ফ্যাসিবাদের কালো ছায়া : প্রয়োজন দ্রুত সংস্কার ও নির্বাচন
০৯ অক্টোবর ২০২৪, ১২:০২ এএম | আপডেট: ০৯ অক্টোবর ২০২৪, ১২:০২ এএম
গত ৭ অক্টোবর দৈনিক ইনকিলাবে প্রকাশিত ‘ভারতের নীলনকশায় দীর্ঘসূত্রায়ণ কৌশল! তারেক রহমানের ফেরা-হাসিনার বিচার : কোনদিকে খেলছেন আসিফ?’ শীর্ষক প্রতিবেদনটি মনোযোগ সহকারে পাঠ করে বেশ কিছু অত্যাবশ্যকীয় প্রসঙ্গে মতামত প্রদানের তাগিদ অনুভব করছি। বিশেষত অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের ‘অগ্রাধিকার ভিত্তিক’, ‘প্রধান’ এবং ‘মূল কাজ’ কী হওয়া দরকারÑ সে বিষয়ে কথা বলার সময় এসেছে। গণঅভ্যুত্থানের পর দুই মাস অতিবাহিত হয়েছে। ইতোমধ্যে বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান দেশনায়ক তারেক রহমান দ্রুত সংস্কার ও দ্রুত নির্বাচনের কথা একাধিকবার বলেছেন। উপরন্তু তিনি বারবার বর্তমান সরকার যেন ব্যর্থ না হয় সেজন্য সকলের সহযোগিতা কামনা করেছেন। তিনি জুলাই বিপ্লবের আগেই ২০২৩ সালের ১৩ জুলাই রাষ্ট্রকাঠামো মেরামতের ৩১ দফা উপস্থাপন করেন। সেখানে অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠানের লক্ষ্যে নির্বাচনকালীন দল নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থার পুনঃপ্রবর্তন, নির্বাচন কমিশন ও নির্বাচন ব্যবস্থার সংস্কার এবং সংশ্লিষ্ট আইন ও বিধি সংশোধন, দুর্নীতি প্রতিরোধে দৃশ্যমান কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ ও ন্যায়পাল নিয়োগ, সর্বস্তরে আইনের শাসন ও মানবাধিকার প্রতিষ্ঠা, জাতীয় স্বার্থের অগ্রাধিকার নিশ্চিত করে বৈদেশিক সম্পর্ক উন্নয়ন প্রভৃতি গুরুত্বপূর্ণ ও দিক-নির্দেশনামূলক ভাবনার অবতারণা করেন। জাতীয় নির্বাচন কবে হবে- তা নিয়ে সম্প্রতি সেনাপ্রধান এবং সরকারের দু’ধরনের বক্তব্য মিডিয়ায় প্রচারিত হওয়ায় রাজনৈতিক দলগুলো ‘খাজনার চেয়ে বাজনা বেশি’ ধরনের আচরণের লক্ষণ দেখতে পেয়েছে। দেশনায়ক তারেক রহমান এসব পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করে বারবার বলে চলেছেন, ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনা ও তার দোসরদের বিচার সম্পন্ন করে, প্রয়োজনীয় সংস্কার শেষ করে দ্রুত নির্বাচন দিতে হবে।
২.
