একাত্তরে পরাশক্তির দ্বন্দ্ব
২৫ মার্চ ২০২৩, ০৭:৫০ পিএম | আপডেট: ৩০ এপ্রিল ২০২৩, ০৭:৩৬ এএম
আমাদের মুক্তিযুদ্ধে ভারত প্রত্যক্ষভাবে এবং যুক্তরাষ্ট্র, সোভিয়েত ইউনিয়ন, বৃটেন, ফ্রান্স, চীন, সুইজারল্যান্ডসহ বহু দেশ এবং জাতিসংঘ পরোক্ষভাবে জড়িয়ে পড়েছিল। তাদের মধ্যে কূটনৈতিক চ্যানেলে বহু চিঠিপত্র আদান প্রদান হয়েছিল। এই চিঠিপত্রের মধ্যে কোনটি মোস্ট কনফিডেন্টশিয়াল, কোনটি মোস্ট সিক্রেট হিসেবে প্রেরক দেশই চিহ্নিত করে দিয়েছিল। এসব চিঠিপত্রেই তাদের দ্বন্দ্ব পরিস্ফুট। সেসব চিঠিপত্র ও বৈঠকের বিবরণ এককথায় মুক্তিযুদ্ধের মূল্যবান দলিল। কোনো কোনো দেশ সেই সব চিঠিপত্র বই আকারে প্রকাশ করেছে। কোনে কোনো দেশ তা এতদিন পর উন্মুক্ত করেছে। অবশ্য কোনো কোনো আলোচনা বা বৈঠক অবমাননাকর।
মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক কষ্টকল্পিত বইও আমাদের দেশে প্রকাশিত হয়েছে। অধিকাংশই মনগড়া। তবে আমরা যা লিখছি, তার এক বিন্দুও কষ্টকল্পিত বা মনগড়া নয়। বাংলাদেশকে ঘিরে ভারতের প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী যুক্তরাষ্টের প্রেসিডেন্টকে যে চিঠি দিয়েছেন তা কিছুতেই মনগড়া নয়।
ভারত যুদ্ধের জন্য যুক্তরাষ্ট্রকে দায়ী করে
ইন্দিরা গান্ধীকে মার্কিন প্রেসিডেন্ট নিক্সন একটি কড়া চিঠি লেখেন। ১৯৭১ সালের ১৮ ডিসেম্বর। ইন্দিরা গান্ধীকে ‘ডিয়ার ম্যাডাম প্রাইম মিনিস্টার’ হিসেবে সম্বোধন করা হয়। চিঠিতে লেখা হয়: ৭১ সালের ১৫ ডিসেম্বর লেখা আপনার চিঠি আমি পেয়েছি। চিঠিতে আপনি যুদ্ধের জন্য কয়েকটি দেশকে বিশেষ করে যুক্তরাষ্ট্রকে দায়ী করেছেন। গত এক বছরে আপনার সাথে আমার যে সব মতামত বিনিময় হয়েছে তাতে আপনি বিস্মিত হবেন না যে, ওই অভিমত আমি বরাবরই প্রত্যাখ্যান করেছি। এ ব্যাপারে কনফিডেনশিয়াল চ্যানেলে আপনাকে দীর্ঘ চিঠি লিখব। ... আমরা যখন যুক্তরাষ্ট্রে সাক্ষাৎ করি, তখনো শরণার্থীদের জন্য ব্যয়িত বেশির ভাগ অর্থ যুক্তরাষ্ট্র দেবে বলে আপনাকে প্রতিশ্রুতি দেয়া হয়েছিল। এদিকে পাকিস্তানের প্রস্তাব ছিল, তারা সামরিক বাহিনী প্রথম পর্যায়েই প্রত্যাহারে রাজি, যদি ভারত তাদের দেখাদেখি তা করে। আপনাকে এমন কতগুলো পথ বাতলানো হয়েছিল, যে প্রক্রিয়ায় পাক সরকার ও বাংলাদেশের প্রতিনিধিদের মধ্যে আলোচনার সূত্রপাত হতে পারে। ... আমরা কখনো দাবি করিনি যে, আমাদের প্রস্তাবসমূহ ভারতের অবস্থানকে পুরোপুরি সন্তুষ্ট করবে। আমি ভেবেছিলাম, এটা হয়ত সেই ক্ষণ, যখন রাষ্ট্রনায়করা যুদ্ধ ব্যতিরেকেই ইতিহাসের গতি প্রকৃতি বদলে দিতে পারেন। আমাদের সম্পর্কে কি টানাপোড়েন ছিল? হ্যাঁ ছিল। কেননা, আপনার সরকার আমাদের প্রস্তাবগুলো ছুঁেড় ফেলে দেয় এবং কোনো সতর্কতা ছাড়াই যুদ্ধ শুরুর পথ বেছে নেয়। ... আমরা দুঃখিত যে, দক্ষিণ এশিয়ায়, কয়েক মাসের ঘটনাবলি স্থিতিশীলতার ক্ষেত্রে পরস্পরকে অনেক দূরবর্তী করে দিল।
চীন সেনা পাঠাতে চেয়েছিল?
ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী শরণ সিং ও বৃটিশ পররাষ্ট্রমনত্রী স্যার অ্যালেকের মধ্যে ১৯৭১ সালের ২৩ ডিসেম্বর লন্ডনে বৈঠক হয়। বৈঠকের বিবরণী ভারত ‘সিক্রেট’ অভিধায় চিহ্নিত করে। বৃটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, বিমান বন্দরে ভুট্টো তাকে বলেছেন, পূর্ব বাংলার সাথে পশ্চিম পাকিস্তানের সম্পর্ক স্বাভাবিক করার ক্ষেত্রে তাকে সুযোগ দিতে হবে। ভারতীয় মন্ত্রী বৃটিশ মন্ত্রীর এক প্রশ্নের উত্তরে পশ্চিম পাকিস্তান ও পূর্ব বাংলার মধ্যে কনফেডারেশন গঠনের ব্যাপারে সন্দেহ প্রকাশ করেন। ভারতীয় মন্ত্রীকে বৃটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী স্যার অ্যালেকের প্রশ্ন ছিল, মুক্তিযুদ্ধকালে পাকিস্তানে অস্ত্র সরবরাহের ক্ষেত্রে কি চীনের বাড়াবাড়ি ছিল? ভারতীয় পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, চীন এসময়ে পাকিস্তানকে প্রচুর অস্ত্র দিয়েছে। চীন এমনও ধারণা দিয়েছিল, ভারতের বিরুদ্ধে যুদ্ধে সে সেনা পাঠাতেও দ্বিধা করবে না। একথা চীন বহুবার পাকিস্তানকে বলেছে। কৌশলপূর্ণ কায়দায় এহেন ধারণা দিতে চীন বেশ দক্ষ। ভারতীয় পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, চীন যুদ্ধের শুরুতেই হয়ত ভাবতে শুরু করেছিল, বাংলাদেশের অভ্যুদয় ঘটবে। তবে চীন ভেবেছিল, বাংলাদেশে চীনাপন্থীরা প্রশাসনে ভালো অবস্থানে নিয়োগ পাবেন। সে কারণেই ধ্বংস সাধনে মেতে উঠতে উৎসাহিত হয়েছিল অথবা বাংলাদেশের চীনাপন্থীরা যাতে আরো ভূমিকা রাখতে পারে, সেই সুযোগ সৃষ্টির পাঁয়তারা করেছিল চীন। ভারতীয় পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, যুদ্ধের শেষ দিকে আমেরিকাকে অনেক বেশি নিশ্চুপ মনে হয়েছে। এটা যদি পুনর্বিবেচনাপ্রসূত হয় এটাকে আমরা স্বাগত জানাই। ভারতে মার্কিন বিরোধী মনোভাব ছিল অত্যন্ত নেতিবাচক। বিশেষ করে ভারত মহাসাগরে সপ্তম নৌবহর প্রেরণের পর। এক প্রশ্নে ভারতীয় পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ভুট্টো বলছেন, তারা ভারতের বিরুদ্ধে প্রতিশোধ নেবেনই। সেক্ষেত্রে আমরাও মানবতার খাতে ব্যয়িত অর্থ দিয়ে অস্ত্র কেনার প্রতিযোগিতায় লিপ্ত হব।
যুদ্ধবিরতি ঘোষণায় লোকসভায় ইন্দিরার বিবৃতি
