আজ কক্সবাজারে শিল্প উপদেষ্টার মতবিনিময়
১৭ জানুয়ারি ২০২৫, ০৯:৩৪ এএম | আপডেট: ১৭ জানুয়ারি ২০২৫, ০৯:৪৫ এএম
-দাম স্থিতিশীল রাখতে এক লক্ষ মেট্রিকটন লবণের বাপার স্টক গড়ে তুলার দাবী
লবণের দর পতনে হতাশ মাঠপর্যায়ে লবণ চাষিরা। দাম স্থিতিশীল রাখতে এক লক্ষ মেট্রিকটন লবণের বাপার স্টক গড়ে তুলার দাবী জানিয়েছেন লবণ চাষিরা।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গত বছর এই সময়ে মাঠ পর্যায়ে প্রতিমন লবণের দাম ছিল ৪৮০ টাকা। আর এখন লবণ বিক্রি হচ্ছে ২৮০ টাকায়। গতকাল পর্যন্ত লবণ উৎপাদন হয়েছে ৩ লাখ ৫৬০ মে. টন। গত বছর এই সময়ে লবণ উৎপাদন হয়েছিল ৩ লাখ ৮৫৫ মে. টন। এতে চাষিরা উৎপাদন খরচ অনুযায়ী বিক্রয় মূল্য না পাওয়ায় লবণ চাষে অনুৎসাহিত হচ্ছে এবং স্বাভাবিক উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে।
এমন পরিস্থিতিতে দেশের স্বনির্ভর লবণ খাতে বিরাজিত সমস্যা নিয়ে সরেজমিনে অবগত হতে আজ শুক্রবার কক্সবাজার আসেন, শিল্প উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান। তিনি সকালে কক্সবাজার জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে লবণ সংশ্লিষ্ট অংশিজনদের সাথে মতবিনিময় করবেন।
দেশের প্রায় ৯০ শতাংশ লবণই কক্সবাজারে উৎপাদিত হয়। কক্সবাজার জেলার রামু ছাড়া বাকী ৮ উপজেলা এবং চট্টগ্রামের বাঁশখালী উপজেলার সমুদ্র উপকূলীয় নিম্নভূমিতে প্রতিবছর শুষ্ক মৌসুমে এই লবণের চাষ হয়ে থাকে।
১৫ নভেম্বর থেকে ১৫ মে পর্যন্ত সময়কে লবণ উৎপাদন মৌসুম ধরা হলেও আবহাওয়ার কারণে সময়ের পরিধি বাড়ে কমে। তবে গত ২/৩ মৌসুম ধরে মাঠ পর্যায়ে লবণের মোটামুটি ভাল থাকায় এ মৌসুমেও লবণ চাষীরা বিশেষ আগ্রহ নিয়ে আগাম লবণ চাষে মাঠে নামে প্রায় অর্ধলক্ষাধিক চাষি। বৃটিশ উপনিবেশ আমলে বিদেশ (লিভারপুর) থেকে লবণ আমদানি এবং দেশে লবণ উৎপাদন নিষিদ্ধকরণের মাধ্যমে ধ্বংস করা হয়েছিল।
১৯৪৭-এ বৃটিশ শাসনের অবসানের পর থেকে এই দেশীয় শিল্পটি পুনরুজ্জীবিত হয়। তারপর প্রথমে মাঠে সমুদ্রের লবণ পানি বন্দী করে তা সূর্যের তাপে শুকিয়ে কাদা মিশ্রিত লবণ উৎপাদন করা হতো। পরে পলিথিন পদ্ধতি আবিষ্কারের পর মাঠেই উৎপাদিত হচ্ছে ধবধবে সাদা লবণ।
