নবায়নযোগ্য বিদ্যুৎ উৎপাদনে জোর দিতে হবে
০৫ এপ্রিল ২০২৩, ০৭:০৭ পিএম | আপডেট: ৩০ এপ্রিল ২০২৩, ১১:৩৬ এএম
দেশের জ্বালানি খাতে ভয়াবহ সংকট সৃষ্টি হয়েছে। যেমন: (১) বিদ্যুৎ উৎপাদন বৃদ্ধির সাথে সামঞ্জস্য রেখে সঞ্চালন ও বিতরণ ব্যবস্থার উন্নতি না করার কারণে একদিকে, মানুষ চাহিদা মাফিক বিদ্যুৎ পাচ্ছে না, লোডশেডিং/লো-ভোল্টেজ চলছে (গ্রীষ্মকালে আরো বেশি হবে)। অন্যদিকে, সক্ষমতার প্রায় ৬০% উৎপাদন বন্ধ রেখে বিপুল পরিমাণে ক্যাপাসিটি চার্জ দিতে হচ্ছে চুক্তি মোতাবেক। (২) স্বল্প মূল্যের সরকারি প্লান্টের বিদ্যুৎ উৎপাদনে গুরুত্ব না দিয়ে অধিক মূল্যের বিনা টেন্ডারে এবং কোনো মামলা করা যাবে না বিধান করে বেসরকারি খাতের বিদ্যুৎ ক্রয়ের দিকে অধিক গুরুত্ব দেওয়ার কারণে বিদ্যুৎ খাতে ভর্তুকির পরিমাণ ব্যাপক বেড়েছে, যা হ্রাস করার জন্য গত ১২ বছরে ১২-১৩ বার মূল্য বাড়ানো হয়েছে। আইএমএফের ঋণের শর্তের কারণে ভর্তুকি বন্ধ করার কারণে মূল্য আরো বাড়বে। সম্প্রতি বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন বোর্ডের অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, ‘গ্যাস-বিদ্যুৎ সাপ্লাই দেওয়া যাবে যদি সবাই ক্রয়মূল্য যা হবে, সেটা দিতে রাজি থাকে, পাওয়ার সেলের মহাপরিচালকও সম্প্রতি এক দৈনিকে বলেছেন, ‘বিদ্যুৎ খাতে সরকারের এখন পরিকল্পনা ভর্তুকি থেকে বেরিয়ে আসা। (৩) দেশের নতুন গ্যাস কূপ খননের দিকে গুরুত্ব না দিয়ে অধিক মূল্যের এলএনজি আমদানির দিকে অধিক গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। এছাড়া, দেশে আবিষ্কৃত ৮ কোটি মে.টন উন্নতমানের কয়লা মজুদ থাকার পরও তা থেকে উত্তোলন না করে আমদানি করে বিদ্যুৎ প্লান্ট চালানো হচ্ছে। ফলে একদিকে, গ্যাসের মজুদ কমে যাওয়ার কারণে শিল্পে গ্যাসের রেশনিং এবং আবাসনে সংকট চলছে। অন্যদিকে, ইউক্রেন-রাশিয়ার যুদ্ধের কারণে এলএনজি, তেল ও কয়লার মূল্য ব্যাপক বেড়েছে, যার কারণে একদিকে উৎপাদন ব্যয় অনেক বেড়েছে অন্যদিকে, অনেক কারখানা বন্ধ রাখা হয়েছে। (৪) বিদ্যুৎ খাতের ঋণের পরিমাণও ব্যাপকÑ প্রায় ২.৫ লাখ কোটি টাকা। (৫) জ্বালানি খাতে দক্ষ জনবলেরও ঘাটতি আছে।
