অডিটরদের কর্মবিরতি, অর্থ পরিশোধ ব্যবস্থায় স্থবিরতা
১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৬:০৮ পিএম | আপডেট: ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৬:০৮ পিএম
বৈষম্যের সৃষ্টি হওয়ায় কর্মবিরতি পালন করছেন অডিটররা। এর ফলে স্থবির হয়ে পড়েছে সরকারের অর্থ পরিশোধ ব্যবস্থা। এই সমস্যা সমাধানে অর্থ সচিবের পদত্যাগের দাবি করেছেন অডিটররা। একই পদে দুই ধরনের বেতন দেওয়ায় বৈষম্যের শিকার হচ্ছেন তারা।
শনিবার (১৪ সেপ্টেম্বর) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানান অডিটররা।
বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, বাংলাদেশের কম্পট্রোলার অ্যান্ড অডিটর জেনারেল (সিএজি) কার্যালয়ের অধীনস্থ সিজিএ, সিজিডিএফ ও অডিট অধিদপ্তরে কর্মরত অডিটরদের বেতন ১১তম গ্রেড হতে ১০ম গ্রেড হতে উন্নীতকরণের জন্য অর্থ মন্ত্রণালয় বিগত ২০১৩ সালের ৩ নভেম্বর সম্মতি দিলেও তা বাস্তবায়ন করেনি। এরই পরিপ্রেক্ষিতে অডিটররা মহামান্য হাইকোর্টে রিট পিটিশন দাখিল করলে অডিটর পদের বেতন ১০ম গ্রেডে বেতন দিতে হাইকোর্ট গত ২০১৬ সালের ২ ফেব্রুয়ারি রায় দেয় এবং আপিলেও একই রায় বলবত থাকে।
আদালতের রায়ের পরিপ্রেক্ষিতে তৎকালীন অর্থমন্ত্রী অডিটর পদটিকে ১১তম গ্রেড হতে ১০ম গ্রেড এ উন্নীতকরণ অনুমোদন করলেও অর্থ মন্ত্রণালয় হতে দূরভিসন্ধীমূলকভাবে ২০১৮ সালের ২৩ ডিসেম্বর শুধুমাত্র ৬১ জন অডিটরকে (রিট পিটিশনার) ১০ম গ্রেডে বেতন দেওয়ার জন্য আদেশ দেওয়া হয়। ফলে একই পদে দুই ধরনের বেতন দেওয়ায় বৈষম্যের সৃষ্টি হয়। সিএজি কার্যালয় চলতি বছরের ১২ আগস্ট অডিটর পদকে ১০ম গ্রেডে উন্নীত করণের জন্য অর্থ মন্ত্রণালয়ে পত্র প্রেরণ করা হয়। অর্থ মন্ত্রণালয় এ বিষয়ে আইনগত মতামত প্রদানের জন্য আইন মন্ত্রণালয়ে পত্র প্রেরণ করলে আইন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল এর সম্মতিতে অডিটর পদকে ১০ম গ্রেডে বাস্তবায়নের স্বপক্ষে আইনি মতামত দেন।
আইনি মতামত থাকা সত্ত্বেও অডিটর পদকে ১০ম গ্রেডে উন্নীতকরণে অর্থ মন্ত্রণালয় নানা টালবাহানা করতে থাকলে সিএজি এর অধীনস্থ অডিটররা ‘নো জিও’ ‘নো-ওয়ার্ক’ কর্মবিরতিতে নামেন। এতে সিজিএ ও সিজিডিএফের আওতাধীন ৫৫৬টি পে পয়েন্ট অফিসে সরকারি অর্থ পরিশোধ করা বন্ধ হয়ে গেছে। অডিটররা সিজিএ চত্বরে দীর্ঘ ৩৬ দিন ধরে শান্তিপূর্ণ অবস্থান কর্মসূচি