ঢাকা   মঙ্গলবার, ২৪ ডিসেম্বর ২০২৪ | ১০ পৌষ ১৪৩১

মুরগির খোঁজে মাটি খুঁড়ে পাওয়া গেল গোটা শহর

Daily Inqilab ইনকিলাব ডেস্ক

১৭ জুন ২০২৩, ০৬:৫৯ পিএম | আপডেট: ১৭ জুন ২০২৩, ০৬:৫৯ পিএম

 

 

গির্জা, স্কুল, ওয়াইন মজুত রাখার বিশেষ ঘর থেকে শুরু করে শিক্ষার্থীদের জন্য আলাদা ঘর! সবই ছিল এই শহরে। তবুও এ শহর পৃথিবীর অন্যান্য শহরের চেয়ে আলাদা। কারণ মাটির উপর নয়, বরং মাটির নীচে স্তরে স্তরে তৈরি হয়েছিল ডেরিংকুয়ু শহর। মাটির উপরে নয়, এ শহর গড়ে উঠেছিল মাটির তলায়।

প্রাচীন তুরস্কের ভূগর্ভস্থ শহরের মধ্যে ডেরিংকুয়ু শহর বৃহত্তম। ইতিহাসবিদদের মতে, অষ্টম থেকে সপ্তম খ্রিস্ট পূর্বাব্দের মধ্যে গ্রিক অধিবাসীরা এই শহর গড়ে তোলেন। তৎকালীন পারস্যের রাজা ইমার রাজত্বকালে মাটির তলায় শহরটি নির্মাণ করা হয়। যুদ্ধের সময় শত্রুর হাত থেকে রক্ষা পেতে এই ভূগর্ভস্থ শহর গড়ে তোলা হয়। বাইজান্টাইন যুগে আরব মুসলিমদের আক্রমণের হাত থেকে বাঁচতে ভূগর্ভস্থ শহরে আশ্রয় নিতেন বাসিন্দারা। ১৮ তলার ডেরিংকুয়ু শহরে মূলত প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র সংগ্রহ করে রাখা হত। ৮৫ মিটার গভীর এই শহরটি কেমাকলি নামের অন্য একটি ভূগর্ভস্থ শহরের সঙ্গে যুক্ত ছিল বলে জানান ইতিহাসবিদেরা।

কালের নিয়মে ডেরিংকুয়ু শহরটি ধীরে ধীরে মাটির তলায় চাপা পড়ে যায়। ১৯৬৩ সালে এই শহরটির অস্তিত্বের কথা প্রকাশ্যে আসে। সেখানকার এক স্থানীয় ওই এলাকায় বাড়ি তৈরি করবেন বলে মাটি খুঁড়ছিলেন। তখন তার পোষা মুরগি হারিয়ে যায়। মুরগির খোঁজ করতে গিয়ে একটি গর্তের সন্ধান পান তিনি। গর্তের ভিতর মুরগিটি পড়ে গিয়েছে বলে তা খুঁড়তে শুরু করেন।

গর্ত খুঁড়ে নীচে নামার পর তিনি দেখেন গর্তের ভিতর অসংখ্য সরু রাস্তা রয়েছে। তার পরেই শুরু হয়ে যায় হইচই। ইতিহাসবিদদের দাবি, ১৮ স্তরে বানানো ডেরিংকুয়ু শহরের মাটির তলায় দরজাগুলি শুধুমাত্র ভিতর থেকে বন্ধ করা যেত। বাইরে থেকে বন্ধ করার কোনও ব্যবস্থা ছিল না। হাওয়া-বাতাস যেন অবাধে যাতায়াত করতে পারে, তার জন্য পর্যাপ্ত ব্যবস্থাও ছিল। প্রত্নতত্ত্ববিদেরা ডেরিংকুয়ু শহরের ধ্বংসাবশেষ পর্যবেক্ষণ করে জানিয়েছেন, ১৮ তলার শহরে একসঙ্গে ২০ হাজার মানুষ থাকতে পারতেন। শহরের দ্বিতীয় তলায় স্কুল ছিল।

ডেরিংকুয়ু শহরের তৃতীয় এবং। চতুর্থ তলা থেকে ধাপে ধাপে সিঁড়ি উপরের দিকে উঠে গিয়েছে পাঁচ তলায়। সেখানে ছিল একটি গির্জা। শহরের মাঝে ছিল একটি কুয়ো। ৫৫ মিটার গভীর কুয়ো থেকে জল সংগ্রহ করতেন শহরের বাসিন্দারা। গৃহপালিত পশু রাখার জায়গাও ছিল আলাদা। বর্তমানে ডেরিংকুয়ু শহরটি জনপ্রিয় পর্যটন কেন্দ্রে পরিণত হয়েছে। টিকিট কেটে পর্যটকেরা ইতিহাসে ঘেরা এই শহর দেখতে ভিড় জমান। প্রত্নতত্ত্ববিদদের মতে, প্রাচীন তুরস্কে ২০০টিরও বেশি ভূগর্ভস্থ শহর রয়েছে। সেগুলির মধ্যে ৪৪৫ বর্গকিলোমিটার এলাকা জুড়ে থাকা ডেরিংকুয়ু শহরটি বৃহত্তম। সূত্র: ইনসাইডার।


বিভাগ : আন্তর্জাতিক


মন্তব্য করুন

HTML Comment Box is loading comments...

