নিকলীর ছাতিরচর গ্রাম রক্ষায় ৫২ কোটি ১৫ লাখ টাকার প্রকল্পের কাজ চলমান

শতশত পরিবারের নেই বাড়ি ভিটা মাটির অভাবে করতে পারছে না বাড়ি

Daily Inqilab নিকলী ( কিশোরগঞ্জ) থেকে

০৩ এপ্রিল ২০২৫, ০২:৫২ পিএম | আপডেট: ০৩ এপ্রিল ২০২৫, ০২:৫৭ পিএম

কিশোরগঞ্জের নিকলী উপজেলার প্রত্যন্ত হাওর অঞ্চল গোরাউত্তরার শাখা নদী গুরুই জলমহল নামের নদীর তীরে প্রায় ২ শত বছর যাবত এখানে ছাতিরচর গ্রামের মানুষ বসতি স্থাপন করে বসবাস করে আসছে। গ্রামটি এক সময় প্রায় ২ কিলোমিটার দীর্ঘছিল। বর্ষা মৌসুমে গ্রামের চারপাশে পানিতে থৈ, থৈ করে, নদীর প্রবল স্রোত আর পানির ঢেউয়ের মুখে গ্রামটি ৮০ বছর ধরে নদী ভাঙ্গনে ভাঙ্গতে ভাঙ্গতে বর্তমানে গ্রামের প্রায় ১ কিলোমিটার অংশ অবশিষ্ট আছে । এক সময় এ গ্রামে প্রায় ২০ হাজার লোকের বসতি ছিল ।

 

এক জরিপে উঠে এসেছে প্রায় ২ হাজার ৬ শত পরিবারের ঘর বাড়ি নদী ভাঙ্গে তাদের বসত বাড়ি নদী গর্ভে বিলিন হয়ে যায়। গ্রাম ছেড়ে দেশের ভিবিন্ন অঞ্চলে বসবাস করে ছাতিরচরের মানুষজন । গ্রামে এসে বোর আবাদের মৌসুমে অনেকেই হাওরে ঘর করে জমিতে ধান আবাদ করে । এ বিষয়ে ছাতিরচর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান শামছুজ্জামান চৌধুরী, বিএনপি নেতা মুক্তার হোসেন ও জাহিদ হাসান জাকিরের সাথে কথা হলে তারা জানান নদীর ভাঙ্গে বসত বাড়ি হারিয়ে , ছাতিরচরে প্রায় ২ হাজার মানুষ ঢাকা কামরাংগিরচর এবং চট্রগ্রামের পাহাড়তলী এবং ৬ শত লোকজন নিকলী উপজেলার পাড়াবাজিতপুর, গুরুই, পাঁচ রুখি গ্রামসহ বিভিন্ন এলাকায় বসবাস করে।গ্রামটি দেখতে দিপের মতো করশ গাছের দৃশ্য গুলো মানুষের হৃদয় মন কেড়ে নেয় । বর্ষার মৌসুমে ছাতিরচর গ্রামে পর্যটকদের ভির করতে দেখা যায় ।

 

গতকাল বুধবার সরেজমিনে গেলে দেখা যায় গ্রামের ছোট ছোট ঘরে কয়েকটি রুম করে দুই থেকে তিনটি পরিবাব এক সাথে বসবাস করে। বেড়িবাঁধ নির্মাণ দেখে, গ্রাম ছাড়া মানুষেরা তারা আবার গ্রামে রেখে যাওয়া জমিতে বাড়ি করে গ্রামে ফিরে আসতে চায়। পানি উন্নয়ন বোর্ড কিশোরগঞ্জ অফিস সুত্রে জানা যায় যে , ঐতিহাসিক ছাতিরচর গ্রামটিকে রক্ষার জন্য পানি উন্নয়ন বোর্ড ১৪ শত মিটার গ্রাম রক্ষা বাঁধ নির্মানের জন্য ৫২ কোটি ১৫ লাখ টাকা বরাদ্দ প্রদান করে। এ বাঁধ নির্মান কাজে ব্যাবহার করা হবে ৩ লাখ ৫৮ হাজার ৯ শতটি ৩ প্রকারের বল্ক এবং ১ লাখ ১১ হাজার ২ শত ৬৮ টি বস্তা ও ৬২ হাজার ৭ শত ৪৭ টি জিও ব্যাগ বাঁধে ব্যাবহার করা হবে । 

 

