ঢাকা   বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর ২০২৪ | ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১

প্রধান উপদেষ্টার ভাষণ ইতিবাচক

Daily Inqilab ইনকিলাব

১৯ নভেম্বর ২০২৪, ১২:০৪ এএম | আপডেট: ১৯ নভেম্বর ২০২৪, ১২:০৪ এএম

অন্তর্বর্তী সরকারের ১০০ দিন পূর্তি উপলক্ষে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস গত রোববার জাতির উদ্দেশে যে ভাষণ দিয়েছেন, তাকে পর্যবেক্ষক মহল ইতিবাচক বলে অভিহিত করেছে। প্রধান উপদেষ্টা ১০০ দিনে তার সরকার কী কী কাজ করেছে, তার একটি সংক্ষিপ্ত বিবরণ উল্লেখ করেছেন। জনগণের প্রশ্ন বা জিজ্ঞাসার দিকগুলোও তার ভাষণে উঠে এসেছে। অনেকে ভাষণকে সরকারের সাফল্যগাঁথা বলে মনে করতে পারেন; তবে সাফল্যের বিবরণও থাকা জরুরি। ছাত্র-জনতার রক্তক্ষয়ী বিপ্লবেরর মধ্য দিয়ে এই সরকারের প্রতিষ্ঠা, যখন দেশে কোনো সরকার ছিল না। ফ্যাসিস্ট সরকার পালিয়ে গিয়েছিল এবং দেশ ও জনগণ সম্পূর্ণ অরক্ষিত হয়ে পড়েছিল। পতিত ও বিতাড়িত সরকারের দুঃশাসনে দেশের প্রায় সব কিছু ধ্বংস হয়ে গিয়েছিল। সেই অবস্থা থেকে দেশ পুনরুদ্ধার ও সচল করার দায়িত্ব পড়ে এ সরকারের ওপর। সরকার যথাসাধ্য চেষ্টা করে যাচ্ছে। ফলাফল এখন পর্যন্ত অনেক ক্ষেত্রে সন্তোষজনক। অনেক ক্ষেত্রে হতাশাজনক। ড. মুহাম্মদ ইউনূসের ভাষণে সাফল্যের কথা যতটা বলা হয়েছে, ব্যর্থতা ও অপরাগতার কথা ততটা বলা হয়নি। জনজিজ্ঞাসার বিষয়গুলো অনেকের মতে, আরো সুনির্দিষ্ট ও স্পষ্ট হলে ভালো হতো। রাষ্ট্রব্যবস্থার সংস্কার ও নির্বাচন নিয়ে তিনি কথা বলেছেন। তবে কবে নাগাদ সংস্কার সম্পন্ন হবে এবং কবে নির্বাচন হবে, সে সম্পর্কে নির্দিষ্ট করে কিছু বলেননি। রাজনৈতিক দলগুলো নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণার দাবি জানানোর প্রেক্ষিতে আশা করা হয়েছিল, ভাষণে রোডম্যাপ জানানো হবে। তা হয়নি। সংস্কার ও নির্বাচন প্রসঙ্গে প্রধান উপদেষ্টা বলেছেন, নির্বাচনী সংস্কারের সিদ্ধান্ত হয়ে গেলে খুব দ্রুত নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণা করা হবে। প্রয়োজনীয় কিছু সংস্কারের কাজ শেষ হলে নির্বাচনের আয়োজন করা হবে। নির্বাচনের ট্রেন যাত্রা শুরু করেছে। এটা আর থামবে না। সংস্কারের জন্য নির্বাচন কয়েক মাস বিলম্বিত করা যেতে পারে। বিএনপি-জামায়াতসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দল জানিয়েছে, সংস্কার ও নির্বাচন নিয়ে সরকারের বক্তব্য আরো স্পষ্ট হওয়া উচিত ছিল। ড. মুহাম্মদ ইউনূস তার ভাষণে ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনাকে ভারত থেকে ফেরত আনার অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেছেন। জুলাই-আগস্ট বিপ্লবের শহীদ ও আহতদের সংখ্যা উল্লেখ শহীদদের পরিবার বর্গের আর্থিক সহায়তা ও আহতদের সুচিকিৎসা নিশ্চিত করার কথা বলেছেন। স্বৈরাচারের শিকার হয়ে যারা পৃথিবী ছেড়ে চলে গেছেন তাদের হত্যাকারীদের বিচার করার কথা দৃঢ়তার সাথে উল্লেখ করেছেন। তিনি বিগত ১৫ বছরের গুম-খুনের বিচার করার প্রতিশ্রুতিও দিয়েছেন। এটা সরকারের একটি গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত। গুম-খুন সংক্রান্ত একটি কমিশনও গঠন করা হয়েছে।