বর্ণিত সংকটগুলো সহজে দূর হবে না। অন্যদিকে, বিদ্যুৎ প্লান্ট নির্মাণের ব্যয়ও তুলনামূলক বেশি। বাংলাদেশে বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণে মূলধনি ব্যয়ের ওপর ২০১৮ সালে বিজ্ঞান বিষয়ক জার্নাল ‘স্প্রিঙ্গার’-এ একটি গবেষণা রিপোর্ট প্রকাশিত হয়েছে। তাতে দেখা যায়, ভারতের চেয়ে বাংলাদেশে বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণ ব্যয় কেন্দ্র ভেদে কিলোওয়াটপ্রতি ৫০০ থেকে ৪ হাজার ডলার পর্যন্ত বেশি। ধরন ভেদে বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণে এ ব্যয় তিন গুণ পর্যন্ত বেশি। ফলে রেকর্ড পরিমাণে বিদ্যুৎ উৎপাদনে সক্ষমতা এবং শতভাগ মানুষের কাছে বিদ্যুৎ পৌঁছে দেওয়ার কৃতিত্ব ম্লান হয়ে পড়েছে! গত ৪ এপ্রিল প্রকাশিত বিশ্ব ব্যাংকের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশের অর্থনীতি পাঁচ ধরনের ঝুঁকির একটি জ্বালানি ঘাটতি।
দেশের জ্বালানি খাতের এই দুর্দশার মধ্যে গত ২৬ মার্চ শরীর শিউরে উঠার মতো একটি খবর প্রকাশিত হয়েছে এক দৈনিকে। উক্ত খবরের শিরোনাম হচ্ছে, নবায়নযোগ্য বিদ্যুতে এগিয়েছে এশিয়া, থমকে আছে বাংলাদেশ। উক্ত খবরটি ইন্টারন্যাশনাল রিনিউয়েবল এনার্জি এজেন্সির। সংস্থাটি ‘রিনিউয়েবল ক্যাপাসিটি স্ট্যাটিসটিকস-২০২৩’ শিরোনামে প্রকাশিত প্রতিবেদনে ২২২টি দেশ ও অঞ্চলের নবায়নযোগ্য বিদ্যুতের সক্ষমতা এবং ২০১৩ থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত নবায়নযোগ্য বিদ্যুতের বছরভিত্তিক উৎপাদন সক্ষমতার বর্ণনা দেওয়া হয়েছে। সে মতে, ২০২২ সালে মোট বিদ্যুৎ উৎপাদনের সক্ষমতার নবায়নযোগ্য বিদ্যুতের হার চীনে ৪৫.৩% (মোট বিদ্যুৎ উৎপাদন সক্ষমতা ১১ লাখ ৬০ হাজার ৭৯৯ মেগাওয়াট), ভারতে ৩৩.৭%, মালয়েশিয়ায় ২৩.৩%, পাকিস্তানে ৩১.১%, ফিলিপাইনে ২৬.৪% ও বাংলাদেশে ৩.১% (মোট উৎপাদন ৭৭৫ মেগাওয়াট)। অর্থাৎ এশিয়ার মধ্যে সর্বনি¤œ (বিশ্বের অধিকাংশ দেশের ক্ষেত্রেও তাই)। অথচ, সরকারের ২০০৮ সালের নবায়নযোগ্য জ্বালানি নীতিমালা অনুযায়ী ২০১৫ সালে ৫% ও ২০২০ সালে ১০% হওয়ার কথা। অর্থাৎ লক্ষ্যমাত্রার নগণ্যই অর্জিত হয়েছে, যা দেশের জন্য চরম লজ্জার বিষয় ছাড়াও পরিবেশের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর। অবশ্য, নবায়নযোগ্য বিদ্যুতের ক্ষেত্রে এই অবস্থার জন্য অনেকেই সোলার প্যানেল স্থাপনের জন্য প্রয়োজনীয় জমি ও পর্যাপ্ত বিনিয়োগ না পাওয়াকেই দায়ী করে। হ্যাঁ, এটি আংশিক সত্য। কিন্তু বাড়ি ও প্রতিষ্ঠানের ছাদে, হাটে-বাজারে, বন্দরে, সড়কে, নদীর চরে, সাগরের সৈকতে, রেল ও বিদ্যুৎ লাইনের খুঁটি ইত্যাদিতে সৌর প্যানেল বসিয়ে বিদ্যুৎ উৎপাদন করা যায়। উপরন্তু হাওর ও পাহাড়ে সৌর ও বায়ু বিদ্যুৎ উৎপাদন করা যায়। কিন্তু তা হলো না কেন? পানি ও বায়ু বিদ্যুতের পরিমাণ বাড়লো না কেন? কারণ, এ ক্ষেত্রে সরকারি, বেসরকারি ও ব্যক্তি পর্যায়ে তেমন গুরুত্ব দেওয়া হয়নি!
