রক্ত গ্রহণ সম্পর্কিত তথ্য
৩১ মে ২০২৪, ১২:১৪ এএম | আপডেট: ৩১ মে ২০২৪, ১২:১৪ এএম
রক্ত এখনও কৃত্রিমভাবে তৈরি করা যায় না। মুমূর্ষ রোগীর রক্তের প্রয়োজনে অন্য একজন সুস্থ মানুষকেই এগিয়ে আসতে হয়। যথাসময়ে পর্যাপ্ত পরিমাণ রক্ত সংগৃহীত না হওয়ার মূল কারণ হলো মানুষের মধ্যে রক্তদানের সম্পর্কে রয়েছে অনেক ভুল ধারণা এবং ভয়। সচেতনতার অভাবে এবং কিছু ভুল ধারণার কারণে আমরা অনেকেই রক্তদানের মতো মহৎ কাজ এবং দুর্লভ সুযোগ থেকে নিজেদের বঞ্চিত করছি প্রতিনিয়ত। প্রায় সাড়ে ১৭ কোটি মানুষের এই দেশে প্রতিবছর প্রয়োজনীয় ৯ লাখ ব্যাগ রক্ত সংগ্রহ করা কঠিন কিছু নয়। শুধু প্রয়োজন মানুষের মধ্যে সচেতনতা তৈরি করা। রক্তদানের উপকারিতা, যোগ্যতা এবং ভুল ধারণা সম্পর্কে মানুষকে অবহিত করে তাদের সচেতন করতে হবে। সচেতনতা সৃষ্টির মাধ্যমেই রক্তের সমস্যার সমাধান সম্ভব। তাই নিজের পরিবার, আত্মীয়স্বজন, বন্ধুবান্ধব, প্রতিবেশী ও পরিচিত মানুষের রক্তের গ্রুপ জেনে রাখুন এবং নোট করে রাখুন। রক্তদান কী-তখনই বুঝবেন, যখন আপনজনের জন্য রক্তের প্রয়োজন হবে। জীবনের জন্য প্রয়োজন রক্ত। রক্তের বিকল্প শুধু রক্ত। অপারেশনের জন্য, হিমোফেলিয়া, থ্যালাসেমিয়া বা দুর্ঘটনার কারণে রক্তক্ষরণ হলে শরীরে রক্ত সঞ্চালন প্রয়োজন হয়। শুধু রক্ত হলেই হবে না, জীবনের জন্য চাই বিশুদ্ধ রক্ত। রক্ত দিন জীবন বাঁচান । রক্ত দিতে আপনার সদিচ্ছাই যথেষ্ট। রক্ত দিতে ৫-৭ মিনিট সময় লাগে। আপনার দেওয়া এক ব্যাগ রক্ত ফিরিয়ে দিতে পারে একজন মুমূর্ষু রোগীর জীবন। একজন সুস্থ মানুষ প্রতি ৪ মাস পরপর রক্ত দিতে পারবেন। ঘাটতি রক্ত অল্প দিনের মধ্যেই পূরণ হয়ে যায় এতে শরীরের কোন ক্ষতি হয় না। রক্ত দেওয়ার পর সারাদিনে প্রচুর পরিমাণে তরল গ্রহণ করুন। তবে রক্ত গ্রহণ করার আগে জানা দরকার, তা কতটুকু নিরাপদ।
আসুন জেনে নিই রক্ত গ্রহণ সম্পর্কিত কিছু তথ্য-
১.রক্তদাতার যোগ্যতা : রক্তদাতার বয়স হতে হবে ১৮-৫৫ বছর।
২. রক্তদাতার ওজন: পুরুষ অন্যূন ৪৮ ও মহিলা ৪৫ কেজি । তবে বিশেষ উপাদানের ক্ষেত্রে ওজন ন্যূনতম ৫৫ কেজি।
৩. রক্তচাপ স্বাভাবিক থাকলেও কোনো অ্যান্টিবায়োটিক না নিলে রক্ত দেয়া যাবে। মোট কথা, শারীরিকভাবে সুস্থ থাকলেই কেবল রক্ত দেয়া যাবে। রক্তদানের ক্ষেত্রে লক্ষ্য রাখুন,
জ্বর-ভাইরাস জ্বর থেকে সুস্থ হওয়ার ৭ দিন পর রক্ত দেয়া উচিত।
ডেঙ্গুজ্বর হওয়ার কমপক্ষে ৬ মাস পর ।
ম্যালেরিয়ায় আক্রান্ত হলে সুস্থ হওয়ার কমপক্ষে ১২ মাস পর।
টাইফয়েডে আক্রান্ত হলে সুস্থ হওয়ার কমপক্ষে ৬ মাস পর ।
ডায়রিয়ার ৩ সপ্তাহ পর।
বসন্তের ক্ষেত্রে সুস্থ হওয়ার কমপক্ষে ৬ মাস পর।
যক্ষ্মার ক্ষেত্রে পূর্ণমাত্রার ওষুধ সেবনের ২ বছর পর।
চর্মরোগজনিত সমস্যায় রক্তনালী আক্রান্ত না হলে রক্ত দেয়া যাবে।
কারও হাঁপানি হলে সে যদি ইনহেলার নেয় বা নিয়মিত ওষুধ সেবন করে, তবে রক্ত দিতে পারবে।
ডায়াবেটিস হলে ওষুধ চলা অবস্থায় রক্ত দিতে পারবে না। তবে খাবার নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে রক্তে গ্লুকোজ স্বাভাবিক মাত্রায় থাকলে দিতে পারবে।
রক্তস্বল্পতায় কেউ রক্ত দিতে পারবে না।
মৃগীরোগী হলে না দেয়াই উচিত।
অ্যাকজিমা থাকলে রক্ত দেয়া যাবে না।
কান বা নাক ফোঁড়ালে আগে স্ক্রিনিং করে নিতে হবে।