এ কাজের জন্য ৫ টি ( ঠিকাদার ) নির্মাণ কোম্পানিকে কাজ দেওয়া হয় । কোম্পানি গুলো হলো এম,রহমান, মতিন, গরিবে নেওয়াজ, ও টেকব্যাগ। বর্তমানে এসব প্রতিষ্ঠানের লোকজন গ্রাম রক্ষা বাঁধ নির্মানে কাজ করে যাচ্ছে। বাঁধ নির্মান কাজের উপর স্থানীয়দের রয়েছে অভিযোগ ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান গুলো নদীর পাড় ছেড়ে দিয়ে অনেক স্থানে মানুষের বাড়ির উপর দিয়ে বাঁধ করে যাচ্ছে । বাড়ির মালিককে দেওয়া হচ্ছে না ক্ষতিপুরনের জন্য কোন টাকা পয়সা । স্থানীয়রা জানায় বর্ষার পানি আসার পূর্বেই কাজ করার কথা থাকলেও এখনো এম, রহমান ঠকাদার প্রতিষ্ঠান কোন কাজ করেনি , এতে অন্য ঠিকাদারদের কাজ শেষ হয়ে যাবে কিন্ত এম , রহমান এখনো কাজ শুরুই করে নাই এতে বর্ষার পানির স্রোত এবং ঢেউয়ে বাঁধ ক্ষতিগ্রস্থ হতে পারে । এম , রহমান ঠিকাদারের সাথে মুঠোফোনে কথা হলে তিনি জানান আমি ৬০ ভাগ কাজ করেছি যারা বলেছে আমি কাজ শুরুই করিনি তারা ভুল বলেছেন।

 

নদীর গর্ভে যাদের বাড়ি চলেগেছে তাদের মধ্যে মুরাদ ( রিক্সা চালক) পিতা মৃত সিরাজ , শাহ আলম ( বেনচালক ) পিতা মৃত সিরাজ , বিপ্লব ( রিক্সাচালক ) পিতা মৃত নুনু ব্যাপারি , শফি ( শ্রমিক ) পিতা মৃত আমির হোসেন , আবুল কালাম ( চাবিক্রেতা) পিতা মৃত জনাব আলী , যুবদল নেতা মুসা হায়দার এদের সাথে কথা হলে তারা এ প্রতিনিধিকে জানান বাঁধে ভেতরে আমাদের জমি আছে সেখানে নতুন করে আমরা বাড়ি নির্মান করতে চাই কিন্তু মাটির অভাবে বাড়ি করতে পারছি না । যদি সরকার আমাদেরকে নদী থেকে বালি তুলতে অনুমোদন দেয় তবে অল্প খরছে আমারা বাড়ি করতে পারবো।তাই প্রশাসনের নিকট আমাদের আবেদন যাতে নদী থেকে বালি উত্তলনের জন্য আমাদেরকে অনুমোতি প্রদান করেন । আমরা যারা গ্রাম ছেড়ে বিভিন্ন এলাকায় বসবাস করি আমাদের স্বজন মারাগেলে অনেক কষ্ট করে লাশ ছাতিরচর কবরস্থানে এনে দাফন করতে হয় । যদি আমরা গ্রামে থাকতে পারতাম তাহলে এমনটি হতো না । বাঁধ নিয়ে কথা হয়, কিশোরগঞ্জের পানি উন্নয়ন বোর্ডের এক্সেন মোঃ সাজ্জাদ হোসেনের সাথে তিনি জানান জুকিযুক্ত অংশের কাজ প্রায় শেষ হয়েছে। আর বাঁধের যে অংশে জুকি নেই সেই জাগায়গায় ডআমপিংগের কাজ শেষ আমাদের ২০২৬ সালের ডিসেম্বরের অর্থবছরের মধ্যে ছাতিরচরের বেড়িবাঁধের সমস্ত কাজ শেষ হয়ে যাবে ।

 


বিভাগ : বাংলাদেশ


মন্তব্য করুন

HTML Comment Box is loading comments...

এই বিভাগের আরও

সাগরে মাছ ধরতে চাঁদা দিতে হয় বিএনপি নেতাকে
খুলনায় বাটা শোরুম ও কেএফসিতে ভাঙচুর-লুটপাটের ঘটনায় আটক ৩১
বরিশাল জাতীয় পর্যায়ের ‘জাটকা সংরক্ষণ সপ্তাহ’র উদ্বোধন করছেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা
ফিলিস্তিনে গণহত্যা প্রতিরোধে মুসলিম দেশগুলোকে ঐক্যের বিকল্প নেই -হাফেজ নুরুন্নবী
ভূরুঙ্গামারী সীমান্তে সড়ক নির্মাণে কাজে বিএসএফের বাধা
আরও
X

