পাইলস বা অর্শ
২৮ নভেম্বর ২০২৪, ১২:০৯ এএম | আপডেট: ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ১২:০৯ এএম
পাইলস রোগটির সাথে আমরা হাজার বছর ধরে পরিচিত। কিন্তু এখনো পুরো বিষয়টি আমাদের কাছে অস্বচ্ছ, ভ্রান্ত ধারণায় পূর্ণ এবং সংস্কারের ঘেরাটোপে বন্দি।
পাইলসের কোনো সঠিক সংজ্ঞা এখন পর্যন্ত সাধারন মানুষের জানা নেই। কারণ এ রোগটির আসল প্রকৃতি এখন পর্যন্ত পুরোপুরি বোধগম্য নয়। পাইলস বলতে আমরা বুঝি মলদ্বারের ভেতরে ফুলে ওঠা রক্তের শিরার একটি মাংসপি-। এ শিরাগুলোর উৎপত্তির ব্যাপারে বিভিন্ন মতবাদ রয়েছে। এরূপ রক্তের শিরার মাংসপি- বা ‘কুশন’ সব মানুষেরই রয়েছে। তাই প্রকৃত অর্থে পাইলস বা ‘হেমোরয়েড’ আমরা তখনই বলি, যখন এটি কোনোরূপ উপসর্গ সৃষ্টি করছে। যেমন মলদ্বারের বাইরে ঝুলে পড়া মাংসপি- বা রক্ত যাওয়া। প্রত্যেক মানুষের তিনটি পাইলস বা ‘কুশন’ আছে। বড় পাইলসের মাঝখানে ছোট ছোট পাইলসও থাকতে পারে। পায়খানা করার সময় শিরাগুলো কিছুটা ঝুলে পড়ে এবং রক্ত ভর্তি হয়ে ফুলে ওঠে তার পর ফেটে গিয়ে রক্ত বের হয়।
বয়স : ৩০-৬০ বছর বয়সের ভেতর এ রোগের প্রকোপ সবচেয়ে বেশি। ২০ বছর বয়সের নিচে পাইলস খুব একটা দেখা যায় না। পাইলস শনাক্ত করা সহজ কাজ নয়। একজন অভিজ্ঞ চিকিৎসক কেবল যন্ত্রের সাহায্যে পরীক্ষা করে পাইলস শনাক্ত করতে পারেন। যুক্তরাষ্ট্রের ৫০ বছর বয়সের ঊর্ধ্ব জনসংখ্যা ৫০ শতাংশ কোনো না কোনো সময় পাইলসের সমস্যায় ভোগেন।
কারণ : কয়েক শতাব্দীর গবেষণা সত্ত্বেও পাইলসের প্রকৃত কারণ উদঘাটিত হয়নি। তবে কিছু কিছু রোগ পাইলস হওয়াকে ত্বরান্বিত করে, যেমন মলত্যাগে অতিরিক্ত কোঁত দেয়া, অনিয়মিত পায়খানার অভ্যাস, কোষ্ঠকাঠিন্য, ডায়রিয়া ইত্যাদি। অনেক কারণ আছে যার জন্য পাইলসহ হতে পারে, যেমন বংশগত, অনেকক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকা, অনেকক্ষণ গরমে থাকা, ভারি ওজন তোলা, আঁটসাঁট পোশাক পরা, হরমোনের প্রভাব, আঁশজাতীয় খাবারের অভাব ইত্যাদি।
উপসর্গ : পাইলসের শ্রেণী বিন্যাস : পাইলস দুই প্রকার।
১. বহিঃস্থিত পাইলস : এক্ষেত্রে মলদ্বারের বাইরে ফোলা থাকে এবং কিছুটা ব্যথা বা অস্বস্তি হতে পারে।
২. অভ্যন্তরীণ পাইলস : এক্ষেত্রে টয়লেটে টাটকা লাল রক্ত দেখা যায়। কোনোরূপ ব্যথা থাকে না। মলত্যাগের শেষে রক্ত যায়। রক্ত ফোঁটায় ফোঁটায় যায়। রক্ত যাওয়ার পর যদি বেশি ব্যথা ও জ্বালাপোড়া হয় তাহলে এনাল ফিশার বা ক্যান্সার হতে পারে। রক্ত যেতে যেতে রোগী গভীর রক্তশূন্যতায় ভুগতে পারেন। মলদ্বারের বাইরে পাইলসটি ঝুলে পড়তে পারে। সেক্ষেত্রে মলত্যাগের শেষে পাইলসটি আপনা আপনি ভেতরে ঢুকে যেতে পারে। রক্ত যাওয়া কখনো একটানা চলে না। প্রথমত বছরে একবার দু’বার যায়, এরপর দু’মাস পরপর যায়। পরে প্রতি মাসে যায়। শেষে ঘন ঘন রক্ত যায় এবং রক্ত যাওয়ার পরিমাণও বেড়ে যায়। যখন মরা রক্ত যায় বা আমমিশ্রিত রক্ত যায় এবং পায়খানার শুরুতেই রক্ত যায় তখন আমরা ক্যান্সার বলে সন্দেহ করি। তবে পায়ুপথ বা বৃহদন্ত্রের ক্যান্সারে টাটকা লাল রক্ত যেতে পারে।