পতিত স্বৈরাচার দেশের অর্থনীতিকে রীতিমতো পথে বসিয়ে গেছে। অর্থনীতির প্রতিটি খাতে অনিয়ম-দুর্নীতি ছিল সাধারণ বাস্তবতা। অর্থ পাচার ছিল স্বাভাবিক ঘটনা। টিআইবির মতে, প্রতি বছর ১২ থেকে ১৫ বিলিয়ন ডলার পাচার হয়েছে। ব্যাংকখাত প্রায় ধ্বংস হয়ে গেছে। ঋণ খেলাপ সীমা ছাড়িয়েছে। খেলাপী ঋণের পরিমাণ প্রায় তিন লাখ কোটি টাকার মতো। ইতোমধ্যে অর্থনীতির সূচকগুলো চাঙ্গা হতে শুরু করেছে। রিজার্ভ বেড়েছে, রেমিট্যান্স বেড়েছে, রফতানি আয় বেড়েছে। অর্থনীতির এই ইতিবাচক অগ্রগতি সম্ভব হয়েছে অর্থ উপদেষ্টা ও বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ও তাদের টিমের কারণে। ড. মুহাম্মদ ইউনূস তার ভাষণে বলেছেন, আমরা যে লণ্ডভণ্ড অবস্থা নিয়ে যাত্রা শুরু করেছিলাম সেটা এখন অতীত ইতিহাস হয়ে দাঁড়িয়েছে। তিনি দৃঢ়তার সঙ্গে এও বলেছেন, সীমাবদ্ধতা সত্ত্বেও আমরা একটি মজবুত অর্থনীতি দিয়ে যাব। বলা বাহুল্য, মজবুত অর্থনীতি গড়ার জন্য বিভিন্ন দেশ ও আর্থিক সংস্থার উদার সহযোগিতা আবশ্যক, যা এই সরকারের পাওয়ার সম্ভাবনা ড. ইউনূসের কারণে অনেক বেশি। ইতোমধ্যে বিপুল সহযোগিতার আশ্বাস পাওয়া গেছে। যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, ইউরোপীয় ইউনিয়ন, জাপান, চীন প্রভৃতি দেশ এবং বিশ্বব্যাংক, আইএমএফ, এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক প্রভৃতি প্রয়োজনীয় সহযোগিতার অঙ্গীকার করেছে। ইউরোপীয় ইউনিয়নের ২৭টি দেশের রাষ্ট্রদূতগণের ঢাকায় ড. মুহাম্মাদ ইউনূসের সঙ্গে বৈঠকে বসার কথা রয়েছে কয়েকদিনের মধ্যে। এটা একটা বিরল ঘটনা। এখানে বিশেষভাবে বলার বিষয় হলো, বিনিয়োগ ছাড়া অর্থনীতি মজবুত করার সহজ কোনো পথ নেই। এফডিআইসহ বিদেশি বিনিয়োগ, দেশি বিনিয়োগ কোনো ক্ষেত্রেই আশাবাদী হওয়ার মতো নয়। বিনিয়োগ আনতে বা বাড়াতে হলে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা ও গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা অপরিহার্য। এইসঙ্গে উৎপাদনসহায়ক ব্যবস্থাপনা বিশেষ করে গ্যাস-বিদ্যুৎ ইত্যাদির পর্যাপ্ত সংস্থান জরুরি। এসব ক্ষেত্রে আমাদের ঘাটতি আছে, যা পূরণ করতে হবে। দেশব্যাপী কর্মের জোয়ার তৈরি করতে হবে। এজন্য সর্বক্ষেত্রে বিনিয়োগের বিকল্প নেই। সরকারকে এই লক্ষাভিমুখী যাত্রা জোরদার করতে হবে। মূল্যস্ফীতির কথাও এসেছে, যার সঙ্গে সরাসরি সম্পৃক্ত দেশের সর্বস্তরের মানুষ। মূল্যস্ফীতি সীমা অতিক্রম করে গেছে। তাতে সাধারণ মানুষের জীবন দুর্বিষহ হয়ে উঠেছে। অবিলম্বে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে নজর দিতে হবে। অনেকের মতে, ড. মুহাম্মদ ইউনূস ১০০ দিনের কাজের যে বিবরণ দিয়েছেন, তা যদি মন্ত্রণালয় ভিত্তিক দিতেন তাহলে বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও তাদের উপদেষ্টাদের সাফল্য-ব্যর্থতার একটা চিত্র পাওয়া যেতো। ইতোমধ্যে কথা উঠেছে, উপদেষ্টাদের বেশিরভাগই অকর্মন্য, দুর্বল এবং অদক্ষ। এসব উপদেষ্টা বহাল রেখে সরকারের সফল হওয়া খুবই কঠিন।

ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সম্ভাবনা অপার। সে সম্ভাবনা কাজে লাগাতে পারলে দেশ রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিকভাবে নজির সৃষ্টিকারী উচ্চতায় অধিষ্ঠিত হতে পারে। গণতন্ত্র, মানবাধিকার, ন্যায়বিচার ও মতামত প্রকাশের স্বাধীনতা বুলন্দ হতে পারে। সর্বোপরি জুলাই-আগস্ট বিপ্লবের স্বপ্ন ও আকাক্সক্ষা বাস্তবায়িত হতে পারে। এ সরকারকে ব্যর্থ হতে দেয়া যায় না। তাকে সবাই মিলে সহযোগিতা করতে হবে, যাতে সফল হয়। বলা আবশ্যক, এই সরকারের বিরুদ্ধে পতিত স্বৈরাচার, তার দোসর এবং ভারতের মোদি সরকার একের পর এক ষড়যন্ত্র-চক্রান্ত চালিয়ে যাচ্ছে। ছাত্র-জনতা ও রাজনৈতিকগুলোর সহায়তায় সরকার কৃতিত্বের সঙ্গে এ ষড়যন্ত্র-চক্রান্ত মোকাবিলা করে আসছে। ড. ইউনূসের ভাষণে এ বিষয়টিও গুরুত্বের সঙ্গে উল্লেখিত হয়েছে। তিনি এ ব্যাপারে সবাইকে সচেতন থাকার আহ্বান জানিয়েছেন। সবারই জানা, দেশে প্রায় ১৬ বছর গণতন্ত্র নেই, ভোটাধিকার নেই। গণতন্ত্র ও ভোটাধিকারের জন্য এদেশের মানুষ লাগাতার সংগ্রাম করে স্বৈরাচার হটিয়ে দিয়েছে। সুতরাং, এই সরকারের অপরিহার্য দায়িত্ব দেশকে গণতন্ত্রে উত্তরণ নিশ্চিত করা। এ জন্য নির্বাচন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আমরা আশা করবো, গণতন্ত্রের পথের অভিযাত্রাকে সরকার যথোচিত গুরুত্ব দেবে। গ্রহণযোগ্য নির্বাচন এবং নির্বাচিত সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তরের পরই সরকারের ছুটি। সেই লক্ষ্যে কাজ যত দ্রুত হবে, ততই মঙ্গল। নির্বাচিত সরকার ক্ষমতায় এলে এখনকার অনেক সংকট-সমস্যাই আর থাকবে না।


বিভাগ : সম্পাদকীয়


মন্তব্য করুন

HTML Comment Box is loading comments...

এই বিভাগের আরও

স্মৃতির দর্পণে সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরী
ডিকার্বনাইজেশনে আরো জোর দিতে হবে
ঐক্য ও সংহতি অটুট রাখতে হবে
আগামীর বাংলাদেশের স্বপ্ন
ইস্পাত কঠিন জাতীয় ঐক্য ও আন্তর্জাতিক সম্পর্কের ভারসাম্য জরুরি
আরও

আরও পড়ুন

শাহজাহান ওমরকে জুতা ও ডিম নিক্ষেপ

শাহজাহান ওমরকে জুতা ও ডিম নিক্ষেপ

জীবনে উত্তম কর্ম, জ্ঞান ও উন্নত চরিত্র অর্জন করতে হলে সফল ব্যক্তিদের সান্নিধ্য অবলম্বন আবশ্যক

জীবনে উত্তম কর্ম, জ্ঞান ও উন্নত চরিত্র অর্জন করতে হলে সফল ব্যক্তিদের সান্নিধ্য অবলম্বন আবশ্যক

নড়াইলে ছাত্র-জনতার ওপর হামলার মামলায় জেলা আ.লীগ সভাপতি কারাগারে

নড়াইলে ছাত্র-জনতার ওপর হামলার মামলায় জেলা আ.লীগ সভাপতি কারাগারে

নোবিপ্রবির সঙ্গে তুরস্কের আনাদোলু বিশ্ববিদ্যালয়ের ইনস্টিটিউশনাল এগ্রিমেন্ট স্বাক্ষর