পাকিস্তানের পশ্চিম অঞ্চলে যুদ্ধবিরতি প্রসঙ্গে ভারতের প্রধানমন্ত্রী লোকসভায় ১৭ ডিসেম্বর (১৯৭১) একটি বিবৃতি দেন। এতে তিনি বলেন, বৈপ্লবিক গণজাগরণহেতু বাংলাদেশিদের আন্দেলন শুরুর ৬ দিনের মাথায় ৭১ সালের ৩১ মার্চ আমি এই সংসদে একটি প্রস্তাব আনতে পারার জন্য আমি গর্ববোধ করছি। এ কারণেই আমরা অবিলম্বে বাংলাদেশের নিরস্ত্র মানুষের উপর তান্ডব চালানোর সমালোচনা করেছিলাম। লোকসভায় আমি এও বলেছিলাম, সাড়ে সাত কোটি মানুষের যে জাগরণ ঘটেছে, জয় তাদের অনিবার্য। ... বাংলাদেশ আজ মুক্ত। ভারতবাসী এজন্য গর্বিত। ... এটা একটা বিজয়। এ বিজয় শুধু অস্ত্রের নয়, আদর্শেরও। আমাদের নিজস্ব বাহিনীর মধ্যেও দ্বিধা ছিল। কেননা, কেন তারা যুদ্ধে এ নিয়ে তাদের মধ্যে সংশয় ছিল।
৫ ডিভিশন যুদ্ধবন্দি দেশে ফিরে আবার ভারত আক্রমণ করত?
১৯৭২ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি ভারতের পলিসি প্ল্যানিং কমিটির চেয়ারম্যান ডিপি ধর প্যাারিসে ফ্রান্সের পররাষ্ট্রমন্ত্রী চুম্মানের সাথে বৈঠক করেন। এ সংক্রান্ত রিপোর্টটি ভারত টপ সিক্রেট অভিধায় দীর্ঘদিন অবমুক্ত করেনি। চুম্মানের প্রশ্নের জবাবে ভারতের ডিপি ধর বলেন, জেনেভা কনভেনশন অনুযায়ী পাক সেনাদের সাথে ভালো ব্যবহার করা হচ্ছে। ডিপি ধর বলেন, ৫ ডিভিশন সেনা ভারতের কাছে বন্দি রয়েছে। এ নিয়মিত সেনাদের মুক্তি দিয়ে পাকিস্তানে ফেরত পাঠালে তারা আবার ভারতের বিরুদ্ধে অস্ত্র ধরতে পারে। পাকিস্তানের সাথে স্থায়ী শান্তি চুক্তি না হওয়া পর্যন্ত তাদের পাকিস্তানে ফেরত পাঠানো হবে না। পাকবাহিনী বাংলাদেশে ব্যাপক গণহত্যা চালিয়েছে। সেক্ষেত্রে বাংলাদেশও একটি পক্ষ।
ডিপি ধর এক পর্যায়ে ফ্রান্সের পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে বলেন, তারা পাকিস্তানের কাছে প্রচুর অস্ত্র বিক্রি করছে। চীন ও পাকিস্তান একত্রিত হয়ে ভারতের বিরুদ্ধে যুদ্ধে লিপ্ত হবে কীনা। চুম্মান বলেন, তিনি মনে করেন না, চীন ভারতের বিরুদ্ধে যুদ্ধে লিপ্ত হবে। চীন সরবে কথা বলে বটে কিন্তু তাদের প্রতিক্রিয়া সবসময়ই দূরদর্শী। ফ্রান্সের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, সোভিয়েতের সাথে মাখামাখির কারণেই চীন ভারতের উপর চটা।
ভারতীয় সেনারা তাবুতে, বন্দি পাক সেনারা ক্যান্টনমেন্টে
