ঢাকা   রোববার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪ | ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১

কাঁদছে ফিলিস্তিন, কাঁদছে মানবতা

Daily Inqilab মাওলানা হুসাইন আহমদ

২১ অক্টোবর ২০২৩, ১২:০১ এএম | আপডেট: ২১ অক্টোবর ২০২৩, ১২:০১ এএম

আল্লাহ তাআলা কুুুুরআনুল কারীমে ইরশাদ করেছেন ‘কে আছে যে আল্লাহকে কর্জে হাসানা উত্তম ঋণ দেবে, তাহলে তিনি তার জন্য একে বর্ধিত করে দেবেন এবং তার জন্য সম্মানজনক প্রতিদানও রয়েছে।’ (সূরা হাদিদ : ১১)। অন্যত্র আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেছেন ‘তোমরাই শ্রেষ্ঠ জাতি। মানবজাতির কল্যাণেই তোমাদের সৃষ্টি করা হয়েছে। তোমরা ভালো কাজের নির্দেশ দেবে এবং মন্দ কাজে বাঁধা দেবে।’ (আল-ইমরান : ১১০)।

আর হাদীস শরীফে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন ‘সমগ্র সৃষ্টি আল্লাহর পরিবার।’ অন্যত্র রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন ‘মুমিন মিলেমিশে থাকে। তার মধ্যে ভালো কিছু নেই, যে মিলেমিশে থাকতে পারে না। যে ব্যক্তি মানুষের বেশি উপকার করে, সে-ই শ্রেষ্ঠ মানুষ।’ (আল-মুজামুল আওসাত)। অন্যত্র রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন ‘অবশ্যই দান-সদকা মানুষের হায়াত বৃদ্ধি করে। অপমৃত্যু থেকে বাঁচায় এবং অহমিকা দূর করে।’ (আল-মুজামুল কাবীর: ১৩৫০৮। )।

তাই পরোপকার বা সাহায্যের চেতনার ক্ষেত্রে কোনো শ্রেণিভেদ নেই। বড়-ছোট, ধনী-গরিব, আত্মীয়-অনাত্মীয়, স্বজাতি-বিজাতি, মুসলিম-অমুসলিম এসব ব্যবধানের ঊর্ধ্বে উঠে ইসলামের শান্তি ও সৌহার্দ্যের সমাজব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার কথা বলেন। কারণ, অন্যত্র রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেছেন ‘তোমরা জগদ্বাসীর প্রতি সদয় হও। তাহলে আসমানের মালিক আল্লাহ তাআলা তোমাদের প্রতি সদয় হবেন।’ (তিরমিযী)।

আর মানুষের উত্তমগুণাবলির মধ্যে এই পরোপকার বা সাহায্যও একটি। তার কারণ, মানুষ মানুষের জন্য। যাদের জন্য একেঅপরের সহযোগিতা ছাড়া একাকি জীবন-যাপন করা খুবই কঠিন। যখন কোনো সমাজের মধ্যে একেঅপরের প্রতি সহযোগিতার মন-মানসিকতা হ্রাস পায়। তখন সে সমাজের মানুষ সব দিক থেকেই পিছিয়ে পড়ে। সে সমাজের সর্বক্ষেত্রে অভাবের কারণে অরাজকতা ও বিশৃঙ্খলার সৃষ্টি হয়, শান্তি বিলুপ্ত হয়, পারস্পরিক শ্রদ্ধাবোধ ও ভালোবাসা দূর হয়ে যায়। ইসলাম একটি সহানুভূতির ধর্ম। যেখানে পারস্পরিক ভালোবাসা ও সহযোগিতাই ইসলামের অন্যতম বিষয়।

অতঃপর অনেক সময় আমাদেরকে ও দেশ-বিদেশের ভাইদেরকে ও মুসলিম উম্মাহকে কঠিন পরিস্থিতিতে সময় পার করতে হয়। তখন সকলের উচিত, ঐ সকল মাজলুম ও অসহায় মানুষদের কষ্ট কিছুটা লাঘব হয়, এমন জিনিস তথা, খাবার, কাপড় সরবারহ করাসহ প্রয়োজনীয় সকল পদক্ষেপ বা উদ্যোগ গ্রহণ করে তাদের সাহায্য করা। যাতে শুধু সরকার নয় সকল শ্রেণীর মানুষের জন্যেও অংশগ্রহণ করা জরুরী। কেননা, আমরা একেঅপরে চাইলেই মাজলুম ও অসহায় মানুষদের বড় উপকার করা সম্ভব। যে সহযোগিতার মাধ্যমে ঐ মাজলুম, অসহায় গাঁজায় বসবাসরত মানুষগুলোর মুখে একটু হাসি ফুটানো যাবে। একজন শহীদ ও মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের মুখে হাসি ফোটানোর থেকে আনন্দের আর কি হতে পারে! তাই বর্তমান সময়ে গাঁজাবাসীদের পাশে দাঁড়ানোটাও হবে সবচেয়ে বড় সাহায্য ও ইবাদত।

অতএব, আমাদেরকে নামাজ রোজা, হজ্ব, জাকাত ও ফরজ বিধানগুলো আদায়ের পাশাপাশি সমাজ, দেশ ও মাজলুমদের কল্যাণে অর্থাৎ অন্য মুসলমান ও গাঁজাবাসীর কল্যাণে, সাহায্যে বা পরোপকারে কাজ করা নৈতিক ও ঈমানি দায়িত্ব। আর মানুষ মানুষের জন্য এদিকটা মাথায় রেখে আমাদের সকলকে সমগ্র মুসলিম উম্মাহর বিপদাপদে, কল্যাণে, সাহায্যে বা পরোপকারে কাজ করার চেষ্টা করি। আল্লাহ তায়ালা তাওফিক দান ও কবুল করুন। আর আল্লাহ তায়ালা ফিলিস্তিনের উপর রহম করুন। আল-কুদূসকে মুক্ত করুন। মুসলমানদের বিজয় দান করুন। আমিন।


বিভাগ : ইসলামী জীবন


মন্তব্য করুন

HTML Comment Box is loading comments...