এই বিভাগের আরও

সিরিয়ায় বিমান চলাচল স্থগিত করল ইরান
যুক্তরাষ্ট্রে খুন মাদক পাচারকারী সুনীল যাদব, দায় নিল বিষ্ণোই গ্যাং
ট্রাম্পের জয়ে ইউক্রেনের সংঘাতে পশ্চিমা দৃষ্টিভঙ্গি বদলেছে: উপদেষ্টা
বাংলাদেশসহ ২০টিরও বেশি দেশ ব্রিকসে আগ্রহী: পুতিনের সহকারী
জার্মান চ্যান্সেলরের সমালোচনা করা জেলেনস্কির উচিত নয়: ন্যাটো প্রধান
আরও

আরও পড়ুন

ভুয়া পেইজে ঢাবি প্রশাসনসহ অনেকের বিরুদ্ধে অপপ্রচার, এডমিন ঢাবি ছাত্রদল নেতা

ভুয়া পেইজে ঢাবি প্রশাসনসহ অনেকের বিরুদ্ধে অপপ্রচার, এডমিন ঢাবি ছাত্রদল নেতা

ইটনায় বিএনপির স্বাধীনতার বিজয় উৎসবে নেতাকর্মী ও জনতার ঢল এই মুহূ‌র্তে নির্বাচন হ‌লে বিএন‌পি ৯০ শতাংশ ভোট পা‌বে: ফজলুর রহমান

ইটনায় বিএনপির স্বাধীনতার বিজয় উৎসবে নেতাকর্মী ও জনতার ঢল এই মুহূ‌র্তে নির্বাচন হ‌লে বিএন‌পি ৯০ শতাংশ ভোট পা‌বে: ফজলুর রহমান

ব্যান্ড সঙ্গীত ও বাইকপ্রেমীদের জন্য সুজুকি ও আর্টসেলের নতুন মিউজিক ভিডিও

ব্যান্ড সঙ্গীত ও বাইকপ্রেমীদের জন্য সুজুকি ও আর্টসেলের নতুন মিউজিক ভিডিও

বিএনপি সকল ধর্ম -বর্ণ-গোত্রের দল : প্রিন্স

বিএনপি সকল ধর্ম -বর্ণ-গোত্রের দল : প্রিন্স

বিএনপি সকল ধর্ম -বর্ণ-গোত্রের দল : প্রিন্স

বিএনপি সকল ধর্ম -বর্ণ-গোত্রের দল : প্রিন্স

বিয়ের করার সময় যে সমস্ত খেয়াল রাখা প্রসঙ্গে।

বিয়ের করার সময় যে সমস্ত খেয়াল রাখা প্রসঙ্গে।

চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির সূচি প্রকাশ, বাংলাদেশের প্রথম প্রতিপক্ষ ভারত

চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির সূচি প্রকাশ, বাংলাদেশের প্রথম প্রতিপক্ষ ভারত

ইসলামী ছাত্র আন্দোলন বাংলাদেশের পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা

ইসলামী ছাত্র আন্দোলন বাংলাদেশের পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা

`আগামী নির্বাচনের আগে স্থানীয় নির্বাচন করতে হবে'

`আগামী নির্বাচনের আগে স্থানীয় নির্বাচন করতে হবে'

সাবেক প্রতিমন্ত্রী স্বপন ভট্টাচার্য্য ও তার স্ত্রী তন্দ্রা ভট্টাচার্যের বিরুদ্ধে দুদকের মামলা

সাবেক প্রতিমন্ত্রী স্বপন ভট্টাচার্য্য ও তার স্ত্রী তন্দ্রা ভট্টাচার্যের বিরুদ্ধে দুদকের মামলা

‘বিক্ষোভ আর কালো পতাকায়’ রূপসী বাংলা এক্সপ্রেস বরণ!

‘বিক্ষোভ আর কালো পতাকায়’ রূপসী বাংলা এক্সপ্রেস বরণ!

ভারতে সাজাভোগ শেষে দেশে ফিরলেন ২৬ নারী-পুরুষ ও শিশু

ভারতে সাজাভোগ শেষে দেশে ফিরলেন ২৬ নারী-পুরুষ ও শিশু

লৌহজং উপজেলা ছাত্রলীগ সভাপতি ফরহাদ হোসেন ইমন গ্রেফতার

লৌহজং উপজেলা ছাত্রলীগ সভাপতি ফরহাদ হোসেন ইমন গ্রেফতার

আয়কর রিটার্ন দাখিলের সময় আরও এক মাস বাড়ল

আয়কর রিটার্ন দাখিলের সময় আরও এক মাস বাড়ল

দূর্নীতিগ্রস্ত লুটেরা মাফিয়াদল যাতে বাংলাদেশে আর ফেরত না আসতে পারে:   মেজর হাফিজ

দূর্নীতিগ্রস্ত লুটেরা মাফিয়াদল যাতে বাংলাদেশে আর ফেরত না আসতে পারে:   মেজর হাফিজ

শতভাগ দলীয়করণে ক্রীড়াঙ্গন আজ তলানিতে : আমিনুল হক

শতভাগ দলীয়করণে ক্রীড়াঙ্গন আজ তলানিতে : আমিনুল হক

দৌলতদিয়ায় বড়দের আদলে ছোটদের জমজমাট নির্বাচন

দৌলতদিয়ায় বড়দের আদলে ছোটদের জমজমাট নির্বাচন

বাজারে সিন্ডিকেট এখনও সক্রিয় রয়েছে: নূর

বাজারে সিন্ডিকেট এখনও সক্রিয় রয়েছে: নূর

খতমে নবুওয়তের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি আল্লামা সাজিদুর, নির্বাহী সভাপতি মাওলানা জুনায়েদ

খতমে নবুওয়তের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি আল্লামা সাজিদুর, নির্বাহী সভাপতি মাওলানা জুনায়েদ

প্রকৃত তথ্য দিয়ে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির সংবাদ করুন: প্রেস সচিব

প্রকৃত তথ্য দিয়ে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির সংবাদ করুন: প্রেস সচিব