মর্যাদাপূর্ণ ব্লুমবার্গ টেকসই উন্নয়ন তালিকায় যুক্ত হলো ১০ বাংলাদেশি প্রতিষ্ঠান
১৬ ডিসেম্বর ২০২৪, ১২:০১ এএম | আপডেট: ১৬ ডিসেম্বর ২০২৪, ১২:০১ এএম
বাংলাদেশের কর্পোরেট জগতে টেকসই উন্নয়নের বিষয়টি সম্প্রতি প্রকাশিত ব্লুমবার্গের হালনাগাদ তথ্যে উঠে আসে। ব্লুমবার্গের এনভায়রনমেন্ট, সোশ্যাল অ্যান্ড গভর্নেন্স (ইএসজি) তালিকায় নতুন করে জায়গা করে নিয়েছে তিনটি বাংলাদেশি প্রতিষ্ঠান। ফলে, এ তালিকায় থাকা বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়ালো ১০-এ। এটি গত বছরের তুলনায় একটি উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি, যেখানে সাতটি বাংলাদেশি প্রতিষ্ঠান এ তালিকায় অন্তর্ভুক্ত ছিল। রোববার (১৫ ডিসেম্বর) এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
মর্যাদাপূর্ণ এ তালিকায় স্থান পাওয়া ১০টি স্থানীয় প্রতিষ্ঠানের ৬টিই দেশীয়ভাবে বিকশিত প্রতিষ্ঠান। তালিকায় অন্তর্ভুক্ত নতুন তিনটি প্রতিষ্ঠান হলো- বিএসআরএম লিমিটেড, লাফার্জহোলসিম বাংলাদেশ ও এমজেএল বাংলাদেশ। এ সাফল্য ইএসজি কমপ্লায়েন্স গ্রহণ ও টেকসই উন্নয়নের প্রতি দেশের অব্যাহত চাহিদার বিষয়টি তুলে ধরে। ২০২৩ সালের টেকসই উন্নয়ন প্রকাশ অনুযায়ী, এ তালিকার মনোনীত বাকি সাতটি প্রতিষ্ঠান হলো- বিএটি বাংলাদেশ (বিএটিবি), গ্রামীণফোন, ম্যারিকো বাংলাদেশ, ব্র্যাক ব্যাংক, আইডিএলসি ফাইন্যান্স, স্কয়ার ফার্মাসিউটিক্যালস ও ওয়ালটন হাই-টেক ইন্ডাস্ট্রিজ।
এই অর্জন প্রতিষ্ঠানগুলোর প্রযুক্তিগত উদ্ভাবনও তুলে ধরে। যেমন, বিএসআরএম পানি পুনর্ব্যবহার ও বায়ুদূষণ রোধে উদ্ভাবনী পদ্ধতি গ্রহণ করেছে। আবার লাফার্জহোলসিম বাংলাদেশ, তাদের চারটি টেকসই উন্নয়ন স্তম্ভ - জলবায়ু, পুনর্ব্যবহারযোগ্যতা, প্রকৃতি ও মানুষের মাধ্যমে নেট-জিরো কার্বন-নিঃসরণ অর্জনের লক্ষ্যে কাজ করছে। বিএটি বাংলাদেশ দেশের একমাত্র প্রতিষ্ঠান যারা তাদের সব উৎপাদন এলাকায় পানির টেকসই ব্যবস্থাপনার জন্য অ্যালায়েন্স ফর ওয়াটার স্টুয়ার্ডশিপের মূল সনদ অর্জন করেছে।
এ বিষয়ে আইডিএলসি ফাইন্যান্সের সিইও এম জামাল উদ্দিন বলেন, “একটি উদ্দেশ্যকে সামনে রেখে নেতৃত্ব দেয়ায় আমাদের ইএসজি স্কোর বেড়েছে। আমাদের কার্বন নিঃসরণের হার স্বচ্ছভাবে প্রকাশ করে, শূন্য কার্বন নিঃসরণের উচ্চাভিলাষী লক্ষ্যে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ থেকে এবং সবুজ (গ্রিন) ও টেকসই অর্থায়নে বিনিয়োগের মাধ্যমে ইচ্ছাকে বাস্তবে রূপদান করছি আমরা।”