দেশনায়ক তারেক রহমানের প্রত্যাশার সঙ্গে দেশের জনগণের চাওয়ার জায়গাটি মিলে গেছে। এজন্য সংস্কারের নামে বর্তমান সরকারের দীর্ঘসূত্রিতার কোনো সুযোগ নেই। ড. মুহাম্মদ ইউনূসের অন্তর্বর্তী সরকার দীর্ঘ মেয়াদে ক্ষমতায় থাকলে আওয়ামী লীগের পুনর্বাসিত হওয়ার সুযোগ সৃষ্টি হতে পারে, এমন ধারণা অমূলক নয়। এর মধ্যে কিছু লক্ষণ সাধারণ মানুষকে বিচলিত করে তুলেছে। এর একটি হলো, প্রশাসন এবং বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে জামায়াতের আধিপত্য বিস্তার। এই রাজনৈতিক দলটি ফ্যাসিস্ট হাসিনা সরকারকে ‘সাধারণ ক্ষমা’ করার কথা বলেছে। গত ৩ সেপ্টেম্বর জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান গত ১৫ বছরে জামায়াতে ইসলামীর ওপর আওয়ামী লীগ সরকার যে ‘নির্যাতন’ করেছে, তা ক্ষমা করে দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন। তার ‘সাধারণ ক্ষমা’র এই বার্তা আওয়ামী লীগের সংগঠিত হওয়ার প্রচেষ্টাকে নিশ্চিতভাবে সক্রিয় করতে পারে। ইতোমধ্যে তারা প্রতিবিপ্লবের চেষ্টা করে চলেছে। অথচ তারা অপরাধী, তাদের বিচার করাটা জরুরি। বিচারে তাদের জেল হবে এবং ফাঁসিও হতে পারেÑএকথা মেনে নিয়েও শেখ হাসিনা নানা প্রক্রিয়ায় দলকে চাঙ্গা করার চেষ্টা করছেন। ৫ অক্টোবর (২০২৪) অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে সংস্কার ও নির্বাচন নিয়ে দুটি রোডম্যাপ চেয়েছে জামায়াতে ইসলামী। প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে প্রায় এক ঘণ্টা আলোচনা করেন জামায়াত নেতারা। সংলাপে জামায়াতের পক্ষ থেকে সংস্কারকে এক নম্বর অগ্রাধিকার হিসেবে তুলে ধরা হয় বলে জানান আমির শফিকুর রহমান। তাঁর মতে, সংস্কার সফল হলে নির্বাচন সফল হবে। কিন্তু তিনি শেখ হাসিনার বিচার দাবি করেননি। এতে ভারত ও আওয়ামী লীগের প্রশংসা পাচ্ছে জামায়াতে ইসলাম।
সংস্কার এবং নির্বাচনকে অচ্ছেদ্য ভাবলেও তাদের ‘সাধারণ ক্ষমা’ করার বক্তব্য আহত করেছে দীর্ঘদিন যাবৎ নির্যাতন-নিপীড়নের শিকার হওয়া বিএনপি’র নেতা-কর্মী এবং জুলাই বিপ্লবে শহীদ পরিবারের সদস্যদের। হত্যা-গুম আর হামলা-মামলায় অতিষ্ট জনগোষ্ঠী প্রকৃতপক্ষে আগে চায় বিগত ফ্যাসিস্ট সরকারের বিচার। প্রথমে বিচার, তারপরে নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশন গঠন এবং এর পরে নির্বাচন অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে ক্ষমতা হস্তান্তরÑ এই প্রক্রিয়ার কথাই দেশনায়ক তারেক রহমান বারবার বলছেন। একথা ঠিক, ড. ইউনূস সরকার দেশ শাসনের জন্য আসেনি, দেশ শাসনের সুষ্ঠু পথ বিনির্মাণের জন্য এসেছে। এখন তাদের দায়িত্ব হলো একটা গ্রহণযোগ্য, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন উপহার দেওয়ার পরিবেশ তৈরি করা। এজন্য দরকার দ্রুত সংস্কার এবং নির্বাচন। দ্রুত সংস্কারের অন্যতম হলো ফ্যাসিবাদী শেখ হাসিনার বিচার সম্পন্ন করা। অন্যদিকে দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি আরও উন্নত করা এবং দেশবিরোধী সব ধরনের ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে জাতিকে ঐক্যবদ্ধ রাখার চেষ্টা করা।
৩.
