ঢাকা   সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪ | ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১

গারো পাহাড়ে কলার আবাদ

Daily Inqilab এস. কে. সাত্তার, স্টাফ রিপোর্টার

০২ নভেম্বর ২০২৪, ১২:০৫ এএম | আপডেট: ০২ নভেম্বর ২০২৪, ১২:০৫ এএম

স্বল্প খরচ আর প্রাকৃতিক দুর্যোগ না থাকায় কলাচাষ লাভজনক হওয়ায় সীমান্তবর্তী শেরপুর জেলা ও গারো পাহাড়ি উপজেলাগুলোয় বেড়েছে কলার আবাদ। উৎপাদিত নানা জাতের কলার চাহিদা ও খ্যাতি এখন দেশজুড়ে। বানিজ্যিকভাবে সরবি, সাগর, চম্পা, আনাইজে বা কাঁচকলা, তুলইডে, ভিমাইডে ইত্যাদি জাতের কলাচাষ ও বিকিকিনির সঙ্গে জড়িয়ে সচ্ছলতা ফিরেছে শেরপুর জেলা- উপজেলার বেশ কয়েক শত কৃষক পরিবারে। মাটি ও আবহাওয়া কলা চাষের উপযোগী হওয়ায় একবার চারা রোপণ করে কোন কোন কলা বছরে ৩বার বিক্রি করতে পেরে লাভবান হচ্ছেন কৃষক। কৃষকরা বলছেন, একবার চারা রোপণে তিনবার কলার ফলন পাওয়া যায়। খরচ কম- লাভ বেশি। তাই চাষিরা কলাচাষে ঝুঁকে পড়েছেন তারা।
‘ঝিনাইগাতী উপজেলার ডেফলাই,ভালুকা,গান্দিগাঁও বাঁকাকুড়া, রাংটিয়সহ পাহাড়ি গ্রামাঞ্চলে সবচে বেশী কলাব আবাদ হচ্ছে বলে দৈনিক ইনকিলাবকে জানান, ঝিনাইগাতী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা হুমায়ুন দিলদার।’ ঝিনাইগাতীর উল্লেখিত গ্রামেগুলোয় অনেক বাড়ির পাশেই শোভা পাচ্ছে বিভিন্ন জাতের কলার বাগান।
‘কলা চাষিরা জানান,এসব গ্রামের মাঠে কলার বাগানে প্রচুর পরিমাণ কলার চাষ হয়েছে। এছাড়া গারো পাহাড় অঞ্চলের ঝিনাইগাতী, শ্রীবরদী ও নালিতাবাড়ীসহ বিভিন্ন উপজেলার মাঠে মাঠে ও কলার চাষ হচ্ছে।’
’৯০ দশক থেকে শেরপুরে বানিজ্যিকভাবে কলাচাষ শুরু হলেও বর্তমানে কৃষকদের কাছে কলা আবাদ এখন একটি অন্যতম অর্থকরী ফসল। স্থানীয় কলার কদর ও দিন দিন বেড়েই চলেছে। এসব জাতের কলা কাঁচা অবস্থায় গাড়ো সবুজ হলেও পাকলেই দেখতে হলুদ।’
