আল্লাহ তায়ালার সর্বশ্রেষ্ঠ দান এবং মানবের সবচেয়ে বড় অপরাধ

Daily Inqilab ফিরোজ মাহবুব কামাল

০১ জুন ২০২৪, ১২:০৪ এএম | আপডেট: ০১ জুন ২০২৪, ১২:০৪ এএম

মানুব জাতির জন্য মহান আল্লাহতায়ালার সর্বশ্রেষ্ঠ দান হলো পবিত্র কুরআন। এ পবিত্র কিতাবই জান্নাতের পথ দেখায়। তাই যে কুরআন বুঝে ও অনুসরণ করে -সেই জান্নাতের পথে হিদায়েত পায়। সে ঘোষণাটি এসেছে পবিত্র কুরআনে : অতঃপর কীরূপে তোমরা প্রত্যাখান করবে সত্যকে যখন তোমাদের তেলাওয়াত করে শোনানো হয় কুরআনের আয়াত এবং তোমাদের মাঝে রয়েছেন তাঁর রাসূল। এবং যে আল্লাহকে (তথা তাঁর প্রদর্শিত পথ কুরআনকে) দৃঢ় ভাবে আঁকড়ে ধরে সেই হিদায়েত পায় সিরাতাল মুস্তাকীমের পথে। (সুরা আল-ইমরান, আয়াত ১০১)। উপরুক্ত আয়াতে যা অতি সুস্পষ্ট করা হয়েছে তা হলো, যে জান্নাতে পৌঁছতে চায় তার জন্য পবিত্র কুরআনের পথে চলা ছাড়া ভিন্ন পথ নাই। এবং যে থেকে দূরে সরলো সেই জান্নাত থেকে দূরে সরলো এবং জাহান্নামের পথে ধাবিত হলো।

পবিত্র কুরআন পথ দেখায় ইসলামী রাষ্ট্র নির্মাণের। পৃথিবী পৃষ্ঠে এটিই হলো সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কাজ। ইসলামী রাষ্ট্রের মূল এজেন্ডা হলো নাগরিকদের সিরাতাল মুস্তাকীমের দিকে ধাবিত করা। সেটি জনগণের মাঝে কুরআন শিক্ষা ও কুরআনী বিধানের অনুসরণকে সহজতর করে। এ পৃথিবীপৃষ্ঠে একাজের চেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কোন কাজ নাই। পানাহার জোগারের কাজটি জনগণ নিজেই করতে পারে। কিন্তু সুশিক্ষার ব্যবস্থা করার দায়িত্বটি রাষ্ট্রের। সে কাজটি কোন রাষ্ট্রে না হলে জনগণ ধাবিত হয় জাহান্নামে দিকে। অনৈসলামিক রাষ্ট্র তো সে কাজটিই করে। সেটি স্কুল-কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ে কুরআনের জ্ঞানদানকে বিলুপ্ত বা সংকুচিত করে। পৃথিবীপৃষ্ঠে একাজের চেয়ে অধিক ভয়ংকর নাশকতার কাজ দ্বিতীয়টি নাই। অথচ বাংলাদেশের মত দেশ তো সেটিই হচ্ছে।

ফলে এ দেশটিতে একজন ছাত্র তার ২০টি বছরের শিক্ষা জীবন শেষ করে পবিত্র কুরআনের একটি আয়াত বুঝার সামর্থ্য অর্জন না করেই। আর যে ব্যক্তি কুরআন সামর্থ্য অর্জন করে না সে কুরআনী রোডম্যাপের অনুসরণ করবে কীরূপে? ফলে সে সিরাতাল মুস্তাকীম পাবে কীরূপে? জান্নাতের পথই বা কীরূপে পাবে? জান্নাতের পথ তো শুধু নামাজ-রোজা ও হজ্জ-যাকাতের পথ নয়।এ পথে চলতে হলে কর্ম, রাজনীতি ও বুদ্ধিবৃত্তির প্রতিটি মুহুর্তে এবং নিজের শ্রম, মেধা ও অর্থ বিনিয়োগের প্রতিটি ক্ষেত্রে কুরআনী রোডম্যাপ অনুসরণ করতে হয়। সে সামর্থ্য ও সুযোগ অনৈসলামিক রাষ্ট্র গড়ে তোলে না। অনৈসলামিক রাষ্ট্রে বসবাসের প্রকৃত বিপদ। মুলিমদের গৌরব যুগে একটি মাত্র রাষ্ট্র ছিল।