পাইলসে সাধারণত ব্যথা হয় না। থ্রম্বোসিস হলে বা পাইলস বাইরে অতিরিক্ত ঝুলে থাকলে ব্যথা হতে পারে। বেশীরভাগ রোগীদের ধারণা শুধু পাইলস হলেই রক্ত যায়। কিন্তু সঠিক তথ্য হচ্ছে পায়ুপথের অসংখ্য রোগের প্রধান লক্ষণ পায়খানার সাথে রক্ত যাওয়া। যেসব রোগে পায়খানার সাথে রক্ত যায় তার মধ্যে রয়েছে পাইলস, এনাল ফিশার, পলিপ, ক্যান্সার, ফিস্টুলা, আলসারেটিভ কোলাইটিস, রেকটাল প্রোলাপস।
প্রতিরোধের উপায় : এরোগ প্রতিরোধের উপায় হচ্ছে সময়মতো কোষ্ঠকাঠিন্য ও ডায়রিয়ার চিকিৎসা করা, খাবারের সাথে আঁশজাতীয় জিনিস যেমন ফল, সবজি, সালাদ পরিমাণমতো খাওয়া, দৈনিক ৬-৮ গ্লাস পানি পান করা, ভারি ওজন না তোলা, অতিরিক্ত গরমে বেশিক্ষণ না থাকা ইত্যাদি।
ফারজানা হোসেন
ফতুল্লা, নারায়ণগঞ্জ।
বিভাগ : স্বাস্থ্য
মন্তব্য করুন
আরও পড়ুন
আইপিএল নিলামে নাম না তোলার ব্যাখ্যা দিলেন ইংলিশ অলরাউন্ডার
‘চিকিৎসা নিতে করাচি যান, ভারতে নয়’, বাংলাদেশিদের ভিসা বাতিলের দাবি শুভেন্দুর
বৃষ্টির কবলে দ. আফ্রিকা-শ্রীলঙ্কা প্রথম টেস্ট
ইসকন দেশে নৈরাজ্য সৃষ্টির অপচেষ্টা চালাচ্ছে - বাংলাদেশ জমিয়াতুল মোদার্রেছীন
আওয়ামী নেতাদের নির্দেশে চট্রগ্রামে নৈরাজ্য সৃষ্টির ব্যর্থ চেষ্টা
সাত কলেজ অনার্স প্রথম বর্ষের কালকের পরীক্ষা স্থগিত
নাঙ্গলকোট উপজেলা যুবদলের ১২ নেতাকর্মীর পদত্যাগ কমিটি বাতিলের দাবি
মহারাষ্ট্রে মুখ্যমন্ত্রী পদ নিয়ে মহা জট, ফড়নবিশকে জরুরি তলব দিল্লিতে
সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান ফখরুল ইসলামের
আইনজীবী সাইফুল হত্যাকারী বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী বহিষ্কার
আইনজীবী হত্যার অবিলম্বে বিচার চাই -ইসলামী আন্দোলন ঢাকা জেলা দক্ষিণ
ফ্যাসিবাদের দোসর উগ্র হিন্দুত্ববাদী সংগঠন ইসকন’কে নিষিদ্ধ করা হোক আলহাজ হাফিজ সাব্বির আহমদ
ভারতের প্রেসক্রিপশনে ইসকন বাংলাদেশে অশান্তি করছে: হাসনাত
ডোমিনোজ পিৎজা এখন মহাখালীতে
বিএনপি জনগণের দল, 'ফেব্রুয়ারির মধ্যে নির্বাচন দিন' অধ্যক্ষ সেলিম ভূইয়া
ইসকন ভারতের হিন্দুত্ববাদী এজেন্ডা বাস্তবায়নে দাঙ্গা লাগানোর ষড়যন্ত্রে লিপ্ত দেশব্যাপী তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদের ঝড়
ডেঙ্গুতে আরও ৪ জনের মৃত্যু
ইসকনের মিথ্যাচার ও ভারতীয় মিডিয়ার সিন্ডিকেট নিউজ
ঋণগ্রহীতা মারা যাওয়ার পর পাওনাদার তার পাওনা মাফ করে দেওয়া প্রসঙ্গে।
সংস্কারের প্রাসঙ্গিকতা