখাল সেগুলো তদারকি করছে। দেখে মনে হয় এ যেন গরু- ছাগলেরই রাজ্য! আবার সন্ধ্যার আগেই লাইন ধরে কৃষকের বাড়ী নিয়ে আসা হচ্ছে গরু ছাগলগুলো। পাহাড়ি উপজেলা ঝিনাইগাতী, শ্রীবরদী ও নালিতাবাড়ীর রাখালরা দৈনিক ইনকিলাবকে বলেন, বাপ-দাদার আমল থেকেই গরু-ছাগল পালন করে আসছি। ইতোপূর্বে একরের পর একর খালি জায়গা ছিল জেগে উঠা বিলাঞ্চলে। তখন অবাধে বিচরণ করতে পারতো পশুগুলো।

কৃষকরা ইনকিলাবকে বলেন, ইতোপূর্বে পালের ২-১ টি করে পশু বিক্রির টাকায় বড় বড় সমস্যার সমাধান করেছেন তাঁরা। যেমন বাড়ি ঘর তৈরি, ছেলে-মেয়ের বিয়ে দেয়াসহ বড় ধরনের বিপদে বড় বড় খরচের যোগান দেয়া হতো এসব পশু বিক্রি করেই। কিন্তু শুকিয়ে যাওয়া বিলের জমিতে এখন আবাদ ফসল ও বাড়ি ঘর গড়ে ওঠায় অনেক জায়গা কমে গেছে।

এ দিকে পশুগুলো বন বিভাগের জায়গা পাহাড়ে নিয়ে গেলে তারাও বাঁধা দেয়ায় কৃষকগণ পড়েছেন বিপাকে। ফলে চারণভ‚মি সঙ্কটে পশু পালনে সঙ্কট দেখা দিয়েছে চরমভাবে। এখন উপজেলা তিনটির পাহাড়ি অঞ্চলকেই এই অঞ্চলে শেষ ভরসাস্থল হিসেবেই গরু- ছাগল পালন করছেন কৃষকরা। ভয়ে নাম প্রকাশ না করে কজন রাখাল কৃষক দৈনিক ইনকিলাবকে বলেন, আমরা সকলেই প্রান্তিক চাষী। কম-বেশী গরু ও ছাগল পালন করে আসছি সেই আদি কাল থেকেই। কিন্ত বনাঞ্চলে পশুপালনে বন বিভাগ থেকে বার বার বাঁধা দেয়ার পর ও একমাত্র বনাঞ্চলই আমাদের পশু পালনের শেষ ভরসা স্থল। তাই তাঁরা বন বিভাগ ও প্রশাসনের সহযোগিতার আশা করেছেন অত্যন্ত অসহায় ভাবে।

 

‘এ ব্যাপারে ঝিনাইগাতী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আশরাফুল আলম রাসেল দৈনিক ইনকিলাবকে বলেন, বন বিভাগের সাথে আলাপ- আলোচনা করে সমস্যার সমাধানের চেষ্টা করা হবে।’

 


বিভাগ : বাংলাদেশ


মন্তব্য করুন

HTML Comment Box is loading comments...

