সিরিয়াকে পুনরায় আরব লীগের সদস্য করার সিদ্ধান্তে যুক্তরাষ্ট্রের কঠোর সমালোচনা

Daily Inqilab ইনকিলাব ডেস্ক

০৯ মে ২০২৩, ০৪:৫৬ পিএম | আপডেট: ০৯ মে ২০২৩, ০৪:৫৬ পিএম

সিরিয়াকে পুনরায় আরব লীগের সদস্য করার সিদ্ধান্তের কঠোর সমালোচনা করেছে যুক্তরাষ্ট্র। একইসঙ্গে আরব লীগের এই সিদ্ধান্তকে ‘গুরুতর কৌশলগত ভুল’ বলেও অভিহিত করেছে দেশটি।
এমনকি সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদ দেশটিতে নৃশংস গৃহযুদ্ধের পর এ ধরনের স্বাভাবিক সম্পর্কের যোগ্যতা রাখেন না বলেও দাবি করেছে যুক্তরাষ্ট্র। বার্তাসংস্থা এএফপির বরাত দিয়ে মঙ্গলবার (৯ মে) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সিরিয়াকে পুনরায় আরব লীগের সদস্য করার সিদ্ধান্তের সমালোচনা করে সোমবার যুক্তরাষ্ট্র বলেছে, দেশের নৃশংস গৃহযুদ্ধের পর প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদ এই ধরনের স্বাভাবিক সম্পর্কের যোগ্য নন।
যুক্তরাষ্ট্রের স্টেট ডিপার্টমেন্টের মুখপাত্র বেদান্ত প্যাটেল সাংবাদিকদের বলেছেন, ‘আমরা বিশ্বাস করি না, সিরিয়া এই সময়ে আরব লীগে আবারও যোগ দেওয়ার যোগ্যতা রাখে।’
তিনি বলেন, ‘আমরা বিশ্বাস করি, আমরা আসাদ সরকারের সাথে আমাদের সম্পর্ক স্বাভাবিক করতে পারব না এবং আমাদের মিত্র ও অংশীদাররা তেমনটা করুক সেটিও সমর্থন করি না।’
এদিকে মার্কিন কংগ্রেস সদস্যরা আরও কঠোর অবস্থান নিয়েছেন এবং আসাদের সাথে সম্পর্ক স্বাভাবিককরণ রোধ করতে যুক্তরাষ্ট্রকে তার নিষেধাজ্ঞার শক্তি ব্যবহার করার আহ্বান জানিয়েছেন।
যুক্তরাষ্ট্রের হাউস ফরেন অ্যাফেয়ার্স কমিটির রিপাবলিকান চেয়ারম্যান মাইক ম্যাককলের সঙ্গে দেওয়া প্যানেলের শীর্ষ ডেমোক্র্যাট গ্রেগরি মিক্সের এক যৌথ বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘আসাদকে আরব লীগে পুনরায় যোগ দিতে দেওয়া একটি গুরুতর কৌশলগত ভুল যা আসাদ, রাশিয়া ও ইরানকে বেসামরিক লোকদের হত্যা এবং মধ্যপ্রাচ্যকে অস্থিতিশীল করতে উৎসাহিত করবে।’
এতে আরও বলা হয়েছে, ‘আসাদ পরিবর্তিত হয়নি। তিনি এই নৃশংসতা চালিয়ে যাবেন। আর এটি বিশ্বব্যাপী এমন একটি নজির স্থাপন করবে যে, নির্মম স্বৈরশাসকরা তাদের অপরাধের জবাবদিহিতার বাইরে থাকতে সক্ষম হতে পারেন।’
উল্লেখ্য, বারবার মার্কিন বিবৃতি ও বিরোধিতা সত্ত্বেও মিসরের রাজধানী কায়রোতে গত রোববার আরব লীগের সদর দপ্তরে সংস্থাটির পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের রুদ্ধদ্বার বৈঠকে সিরিয়াকে পুনরায় সদস্য করার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
সিরিয়ায় ২০১১ সালের নভেম্বরে শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভের ওপর সরকারের দমন-পীড়ন ও অভিযানের কারণে আরব লীগ থেকে সেসময় দামেস্ককে বহিষ্কার করা হয়েছিল। ওই বছরের প্রথম দিকে শুরু হওয়া এ বিক্ষোভ দেশটিতে পরবর্তী সময়ে গৃহযুদ্ধে রূপ নেয়। আর এ যুদ্ধে পাঁচ লাখেরও বেশি লোক নিহত এবং লাখ লাখ লোক বাস্তুচ্যুত হয়েছেন।
পরে সিরিয়ায় গৃহযুদ্ধ শুরুর প্রথম দিকে কয়েকটি আরব দেশ সিরিয়ার সাথে সম্পর্ক ছিন্ন করে। এছাড়া সউদী আরব ও কাতার সিরিয়ার বিরোধীদের সমর্থন করে। তবে পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে এখন স্বাগতিক দেশ সউদী আরবের আমন্ত্রণে আগামী ১৯ মে আরব লীগের শীর্ষ সম্মেলনে আসাদকে যোগ দিতে বলা হয়েছে।
যদিও বহিষ্কার হওয়ার আগে সিরীয় প্রেসিডেন্ট আসাদ সর্বশেষ ২০১০ সালে আরব লীগের শীর্ষ সম্মেলনে যোগ দিয়েছিলেন। দীর্ঘ গৃহযুদ্ধ, বেসামরিক প্রাণহানি ও মানবিক সংকটের পর রাজনৈতিক কোনও পরিবর্তন ছাড়াই সিরীয় প্রেসিডেন্ট আরব ব্লকে আবারও ফিরে আসায় বিশ্লেষকেরা বলছেন, এটি আসাদের কূটনৈতিক বিজয়।


বিভাগ : আন্তর্জাতিক


মন্তব্য করুন

HTML Comment Box is loading comments...