অথচ যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল ব্যুরো অব এশিয়ান রিসার্চের সম্প্রতি প্রকাশিত এক গবেষণা রিপোর্ট মতে, বাংলাদেশ কৃষি জমির ওপর কোনো চাপ না ফেলে ১২ হাজার মেগাওয়াটেরও বেশি নবায়নযোগ্য বিদ্যুৎশক্তির সক্ষমতা তৈরি করতে পারে, যদি শিল্প প্রতিষ্ঠানের ছাদ এবং বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল ব্যবহার করা হয় এবং ডিজেল চালিত সেচ ব্যবস্থাকে সৌর-বিদ্যুৎ দিয়ে প্রতিস্থাপিত করা হয়। উক্ত রিপোর্টে আরো বলা হয়েছে, দ্রুত ২০০০ মেগাওয়াট সৌর বিদ্যুৎ স্থাপন করে ডিজেল চালিত পুরো সেচ ব্যবস্থাকে সৌর-বিদ্যুৎ দিয়ে প্রতিস্থাপন করতে পারলে বছরে এক বিলিয়ন ডলার মূল্যের ডিজেল ও এলএনজি আমদানি করতে হবে না। উপরন্তু বছরে ৫.৫৮ মিলিয়ন টন কার্বন-ডাই-অক্সাইড নির্গমন হ্রাস করা সম্ভব হবে। রুফটপ সোলার সিস্টেম থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদনে বর্তমানে খরচ দাঁড়ায় প্রতি কিলোওয়াট ৫.২৫ টাকা। এই পদ্ধতি ব্যবহার করলে শিল্প কারখানায় দিনের বেলায় প্রতি ইউনিট বিদ্যুতের খরচ গ্রিড বিদ্যুতের খরচের তুলনায় ৪০% কমাতে পারে। একইভাবে ইউটিলিটি-স্কেল সোলার থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদন করা যায় প্রতি কিলোওয়াট ৭.৬ টাকায়, যা ২০২১-২২ অর্থবছরে পিডিবির গড় বিদ্যুৎ উৎপাদন খরচের চেয়ে প্রায় ১৪% কম। অপরদিকে, সম্প্রতি এক আলোচনা সভায় জ্বালানি বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, দেশের পতিত জমিতে সৌর প্যানেল স্থাপন করে বিদ্যুৎ উৎপাদন করতে পারলে ১৮ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করা সম্ভব। অন্যদিকে, এক গবেষণা রিপোর্ট মতে, বাংলাদেশের উপকূলে ১০ হাজার মেগাওয়াট বায়ু বিদ্যুৎ উৎপাদনের সম্ভাবনা রয়েছে। টিআইবি বলেছে, দেশে ২০ হাজার মেগাওয়াট নবায়নযোগ্য বিদ্যুৎ উৎপাদন করার সুযোগ রয়েছে।
বায়ু ম-লের উঞ্চতা হ্রাস করার জন্য সারাবিশ্বে নবায়নযোগ্য জ্বালানি উৎপাদন বৃদ্ধির দিকে সর্বাধিক গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। গত বছর আইআরইএনএ জানিয়েছে, ২০৫০ সালের মধ্যে নবায়নযোগ্য খাতে বিশ্বের মোট বিদ্যুৎ উৎপাদনের পরিমাণ দাঁড়াবে- সোলার থেকে ৩৫.৮%, হাইড্রো থেকে ১২.৪%, স্থলভাগের বায়ু থেকে ২৪.৩% ও সাগরের বায়ু থেকে ১২.