সড়ক বাতি না থাকায় দুর্ভোগে নগরবাসী

রাতের খুলনা সিটি যেন ভুতুড়ে নগরী

Daily Inqilab খুলনা ব্যুরো

২৫ মার্চ ২০২৫, ০১:০৭ এএম | আপডেট: ২৫ মার্চ ২০২৫, ০১:০৭ এএম

খুলনা সিটি কর্পোরেশনের (কেসিসি) ১ থেকে ৫ নম্বর ওয়ার্ডের সড়কগুলোতে রাত নামলেই নেমে আসে ঘোর অন্ধকার। সড়কবাতি না থাকায় স্থানীয় বাসিন্দাদের চলাচলে চরম ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। কেউ কেউ বাধ্য হয়ে হাতে টর্চ লাইট জ্বালিয়ে পথ চলছেন, যেন কোনো গ্রামীণ জনপদে বসবাস করছেন তারা!

খুলনা নগরীর ফুলবাড়ি গেট, মহেশ্বরপাশা, তেলীগাতী, মানিকতলা এলাকাবাসীর অভিযোগ, বহু আগেই এসব সড়কে বৈদ্যুতিক খুঁটি বসানো হলেও সেখানে বাতি লাগানো হয়নি। ফলে সন্ধ্যার পরই এসব এলাকা এক অদ্ভুত নিস্তব্ধতায় ঢেকে যায়। পথচারীরা আতঙ্কে থাকেন, কখন কী ঘটে যায়! বিশেষ করে অফিস ফেরত চাকরিজীবী, শিক্ষার্থী ও রোগীদের বেশি ভোগান্তিতে পড়তে হয়।

মহেশ্বরপাশা এলাকার বাসিন্দা মো. ইমরান হোসেন বলেন, আমাদের এলাকায় খুঁটি থাকলেও বাতি নেই। রাত হলে পুরো এলাকা অন্ধকারে ঢেকে যায়। রাস্তা দিয়ে হাঁটতে ভয় লাগে। কিসের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছি, কিছুই বোঝা যায় না।

একই কথা বললেন তেলীগাতী এলাকার সেলিমা বেগম, আমাদের বাসার সামনে খুঁটি আছে, কিন্তু বাতি নেই। রাত হলে ছেলে-মেয়েদের নিয়ে বের হওয়া খুবই ভয়ংকর হয়ে ওঠে।

অন্যদিকে, পাবলা এলাকার ব্যবসায়ী রফিকুল ইসলাম জানান, বাতি না থাকায় রাতে দোকান বন্ধ করেই বাড়ি ফিরতে হয়। সন্ধ্যার পর এলাকাটা ভূতুড়ে হয়ে যায়।

খুলনা সিটি কর্পোরেশন (কেসিসি) বলছে, এসব এলাকা মূল নগরীর সীমানার মধ্যে থাকলেও মফস্বল লাগোয়া হওয়ায় কিছু জায়গায় এখনো সড়ক বাতি সংযোজন করা সম্ভব হয়নি। কর্তৃপক্ষের ভাষ্য, অনেক বাসিন্দার বসতবাড়ি নগর সীমানার বাইরে হলেও তারা কেসিসির বাতির দাবি করছেন, যা বাস্তবায়ন করা কঠিন।

এ বিষয়ে কেসিসির নির্বাহী প্রকৌশলী (বিদ্যুৎ) চলতি দায়িত্ব মো. মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ‘আমরা প্রতিনিয়ত নতুনবাতি সংযুক্ত করছি এবং সড়কবাতি স্থাপনের কাজ সব সময় চলমান। অনেক বাসিন্দার বসতবাড়ি নগর সীমানার বাইরে হলেও তারা কেসিসির বাতির দাবি করছেন। নগরীতে আমাদের কোন এলাকায় বাতি সংকট নেই। তবে সুনির্ষ্টি কোন তথ্য পেলে আমরা তাৎক্ষনাৎ ব্যবস্তা গ্রহন করি।

নগরীর মানিকতলার বাসিন্দা তাছলিমা আক্তার বলছেন, অন্ধকারাচ্ছন্ন সড়কের কারণে তারা রাতে জরুরি কাজ থাকলেও একা বের হতে ভয় পান।

একই এলাকার কলেজছাত্রী রিমা আক্তার বলেন, ‘প্রাইভেট শেষ করে ফিরতে রাত হয়। কিন্তু রাস্তায় এতটাই অন্ধকার যে ভয় লাগে।’

একই এলাকার গৃহিণী শারমিন সুলতানা বলেন, ‘এলাকার মেয়েরা সন্ধ্যার পর ঘর থেকে বের হতে ভয় পায়। আমরা চাই, দ্রুত সড়ত বাতির ব্যবস্থা নেয়া হোক।’

সড়ক বাতির অভাবে খুলনার এই এলাকাগুলো যেন এক অদ্ভুত অন্ধকারে বন্দি হয়ে আছে। স্থানীয়দের দাবি, দ্রুততম সময়ের মধ্যে সড়ক বাতি স্থাপন করা হোক। অন্যথায় নিরাপত্তাহীনতা আরও প্রকট হয়ে উঠবে এবং অপরাধ প্রবণতা বাড়তে পারে।


বিভাগ : অভ্যন্তরীণ


মন্তব্য করুন

HTML Comment Box is loading comments...