২০২২-২৩ মৌসুমে দেশে লবণ উৎপাদনের ৬২ বছরের রেকর্ড ভঙ্গ করে লবণ উৎপাদন হয়েছিল ২২ লাখ ৩২ হাজার ৮৯০ মেট্রিক টন, অথচ আগের মৌসুমে অর্থাৎ ২০২১-২২ মৌসুমে লবণ উৎপাদন হয়েছিল। ১৮ লাখ ৩২ হাজার মে.টন। আর গত মৌসুমে বা ২০২৩-২৪ মৌসুমে ৬৩ বছরের রেকর্ড ভেঙে ২৪ লাখ ৩৬ হাজার ৮৯০ মেট্রিক টন লবণ উৎপাদন হয়েছে, যা আগের মৌসুমের চেয়ে ২ লাখ মে.টনের বেশি। গত ২/৩ মৌসুম ধরে চাষীরা লবণের মোটামুটি ন্যায্যমূল্য পাওয়ায় দেশে লবণ উৎপাদন রেকর্ড পরিমাণ হয়েছে।
চাষিদের মতে লবণ মিল মালিকদের একটি সিন্ডিকেট দেশে লবণ উৎপাদন কমানোর জন্য চাষীদের উপর মনস্তাত্ত্বিক যুদ্ধ শুরু করেছে। যাতে চাষীরা মৌসুমের শুরুতেই লবণ চাষের প্রতি আগ্রহ হারিয়ে ফেলে এবং লবণ উৎপাদনে ঘাটতি তৈরি হয়। এরই অংশ হিসাবে লবণ মৌসুমের শুরুতেই লবণ মিল মালিকরা বস্তা প্রতি (প্রতিবস্তা ৮০ কেজি) ১৪শ টাকা থেকে দফায় দফায় কমাতে কমাতে এখন ৬৮০ টাকা থেকে ৭শ টাকায় এসে ঠেকেছে। আবার প্রতিবন্তা ৮০ কেজির পরিবর্তে ৯০ থেকে ৯৫ কেজি লবণ নেওয়া হয় চাষীদের কাছ থেকে। নিকট অতীতে মাঠ পর্যায়ে লবণের এমন দরপতন হয়নি। তবে মাঠ পর্যায়ে লবণের দাম কম হলেও বাজারে প্যাকেটজাত লবণের মূল্য কমেনি। বাজারে প্রতি কেজি ভোজ্য লবণ বিক্রি হচ্ছে ৪০ থেকে ৪৫ টাকায় বিক্রি করা হয়।
মাঠ পর্যায়ে লবণের দাম কমে যাওয়ায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন বাংলাদেশ লবণ চাষি কল্যাণ সমিতির সভাপতি এড. শাহাবুদ্দিন। তিনি মনে করেন, ফ্যাসিবাদের সময় কয়েটি সিন্ডিকেট ভারত থেকে লবণ আমদানী করে দেশের স্বনির্ভর লবণ খাতকে ধংস করার ষড়যন্ত্রে লিপ্ত ছিল। এখনো তারা লবণ আমদানীর পায়ঁতারা করে যাচ্ছেন।
এড. শাহাবুদ্দিন এক বিবৃতিতে বলেন,লবণ চাষিদের উৎসাহ যোগাতে সরকারের কাছে ১২ দফা দাবী উত্তাপন করেন তারা।
১। সরকারি খাস জমি লবণ চাষীদের নামে লীজ/বন্দোবস্ত/বরাদ্ধ দিতে হবে।
২। জমির লাগিয়তের টাকা সরকারিভাবে নির্ধারণ করতে হবে।
৩। লবণের মাপ মণপ্রতি ৪০/৪২ কেজিতে আনতে হবে।
৪। নিবন্ধকৃত লবণ চাষীদেরকে সরকারিভাবে আইডি কার্ড দিতে হবে।
৫। অসুস্থ লবণ চাষীদের স্বাস্থ্য সেবায় প্রতিটা সরকারি হাসপাতালে অগ্রধিকার দিতে হবে।
৬। বর্ষা মৌসুমে প্রান্তিক লবণ চাষীদের দশ টাকা কেজি মূল্যে প্রতিমাসে ৩০ কেজি করে চাউল বরাদ্দ দিতে হবে অথবা খাবিকা কাজ দিতে হবে।
৭। লবণ চাষীদের নামে মাত্র নয়, বাস্তবিকভাবে ব্যাংক অথবা অর্থ লগ্নকারী প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে ঋণ সুবিধা দিতে হবে। উৎপাদন খরচ কমানোর জন্য পলিথিন ও বৈদ্যুতিক সংযোগ এবং মোটরের সহজ লভ্যতা করতে হবে।