রক্তদানের আগে ধূমপান করা উচিত নয় এবং রক্তদানের পর কমপক্ষে ১ ঘন্টা ধূমপান করা যাবে না।
অ্যালকোহল পানের ৭২ ঘন্টার মধ্যে রক্তদান করা উচিত নয়।
অপারেশন করলে সুস্থ হওয়ার ১ বছর পর।
রক্তগ্রহণ করলে কমপক্ষে ১ বছর পর।
দাঁতের চিকিৎসা যেমন ফিলিংয়ের একদিন ও রুটক্যানেলের তিনদিন পর।
হেপাটাইটিস থেকে সুস্থ হওয়ার ৬ মাস পর। তবে হেপাটাইটিস বি ও সি আক্রান্তরা কখনও রক্তদান করতে পারবেন না।
ইনফ্লুয়েঞ্জা,টিটেনাস, জ্বর ও কোনো উপসর্গ না থাকলে একজন মানুষ রক্ত দিতে পারবে।
বসন্ত, পোলিও , হেপাটাইটিস, মেনিনজাইটিস হলে ৪ সপ্তাহ পর।
নারীদের ক্ষেত্রে গর্ভবতী মহিলারা রক্ত দিতে পারবেন না।
সন্তান জন্মদানের ৬ মাস পর দিতে পারলেও বাচ্চাকে বুকের দুধ খাওয়ানো অবস্থায় দিতে পারবে না। বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে ঋতুস্রাব চলা অবস্থায় রক্ত না দেয়াই ভালো। তবে জন্মনিয়ন্ত্রণ পিল খাওয়া অবস্থায় রক্ত দিতে বাধা নেই।
৪. যারা কখনোই রক্ত দিতে পারবে না: এইচআইভি পজিটিভ রোগী, সুঁচ, সিরিঞ্জের মাধ্যমে মাদক গ্রহণকারী, ক্যান্সার, হৃদরোগ, বাতজ্বর, সিফিলিস (যৌন রোগ)। কুষ্ঠ বা শ্বেতী রোগীরা রক্ত না দেয়াই ভাল।
জেনে রাখা ভালো, রক্ত দিলে বাঁচে প্রাণ তাই জীবনের জন্যে চাই বিশুদ্ধ রক্ত। স্বেচ্ছায় রক্তদাতাদের পরীক্ষিত রক্তই হতে পারে এর একমাত্র সমাধান। বংলাদেশে প্রতিবছর প্রায় ৯ লক্ষ ব্যাগ রক্তের প্রয়োজন হয়।
মো: লোকমান হেকিম
চিকিৎসক-কলামিস্ট,মোবা: ০১৭১৬২৭০১২০
বিভাগ : স্বাস্থ্য
মন্তব্য করুন
আরও পড়ুন
জাবি শিক্ষার্থী মৃত্যুর ঘটনায় মামলা, তদন্ত কমিটি গঠন, ফটকে তালা, মশাল মিছিল
মাদকের বিরুদ্ধে শক্ত অবস্থানে থাকবে জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল
"নতুন সিনেমা নিয়ে ফিরছেন গ্লোবাল তারকা অ্যাঞ্জেলিনা জোলি"
ড. ইউনূসকে নিয়ে খালেদা জিয়ার পুরোনো যে বক্তব্য ভাইরাল
নতুন নির্বাচন কমিশনের প্রতি ইসলামী আন্দোলনের শুভ কামনা
আলোচনায় ফ্যাসিস্ট হাসিনার ‘টুস করে ফেলে দেয়ার’ হুমকি
দীর্ঘ ১৫ বছর সাংবাদিকরা বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ পরিবেশন করতে পারেনি: খোকন
'ইউটিউব ট্রেন্ডিংয়ে রয়েছে অভিনেতা তারিক আনাম খানের নাটক'
বাংলাদেশ, নেপাল ও ভুটানের মধ্যে আঞ্চলিক সহযোগিতার আহ্বান
ইসলামিক ফাউন্ডেশন এর বোর্ড অব গভর্নর সৈয়দ মোসাদ্দেক বিল্লাহ আল মাদানীকে জমিয়াতুল মোদার্রেসীন ও দারুননাজাত মাদরাসা’র সম্বর্ধনা
সৈয়দ মোসাদ্দেক বিল্লাহ আল মাদানীকে জমিয়াতুল মোদার্রেসীন ও দারুননাজাত মাদরাসা’র সংবর্ধনা
লালমোহনে দুই গ্রুপের সংঘর্ষে আহত যুবদল নেতা চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু
চকরিয়ার বিএনপি নেতা আবু তাহের চৌধুরীর মৃত্যুতে সালাহউদ্দিন আহমদ ও হাসিনা আহমদের শোক
উইন্ডিজের বিপক্ষে মাঠে নামছে বাংলাদেশ
বেইজিং সংস্কৃতি ও পর্যটন ব্যুরো ও আটাবের মধ্যে চুক্তি স্বাক্ষরিত
প্রেসিডেন্টের সঙ্গে তিন বাহিনীর প্রধানের সাক্ষাৎ
দেশের বাজারে ফের বাড়ল সোনার দাম
সবচেয়ে কম মূল্যে বাংলাদেশকে বিদ্যুৎ দিচ্ছে নেপাল: নেপাল রাষ্ট্রদূত
আগামী নির্বাচন নিয়ে দিল্লি ভয়ংকর পরিকল্পনা করছে: যুক্তরাষ্ট্র জাগপা
উত্তরায় মা ও শিশুর গায়ে এসিড ছুড়ে স্বর্ণালংকার লুট