ঢাকা   বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর ২০২৪ | ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১

আল্লাহ তায়ালার সর্বশ্রেষ্ঠ দান এবং মানবের সবচেয়ে বড় অপরাধ

Daily Inqilab ফিরোজ মাহবুব কামাল

০১ জুন ২০২৪, ১২:০৪ এএম | আপডেট: ০১ জুন ২০২৪, ১২:০৪ এএম

মানুব জাতির জন্য মহান আল্লাহতায়ালার সর্বশ্রেষ্ঠ দান হলো পবিত্র কুরআন। এ পবিত্র কিতাবই জান্নাতের পথ দেখায়। তাই যে কুরআন বুঝে ও অনুসরণ করে -সেই জান্নাতের পথে হিদায়েত পায়। সে ঘোষণাটি এসেছে পবিত্র কুরআনে : অতঃপর কীরূপে তোমরা প্রত্যাখান করবে সত্যকে যখন তোমাদের তেলাওয়াত করে শোনানো হয় কুরআনের আয়াত এবং তোমাদের মাঝে রয়েছেন তাঁর রাসূল। এবং যে আল্লাহকে (তথা তাঁর প্রদর্শিত পথ কুরআনকে) দৃঢ় ভাবে আঁকড়ে ধরে সেই হিদায়েত পায় সিরাতাল মুস্তাকীমের পথে। (সুরা আল-ইমরান, আয়াত ১০১)। উপরুক্ত আয়াতে যা অতি সুস্পষ্ট করা হয়েছে তা হলো, যে জান্নাতে পৌঁছতে চায় তার জন্য পবিত্র কুরআনের পথে চলা ছাড়া ভিন্ন পথ নাই। এবং যে থেকে দূরে সরলো সেই জান্নাত থেকে দূরে সরলো এবং জাহান্নামের পথে ধাবিত হলো।

পবিত্র কুরআন পথ দেখায় ইসলামী রাষ্ট্র নির্মাণের। পৃথিবী পৃষ্ঠে এটিই হলো সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কাজ। ইসলামী রাষ্ট্রের মূল এজেন্ডা হলো নাগরিকদের সিরাতাল মুস্তাকীমের দিকে ধাবিত করা। সেটি জনগণের মাঝে কুরআন শিক্ষা ও কুরআনী বিধানের অনুসরণকে সহজতর করে। এ পৃথিবীপৃষ্ঠে একাজের চেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কোন কাজ নাই। পানাহার জোগারের কাজটি জনগণ নিজেই করতে পারে। কিন্তু সুশিক্ষার ব্যবস্থা করার দায়িত্বটি রাষ্ট্রের। সে কাজটি কোন রাষ্ট্রে না হলে জনগণ ধাবিত হয় জাহান্নামে দিকে। অনৈসলামিক রাষ্ট্র তো সে কাজটিই করে। সেটি স্কুল-কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ে কুরআনের জ্ঞানদানকে বিলুপ্ত বা সংকুচিত করে। পৃথিবীপৃষ্ঠে একাজের চেয়ে অধিক ভয়ংকর নাশকতার কাজ দ্বিতীয়টি নাই। অথচ বাংলাদেশের মত দেশ তো সেটিই হচ্ছে।

ফলে এ দেশটিতে একজন ছাত্র তার ২০টি বছরের শিক্ষা জীবন শেষ করে পবিত্র কুরআনের একটি আয়াত বুঝার সামর্থ্য অর্জন না করেই। আর যে ব্যক্তি কুরআন সামর্থ্য অর্জন করে না সে কুরআনী রোডম্যাপের অনুসরণ করবে কীরূপে? ফলে সে সিরাতাল মুস্তাকীম পাবে কীরূপে? জান্নাতের পথই বা কীরূপে পাবে? জান্নাতের পথ তো শুধু নামাজ-রোজা ও হজ্জ-যাকাতের পথ নয়।এ পথে চলতে হলে কর্ম, রাজনীতি ও বুদ্ধিবৃত্তির প্রতিটি মুহুর্তে এবং নিজের শ্রম, মেধা ও অর্থ বিনিয়োগের প্রতিটি ক্ষেত্রে কুরআনী রোডম্যাপ অনুসরণ করতে হয়। সে সামর্থ্য ও সুযোগ অনৈসলামিক রাষ্ট্র গড়ে তোলে না। অনৈসলামিক রাষ্ট্রে বসবাসের প্রকৃত বিপদ। মুলিমদের গৌরব যুগে একটি মাত্র রাষ্ট্র ছিল।