শেখ হাসিনা ও তার দোসরদের বিচার দ্রুত সম্পন্ন করার মধ্য দিয়ে ড. ইউনূস সরকারের সংস্কারের প্রথম কাজ সার্থক হবে বলে আমরা মনে করি। জনগণের আশা-আকাক্সক্ষা চরিতার্থ করার জন্য রাষ্ট্রের প্রয়োজনীয় সংস্কার সাধনের প্রস্তাব করেছেন তারেক রহমান। ইতোমধ্যে এ নিয়ে পত্রপত্রিকা ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপক আলোচনা এবং পরামর্শ প্রদান করা হয়েছে। অপরাধীদের বিচার প্রক্রিয়া শুরু ও শেষ করার মধ্য দিয়ে সংস্কারের প্রথম ধাপ সম্পন্ন করা সম্ভব। ‘জুলাই বিপ্লবে’র একটি বৈশিষ্ট্য হচ্ছে, এটি শুরু হয়েছিল শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদ, সভা, সমাবেশ এবং অবস্থান ধর্মঘটের মাধ্যমে। পরে সরকারের নিপীড়ন, নির্যাতনের পরিপ্রেক্ষিতে তা ক্রমেই সহিংস হয়ে ওঠে। মূলত শেখ হাসিনা সরকারের কর্তৃত্ববাদী শাসন, দুর্নীতি, স্বজনপ্রীতি, বেকারত্ব, সামাজিক ও আর্থিক বৈষম্য ছাত্র ও জনতার মধ্যে গভীর ক্ষোভ ও বিক্ষোভের সৃষ্টি করেছিল। বিএনপি ও তার অঙ্গ সংগঠনগুলোর দীর্ঘদিনের ক্ষোভ ছিল স্বৈরাচারী শাসনব্যবস্থার বিরুদ্ধে। দেশত্যাগের পর কয়েকটি ফোনকলে শেখ হাসিনা যে টোনে কথা বলেছেন তাকে হাল্কাভাবে নেবার সুযোগ নেই। মনে হতে পারে, এটা তার দীর্ঘদিনের স্বভাবসুলভ দাম্ভিকতা বা হঠকারিতাÑকিন্তু তা ভাববার কোনো কারণ নেই। তিনি যে ভাষায় বাংলাদেশের পরিস্থিতি সম্পর্কে কথা বলেছেন, তার পিছনে ভারত আছে, এটাই স্বাভাবিক। কোনোরকম পৃষ্ঠপোষকতা বা আশ্রয়-প্রশ্রয় ছাড়া এমন দুঃসাহসী উচ্চারণ করতে পারার কথা নয়। তিনি নেতা-কর্মীদের কথা না ভেবে গদি ছেড়ে পালিয়েছেন। একটানা ক্ষমতায় থাকার পর তার এই হতাশাব্যঞ্জক পরিণতি যে কোনো শাসকের মনকে বিক্ষিপ্ত করে দেওয়া স্বাভাবিক। দীর্ঘ ১৬ বছর চরম কর্তৃত্ববাদি সরকার পরিচালনার পরে তার মানসিক ভারসাম্যই থাকার কথা নয়। অথচ তিনি ঠাণ্ডা মাথায় কথোপকথন চালিয়েছেন। গোপালগঞ্জের বঙ্গবন্ধু কলেজে শেখ হাসিনার জন্মদিন উদযাপনে যেসব পুলিশ বাধা প্রদান করেছে, তাদের প্রত্যেকের নাম-ঠিকানা সংগ্রহ করে তাকে জানাতে বলেছেন। তিনি জানিয়েছেন কাউকে কোনোভাবে ছাড় দেবেন না, প্রত্যেককেই দেখে নেবেন। তার দোসরদের আইনের আওতায় এনে গুম-খুনের বিচার করার বিরুদ্ধে তিনি সোচ্চার হয়েছেন যেমন, তেমনি অদৃশ্য ক্ষমতার দাপট থেকে হুমকি দিয়ে চলেছেন দেশের বিপ্লবী জনতাকে এবং ড. ইউনূসের সরকারকে। ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনার এ ধরনের অপতৎপরতার পরিপ্রেক্ষিতে, আইনের আওতায় এনে তাঁর বিচার করা সবচেয়ে জরুরি কাজ হিসেবে চিহ্নিত হতে হবে। আসলে হাসিনার পুলিশলীগ, সেনাবাহিনীলীগ, আমলালীগ, সাংবাদিকলীগ, শিল্পীলীগ, টকশোলীগ, বুদ্ধিজীবিলীগ, শিক্ষকলীগ, ফেসবুকলীগসহ যতোরকম লীগ আছে তাদের বিরুদ্ধে ঠিক কীরকম ব্যবস্থা নিলে পরে এদেরকে নিশ্চিহ্ন করা যাবে এবং করা উচিত, সেটা ভাবা প্রয়োজন সংস্কারের প্রথম ধাপেই। এজন্য গণহত্যা তথা ছাত্র-জনতা হত্যার বিচার শুরুর লক্ষ্যে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। প্রধান বিচারপতিকে নিয়োগ প্রদান করা হলেও হাসিনার মাফিয়াতন্ত্র এবং ফ্যাসিবাদের দোসর বিচারপতিদের অপসারণ, প্রত্যাহার, আইনের আওতায় এনে বিচার করা হয়নি। সাবেক প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসান, এম. ইনায়েতুর রহিমগংরা পদত্যাগ করেছেন মাত্র। জুলাই বিপ্লবের পর রাষ্ট্রব্যবস্থার পরিবর্তন হয়েছে। ফ্যাসিস্ট শাসকের পরিবর্তে এসেছে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় নিবেদিত সরকার। ফরাসি বিপ্লব, রুশ বিপ্লব, চীনা বিপ্লব ইত্যাদির দিকে তাকালে দেখা যায়, ফরাসি বিপ্লবের ফলে ফ্রান্সে রাজতন্ত্রের উৎখাত হয় এবং ফ্রান্স একটি প্রজাতন্ত্রে পরিণত হয়। ১৯১৭ সালে রুশ বিপ্লবের ফলে রাজতন্ত্রের পতন ঘটে এবং একটি কমিউনিস্ট রাষ্ট্রের প্রতিষ্ঠা হয়। ১৯৪৯ সালে চীনা বিপ্লবের ফলে চীনে একটি সমাজতান্ত্রিক ব্যবস্থার প্রবর্তন হয়। অন্যদিকে আরব বসন্তের কথা বলা যায়। ২০১০-১১ সালে বিভিন্ন আরব রাষ্ট্রে কর্তৃত্ববাদী শাসনের বিরুদ্ধে ব্যাপক অসন্তোষ ও গণঅভ্যুত্থান গড়ে ওঠে। কিন্তু আরব বসন্তের পর আরবের বিভিন্ন দেশে এখন আরও প্রতিক্রিয়াশীল সরকার জেঁকে বসেছে। (গোলাম রসুল, গণ-অভ্যুত্থান, বিপ্লব ও প্রতিবিপ্লব নিয়ে কিছু প্রশ্ন, প্রথম আলো, ০৬ অক্টোবর ২০২৪) এসব দৃষ্টান্তের আলোকে ড. ইউনূসের সরকার নিয়ে রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের চিন্তিত হওয়ার অবকাশ থাকতেই পারে। তার বিপ্লবকারীদেরকে হাসিনার ভয়ে ভীত হলে চলবে না। তাদের লক্ষে অবিচল থাকতে হবে। যত দ্রুত সম্ভব তার তার দোসরদের বিচার নিশ্চিত করতে হবে।
৪.