ভারতের পলিসি প্ল্যানিং কমিটির চেয়ারম্যান ডিপি ধরের সাথে সোভিয়েত ইউনিয়নের শীর্ষ নেতা কোসিগিনের মস্কোতে বৈঠক হয় ১৯৭২ সারের ২৪ ফেব্রুয়ারি। বৈঠকের বিষয়বস্তু ভারত সরকার টপ সিক্রেট অভিহিত করে দীর্ঘদিন আটকে রেখেছিল। ডিপি ধর বলেন, মার্কিন বিমানবাহী জাহাজ এন্টারপ্রাইজ যখন আমাদের দরজায় করাঘাত করতে উদ্যত, তখন আমরা দুই দেশ এক বৈঠক করে যৌথভাবে বেশ কিছু সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম। ডিপি ধর কোসিগিনকে বলেন, মি. কুজনেটসেভকে গভীর রাতে ঘুম থেকে জাগিয়ে আমাদের প্রধানমন্ত্রী মিসেস গান্ধী তাকে গোপনীয় কিছু সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছিলেন। ডিপি ধর এক পর্যায়ে কোসিগিনকে বলেন, শান্তি আলোচনার মিটমিট করে জ্বলা সম্ভাাবনাকে নিশ্চিত ভেবে আমরা পাকিস্তানের লাখ লাখ দক্ষ সেনাকে ফেরত দিতে পারি না। বিষয়টি বাস্তবও নয়। কোসিগিন এসময় জানতে চান, পাক বন্দি সেনাদের কোথায় রাখা হয়েছে। ডিপি ধর বলেন, ভারতীয় সেনারা যেসব ব্যারাকে থাকত যুদ্ধ বন্দিদের সেখানে রাখা হয়েছে। ফলে ভারতীয় সেনারা তাবুতে থাকছে। কোসিগিন এ সময় ভুট্টোর মানসিক অবস্থা সর্ম্পকে ডিপি ধরের কাছে জানতে চান। ভুট্টো নিজেকে স্থিতিশীল ও ঝুঁকিমুক্ত মনে করছেন কীনা তাও জানতে চান। ডিপি ধর বলেন, আমেরিকা যতদিন সামরিক জান্তাকে উস্কানি দিয়ে যাবে ততদিন ভুট্টোর মানসিক অবস্থায় স্থিতিশীলতা আসবে না। কোসিগিন জানতে চান, চীন ও আমেরিকা ভুট্টোকে নিয়ে সন্তুষ্ট কীনা। ডিপি ধর বলেন, ভুট্টো হলেন, যখন যেমন তখন তেমন। তার পক্ষে সবকিছুই করা সম্ভব। উন্নত ব্যক্তিত্বের কোন ছোঁয়া ভুট্টোর মধ্যে নেই। ডিপি ধর কোসিগিনকে বলেন, চীন ও আমেরিকা পাকিস্তানকে ফের অস্ত্র দিয়ে চলেছে ব্যাপক হারে। এতে ভারত খুবই উদ্বিঘœ। পাকিস্তানের ২/৩ ডিভিশনকে অস্ত্র দিয়ে সজ্জিত করছে চীন। আর এভাবে অস্ত্রসজ্জিত হয়ে পাকিস্তান যে যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়বে না তার কোনো গ্যারান্টি নেই। ভারতের মূল্যায়ন হলো, পাকিস্তান এপ্রিলের শেষ দিকে ভারতের বিরুদ্ধে নতুন করে যুদ্ধ শুরু করতে পারে।