এই বিভাগের আরও

মার্কিন সমালোচনার কড়া জবাব দিলো পাকিস্তান
এবার পানামা খাল নিয়ন্ত্রণে নেয়ার হুমকি ট্রাম্পের
পাকিস্তানে তালেবানের হামলায় ১৬ সেনা নিহত
ইয়েমেনে যুক্তরাষ্ট্রের একাধিক হামলা
চীনের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিগত সহায়তা বন্ধের দাবি রিপাবলিকানদের
আরও

আরও পড়ুন

গোলশূন্য ড্রয়ে থামল চেলসির জয়রথ

গোলশূন্য ড্রয়ে থামল চেলসির জয়রথ

এনার্জিপ্যাকের বার্ষিক সাধারণ সভায় ব্যবসায়িক প্রবৃদ্ধির সম্ভাবনার ওপর গুরুত্বারোপ

এনার্জিপ্যাকের বার্ষিক সাধারণ সভায় ব্যবসায়িক প্রবৃদ্ধির সম্ভাবনার ওপর গুরুত্বারোপ

আমার খাবার কি ফর্টিফায়েড?

আমার খাবার কি ফর্টিফায়েড?

হাসিনা পরিবারের নামে ১৩ বিশ্ববিদ্যালয়, ইউজিসি তাকিয়ে আছে সরকারের দিকে

হাসিনা পরিবারের নামে ১৩ বিশ্ববিদ্যালয়, ইউজিসি তাকিয়ে আছে সরকারের দিকে

ব্র্যাক ব্যাংকের রেমিটেন্স অ্যাওয়ার্ড অর্জন

ব্র্যাক ব্যাংকের রেমিটেন্স অ্যাওয়ার্ড অর্জন

দিনাজপুর জেলা শিক্ষা অফিসারের বিদায়ী সংবর্ধনা

দিনাজপুর জেলা শিক্ষা অফিসারের বিদায়ী সংবর্ধনা

নরসিংদীর শিবপুরে প্লাস্টিক কারখানা আগুনে পুড়ে ছাই

নরসিংদীর শিবপুরে প্লাস্টিক কারখানা আগুনে পুড়ে ছাই

ডিসেম্বরে রেমিট্যান্স শূন্য যে ১০ ব্যাংকে

ডিসেম্বরে রেমিট্যান্স শূন্য যে ১০ ব্যাংকে

বিএনপি নির্বাচন ছাড়া ক্ষমতায় আসতে চায় না: আব্দুস সালাম

বিএনপি নির্বাচন ছাড়া ক্ষমতায় আসতে চায় না: আব্দুস সালাম

সরকারের আশ্বাসে শাহবাগ থেকে সরে গেলেন বিএসএমএমইউ ট্রেইনি চিকিৎসকরা

সরকারের আশ্বাসে শাহবাগ থেকে সরে গেলেন বিএসএমএমইউ ট্রেইনি চিকিৎসকরা

সাকাকে হারিয়ে চিন্তিত আর্সেনাল কোচ

সাকাকে হারিয়ে চিন্তিত আর্সেনাল কোচ

৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কারের প্রস্তাব জমা হবে : বদিউল আলম মজুমদার

৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কারের প্রস্তাব জমা হবে : বদিউল আলম মজুমদার

সিনিয়র সচিব ড. নাসিমুল গনিকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বদলী

সিনিয়র সচিব ড. নাসিমুল গনিকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বদলী

মানিকগঞ্জের ঘিওরে ছাত্রদল নেতা লাভলু হত্যাকারীদের ফাঁসির দাবিতে মানববন্ধন

মানিকগঞ্জের ঘিওরে ছাত্রদল নেতা লাভলু হত্যাকারীদের ফাঁসির দাবিতে মানববন্ধন

বঙ্গবাজার পুড়ে যাওয়া মামলায় একজন গ্রেফতার

বঙ্গবাজার পুড়ে যাওয়া মামলায় একজন গ্রেফতার

জনগণের প্রত্যাশা পূরণে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ধীর গতিতে চলছে: আমিনুল হক

জনগণের প্রত্যাশা পূরণে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ধীর গতিতে চলছে: আমিনুল হক

জমকালো আয়োজনে পালিত হলো বান্দরবান সেনাবাহিনীর ৬৯ ব্রিগেডের ৪৮ তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী

জমকালো আয়োজনে পালিত হলো বান্দরবান সেনাবাহিনীর ৬৯ ব্রিগেডের ৪৮ তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী

সাবেক মন্ত্রী কায়কোবাদের সঙ্গে তুর্কী এমপির সাক্ষাৎ

সাবেক মন্ত্রী কায়কোবাদের সঙ্গে তুর্কী এমপির সাক্ষাৎ

বিহারীরা কেমন আছে

বিহারীরা কেমন আছে

ব্রাহ্মণপাড়ায় ধর্ষণের শিকার হতদরিদ্র প্রতিবন্ধী যুবতীর সন্তান প্রসব! আতংকে ভুক্তভোগী পরিবার

ব্রাহ্মণপাড়ায় ধর্ষণের শিকার হতদরিদ্র প্রতিবন্ধী যুবতীর সন্তান প্রসব! আতংকে ভুক্তভোগী পরিবার