নোবিপ্রবির সঙ্গে তুরস্কের আনাদোলু বিশ্ববিদ্যালয়ের ইনস্টিটিউশনাল এগ্রিমেন্ট স্বাক্ষর

শিক্ষার্থীদের মতের ভিত্তিতেই ছাত্রদলের রাজনীতি চলবে :  নাছির

শিক্ষার্থীদের মতের ভিত্তিতেই ছাত্রদলের রাজনীতি চলবে : নাছির

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় লাইনচ্যুত ট্রেন উদ্ধার, চলাচল স্বাভাবিক

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় লাইনচ্যুত ট্রেন উদ্ধার, চলাচল স্বাভাবিক

না.গঞ্জে ২৪ ঘন্টায় ৪৪ জন ডেঙ্গু আক্রান্ত

না.গঞ্জে ২৪ ঘন্টায় ৪৪ জন ডেঙ্গু আক্রান্ত

খরচ চালাতে লকার রুম, দরজা বিক্রি করছে রিয়াল মাদ্রিদ

খরচ চালাতে লকার রুম, দরজা বিক্রি করছে রিয়াল মাদ্রিদ

যুক্তরাষ্ট্রে গৌতম আদানির বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি

যুক্তরাষ্ট্রে গৌতম আদানির বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি

ক্ষেতের মধ্যে রেললাইন, জীবিকা হারানোর মুখে কাশ্মীরের আপেল চাষিরা

ক্ষেতের মধ্যে রেললাইন, জীবিকা হারানোর মুখে কাশ্মীরের আপেল চাষিরা

সাতক্ষীরায় সাফজয়ী তিন ফুটবলারের গণসংবর্ধনা

সাতক্ষীরায় সাফজয়ী তিন ফুটবলারের গণসংবর্ধনা

মার্কিনের পর এবার ব্রিটিশ ক্ষেপণাস্ত্র দিয়ে রাশিয়ায় হামলা ইউক্রেনের

মার্কিনের পর এবার ব্রিটিশ ক্ষেপণাস্ত্র দিয়ে রাশিয়ায় হামলা ইউক্রেনের

আহমেদাবাদ শিশু চলচ্চিত্র উৎসবে ৩৫ ইরানি ছবি

আহমেদাবাদ শিশু চলচ্চিত্র উৎসবে ৩৫ ইরানি ছবি

কিউই সিরিজের কথা ভুলে অস্ট্রেলিয়ায় হ্যাটট্রিকের অভিযানে ভারত

কিউই সিরিজের কথা ভুলে অস্ট্রেলিয়ায় হ্যাটট্রিকের অভিযানে ভারত

বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের জন্য স্কলারশিপের অনুমোদন দিয়েছে পাকিস্তান

বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের জন্য স্কলারশিপের অনুমোদন দিয়েছে পাকিস্তান

সেনাকুঞ্জে হাস্যোজ্জ্বল খালেদা জিয়া, ড. ইউনূসের সঙ্গে কুশল বিনিময়

সেনাকুঞ্জে হাস্যোজ্জ্বল খালেদা জিয়া, ড. ইউনূসের সঙ্গে কুশল বিনিময়

সউদী আরবের ফ্যাশন শো নিয়ে যেসব কারণে ক্ষুব্ধ ইসলামী পণ্ডিতরা

সউদী আরবের ফ্যাশন শো নিয়ে যেসব কারণে ক্ষুব্ধ ইসলামী পণ্ডিতরা

সশস্ত্র বাহিনী দিবসে খালেদা জিয়াকে আনতে পেরে আমরা গর্বিত: প্রধান উপদেষ্টা

সশস্ত্র বাহিনী দিবসে খালেদা জিয়াকে আনতে পেরে আমরা গর্বিত: প্রধান উপদেষ্টা

ফ্যাসিস্ট হাসিনা সাংবাদিকদের কণ্ঠরোধ করেছিল: আ ন ম বজলুর রশীদ

ফ্যাসিস্ট হাসিনা সাংবাদিকদের কণ্ঠরোধ করেছিল: আ ন ম বজলুর রশীদ

বাংলাদেশে সরাসরি ফ্লাইট চালু করতে চায় পাকিস্তান

বাংলাদেশে সরাসরি ফ্লাইট চালু করতে চায় পাকিস্তান