অবশেষে বহু কাঙ্ক্ষিত বৃষ্টির দেখা মিলল বরিশালে। গত নভেম্বরের প্রথমভাগের পরে বাংলা বছরের
প্রথম দিনে সোমবার দুপুর ২টা ৯ মিনিটে বরিশাল মহানগরসহ দক্ষিণাঞ্চলের বিভিন্ন স্থানে বিক্ষিপ্ত
বৃষ্টিপাত শুরু হয়েছে। দুপুর ৩টায় এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত বরিশাল মহানগরীতে প্রায় ১ মিলিমিটার
বৃষ্টিপাতের পরে বিকট শব্দের বজ্রপাতের সাথে হালকা থেকে হালকা-মাঝারি বর্ষণ অব্যাহত ছিল।
বহু কাঙ্ক্ষিত এ বৃষ্টিপাতের ফলে মাঠে থাকা প্রায় ৪ লাখ হেক্টরের বোরো ধানসহ সব ধরনের রবি ফসলেও ইতিবাচক প্রভাব পড়বে। এমনকি সমগ্র দক্ষিণাঞ্চল জুড়ে গ্রীষ্মকালীন ডায়রিয়া প্রশমনেও কিছুটা ইতিবাচক ফল দেবে বলে আশা করছেন চিকিৎসকগণ। গত দেড় মাসেই বরিশালের সরকারি হাসপাতালগুলোতেই প্রায় ১৫ হাজার নারী-পুরুষ ও শিশু ডায়রিয়া রোগী ভর্তি হয়েছেন।
এমনকি দীর্ঘ প্রতীক্ষিত এ বর্ষণে নদ-নদীর পানির তাপমাত্রা হ্রাস করবে বলেও আশাবাদ ব্যক্ত করে ইলিশ মাছ গভীর সমুদ্র থেকে উপকূলভাগসহ অভ্যন্তরীণ নদ-নদীতে ফিরবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন মৎস্য বিজ্ঞানীগণ।
গত নভেম্বরের মধ্যভাগ থেকেই বরিশালসহ সমগ্র দক্ষিণাঞ্চলে বৃষ্টির কোনো দেখা ছিল না। এমনকি বিগত বর্ষার ভরা মৌসুম জুড়েই দক্ষিণাঞ্চলে বৃষ্টিপাতের ব্যাপক ঘাটতির পরে গত অক্টোবরে ঘূর্ণিঝড় ‘রেমাল’-এর প্রভাবে অকাল অতিবর্ষণে উঠতি আউশ এবং আমন বীজতলাসহ রোপা আমনেরও ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। কিন্তু নভেম্বর থেকে গত মার্চ পর্যন্ত বরিশাল জুড়েই বৃষ্টিপাতের পরিমাণ ছিল স্বাভাবিকের ৮০-৯৫% পর্যন্ত কম। চলতি মাসেও সারা দেশের মত বরিশাল অঞ্চলে স্বাভাবিকের অপেক্ষা কম বৃষ্টিপাতের কথা জানিয়েছে আবহাওয়া বিভাগ।
সোমবার দুপুরের বহু কাঙ্ক্ষিত বৃষ্টিপাতের ফলে বরিশালে তাপমাত্রার পারদও প্রায় সাড়ে ৪ ডিগ্রী সেলসিয়াস নিচে নেমে গেছে। দুপুর ১২টার পরে বরিশালে তাপমাত্রার পারদ যেখানে ৩৪ ডিগ্রীর ওপরে উঠে গিয়েছিল, সেখানে ২টার পরে বৃষ্টিপাত শুরু হলে দুপুর ৩টায় তাপমাত্রা ৩০ ডিগ্রী সেলসিয়াসে নেমে যায়। রোববার দুপুর ৩টায়ও বরিশালে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৩৪.৪ ডিগ্রী সেলসিয়াস।
আবহাওয়া বিভাগের আগামী ৫ দিনের পূর্বাভাসে বরিশালসহ সমগ্র দক্ষিণাঞ্চলেই বজ্রসহ বৃষ্টিপাতের কথা বলা হয়েছে। তবে পরবর্তী সময়ে বৃষ্টিপাতের প্রবণতা হ্রাস পাবে বলেও আবহাওয়ার বুলেটিনে বলা হয়েছে।