গোপালগঞ্জে ব্যতিক্রম ধর্মী আয়োজনের মধ্য দিয়ে আশ্রয়ণ ও গুচ্ছগ্রাম প্রকল্প বাস্তবায়ন সংক্রন্ত জেলা- উপজেলা টাস্কফোর্স কমিটির সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। রোববার বিকালে জেলা প্রশাসনের উদ্দেগ্যে গোপালগঞ্জ সদরের চরমানিকদাহ আশ্রয়ন প্রকল্পে সন্ধা নাগাদ এ সভা অনুষ্ঠিত হয়।
সভায় সভাপতিত্বে করেন জেলা প্রশাসক মুহম্মদ কামরুজ্জামান।
গোপালগঞ্জে প্রথম বারের মতো মাঠ পর্যায়ে সরকারি দপ্তরের কর্মকর্তাদের উপস্থিতিতে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়। আশ্রয়ণ বাসিদের মুখোমুখি এনে জবাবদিহিতার মাধ্যমে বিভিন্ন সমস্যা চিহ্নিত ও সমাধান করা হয়।
সভায় আশ্রয়ন প্রকল্পের সুপেয় পানি, মা ও শিশু স্বাস্থ্য, পয়ঃনিস্কাশন, যাতায়াত, শিক্ষা ও নিরাপত্তা, মাদক মুক্তসহ বিভিন্ন বিষয়ে সুবিধাভোগীদের প্রশ্নের জবাব দেন স্ব স্ব দপ্তরের কর্মকর্তারা। সভায় আশ্রয়নের বাসিন্দা রুপা বেগম জেলা প্রশাসকের কবরীর দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলেন, আশ্রয় প্রকল্পের নিকটবর্তী কোন প্রাথমিক বিদ্যালয় না থাকার কারনে ৩শ'৯৯ পরিবারের ছেলে মেয়েরা শিক্ষা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। এছাড়া এখানে স্থাপিত ২৮ নলকুপের পানি অতিমাত্রায় আয়রন ও লবনাক্ত যা স্বাস্থ্যের জন্য হুমকি সরুপ বলে উল্লেখিত হয়।
এসময় সভায় উপস্থিত জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তাকে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য নির্দেশ দেন জেলা প্রশাসক। একই সাথে তিনি ওই এলাকায় একটি বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার জন্য জমি দেওয়ার ঘোষনা ও জনস্বাস্থ্য প্রকৌশলীকে নিরাপদ পানির নিশ্চিত করার জন্য এআরইউ পাম্প স্থাপনের নির্দেশ দেন।
অপর বাসিন্দা ইকবাল মোল্লা বলেন,পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা না থাকায় বৃষ্টি হলেই জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয় ৷ জেলা প্রশাসক সংশ্লিষ্ট দপ্তরের প্রধানকে পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থারও নির্দেশ দেন।
জেলা প্রশাসক মুহম্মদ কামরুজ্জামান বলেন, আমরা প্রতি মাসে যে সভাগুলো করি তা কি রেজুলেশনের মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকে নাকি এর প্রয়োগ আছে। তা নিশ্চিত করার জন্য আজ সরাসরি উপকার ভোগীদের কাছে এসেছি। তাদের কথা শুনে সেটি প্রমানের জন্য স্ব স্ব দপ্তরের কর্মকর্তাদের জনগনের মুখোমুখি করেছি। আমার সরকারি সেবা জনগণের দোড়গোড়ায় পৌঁছে দিতে সকল কর্মকর্তাদের নির্দেশ দিয়েছি। এধরনের উদ্যোগ অব্যহত থাকবে।
অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এম রকিবুল হাসান। এসময় উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) শামছুল আরেফিন, সিভিল সার্জন ডা.আবু সাঈদ মোহাম্মাদ ফারুক, কোটালিপাড়া উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা সাগুপ্তা হক, টুঙ্গিপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ মঈনুল হক, মুকসুদপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তাসনিম আক্তার, কাশিয়ানী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ফারজানা জান্নাত,গোপালগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী এসএম রেফাত জামিল, জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. ফয়েজ আহমেদ, সমাজ সেবা অধিদপ্তরের উপ পরিচালক হারুন অর রশিদসহ বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তাশ গন।
অনুষ্ঠানে আশ্রয়ণ প্রকল্পের ৩শ'৯৯ পরিবারের ১ হাজার ৫শ'৯৬ জন নারী পুরুষসহ স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ ও গণমাধ্যম কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন। পরে ৩শ'৯৯ টি পরিবারের মধ্যে কম্বল ও খাদ্য বিতরণ কর হয়।