দৈনিক ইনকিলাবের প্রতিবেদনে লেখা হয়েছে, ‘জুলাই বিপ্লবকে ভারতের নীলনকশায় ‘বেহাত বিপ্লব’ হওয়ার আশঙ্কার কথা বলতে শুরু করেছেন নাগরিক সমাজ।’ বিখ্যাত ‘টাইম ম্যাগাজিন’ স্পষ্ট ইঙ্গিতই দিয়েছে। প্রকাশিত প্রতিবেদনে পত্রিকাটি বলেছে, ‘সংস্কারপন্থীরা (অন্তর্বর্তীকালীন সরকার) সত্যিই একটি জটিল পরিস্থিতিতে রয়েছেন। অর্থবহ সংস্কার কার্যকর করতে এবং যারা নির্যাতনের জন্য দায়ী তাদের জবাবদিহিতায় আনতে সময় লাগবে। কিন্তু দিকনির্দেশনাহীন একটি দেশে যেখানে সাধারণ মানুষ অর্থনৈতিকভাবে সংগ্রাম করছে, তারা ধৈর্য হারাতে বেশি সময় নেবে না। এরই মধ্যে নির্বাচন ব্যবস্থা, পুলিশ প্রশাসন, বিচার বিভাগ, দুর্নীতি দমন কমিশন, সরকারি প্রশাসন এবং জাতীয় সংবিধানকে কেন্দ্র করে ছয় দফা সংস্কার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। তবে সংস্কারপন্থীদের আশঙ্কা, দেশকে দ্রুত সংস্কারের দিকে নিয়ে যেতে না পারলে আওয়ামী লীগ আমলের নানান দুঃসহ স্মৃতি সাধারণ মানুষের মন থেকে মুছে যেতে শুরু করবে।’ রাষ্ট্র সংস্কারের নানাবিধ উদ্যোগের মধ্যে শেখ হাসিনার ধ্বংস করে যাওয়া প্রতিষ্ঠান সংস্কারের বহুবিধ কমিশন গঠিত হওয়ার প্রেক্ষিতে তারেক রহমান মনে করেন, সংস্কার হওয়াটা জরুরি। কিন্তু সেটি হতে পারে ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনা এবং তার দোসরদের শাস্তি নিশ্চিত করার পর। বলা বাহুল্য, আগামী এক দশকে বাংলাদেশের রাজনীতিতে হাসিনা ও তার দলের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখার কোনো সুযোগ নেই। এজন্য ব্যাপকভিত্তিক সংস্কারের কাজে নিয়োজিত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে গণহত্যার বিচার সম্পন্ন করা অত্যাবশ্যক। দুই মাস হয়ে গেলেও তদন্ত এবং বিচার শুরুর লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না। এখনই সময়, যখন গণহত্যার বিচার শুরু হওয়া দরকার। বলাবাহুল্য, ‘ইন্টারন্যাশনাল ক্রাইম ট্রাইব্যুনাল অ্যাক্ট’-এর আইনে শেখ হাসিনা বিএনপি নেতাদের ফাঁসি দিয়েছেন, নেতৃত্ব শূন্য করেছেন। দেশের ভেতর ঘটে যাওয়া কিছু ঘটনা আমাদের মনকে বিচলিত ও প্রশ্নবিদ্ধ করছে। যেমন, দেশে প্রত্যাবর্তনের পর মজলুম সাংবাদিক মাহমুদুর রহমানকে ফের কারাগারে পাঠানো কি সঠিক কাজ হয়েছে? তিনি আত্মসমর্পণ করে শেখ হাসিনার আইন প্রতিপালনে বাধ্যবাধকতা না দেখানোয় ফের কারাগারে প্রেরণ কি? বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের মামলা স্বপ্রণোদিত হয়ে প্রত্যাহার না করা, বেগম খালেদা জিয়ার মামলা প্রত্যাহারে গড়িমসির নেপথ্যে রয়েছে আইন মন্ত্রণালয়ে থেকে যাওয়া শেখ হাসিনার প্রেতাত্মারা।
৫.
ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনার আমলে সবচেয়ে বেশি নিগৃহীত হয়েছে জিয়া পরিবার। অথচ এ পরিবারের কারোর মামলা প্রত্যাহার কিংবা সাজা বাতিলের ঘোষণা ড. ইউনূস সরকারের কারো মুখ থেকে আসেনি। তারেক রহমানের মামলাকেও ফেলে রাখা হয়েছে ‘আইনগত প্রক্রিয়া’র ভেতর। আশ্চর্য হলো বিপ্লব এবং অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের নিয়োগ কোনোটাই প্রচলিত আইন মেনে হয়নি। এজন্যই বিশ্লেষকরা বলছেন, কূটকৌশল করে তারেক রহমানের স্বদেশ প্রত্যাবর্তনকে বিলম্বিত করা এবং শেখ হাসিনার বিচার প্রক্রিয়া বিলম্বিত করা ভারতের অভিন্ন এজেন্ডার দু’টি দিক। এই এজেন্ডা বাস্তবায়নের বিরুদ্ধে দাঁড়াতে হবে জনগণকে।
লেখক : সাবেক চেয়ারম্যান এবং অধ্যাপক, থিয়েটার অ্যান্ড পারফরমেন্স স্টাডিজ বিভাগ,
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়।
বিভাগ : সম্পাদকীয়
মন্তব্য করুন
আরও পড়ুন
বাংলাদেশের বিপক্ষে যে একাদশ দিয়ে মাঠে নামছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ
কিশোরগঞ্জের আওয়ামী লীগ নেতা আনোয়ার কামালসহ তিনজন গ্রেফতার
প্রেসিডেন্টের সঙ্গে তিন বাহিনীর প্রধানের সাক্ষাৎ
বেইজিং সংস্কৃতি ও পর্যটন ব্যুরো ও আটাবের মধ্যে চুক্তি স্বাক্ষরিত
উইন্ডিজের বিপক্ষে মাঠে নামছে বাংলাদেশ
গাজায় যুদ্ধবিরতি ছাড়া বন্দী বিনিময় হবে না : হামাস
শান্তিরক্ষা মিশন মোতায়েন করতে চায় জাতিসংঘ হাইতিতে
চকরিয়ার বিএনপি নেতা আবু তাহের চৌধুরীর মৃত্যুতে সালাহউদ্দিন আহমদ ও হাসিনা আহমদের শোক
পুতিন পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহার করতে দ্বিধা করবেন না : সার্বিয়া
ক্লাইমেট অর্থায়ন ইস্যুতে দেশগুলোর মধ্যে দ্বন্দ্ব
লালমোহনে দুই গ্রুপের সংঘর্ষে আহত যুবদল নেতা চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু
ট্রাম্পের অ্যাটর্নির বিরুদ্ধে তদন্ত প্রতিবেদন আটকে গেল
‘ফিলিস্তিনের পর ইরান, সউদী ও তুরস্ক হবে পরবর্তী টার্গেট’
প্রতি বছর ৩ লাখ নথিবিহীন অভিবাসীকে বৈধতা দানের ঘোষণা স্পেনের
প্রেম-ভালোবাসা নিয়ে সবচেয়ে অসুখী দেশ জাপান-কোরিয়া
মুসলিম চিকিৎসক
শীর্ষে দিল্লি
সৈয়দ মোসাদ্দেক বিল্লাহ আল মাদানীকে জমিয়াতুল মোদার্রেসীন ও দারুননাজাত মাদরাসা’র সংবর্ধনা
ইসলামিক ফাউন্ডেশন এর বোর্ড অব গভর্নর সৈয়দ মোসাদ্দেক বিল্লাহ আল মাদানীকে জমিয়াতুল মোদার্রেসীন ও দারুননাজাত মাদরাসা’র সম্বর্ধনা
বাংলাদেশ, নেপাল ও ভুটানের মধ্যে আঞ্চলিক সহযোগিতার আহ্বান