এই বিভাগের আরও

উত্তরা ইপিজেডে মেশিন বিস্ফোরণে ২ শ্রমিক দগ্ধ
বোয়ালমারীতে স্ত্রীর মৃত্যুর ঘটনায় স্বামী আটক
পোরশায় নিজ বাড়ি থেকে ভাই-বোনের লাশ উদ্ধার
অসুস্থ নেতাকর্মীদের খোঁজ নিচ্ছেন বিএনপি নেতা মাহমুদুল হক রুবেল
জুলাই গণঅভ্যুত্থানে নিহত কিশোর হৃদয়ের পরিবারের পাশে পটুয়াখালী জেলা প্রশাসক
আরও
X

আরও পড়ুন

জুলাই গণহত্যার বিচার আইসিসিতে পাঠাতে চাই না: চিফ প্রসিকিউটর

জুলাই গণহত্যার বিচার আইসিসিতে পাঠাতে চাই না: চিফ প্রসিকিউটর

কর্ণফুলীতে পুকুরে ডুবে ভাইয়ের মৃত্যু, বোন হাসপাতালে

কর্ণফুলীতে পুকুরে ডুবে ভাইয়ের মৃত্যু, বোন হাসপাতালে

সাগরপথে মালয়েশিয়া যাওয়ার সময় ২১৪ রোহিঙ্গা আটক

সাগরপথে মালয়েশিয়া যাওয়ার সময় ২১৪ রোহিঙ্গা আটক

কিশোরগঞ্জে বাংলা নববর্ষ ১৪৩২ যথাযোগ্য মর্যাদায় উদযাপন উপলক্ষে প্রস্তুতিমূলক সভা অনুষ্ঠিত

কিশোরগঞ্জে বাংলা নববর্ষ ১৪৩২ যথাযোগ্য মর্যাদায় উদযাপন উপলক্ষে প্রস্তুতিমূলক সভা অনুষ্ঠিত

ঐক্যবদ্ধ জিহাদের মাধ্যমে ফিলিস্তিনকে রক্ষা করতে হবে বিভিন্ন সংগঠনের প্রতিবাদ অব্যাহত

ঐক্যবদ্ধ জিহাদের মাধ্যমে ফিলিস্তিনকে রক্ষা করতে হবে বিভিন্ন সংগঠনের প্রতিবাদ অব্যাহত

১৩ বছর পর জমি দখলে নেয় ভুক্তভোগী, ভিন্নখাতে নিতে অপ-প্রচার

১৩ বছর পর জমি দখলে নেয় ভুক্তভোগী, ভিন্নখাতে নিতে অপ-প্রচার

দেশের ১৩৫ কলেজে নতুন অধ্যক্ষ নিয়োগ

দেশের ১৩৫ কলেজে নতুন অধ্যক্ষ নিয়োগ

দেশে বড় বিনিয়োগ আসতে পারে: বিডা চেয়ারম্যান

দেশে বড় বিনিয়োগ আসতে পারে: বিডা চেয়ারম্যান

প্রতিবাদ মিছিল থেকে যারা লুটপাট করেছে তারা মানবতার কলঙ্ক : দুদু

প্রতিবাদ মিছিল থেকে যারা লুটপাট করেছে তারা মানবতার কলঙ্ক : দুদু

নেত্রকোনায় চাঞ্চল্যকর আনোয়ার হত্যাকান্ডের রায়ে একজনের ফাঁসি

নেত্রকোনায় চাঞ্চল্যকর আনোয়ার হত্যাকান্ডের রায়ে একজনের ফাঁসি

ড. ইউনূসের সঙ্গে পিটার হাসের সাক্ষাৎ

ড. ইউনূসের সঙ্গে পিটার হাসের সাক্ষাৎ

কিশোরগঞ্জে দুই গ্রামবাসীর সংঘর্ষে বাড়ি-দোকান ভাংচুর, লুটপাট অর্ধশত আহত

কিশোরগঞ্জে দুই গ্রামবাসীর সংঘর্ষে বাড়ি-দোকান ভাংচুর, লুটপাট অর্ধশত আহত

জিম্বাবয়ের বিপক্ষে যে কারণে শক্তিশালী দল দিল বিসিবি

জিম্বাবয়ের বিপক্ষে যে কারণে শক্তিশালী দল দিল বিসিবি

দ্বিতীয় প্রস্তুতি ম্যাচেও মেয়েদের বড় জয়

দ্বিতীয় প্রস্তুতি ম্যাচেও মেয়েদের বড় জয়

মহেশপুর সড়ক দুর্ঘটনায় দুইজন নিহত আহত ৪

মহেশপুর সড়ক দুর্ঘটনায় দুইজন নিহত আহত ৪

লালমোহনে প্রান্তিক কৃষকদের মাঝে সার-বীজ বিতরণ

লালমোহনে প্রান্তিক কৃষকদের মাঝে সার-বীজ বিতরণ

ফিলিস্তিনে গণহত্যার প্রতিবাদে ঈশ্বরগঞ্জে ছাত্রদলের বিক্ষোভ

ফিলিস্তিনে গণহত্যার প্রতিবাদে ঈশ্বরগঞ্জে ছাত্রদলের বিক্ষোভ

দেশে বিনিয়োগের এত অনুকূল পরিবেশ আগে ছিল না: ড. ইউনূস

দেশে বিনিয়োগের এত অনুকূল পরিবেশ আগে ছিল না: ড. ইউনূস

বিশ্বের শক্তিশালী ৫০ দেশের তালিকায় বাংলাদেশ

বিশ্বের শক্তিশালী ৫০ দেশের তালিকায় বাংলাদেশ

বর্ণিল আয়োজনে হাবিপ্রবিতে ২৪ তম বিশ্ববিদ্যালয়  দিবস উদযাপন

বর্ণিল আয়োজনে হাবিপ্রবিতে ২৪ তম বিশ্ববিদ্যালয় দিবস উদযাপন