‘শেরপুর জেলা কৃষি বিভাগের খামারবাড়ির অতিরিক্ত উপপরিচালক (উদ্ভিদ সংরক্ষণ) কৃষিবিদ. হুমায়ুন কবির দৈনিক ইনকিলাবকে বলেন, চলতি মৌসুমে জেলায় কলার চাষ হয়েছে ৪৮৫ হেক্টর জমিতে। কলার দামও ভালো পাচ্ছেন কৃষকরা। আগামীতে কলাচাষ আরও বেড়ে যাবে বলে ওই জেলা কৃষি কর্মকর্তার ধারণা।’
‘ঝিনাইগাতী উপজেলার ভালুকা গ্রামের কলাচাষি আজাহার জানান, স্থানীয় কৃষি বিভাগের পরামর্শে কলার চারা আমদানি করে এক বিঘা জমিতে চাষ করেছিলেন। সেই এক বিঘা কলায় অল্প টাকা খরচ করে ভালো লাভ হয়। পরে গেল দুই বছর থেকে সরবি, সাগর ও চম্পা জাতের কলার আবাদ করি। এ জাতের কলা বড়, সুস্বাদু এবং রং সুন্দর হওয়ায় দেশের সব জেলাতেই কলার চাহিদা অনেক বেশি। প্রথমবারেই খরচের টাকা বাদ দিয়ে লাভ হয়েছে দ্বিগুণ। ওই জমি থেকে এখনও দুবার কলা পাওয়া যাবে। কলাচাষ লাভজনক হওয়ায় গান্দিগঁও গ্রামের কলাচাষি মিজানুর রহমান মিজান, আশ্রাফুল আলম ও বাবলু কলা চাষে তারা ভাল লাভের মূখ দেখেছেন। আগামীতে তারা আরো বেশী জমিতে কলা চাষ করবেন বলে জানান।’
‘কলা ব্যবসায়ীরা বলেন, এখানকার উৎপাদিত কলার চাহিদা অনেক বেশি এবং দামও ভালো। বাজারেতো বটেই বাগান থেকেই বেশীরভাগ কলা কিনে আনতে হয়। কলা ব্যবসায়ীরা জানান, স্থানীয় কলা থেকেই আমারা পরিবারের যাবতীয় সাংসারিক খরচ চালাই।’
‘ঝিনাইগাতী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আশ্রাফুল আলম রাসেল দৈনিক ইনকিলাবকে বলেন, লাভজনক হওয়ায় চাষিরা কলার চাষে ঝুকে পড়েছেন। সাগর, সবরি, চাঁপা, চিনিচাঁপাসহ বিভিন্ন ধরনের কলার চাষ হচ্ছে। সম্প্রতি কৃষি বিভাগ তরকারি খাওয়ার জন্য উন্নত জাতের কাঁচকলা
(আনাইজে কলা) চারা সরবরাহ ও চাষ করার জন্য চাষিদের উদ্বুদ্ধ করছেন। তবে একই জমিতে ২৪ মাসের বেশি কলার চাষ না করতে চাষিদের পরামর্শ দিতে হবে। নচেৎ জমির উরবরতা শক্তি হুমকির মুখে পড়বে। তিনি বলেন, কলাচাষিদের বিভিন্ন সমস্যা ও সমাধানে কৃষি বিভাগ কাজ করে যাচ্ছে। উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তারা দিনভর মাঠে থাকছেন। চাষিদের কলা চাষে প্রয়োজনীয় পরামর্শ দিচ্ছেন। অন্যদিকে ব্যবসায়ী ও কৃষকদের কলাতে কারবাইড ও বিষ স্প্রে না করার পরামর্শ দিচোছন।’