সে রাষ্ট্রটি যেহেতু ইসলামী ছিল, তার কল্যাণও ছিল বিস্ময়কর। তারা কুরআনের রোডম্যাপকে বিশ্বের নানা দেশে নিয়ে গেছে। সে রাষ্ট্রের কল্যাণে বিশ্বের নানা ভাষা ও নানা অঞ্চলের মানুষ জাহান্নামের পথ ছেড়ে জান্নাতের পথ পেয়েছে। সে আমলের একটি মাত্র রাষ্ট্র মানব জাতির যে কল্যাণ দিয়েছিল তা আজকের ৫০টি বেশী মুসলিম রাষ্ট্রও দিতে পারছে না। মুসলিম উম্মাহর ভৌগলিক সীমানাকে তারা এক ইঞ্চিও বাড়াতে পারিনি। বরং বহু ক্ষেত্র খ-িত ও সংকুচিত করেছে। কারণ, আজকের মুসলিম রাষ্ট্রগুলির কোনটিই ইসলামী নয়।

এগুলির অধিকাংশই স্বৈরাচারি রাজা-বাদশাহ ও জাতীয়তাবাদী সেক্যুলারিস্টদের হাতে অধিকৃত। এগুলিতে হাইজ্যাক হয়েছে মহান আল্লাহতায়ালার সার্বভৌমত্ব এবং বিলুপ্ত হয়েছে তাঁর শরিয়তী আইন। রাষ্ট্রকে সিরাতাল মুস্তাকীমে চালানো তাদের এজেন্ডা নয়। দেশগুলির শিক্ষাব্যবস্থা, বইপুস্তক, মিডিয়া, এবং সাংস্কৃতিক ও রাজনৈতিক সংগঠনগুলি বরং মুসলিমদের ইসলাম থেকে দূরে সরাচ্ছে এবং জাহান্নামের পথে নিচ্ছে। ফলে এ রাষ্ট্রগুলি নামে মুসলিম হলেও পরিণত হয়েছে শয়তানের এজেন্ডা পূরণের হাতিয়ারে।


বিভাগ : ইসলামী জীবন


মন্তব্য করুন

HTML Comment Box is loading comments...

এই বিভাগের আরও

মানবাধিকার প্রতিষ্ঠায় ইসলামের অবদান
যুগে যুগে জুলুম ও জালিমের পরিণতি
দোয়া কবুল হওয়ার শ্রেষ্ঠ সময়সমূহ
দুর্ভিক্ষ, বিপর্যয় কেন আসে
জনসাধারণের খোঁজ-খবর নেয়া শাসকের নৈতিক দায়িত্ব
আরও

আরও পড়ুন

ডিসেম্বরে বাংলাদেশ ও ভারতের পররাষ্ট্র বৈঠক, হাসিনাকে ফেরানো নিয়ে আলোচনা থাকবে

ডিসেম্বরে বাংলাদেশ ও ভারতের পররাষ্ট্র বৈঠক, হাসিনাকে ফেরানো নিয়ে আলোচনা থাকবে

রামু সেনানিবাসে সশস্ত্র বাহিনী দিবস পালিত

রামু সেনানিবাসে সশস্ত্র বাহিনী দিবস পালিত

এক সপ্তাহে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ বাড়ল ৬ কোটি ১০ লাখ ডলার

এক সপ্তাহে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ বাড়ল ৬ কোটি ১০ লাখ ডলার

প্রবাসীদের যে জন্য সুখবর দিলো মালয়েশিয়া

প্রবাসীদের যে জন্য সুখবর দিলো মালয়েশিয়া

জাবি শিক্ষার্থী মৃত্যুর ঘটনায় মামলা, তদন্ত কমিটি গঠন, ফটকে তালা, মশাল মিছিল

জাবি শিক্ষার্থী মৃত্যুর ঘটনায় মামলা, তদন্ত কমিটি গঠন, ফটকে তালা, মশাল মিছিল

মাদকের বিরুদ্ধে শক্ত অবস্থানে থাকবে জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল

মাদকের বিরুদ্ধে শক্ত অবস্থানে থাকবে জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল

"নতুন সিনেমা নিয়ে ফিরছেন গ্লোবাল তারকা অ্যাঞ্জেলিনা জোলি"

"নতুন সিনেমা নিয়ে ফিরছেন গ্লোবাল তারকা অ্যাঞ্জেলিনা জোলি"

ড. ইউনূসকে নিয়ে খালেদা জিয়ার পুরোনো যে বক্তব্য ভাইরাল

ড. ইউনূসকে নিয়ে খালেদা জিয়ার পুরোনো যে বক্তব্য ভাইরাল

নতুন নির্বাচন কমিশনের প্রতি ইসলামী আন্দোলনের শুভ কামনা

নতুন নির্বাচন কমিশনের প্রতি ইসলামী আন্দোলনের শুভ কামনা

আলোচনায় ফ্যাসিস্ট হাসিনার ‘টুস করে ফেলে দেয়ার’ হুমকি

আলোচনায় ফ্যাসিস্ট হাসিনার ‘টুস করে ফেলে দেয়ার’ হুমকি

দীর্ঘ ১৫ বছর সাংবাদিকরা বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ পরিবেশন করতে পারেনি: খোকন

দীর্ঘ ১৫ বছর সাংবাদিকরা বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ পরিবেশন করতে পারেনি: খোকন

'ইউটিউব ট্রেন্ডিংয়ে রয়েছে অভিনেতা তারিক আনাম খানের নাটক'

'ইউটিউব ট্রেন্ডিংয়ে রয়েছে অভিনেতা তারিক আনাম খানের নাটক'

বাংলাদেশ, নেপাল ও ভুটানের মধ্যে আঞ্চলিক সহযোগিতার আহ্বান

বাংলাদেশ, নেপাল ও ভুটানের মধ্যে আঞ্চলিক সহযোগিতার আহ্বান

ইসলামিক ফাউন্ডেশন এর বোর্ড অব গভর্নর সৈয়দ মোসাদ্দেক বিল্লাহ আল মাদানীকে জমিয়াতুল মোদার্রেসীন ও দারুননাজাত মাদরাসা’র সম্বর্ধনা

ইসলামিক ফাউন্ডেশন এর বোর্ড অব গভর্নর সৈয়দ মোসাদ্দেক বিল্লাহ আল মাদানীকে জমিয়াতুল মোদার্রেসীন ও দারুননাজাত মাদরাসা’র সম্বর্ধনা

সৈয়দ মোসাদ্দেক বিল্লাহ আল মাদানীকে জমিয়াতুল মোদার্রেসীন ও দারুননাজাত মাদরাসা’র সংবর্ধনা

সৈয়দ মোসাদ্দেক বিল্লাহ আল মাদানীকে জমিয়াতুল মোদার্রেসীন ও দারুননাজাত মাদরাসা’র সংবর্ধনা

লালমোহনে দুই গ্রুপের সংঘর্ষে আহত যুবদল নেতা চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু

লালমোহনে দুই গ্রুপের সংঘর্ষে আহত যুবদল নেতা চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু

চকরিয়ার বিএনপি নেতা আবু তাহের চৌধুরীর মৃত্যুতে সালাহউদ্দিন আহমদ ও হাসিনা আহমদের শোক

চকরিয়ার বিএনপি নেতা আবু তাহের চৌধুরীর মৃত্যুতে সালাহউদ্দিন আহমদ ও হাসিনা আহমদের শোক

উইন্ডিজের বিপক্ষে মাঠে নামছে বাংলাদেশ

উইন্ডিজের বিপক্ষে মাঠে নামছে বাংলাদেশ

বেইজিং সংস্কৃতি ও পর্যটন ব্যুরো ও আটাবের মধ্যে চুক্তি স্বাক্ষরিত

বেইজিং সংস্কৃতি ও পর্যটন ব্যুরো ও আটাবের মধ্যে চুক্তি স্বাক্ষরিত

প্রেসিডেন্টের সঙ্গে তিন বাহিনীর প্রধানের সাক্ষাৎ

প্রেসিডেন্টের সঙ্গে তিন বাহিনীর প্রধানের সাক্ষাৎ