১%। অপরদিকে, হাইড্রোজেন আফ্রিকার জ্বালানি খাতে অভ্যুত্থান ঘটাতে চলেছে। ইউরোপেও হাইড্রোজেন প্রযুক্তির প্রতি আগ্রহ বেড়েছে। বিশ্বব্যাংকের মতে, বর্তমানে বিভিন্ন দেশে ১২টি হাইড্রোজেন প্রকল্প চলমান রয়েছে। এছাড়া, পরিকল্পনা পর্যায়ে রয়েছে আরো কিছু প্রকল্প। হাইড্রোজেন সাধারণত প্রাকৃতিক গ্যাস বা পানির অণু থেকে সংগ্রহ করা হয়। ইলেক্ট্রোলাইসিস নামে পরিচিত একটি প্রক্রিয়ায় এটি উৎপাদন করা হয়। ইউরোপীয় ইউনিয়ন গত ৩০ মার্চ নবায়নযোগ্য জ্বালানির উৎপাদন ২০৩০ সালের মধ্যে ২২ শতাংশ থেকে ৪২.৫ শতাংশে উন্নীত করার একটি চুক্তি করেছে। উপরন্তু ইইউ গ্রিনহাউজ গ্যাস নির্গমণ শূন্যে নামিয়ে এনে ২০৫০ সালের মধ্যে ‘জলবায়ু নিরপেক্ষ’ অর্থনীতিতে পরিণত হওয়ার লক্ষ্য নির্ধারণ করেছে।যুক্তরাজ্য ও যুক্তরাষ্ট্রসহ বহু দেশ এই একই নীতি ঘোষণা করেছে কপ-২৭তম সন্মেলনে। নবায়নযোগ্য বিদ্যুৎ উৎপাদনের আরো খবর হচ্ছে, পর্তুগাল ও জার্মানীতে জলাশয়ে ভাসমান সোলার প্যানেল ব্যবহার করে বিদ্যুৎ উৎপাদন করা হচ্ছে। স্কটল্যান্ডের গ্লাসগো শহরের ‘এসডাব্লিউজিথ্রি’ ক্লাব পার্টির অতিথিদের শরীরের উত্তাপ সংরক্ষণ করে জ্বালানি উৎপাদন করা হচ্ছে।তাতে ক্লাবের জ্বালানির ব্যবহারও কমে চলেছে। চীন ও রাশিয়ার ভাসমান পরমাণু বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণ করা হয়েছে। জীবাশ্ম জ্বালানির ব্যবহার কমানোর জন্য কার্বন ট্যাক্স চালু করা হয়েছে অনেক দেশে।
দেশে বর্তমানে বিদ্যুৎ উৎপাদনে সক্ষমতা তৈরি হয়েছে ২৬ হাজার ৭০০ মেগাওয়াট (ক্যাপটিভ প্রায় ৪ হাজার মেগাওয়াটসহ)। এছাড়া, ভারত থেকে আমদানি করা হচ্ছে কয়েকশ’ মেগাওয়াট। সমন্বিত মাস্টারপ্ল্যান অনুযায়ী ২০৪১ সালের মধ্যে ৬০ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। তন্মধ্যে নবায়নযোগ্য জ্বালানি হতে ৪০% তথা ৩০ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ নেয়ার পরিকল্পনা রয়েছে। কিন্তু এ পরিকল্পনা করেই বসে থাকলে চলবে না, বাস্তবায়ন এবং বিশেষজ্ঞদের দেশে নবায়নযোগ্য বিদ্যুৎ উৎপাদনের আকাক্সক্ষার প্রতিফলন ঘটাতে হবে। সেটা কীভাবে হবে তার কিছু বর্ণনা উপরে দেওয়া হয়েছে। সে মতে, আন্তরিকতার সাথে কাজ করতে পারলে লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করা সম্ভব। দ্বিতীয়ত অতিরিক্ত