বিভাগ : অভ্যন্তরীণ


মন্তব্য করুন

HTML Comment Box is loading comments...

এই বিভাগের আরও

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন জেলা কমিটিতে অচেনা ৭ জন
মৌলভীবাজারে কৃষি ও প্রযুক্তি মেলা শুরু
দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণের মডেল উদ্ভাবন
ব্রহ্মপুত্রে অবৈধ ড্রেজার বসিয়ে চলছে বালু ব্যবসা
বাঘায় কৃষি শ্রমিককে গলা কেটে হত্যা
আরও

আরও পড়ুন

গুমের দায়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ২২ সদস্য চাকরিচ্যুত

গুমের দায়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ২২ সদস্য চাকরিচ্যুত

কুরস্ক অঞ্চলের ৪০ ভাগ খোয়ানোর স্বীকারোক্তি ইউক্রেনের

কুরস্ক অঞ্চলের ৪০ ভাগ খোয়ানোর স্বীকারোক্তি ইউক্রেনের

মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি নিয়ে বাংলাদেশ চীনের সাথে কাজ করতে আগ্রহী: বাণিজ্য উপদেষ্টা

মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি নিয়ে বাংলাদেশ চীনের সাথে কাজ করতে আগ্রহী: বাণিজ্য উপদেষ্টা

হাজীদের সর্বোত্তম স্বার্থ রক্ষায় সরকার প্রতিশ্রুতিবদ্ধ ধর্ম উপদেষ্টা ড. খালিদ হোসেন

হাজীদের সর্বোত্তম স্বার্থ রক্ষায় সরকার প্রতিশ্রুতিবদ্ধ ধর্ম উপদেষ্টা ড. খালিদ হোসেন

শরীয়তপুরে যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল ও ছাত্রদলের যৌথ কর্মী সভা

শরীয়তপুরে যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল ও ছাত্রদলের যৌথ কর্মী সভা

মানিকগঞ্জে সড়ক দুর্ঘটনায় সিকিউরিটি গার্ড নিহত

মানিকগঞ্জে সড়ক দুর্ঘটনায় সিকিউরিটি গার্ড নিহত

পাকিস্তানকে উড়িয়ে দিল জিম্বাবুয়ে

পাকিস্তানকে উড়িয়ে দিল জিম্বাবুয়ে

১৫ দিন রিমান্ড শেষে কারাগারে আব্দুর রাজ্জাক

১৫ দিন রিমান্ড শেষে কারাগারে আব্দুর রাজ্জাক

লক্ষ্মীপুরে ১২০ টাকায় পুলিশে চাকরি পেলেন ৫০ জন

লক্ষ্মীপুরে ১২০ টাকায় পুলিশে চাকরি পেলেন ৫০ জন

নির্বাচিত সরকারই দেশকে পুনর্গঠন করতে পারে : তারেক রহমান

নির্বাচিত সরকারই দেশকে পুনর্গঠন করতে পারে : তারেক রহমান

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন জেলা কমিটিতে অচেনা ৭ জন

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন জেলা কমিটিতে অচেনা ৭ জন

মৌলভীবাজারে কৃষি ও প্রযুক্তি মেলা শুরু

মৌলভীবাজারে কৃষি ও প্রযুক্তি মেলা শুরু

দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণের মডেল উদ্ভাবন

দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণের মডেল উদ্ভাবন

ব্রহ্মপুত্রে অবৈধ ড্রেজার বসিয়ে চলছে বালু ব্যবসা

ব্রহ্মপুত্রে অবৈধ ড্রেজার বসিয়ে চলছে বালু ব্যবসা

বাঘায় কৃষি শ্রমিককে গলা কেটে হত্যা

বাঘায় কৃষি শ্রমিককে গলা কেটে হত্যা

কেশবপুরে অবৈধ ইটভাটা বন্ধে বিভিন্ন দফতরে অভিযোগ

কেশবপুরে অবৈধ ইটভাটা বন্ধে বিভিন্ন দফতরে অভিযোগ

হামলার শিকার হয়েও মুখ খুলতে পারছে না বোয়ালমারীর বহু পরিবার

হামলার শিকার হয়েও মুখ খুলতে পারছে না বোয়ালমারীর বহু পরিবার

ইসলামী আন্দোলনের গণসমাবেশে আ.লীগ নিষিদ্ধের দাবি

ইসলামী আন্দোলনের গণসমাবেশে আ.লীগ নিষিদ্ধের দাবি

বিপিএলের প্রথম দিনই মাঠে নামছে বসুন্ধরা-মোহামেডান

বিপিএলের প্রথম দিনই মাঠে নামছে বসুন্ধরা-মোহামেডান

সাগরে মিলছে না আশানুরূপ ইলিশ হতাশায় মীরসরাইয়ের জেলেরা

সাগরে মিলছে না আশানুরূপ ইলিশ হতাশায় মীরসরাইয়ের জেলেরা