৮। অল্প জমিতে অধিকতর দানাদার ও গুণগত মানসম্পন্ন লবণ উৎপাদনের লক্ষে লবণ গবেষণা ইনস্টিটিউট ও চাষীদের জন্য প্রশিক্ষণ কেন্দ্র স্থাপন করতে হবে এবং বিসিক এর মাধ্যমে চাষীদের প্রশিক্ষণ দিতে হবে।
৯। অসুস্থ ও দূর্যোগ পূর্ণ আবাহাওয়ায় মাঠ পর্যায়ে ক্ষতিগ্রস্থ চাষীদের সরকার কর্তৃক চিকিৎসা ও পূর্ণবাসন করতে হবে।
১০। জাতীয় লবণ নীতি অনুযায়ী সরকারিভাবে এক লক্ষ মেট্রিকটন লবণের বাপার স্টক গড়ে তুলতে হবে।
১১। কক্সবাজার চৌফলদন্ডী অবস্থিত লবণ গবেষণা কেন্দ্রকে বাংলাদেশ জাতীয় লবণ গবেষণা ইনস্টিটিউট নামকরণ করতে হবে।
১২। উৎপাদিত অতিরিক্ত লবণ বিদেশে রপ্তানী করতে হবে।#
বিভাগ : বাংলাদেশ
মন্তব্য করুন
আরও পড়ুন
শান্তদের সহকারী কোচ পোথাসের পদত্যাগ
মুক্তিযুদ্ধে আওয়ামী লীগের অংশগ্রহণ কম ছিল: রিজভী
সমালোচনার মুখে বড় সিদ্ধান্ত, অ্যাপলের এআই সংবাদ সেবা সাময়িক বন্ধ
কাপ্তাইয়ের হাট-বাজারে মিলছে বল সুন্দরী বরই
লাভ জিহাদের প্রেক্ষিতে উগ্র-হিন্দুত্ববাদীদের হামলার শিকার অভিনেতা সাইফ আলি খান
দৌলতপুরে ট্রাকের ধাক্কায় যুবক নিহত
শেখ পরিবারের রক্ত থাকায় দুর্নীতিতে জড়িয়েছেন টিউলিপ সিদ্দিকী:রিজভী
পিরোজপুরে বাসচাপায় শ্যালক-দুলাভাই নিহত
লন্ডনে দারুল হাদীস লাতিফিয়ায় শামসুল উলামা হযরত আল্লামা ফুলতলী ছাহেব কিবলাহ রাহমাতুল্লাহি আলাইহির ঈসালে সাওয়াব মাহফিল অনুষ্ঠিত
আগা খাঁন গোল্ড কাপ গলফ টুর্নামেন্ট শুরু
কলকাতায় আর জি কর ধর্ষণ-হত্যা : মামলার রায় শনিবার
লিবিয়ার স্থিতিশীলতার লক্ষ্যে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের নতুন সিদ্ধান্ত
"৩১ দফার ২৬ তম দফা "সবার জন্য স্বাস্থ্য" বাস্তবায়নের মধ্য দিয়েই স্বাস্থ্য বিপ্লব ঘটাবেন জনাব তারেক রহমান"- ডাঃ আউয়াল
হাজারীবাগে ট্যানারি গুদামে আগুন, নিয়ন্ত্রণে ৬ ইউনিট
লেবানন সফরে ম্যাক্রোঁ, নতুন সরকারকে সহায়তার প্রতিশ্রুতি
হালুয়াঘাট ধোবাউরা সীমান্তে ৮১ বোতল ভারতীয় মদ আটক করেছে বিজিবি
নাটোরের সাবেক ছাত্রলীগ নেতা মাসুম গ্রেপ্তার
ইসরাইলকে যুদ্ধবিরতি চুক্তি লঙ্ঘন করতে দেওয়া যাবে না : এরদোগান
কিশোরগঞ্জে মেশিনারিজ দোকানে অগ্নিকান্ড
হোয়াইট হাউসে হামলার চেষ্টার দায়ে ভারতীয় নাগরিকের কারাদণ্ড