উৎপাদিত সৌর বিদ্যুৎ সংরক্ষণ করার ব্যাটারি আবিষ্কৃত হয়েছে। এটা দেশে ব্যবহার এবং সৌর প্যানেল স্থাপনে স্বল্প সুদে প্রয়োজনীয় ব্যাংক ঋণের ব্যবস্থা করা হলে বাণিজ্যিকভাবে অনেকেই এগিয়ে আসবে। উপরন্তু বাড়ি, প্রতিষ্ঠান, রাস্তা-ঘাট, হাট-বাজার, বন্দর, রেল ও বিদ্যুতের লাইনের খুঁটি, নদীর চর, সাগরের সৈকতে তথা যেখানেই সূর্যের আলো বেশিক্ষণ থাকে, সেখানেই লেটেস্ট মডেলের সৌর প্যানেল স্থাপন করে বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য মানুষকে উদ্বুদ্ধ করতে হবে। একইভাবে হাওর ও পাহাড়েও সৌর ও বায়ু বিদ্যুৎ উৎপাদন করতে হবে। সরকারিভাবেও এসব করতে হবে। উপরন্তু নবায়নযোগ্য অন্য খাত থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য সর্বাধিক গুরুত্ব দিতে হবে। এসব হলে নবায়নযোগ্য বিদ্যুৎ উৎপাদনের পরিমাণ কাক্সিক্ষত পর্যায়ে পৌঁছবে। যাতে দেশের অশেষ কল্যাণ হবে।
জ্বালানি খাত হতে শতভাগ ভর্তুকি তুলে নেওয়া হলে দেশের চরম ক্ষতি হবে। তাই এ ব্যাপারে সতর্ক থাকা দরকার। স্মরণীয় যে, জ্বালানি খাতে শুধু বাংলাদেশই ভতুর্কি দেয় না, অনেক দেশই ভর্তুকি দেয়। ইন্টারন্যাশনাল এনার্জি এজেন্সির তথ্য মতে, ২০২২ সালের অক্টোবর পর্যন্ত জ্বালানি খাতে ভর্তুকি দেয়া ২৫টি দেশের তালিকায় বাংলাদেশের অবস্থান ২১তম। তাই দেশের জ্বালানি খাতের ভর্তুকি অব্যাহত রাখতে হবে। দ্বিতীয়ত: এ খাতের দুর্নীতি, অপচয় ইত্যাদি বন্ধ, সরকারি সব বিদ্যুৎ প্লান্ট সংস্কার করে চালু, দেশে আবিষ্কৃত কয়লা থেকে প্রয়োজনীয় কয়লা উত্তোলন করে ব্যবহার এবং রেন্টাল ও কুইক রেন্টালের বিদ্যুৎ ক্রয় বাতিল, নো বিদ্যুৎ নো পেমেন্ট নিয়ম চালু ইত্যাদি করতে হবে। তাহলেই বিদ্যুৎ উৎপাদনের ব্যয় অনেক কমে যাবে। তখন ভর্তুকির পরিমাণও অনেক হ্রাস পাবে। উপরন্তু দেশে অনাবিষ্কৃত গ্যাস আবিষ্কার করে বিদ্যুৎ উৎপাদনে ব্যবহার করতে পারলে বিদ্যুৎ উৎপাদন ব্যয় আরো অনেক কমে যাবে। ইউএসজিএস ও পেট্রোবাংলার ২০০১ সালের সমীক্ষা রিপোর্ট অনুযায়ী, দেশে গ্যাসের সম্ভাব্য মজুদের পরিমাণ ৩২.