পালন করছেন। একই পদে দুই ধরনের বেতন প্রদান করায় তাদের দাবির প্রতি সমর্থন দিয়ে বৈষম্য বিরোধী কর্মকর্তা ও কর্মচারী সমন্বয় পরিষদের ব্যানারে সিএজি কার্যালয়ের অধীনস্থ এসএএস সুপারিনটেন্ড এবং নিরীক্ষা ও হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তারাও সহবস্থান পালন করছেন। এতে নিরীক্ষা ও হিসাব বিভাগের সমস্ত কার্যক্রম মুখ থুবড়ে পড়েছে।
অর্থ মন্ত্রণালয়ের উপ-সচিব মোহাম্মদ ইকতিদার আলমের স্বাক্ষর করা গত ১০ সেপ্টেম্বর অডিটরদের দায়ের করা বর্ণিত কনটেন্ট পিটিশনগুলোর বিরুদ্ধে আপিল দায়ের করার কার্যক্রম গ্রহণ করা হয়েছে উল্লেখ করে সিএজি কার্যালয়কে পত্র লিখলে সমস্ত নন ক্যাডাররা ক্ষোভে ফেটে পড়ে এবং সিজিএ চত্বরে মিছিল, গণ-অবস্থান ও প্রতিবাদী কার্যক্রম জোরদার করে। গত ১১ সেপ্টেম্বর অডিটররা জাতীয় প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে স্বৈরাচারের দোসর অর্থ সচিবের পদত্যাগও দাবি করেন।
অডিটররা বলেন, অর্থ সচিব ফ্যাসিবাদের দোসর হিসেবে দেশের অডিট অ্যান্ড একাউন্টস বিভাগকে অকার্যকর করার নীল নকশায় লিপ্ত। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে অর্থ মন্ত্রণালয়ের উপ-সচিব মোহাম্মদ ইকতিদার আলমের স্বাক্ষরে ১১ সেপ্টেম্বর পিটিশনার ৬০০ জন অডিটরকে ১০ম গ্রেডে বেতন প্রদানের জন্য আদেশ জারি করে। এতে অডিটর পদে পূর্বের বৈষম্য নতুন করে বাড়ায় সমস্ত নন ক্যাডার অডিটর, সুপার এবং নিরীক্ষা ও হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তারাও ক্ষোভে ফেটে পড়ে সিজিএ চত্বরে নেমে পড়েন এবং বিক্ষোভ কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করেন। অডিটরের দাবি নিয়ে অর্থ মন্ত্রণালয় টালবাহানা এবং সিএজি কার্যালয় হতে যথাযথ ব্যবস্থা না নেওয়ায় সরকারের সমস্ত আর্থিক পরিশোধ বন্ধ রয়েছে।
এ বিষয়ে আন্দোলনকারী অডিটর আহমেদুর রহমান বলেন, অডিটর পদের ১০ম গ্রেডের জিও জারি হলে আমরা ১ (এক) মিনিট ও কর্মবিরতিতে থাকব না এবং আমরা কর্মে ফিরতে চাই। সিএজি কার্যালয়ের অধীনস্থ উচ্চ পদের কিছু কর্মকর্তা ও অর্থ মন্ত্রণালয়ে ঘাপটি মেরে থাকা বিগত স্বৈরাচারের দোসররা দীর্ঘদিনের বৈষম্য জিইয়ে রেখে অন্তর্বর্তী সরকারকে বিপদে ফেলার অপচেষ্টায় লিপ্ত রয়েছে।