ডিপি ধর কোসিগিনকে বলেন, বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ করে ভারতের অস্ত্রাদির ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। ভারতের এখন নতুন করে ব্যাপক অস্ত্রাদি দরকার। আর এই অস্ত্র এপ্রিল মে মাসের শুরুতেই আমাদের হাতে আসা দরকার। কোসিগিন বলেন, এখন সমস্যা হলো স্থিতিশীলতার। বাংলাদেশকে ইতোমধ্যে ৪০টি দেশ স্বীকৃতি দিয়েছে। তবে পাকিস্তান কোনো ক্ষেত্রেই চীন ও আমেরিকা ছাড়া কারো সাহায্য পাবে না। ডিপি ধর বলেন, বাংলাদেশে সিআইএ রিঅ্যাকশনারি ফোর্সকে প্রকাশ্যে সমর্থন দিচ্ছে এবং মাওবাদীরা বাংলাদেশের স্থিতিশীলতা বিনষ্টে আপ্রাণ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। কোসিগিন ডিপি ধরের কাছে জানতে চান, বঙ্গবন্ধুর মস্কো সফরকালে আমাদের এবং আপনাদের এজেন্ডার মধ্যে সামান্যতম কোনো প্রভেদ আছে কীনা। ডিপি ধর বলেন, বাংলাদেশের উন্নয়ন বিষয়ে আমি ফিরুবিনকে বিস্তারিত ধারণা দিয়েছি। এমনকি বাংলাদেশের নেতাদের সম্পর্কেও ধারণা দিয়েছি। ভারতকে দ্রুততার সাথে অস্ত্র প্রদান সম্পর্কে কোসিগিন বলেন, আমাদের পক্ষে যা যা করা সম্ভব আমরা তা করব। কোসিগিন বলেন, মিসেস গান্ধী লিখেছেন, বঙ্গবন্ধুর সাথে কয়েকটি বিষয়ে আমি যেন আলাপ করি। কিন্তু মিসেস গান্ধী কোন কোন বিষয়ে আলাপ করতে হবে তা উল্লেখ করেননি। বঙ্গবন্ধু ১ মার্চ (১৯৭২) মস্কো আসবেন। আপনাদের পছন্দের বিষয়গুলো জানতে পারলে শেখ মুজিবের সাথে আলোচনায় সুবিধা হতো। ডিপি ধরকে কোসিগিন বলেন, মিসেস গান্ধী চিঠিতে লিখেছেন, ভুট্টোর কথার মধ্যে কোনো ধারাবহিকতা নেই। তবে ভুট্টোর সোভিয়েত ইউনিয়ন সফরে মিসেস গান্ধীর মনোভাবে আমরা সন্তুষ্ট। কোসিগিন বলেন, ভুট্টোর পক্ষে আমেরিকা বা চীনের কথা না শোনা কঠিন।
৪ ডিভিশন সেনা নিয়ে আমরা হেরেছি, বলেন ভুট্টো
১৯৭২ সালের ২৭ জুন ইসলামাবাদে জাতির উদ্দেশে ভাষণে পাক প্রধানমন্ত্রী ভুট্টো বলেন, আমি আগামীকাল ইন্দিরা গান্ধীর সাথে বৈঠক করতে ভারত যাচ্ছি। যে যুদ্ধে আমরা হেরেছি তার কারিগর আমরা ছিলাম না। আমি এ যুদ্ধে জড়াতে বার বার নিষেধ করেছি। কিন্তু সামরিক জান্তা আমার কথা শোনেনি। সামরিক জান্তার কারণেই সমগ্র জাতিকে আত্মসমর্পণ করতে হয়েছে। ভারতের সাথে ১৪ দিনের যুদ্ধে আমাদের ৪টি সুসজ্জিত ডিভিশনকে দুষমনের হাতে আত্মসমর্পণ করতে হয়েছে। ৯০ হাজারেরও বেশি পাক সেনা আজ দুষমনের হাতে বন্দি। স্বার্থান্বেষী মহলের রাজনীতির বলি হয়েছে প্রথম শ্রেণির সেনা বাহিনী হিসেবে পরিচিত পাক বাহিনী। ভুট্টো