আরও পড়ুন

হিজবুল্লাহর পালটা আক্রমণ, লেবাননে শতাধিক ইসরাইলি সেনা নিহত

হিজবুল্লাহর পালটা আক্রমণ, লেবাননে শতাধিক ইসরাইলি সেনা নিহত

সেনাবাহিনী কতদিন মাঠে থাকবে, তা অন্তর্বর্তী সরকারই নির্ধারণ করবে: সেনাসদর

সেনাবাহিনী কতদিন মাঠে থাকবে, তা অন্তর্বর্তী সরকারই নির্ধারণ করবে: সেনাসদর

আশুলিয়া প্রেসক্লাব এর নতুন সদস্য সংগ্রহ শুরু

আশুলিয়া প্রেসক্লাব এর নতুন সদস্য সংগ্রহ শুরু

চট্টগ্রাম সিটি মেয়রের সাথে ভারতীয় সহকারী হাইকমিশনারের সৌজন্য সাক্ষাৎ

চট্টগ্রাম সিটি মেয়রের সাথে ভারতীয় সহকারী হাইকমিশনারের সৌজন্য সাক্ষাৎ

সালথায় জমি নিয়ে বিরোধে কৃষকের বাড়িতে প্রকাশ্যে আগুন দিল প্রতিপক্ষ

সালথায় জমি নিয়ে বিরোধে কৃষকের বাড়িতে প্রকাশ্যে আগুন দিল প্রতিপক্ষ

চরম সঙ্কটের মুখে উত্তরপ্রদেশের ২২ হাজার মাদরাসা শিক্ষক

চরম সঙ্কটের মুখে উত্তরপ্রদেশের ২২ হাজার মাদরাসা শিক্ষক

বাইরে থেকে জানতাম যে সংস্কৃতি মন্ত্রণালয় একটি ঘুমন্ত মন্ত্রণালয় : ফারুকী

বাইরে থেকে জানতাম যে সংস্কৃতি মন্ত্রণালয় একটি ঘুমন্ত মন্ত্রণালয় : ফারুকী

শহিদুল ইসলামের বাবুলের দলীয় পদ স্থগিতাদেশ প্রত্যাহার করায় সালথায় আনন্দ মিছিল

শহিদুল ইসলামের বাবুলের দলীয় পদ স্থগিতাদেশ প্রত্যাহার করায় সালথায় আনন্দ মিছিল

নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের সাবেক মেয়র আইভীর বিরুদ্ধে দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা

নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের সাবেক মেয়র আইভীর বিরুদ্ধে দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা

নকলায় পিকআপ-সিএনজি সংঘর্ষে নিহত বেড়ে ৪

নকলায় পিকআপ-সিএনজি সংঘর্ষে নিহত বেড়ে ৪

চট্টগ্রামে ফোম কারখানায় আগুন

চট্টগ্রামে ফোম কারখানায় আগুন

ফরিদপুরে ট্রেনে কাটা পড়ায় প্রাণ গেল বৃদ্ধার

ফরিদপুরে ট্রেনে কাটা পড়ায় প্রাণ গেল বৃদ্ধার

সাংহাই র‌্যাঙ্কিংয়ে ২৯টি ইরানি বিশ্ববিদ্যালয়

সাংহাই র‌্যাঙ্কিংয়ে ২৯টি ইরানি বিশ্ববিদ্যালয়

কাল বেনাপোল কার্গো টার্মিনাল উদ্বোধন করবেন নৌপরিবহন উপদেষ্টা

কাল বেনাপোল কার্গো টার্মিনাল উদ্বোধন করবেন নৌপরিবহন উপদেষ্টা

রাজশাহীর দূর্গাপুরে ট্রাক চাপায় বৃদ্ধ নিহত

রাজশাহীর দূর্গাপুরে ট্রাক চাপায় বৃদ্ধ নিহত

ওয়ানডের শীর্ষ বোলার আফ্রিদি, ক্যারিয়ার সেরা অবস্থানে শান্ত

ওয়ানডের শীর্ষ বোলার আফ্রিদি, ক্যারিয়ার সেরা অবস্থানে শান্ত

অনলাইনে আয়কর পরিশোধের চার্জ নির্ধারণ করলো বাংলাদেশ ব্যাংক

অনলাইনে আয়কর পরিশোধের চার্জ নির্ধারণ করলো বাংলাদেশ ব্যাংক

ভারত বাংলাদেশের বিরুদ্ধে প্রচারণা চালিয়েই যাচ্ছে, আমাদের সতর্ক থাকতে হবে: ফখরুল

ভারত বাংলাদেশের বিরুদ্ধে প্রচারণা চালিয়েই যাচ্ছে, আমাদের সতর্ক থাকতে হবে: ফখরুল

ব্যাংকখাতে স্বল্পমেয়াদে সংস্কার চলছে, দীর্ঘমেয়াদে করবে নির্বাচিত সরকার: উপদেষ্টা

ব্যাংকখাতে স্বল্পমেয়াদে সংস্কার চলছে, দীর্ঘমেয়াদে করবে নির্বাচিত সরকার: উপদেষ্টা

দলের নেতাকর্মীদের ফেলে স্বার্থপরের মতো পালিয়ে গেছেন হাসিনা: রিজভী

দলের নেতাকর্মীদের ফেলে স্বার্থপরের মতো পালিয়ে গেছেন হাসিনা: রিজভী