ব্লুমবার্গ এই তালিকার জন্য প্রতিষ্ঠানগুলোর টেকসই উদ্যোগ সংক্রান্ত প্রকাশনাগুলো থেকে স্বেচ্ছায় তথ্য সংগ্রহ করে। এই মূল্যায়নে গুণগত তথ্যের তুলনায় পরিমাণগত তথ্যের প্রতি বেশি গুরুত্ব দেয়া হয়। এ সাফল্য থেকে বাংলাদেশের টেকসই উন্নয়নে অগ্রগতি এবং ইএসজির প্রেক্ষাপটে বৈশ্বিক স্বীকৃতি অর্জনের বিষয়টি উঠে আসে। গত বছর এই তালিকায় স্থান করে নেয়া বিএটি বাংলাদেশ ২০৩০ সালের মধ্যে সরাসরি কার্যক্রমে কার্বন নিরপেক্ষতা অর্জনের লক্ষ্যে কাজ করছে। প্রতিষ্ঠানটি ইএসজি প্রতিবেদন প্রকাশের ক্ষেত্রে পথিকৃৎ হিসেবে বিবেচিত হয়।
বিএটি বাংলাদেশের হেড অব করপোরেট অ্যান্ড রেগুলেটরি অ্যাফেয়ার্স শাবাব আহমেদ চৌধুরী বলেন, “সাসটেইনিবিলিটি নিয়ে কাজ করার মাধ্যমে দেশের সেরা ১০ প্রতিষ্ঠানের একটি হিসেবে ব্লুমবার্গের স্বীকৃতি পেয়ে আমরা আনন্দিত। এ স্বীকৃতি টেকসই উন্নয়ন নিয়ে আমাদের অঙ্গীকার ও দেশের উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখার প্রচেষ্টাকে তুলে ধরে। আমাদের সকল কারখানায় পানির টেকসই ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করার জন্য আমরা দেশের একমাত্র প্রতিষ্ঠান হিসেবে এডব্লিউএস কোর সনদ পেয়েছি, যা সম্পদের দায়িত্বশীল ব্যবস্থাপনায় উদাহরণ তৈরি করেছে। এছাড়াও, আমরা ২০৩০ সালের মধ্যে আমাদের কার্যক্রমে কার্বন নিরপেক্ষতা অর্জনের পথে এগিয়ে যাচ্ছি। এ স্বীকৃতি টেকসই উন্নয়ন কার্যক্রমে আমাদের আরও উৎসাহিত করবে এবং আমাদের সকল অংশীজন ও কমিউনিটির জন্য উন্নত ভবিষ্যৎ গড়ে তুলতে ভূমিকা রাখবে।”
লাফার্জহোলসিম বাংলাদেশের সিইও মোহাম্মদ ইকবাল চৌধুরী জানান, তাদের মূল প্রতিষ্ঠান উদ্ভাবনী ও টেকসই বিল্ডিং সমাধানের ক্ষেত্রে বৈশ্বিক নেতৃত্বে রয়েছে। তাদের প্রতিষ্ঠান শূন্য কার্বন নিঃসরণের লক্ষ্য পূরণে কাজ করে যাচ্ছে। তিনি বলেন, “আমাদের টেকসই উন্নয়নের প্রচেষ্টা চারটি মূল স্তম্ভের ওপর ভিত্তি করে গড়ে উঠেছে - জলবায়ু, পুনর্ব্যবহারযোগ্যতা, প্রকৃতি ও মানুষ।”