তার ভাষণে বলেন, আলোচনার জন্য ভারতে যাওয়ার ব্যাপারে আজ অনেকেই সোচ্চার। তারা কী চান যুদ্ধ বন্দিদের ফিরিয়ে আনতে আমরা চুপচপ বসে থাকি? ... আমরা আমাদের দেশের বৃহৎ অংশ হারিয়েছি। ভুট্টো বলেন, ঢাকার কর্র্তৃপক্ষকে অবশ্যই যুদ্ধবন্দিদের বিচার সংক্রান্ত দাবির অবসান ঘটাতে হবে এবং অবাঙ্গালিদের প্রতি দায়িত্বশীল আচরণ করতে হবে। মিসেস গান্ধী ৬ মাস ধরে আমাদের লোকদের আটক করে রেখেছেন। পাক সরকার এহেন পরিবারগুলো নিয়ে চিন্তিত। ভুট্টো বলেন, মুসলিম বেংগলের জনগণ আমাদের ভাই। আমাদের স্বাধীনতার জন্য আমরা একসাথে যুদ্ধ করেছি। কিন্তু এই বিচ্ছিন্নতা কী স্থায়ী হবে?
লেখক: সাংবাদিক ও প্রাবন্ধিক
বিভাগ : সম্পাদকীয়
মন্তব্য করুন
আরও পড়ুন
বাংলাদেশের বিপক্ষে যে একাদশ দিয়ে মাঠে নামছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ
কিশোরগঞ্জের আওয়ামী লীগ নেতা আনোয়ার কামালসহ তিনজন গ্রেফতার
প্রেসিডেন্টের সঙ্গে তিন বাহিনীর প্রধানের সাক্ষাৎ
বেইজিং সংস্কৃতি ও পর্যটন ব্যুরো ও আটাবের মধ্যে চুক্তি স্বাক্ষরিত
উইন্ডিজের বিপক্ষে মাঠে নামছে বাংলাদেশ
গাজায় যুদ্ধবিরতি ছাড়া বন্দী বিনিময় হবে না : হামাস
শান্তিরক্ষা মিশন মোতায়েন করতে চায় জাতিসংঘ হাইতিতে
চকরিয়ার বিএনপি নেতা আবু তাহের চৌধুরীর মৃত্যুতে সালাহউদ্দিন আহমদ ও হাসিনা আহমদের শোক
পুতিন পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহার করতে দ্বিধা করবেন না : সার্বিয়া
ক্লাইমেট অর্থায়ন ইস্যুতে দেশগুলোর মধ্যে দ্বন্দ্ব
লালমোহনে দুই গ্রুপের সংঘর্ষে আহত যুবদল নেতা চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু
ট্রাম্পের অ্যাটর্নির বিরুদ্ধে তদন্ত প্রতিবেদন আটকে গেল
‘ফিলিস্তিনের পর ইরান, সউদী ও তুরস্ক হবে পরবর্তী টার্গেট’
প্রতি বছর ৩ লাখ নথিবিহীন অভিবাসীকে বৈধতা দানের ঘোষণা স্পেনের
প্রেম-ভালোবাসা নিয়ে সবচেয়ে অসুখী দেশ জাপান-কোরিয়া
মুসলিম চিকিৎসক
শীর্ষে দিল্লি
সৈয়দ মোসাদ্দেক বিল্লাহ আল মাদানীকে জমিয়াতুল মোদার্রেসীন ও দারুননাজাত মাদরাসা’র সংবর্ধনা
ইসলামিক ফাউন্ডেশন এর বোর্ড অব গভর্নর সৈয়দ মোসাদ্দেক বিল্লাহ আল মাদানীকে জমিয়াতুল মোদার্রেসীন ও দারুননাজাত মাদরাসা’র সম্বর্ধনা
বাংলাদেশ, নেপাল ও ভুটানের মধ্যে আঞ্চলিক সহযোগিতার আহ্বান