১ টিসিএফ। পরে গুস্তাভসনকে দিয়ে এই রিপোর্ট যাচাই করা হয়। গুস্তাভসন ও পেট্রোবাংলা সমীক্ষা চালিয়ে ২০১১ সালে জানিয়েছে, দেশে গ্যাসের মজুদ পাওয়ার সম্ভাবনা ৯০% স্থানে ৩৮ টিসিএফ ও ৫০% স্থানে ৬৩ টিসিএফের কিছু বেশি রয়েছে। উৎপাদন ও বাজারজাত সমান্তরালভাবে না চললে উৎপাদন ব্যাহত হবেই। তাই ২০৫০ সাল নাগাদ বিদ্যুতের চাহিদা মাফিক সঞ্চালন ও বিতরণ ব্যবস্থা গড়ে তোলা অত্যন্ত জরুরি। পরিবেশ রক্ষার জন্য সব কয়লা ভিত্তিক প্লান্টে আলট্রা সুপার ক্রিটিক্যাল প্রযুক্তি ব্যবহার করা আবশ্যক। ঢাকাসহ বড় শহরে বিদ্যুৎ বিতরণ লাইন মাটির নিচ দিয়ে নেওয়ার কাজ চলছে। এটা যুগান্তকারী পদক্ষেপ। তাই নির্ধারিত সময়ে এ কাজ সম্পন্ন করা এবং সারাদেশে এটা করা দরকার। সর্বোপরি সব গ্রাহককে বিদ্যুতের প্রি-পেইড মিটার দেওয়ার কাজটি দ্রুত সম্পন্ন করা আবশ্যক। এটা হলে বিদ্যুৎ বিল তৈরি, প্রদান, আদায়ের ঝামেলা এবং চুরি ও বিল বকেয়া বন্ধ হবে।
লেখক: সাংবাদিক ও কলামিস্ট।
[email protected]
বিভাগ : সম্পাদকীয়
মন্তব্য করুন
আরও পড়ুন
গণমাধ্যমে বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ প্রচারের ওপর গুরুত্বারোপ করলেন উপদেষ্টা
বগুড়ার ধুনট পল্লীতে জয় বাংলা স্লোগান দিয়ে ব্যবসায়ীর ৩৫ হাজার টাকা ছিনতাই
দীর্ঘ ১৩ বছর পর দেশে ফিরছেন কায়কোবাদ
সিদ্দিরগঞ্জে নির্মাণাধীন ভবনের ছাদ থেকে পড়ে বিদ্যুতায়িত, দুই শ্রমিকের মৃত্যু
নাচোলে পিয়ারাবাগানে এক গৃহবধূ খুন
৫ জানুয়ারি থেকে ৪৪তম বিসিএসের মৌখিক পরীক্ষা শুরু
নোয়াখালীর সুবর্ণচরে মোটর থেকে বৈদ্যুতিক তার খুলতে প্রাণ গেল যুবকের
কারখানায় আগুন, পরিদর্শনে হাতেম
নির্বাচনের তারিখ নিয়ে যা জানালেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার
কবি জসীমউদ্দিনের মেজ ছেলে ড. জামাল আনোয়ার আর নেই
ভাঙ্গায় দুই গ্রামবাসীর মধ্যে সংঘর্ষে নারী-পুরুষসহ আহত- ১০
আমাদের সংস্কৃতির অংশ হলো সব ধর্মের মাঝে সম্প্রীতি ও সহাবস্থান: পররাষ্ট্র উপদেষ্টা
রাতের আধারে অসহায় ব্যাক্তিদের বাড়ির দরজায় গিয়ে কম্বল দিলেন ইউএনও
জুলাই গণঅভ্যুত্থানের প্রশংসা করলেন রাহাত, জানালেন নিজ অনুভূতি
সাবেক দুদক কমিশনার জহরুল হকের পাসপোর্ট বাতিল, দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা
শ্রীপুরে ভুয়া মেজর আটক
প্রশ্ন: কিসব কারণে বিয়ের বরকত নষ্ট হয়ে যায়?
মানবাধিকার প্রতিষ্ঠার অনুপম দৃষ্টান্ত মুহাম্মদুর রাসূলুল্লাহ (সা:)
আল-কুরআন তাজকেরায়ে মীলাদ নামায়ে আম্বিয়া (আ:)
ভারত উপমহাদেশে মুসলিম সভ্যতার জাগরণে আবুল হাসান আলী নদভির শিক্ষাচিন্তা