শীর্ষস্থানীয় ইএসজি রেটিং প্রতিষ্ঠান হিসেবে বিশ্বব্যাপী স্বীকৃত ব্লুমবার্গ, বিশ্বের বিভিন্ন দেশের প্রতিষ্ঠানের টেকসই উন্নয়ন প্রতিবেদন মূল্যায়ন করে থাকে। পরিবেশগত, সামাজিক ও শাসনের (ইএসজি) নানান বিভাগের ভিন্ন ভিন্ন মানদ-ের ওপর ভিত্তি করে প্রতিষ্ঠানগুলোর মূল্যায়ন করা হয়। বিশদ পর্যালোচনার পর ১০০টিরও বেশি দেশের প্রায় ১৬ হাজার প্রতিষ্ঠানকে এই টেকসই উন্নয়ন তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়। ব্লুমবার্গ অনুযায়ী, ইএসজি রেটিংপ্রাপ্ত প্রতিষ্ঠানগুলো বৈশ্বিক ইক্যুইটি বাজার মূলধনের ৯৪ শতাংশের প্রতিনিধিত্ব করে। বিশ্বের তালিকাভুক্ত প্রতিষ্ঠানগুলো বৈশ্বিক ৬০ শতাংশ কার্বন নিঃসরণের জন্য দায়ী বলে মনে করা দায়িত্বশীল বিনিয়োগকারীর সংখ্যা ক্রমশ বাড়ছে।
বিভাগ : অর্থনীতি
মন্তব্য করুন
এই বিভাগের আরও
আরও পড়ুন
পঞ্চদশ সংশোধনী রায় জনগণের প্রত্যাশা পূরণে একধাপ অগ্রগতি
বন্দরে যথাযোগ্য মর্যাদায় বিজয় দিবস পালন
নির্বাচিত সরকারই সংসদে পরিপূর্ণ সংস্কার করবে : আমীর খসরু
সাংবাদিক সামাদের ১৫তম মৃত্যুবার্ষিকী আজ
টানা তৃতীয়বার সিডিপির সদস্য হলেন ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য
ছিনতাইকারীর কবলে সোনারগাঁও প্রেসক্লাবের সভাপতি
খেলাফত প্রতিষ্ঠিত হলে মানুষ পাবে মৌলিক অধিকার
সংস্কার কমিশনের কার্যক্রমে ইইউ’র পূর্ণ সমর্থন রয়েছে
সাবেক শিক্ষামন্ত্রী নওফেল সাবেক ডিবি প্রধান হারুন ও জাহাঙ্গীর-তার স্ত্রীর বিরুদ্ধে দুদকের মামলা
রেল যাত্রীদের ভোগান্তি
বাংলাদেশ থেকে যুক্তরাষ্ট্রে পোশাক আমদানি কমেছে, বেড়েছে ভিয়েতনাম-ভারত থেকে
বাংলাদেশে অংশীদারিত্বে বড় সম্ভাবনা দেখছি সুইডেনের : নিকোলাস উইকস
এশীয় অঞ্চলের স্থিতিশীলতায় পারস্পরিক সহযোগিতার বিকল্প নেই : পররাষ্ট্র উপদেষ্টা
আল্লাহর উপর আস্থা ও বিশ্বাস ফিরিয়ে আনতে হবে
স্টিভ ব্যাননের দাবি : ট্রাম্প তৃতীয় মেয়াদে প্রেসিডেন্ট হবেন
‘সমগ্র বিশ্ব রুশ ক্ষেপণাস্ত্রের নাগালে রয়েছে’ : রাশিয়ার পারমাণবিক সুরক্ষা বাহিনীর প্রধান নিহত
ইসরাইলে হাইপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্র হামলা হুতিদের
শিক্ষার্থী সীমান্ত হত্যার বিচারের দাবিতে চাষাড়ায় মানববন্ধন
রাণীশংকৈলে ফলিত পুষ্টি বিষয়ক ৩ দিনব্যাপী প্রশিক্ষণের উদ্বোধন
ডিএসইসি'র সদস্যদের জন্য ফ্রি মেডিকেল ক্যাম্প ২৩ ডিসেম্বর