আরও পড়ুন

চোখের সামনে যাকে পেয়েছি, তাকেই হত্যা করেছি : ইসরায়েলি সেনার স্বীকারোক্তি

চোখের সামনে যাকে পেয়েছি, তাকেই হত্যা করেছি : ইসরায়েলি সেনার স্বীকারোক্তি

সাগরে মাছ ধরতে চাঁদা দিতে হয় বিএনপি নেতাকে

সাগরে মাছ ধরতে চাঁদা দিতে হয় বিএনপি নেতাকে

খুলনায় বাটা শোরুম ও কেএফসিতে ভাঙচুর-লুটপাটের ঘটনায় আটক ৩১

খুলনায় বাটা শোরুম ও কেএফসিতে ভাঙচুর-লুটপাটের ঘটনায় আটক ৩১

গাজায় গমের একটা দানাও ঢুকবে না : ইসরায়েল

গাজায় গমের একটা দানাও ঢুকবে না : ইসরায়েল

বরিশাল জাতীয় পর্যায়ের ‘জাটকা সংরক্ষণ সপ্তাহ’র উদ্বোধন করছেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা

বরিশাল জাতীয় পর্যায়ের ‘জাটকা সংরক্ষণ সপ্তাহ’র উদ্বোধন করছেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা

ট্রাম্প ইসরায়েল ও ইহুদিদের ‘অসাধারণ বন্ধু’: নেতানিয়াহু

ট্রাম্প ইসরায়েল ও ইহুদিদের ‘অসাধারণ বন্ধু’: নেতানিয়াহু

এবার জরুরি খাদ্য সহায়তাও বন্ধ করছে যুক্তরাষ্ট্র

এবার জরুরি খাদ্য সহায়তাও বন্ধ করছে যুক্তরাষ্ট্র

ফিলিস্তিনে গণহত্যা প্রতিরোধে মুসলিম দেশগুলোকে ঐক্যের বিকল্প নেই -হাফেজ নুরুন্নবী

ফিলিস্তিনে গণহত্যা প্রতিরোধে মুসলিম দেশগুলোকে ঐক্যের বিকল্প নেই -হাফেজ নুরুন্নবী

আসছে হরর সিক্যুয়েল 'ফাইনাল ডেস্টিনেশন : ব্লাডলাইন'

আসছে হরর সিক্যুয়েল 'ফাইনাল ডেস্টিনেশন : ব্লাডলাইন'

ভূরুঙ্গামারী সীমান্তে সড়ক নির্মাণে কাজে বিএসএফের বাধা

ভূরুঙ্গামারী সীমান্তে সড়ক নির্মাণে কাজে বিএসএফের বাধা

তুরিন আফরোজের মোবাইল-ল্যাপটপে মিলেছে সরকারবিরোধী তথ্য : পুলিশ

তুরিন আফরোজের মোবাইল-ল্যাপটপে মিলেছে সরকারবিরোধী তথ্য : পুলিশ

যেভাবে গ্রেফতার করা হলো ব্যারিস্টার তুরিন আফরোজকে

যেভাবে গ্রেফতার করা হলো ব্যারিস্টার তুরিন আফরোজকে

প্রাথমিকের ক্লাস শুরু, মাধ্যমিক খুলবে বুধবার

প্রাথমিকের ক্লাস শুরু, মাধ্যমিক খুলবে বুধবার

ট্রেনের পাওয়ার কারে যাত্রী পেলে চালককে শাস্তির নির্দেশ

ট্রেনের পাওয়ার কারে যাত্রী পেলে চালককে শাস্তির নির্দেশ

পাকিস্তানে ১৫ এপ্রিল দেশজুড়ে কৃষক আন্দোলনের ডাক জামায়াতে ইসলামী’র

পাকিস্তানে ১৫ এপ্রিল দেশজুড়ে কৃষক আন্দোলনের ডাক জামায়াতে ইসলামী’র

ইসরায়েলিদের বিপক্ষে অবস্থান নিল ফ্রান্স

ইসরায়েলিদের বিপক্ষে অবস্থান নিল ফ্রান্স

যুক্তরাষ্ট্র-ইরান সরাসরি পারমাণবিক আলোচনায় বসছে: ট্রাম্প

যুক্তরাষ্ট্র-ইরান সরাসরি পারমাণবিক আলোচনায় বসছে: ট্রাম্প

আমরা ইসরায়েলি কোম্পানি নই : বাটা

আমরা ইসরায়েলি কোম্পানি নই : বাটা

মতলবে মরহুম আরাফাত রহমান কোকো স্মৃতি ফুটবল টুর্নামেন্টের ফাইনাল খেলা

মতলবে মরহুম আরাফাত রহমান কোকো স্মৃতি ফুটবল টুর্নামেন্টের ফাইনাল খেলা

শুল্ক নিয়ে আলোচনার ঘোষণা দিলেন ট্রাম্প

শুল্ক নিয়ে আলোচনার ঘোষণা দিলেন ট্রাম্প