এই বিভাগের আরও

দৈনন্দিন জীবনে ইসলাম
মসজিদে পরে এসে ঘাড় ডিঙিয়ে সামনের কাতারে যাওয়া জায়েজ নেই
দুনিয়া ও আখেরাতের জন্য সুন্দর জীবন এবং কৃতজ্ঞতাবোধ
যুগে যুগে জুলুম ও জালিমের পরিণতি
সালাম ইসলামী সম্ভাষণ রীতির এক উৎকৃষ্ট উদাহরণ
আরও

আরও পড়ুন

ইসরায়েলি হামলায় গাজায় নিহত আরও ১২০ ফিলিস্তিনি

ইসরায়েলি হামলায় গাজায় নিহত আরও ১২০ ফিলিস্তিনি

ইভেন্টের  সেরা লড়াইটি উপহার দিলেন আফরা-সানজিদা

ইভেন্টের সেরা লড়াইটি উপহার দিলেন আফরা-সানজিদা

ওয়েস্ট ইন্ডিজের রান পাহাড়ের পর জয়-জাকিরকে হারিয়ে চাপে বাংলাদেশ

ওয়েস্ট ইন্ডিজের রান পাহাড়ের পর জয়-জাকিরকে হারিয়ে চাপে বাংলাদেশ

নাটকীয় শেষ দশ মিনিটে দুই গোল শোধ করে বার্সাকে রুখে দিল সেল্তা

নাটকীয় শেষ দশ মিনিটে দুই গোল শোধ করে বার্সাকে রুখে দিল সেল্তা

বিবর্ণ সিটিকে ইতিহাদেই বিধ্বস্ত করলো টটেনহ্যাম

বিবর্ণ সিটিকে ইতিহাদেই বিধ্বস্ত করলো টটেনহ্যাম

নটিংহ্যামকে হারিয়ে চার ম্যাচের জয়খরা কাটালো আর্সেনাল

নটিংহ্যামকে হারিয়ে চার ম্যাচের জয়খরা কাটালো আর্সেনাল

স্বতন্ত্র ইবতেদায়ী মাদরাসা জাতীয়করণের দাবী অত্যন্ত যৌক্তিক

স্বতন্ত্র ইবতেদায়ী মাদরাসা জাতীয়করণের দাবী অত্যন্ত যৌক্তিক

পাঠ্যবই ছাপায় অনিয়মে আনন্দ প্রিন্টার্সকে সতর্কতা

পাঠ্যবই ছাপায় অনিয়মে আনন্দ প্রিন্টার্সকে সতর্কতা

দক্ষিণ লেবাননে ৬ চিকিৎসাকর্মী নিহত

দক্ষিণ লেবাননে ৬ চিকিৎসাকর্মী নিহত

জনগণের সাথে জনসংযোগ বাড়াতে হবে

জনগণের সাথে জনসংযোগ বাড়াতে হবে

আমরা যুদ্ধে বিশ্বাসী না কেউ গায়ে পড়লে জবাবের প্রস্তুতি রাখতে হবে: পররাষ্ট্র উপদেষ্টা

আমরা যুদ্ধে বিশ্বাসী না কেউ গায়ে পড়লে জবাবের প্রস্তুতি রাখতে হবে: পররাষ্ট্র উপদেষ্টা

বাফুফের নতুন সভাপতি তাবিথের কাছে ২৭ রেফারির চিঠি

বাফুফের নতুন সভাপতি তাবিথের কাছে ২৭ রেফারির চিঠি

ফের বাড়লো সোনার দাম, ভরি ১ লাখ ৪২ হাজার টাকা

ফের বাড়লো সোনার দাম, ভরি ১ লাখ ৪২ হাজার টাকা

বাংলাদেশে খেলা নিয়ে অনিশ্চিয়তায় হামজা!

বাংলাদেশে খেলা নিয়ে অনিশ্চিয়তায় হামজা!

বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামেই হবে অনূর্ধ্ব-২০ নারী সাফের খেলা

বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামেই হবে অনূর্ধ্ব-২০ নারী সাফের খেলা

সিলেটে মাজিদের ফিফটি

সিলেটে মাজিদের ফিফটি

অ্যাম্বাসেডর কাপ উশুতে সেনাবাহিনী চ্যাম্পিয়ন

অ্যাম্বাসেডর কাপ উশুতে সেনাবাহিনী চ্যাম্পিয়ন

মাদক শুধু ব্যক্তিকে নয় পরিবারকেও ধ্বংস করে

মাদক শুধু ব্যক্তিকে নয় পরিবারকেও ধ্বংস করে

সাধারণ মানুষের পেটে লাথি মেরে আ.লীগ নিজেদের ভাগ্য গড়েছে : এমরান সালেহ প্রিন্স

সাধারণ মানুষের পেটে লাথি মেরে আ.লীগ নিজেদের ভাগ্য গড়েছে : এমরান সালেহ প্রিন্স

ধর্মদ্রোহী সরকারের সময় কোনো ধর্মই নিরাপদ ছিল না

ধর্মদ্রোহী সরকারের সময় কোনো ধর্মই নিরাপদ ছিল না