আন্দোলনকারী অডিটর আল আমিন বলেন, অডিটর পদের ১০ম গ্রেড আমাদের দাবি নয়, অধিকার। অর্থ মন্ত্রণালয় গত ১০ ও ১১ সেপ্টেম্বর ২ ধরনের পত্র দিয়ে বুঝিয়ে দিয়েছে তারা রাষ্ট্র ব্যবস্থাকে অস্থিতিশীল করার ষড়যন্ত্রে লিপ্ত। প্রশাসন অডিটরের দাবি না মেনে নিয়ে উল্টো অডিটরদের শান্তিপূর্ণ কর্মসূচির মঞ্চ ও প্যান্ডেল ভেঙে দিয়েছে যা নিন্দনীয় কাজ। অধীনস্থ কর্মচারীদের অধিকার বাস্তবায়নে সহযোগিতা না করে আন্দোলনকে ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করার জন্য কিছু ক্যাডার কর্মকর্তা ভুয়া/মিথ্যা প্রোপাগান্ডা ছড়ানোতে ব্যস্ত।
এ বিষয়ে বৈষম্য বিরোধী কর্মকর্তা ও কর্মচারী সমন্বয় পরিষদের সমন্বয়ক সৈয়দ সাখাওয়াত হোসেন বলেন, অডিটর পদকে ১০ম গ্রেড এ উন্নীত করে দীর্ঘদিনের বৈষম্য অতি দ্রুত নিরসন এবং অফিসে নন-ক্যাডার কর্মকর্তা-কর্মচারীদের প্রতি বিমাতাসুলভ আচরণ না করে বৈষম্যহীন কর্ম পরিবেশ সৃষ্টিতে অর্থ মন্ত্রণালয় ও সিএজি কার্যালয়ের প্রতি উদাত্ত আহবান রইল।
বিভাগ : অর্থনীতি
মন্তব্য করুন
আরও পড়ুন
আইপিএলে দল পেলেন না বাংলাদেশের কেউ
পরশুরাম সীমান্তে বিএসএফের হাতে দুই বাংলাদেশী আটক
তাসকিনের দিন ম্লান ব্যাটসম্যানদের ব্যর্থতায়,বড় হারের পথে বাংলাদেশ
তাসকিনের ক্যারিয়ার সেরা বোলিংয়ে অল্পতেই গুটিয়ে গেল ওয়েস্ট ইন্ডিজ,জিততে দরকার ৩৩৩
আসছে বছর গাঁটছড়া বাঁধতে চলেছে তামান্না-বিজয় জুটি
লোহাগড়ায় প্রতিপক্ষের ধারালো অস্ত্রের কোপে ৪ জন গুরুতর আহত
মাওলানা আতাহার আলীকে বাদ দিয়ে দেশের জাতীয় ইতিহাস রচিত হতে পারে না : ধর্ম উপদেষ্টা
পরিবহন খাতে বিশৃঙ্খলার চেষ্টায় আ.লীগের দোসররা
ড. মাহবুব মোল্লা কলেজ সেনাবাহিনীর নিয়ন্ত্রণে
খালেদা জিয়ার সঙ্গে সৌদি রাষ্ট্রদূতের সাক্ষাত
নরসিংদীর পলাশে ইটবাহী ট্রলির ধাক্কায় দুই মোটরসাইকেল আরোহীর মৃত্যু
জনসংযোগ ও বিজ্ঞাপনী সংস্থা ওপাশ কমিউনিকেশনস লিমিটেডের যাত্রা শুরু
মানুষের ‘হৃদয় স্পর্শ করার’ ট্রেনিং নিতে স্বাস্থ্য উপদেষ্টার পরামর্শ
মুরাদনগরবাসীর কাছে সাবেক মন্ত্রী কায়কোবাদের খোলা চিঠি
সেনবাগ হুফফাযুল কুরআন প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত
সুনামগঞ্জে আ.লীগ নেতার গ্রেফতার দাবি
কিশোরগঞ্জের ওয়ালী নেওয়াজ খানের ৩৮তম মৃত্যুবার্ষিকী পালিত
পদ্মা রেলসেতু দিয়ে পরীক্ষামূলক ট্রেন চলবে মঙ্গলবার
এদেশের মানুষ ইসলামি বিপ্লবের প্রস্তুতি নিচ্ছে : কুমিল্লায় আল্লামা মামুনুল হক
পুত্রের কুড়ালের আঘাতে প্রাণ গেল বৃদ্ধ পিতার