সে রাষ্ট্রটি যেহেতু ইসলামী ছিল, তার কল্যাণও ছিল বিস্ময়কর। তারা কুরআনের রোডম্যাপকে বিশ্বের নানা দেশে নিয়ে গেছে। সে রাষ্ট্রের কল্যাণে বিশ্বের নানা ভাষা ও নানা অঞ্চলের মানুষ জাহান্নামের পথ ছেড়ে জান্নাতের পথ পেয়েছে। সে আমলের একটি মাত্র রাষ্ট্র মানব জাতির যে কল্যাণ দিয়েছিল তা আজকের ৫০টি বেশী মুসলিম রাষ্ট্রও দিতে পারছে না। মুসলিম উম্মাহর ভৌগলিক সীমানাকে তারা এক ইঞ্চিও বাড়াতে পারিনি। বরং বহু ক্ষেত্র খ-িত ও সংকুচিত করেছে। কারণ, আজকের মুসলিম রাষ্ট্রগুলির কোনটিই ইসলামী নয়।

এগুলির অধিকাংশই স্বৈরাচারি রাজা-বাদশাহ ও জাতীয়তাবাদী সেক্যুলারিস্টদের হাতে অধিকৃত। এগুলিতে হাইজ্যাক হয়েছে মহান আল্লাহতায়ালার সার্বভৌমত্ব এবং বিলুপ্ত হয়েছে তাঁর শরিয়তী আইন। রাষ্ট্রকে সিরাতাল মুস্তাকীমে চালানো তাদের এজেন্ডা নয়। দেশগুলির শিক্ষাব্যবস্থা, বইপুস্তক, মিডিয়া, এবং সাংস্কৃতিক ও রাজনৈতিক সংগঠনগুলি বরং মুসলিমদের ইসলাম থেকে দূরে সরাচ্ছে এবং জাহান্নামের পথে নিচ্ছে। ফলে এ রাষ্ট্রগুলি নামে মুসলিম হলেও পরিণত হয়েছে শয়তানের এজেন্ডা পূরণের হাতিয়ারে।


বিভাগ : ইসলামী জীবন


মন্তব্য করুন

HTML Comment Box is loading comments...

এই বিভাগের আরও

যেভাবে হজের প্রস্তুতি নেব
প্রকৃত সফলতা : দুনিয়াবি প্রাপ্তি নাকি জান্নাতের প্রতিশ্রুতি
অধঃপতনের দিকে আমরা হাঁটছি
মে দিবস : শ্রমিকদের অধিকার প্রতিষ্ঠায় ইসলামের নির্দেশনা
শাওয়াল মাসের ফজিলত
আরও
X
  

আরও পড়ুন

ভূরুঙ্গামারীতে অটো রিক্সার ধাক্কায় বাকপ্রতিবন্ধী নারীর মৃত্যু

ভূরুঙ্গামারীতে অটো রিক্সার ধাক্কায় বাকপ্রতিবন্ধী নারীর মৃত্যু

"রাবি শিক্ষার্থীদের পেটানোর হুমকি: ভাইরাল স্ক্রিনশটে ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় শীর্ষ নেতার নাম!"

"রাবি শিক্ষার্থীদের পেটানোর হুমকি: ভাইরাল স্ক্রিনশটে ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় শীর্ষ নেতার নাম!"

পাকিস্তান ইস্যুতে ভারতের অভিযোগে উদ্বিগ্ন ওআইসি

পাকিস্তান ইস্যুতে ভারতের অভিযোগে উদ্বিগ্ন ওআইসি

সোনারগাঁওয়ে মাদক ব্যবসায়ী জীবনের অত্যাচারে এলাকাবাসী অতিষ্ঠ

সোনারগাঁওয়ে মাদক ব্যবসায়ী জীবনের অত্যাচারে এলাকাবাসী অতিষ্ঠ

লক্ষ্মীপুর শহরে ওভারব্রিজ না থাকায় ঝুঁকি নিয়ে রাস্তা পারাপার

লক্ষ্মীপুর শহরে ওভারব্রিজ না থাকায় ঝুঁকি নিয়ে রাস্তা পারাপার

আশুলিয়ায় তীব্র লোডশেডিং, জনজীবনে চরম ভোগান্তি

আশুলিয়ায় তীব্র লোডশেডিং, জনজীবনে চরম ভোগান্তি

অবৈধ অভিবাসন বন্ধে ইতালির সঙ্গে সমঝোতা স্মারক সই

অবৈধ অভিবাসন বন্ধে ইতালির সঙ্গে সমঝোতা স্মারক সই

এটিএম আজহারকে নিয়ে জামায়াত আমিরের হৃদয়ছোঁয়া স্ট্যাটাস

এটিএম আজহারকে নিয়ে জামায়াত আমিরের হৃদয়ছোঁয়া স্ট্যাটাস

উচ্চপদস্থ মার্কিন সামরিক কর্মকর্তাদের ছাঁটাই করছে ট্রাম্প প্রশাসন

উচ্চপদস্থ মার্কিন সামরিক কর্মকর্তাদের ছাঁটাই করছে ট্রাম্প প্রশাসন

এবার হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণা অনুদান বাতিল করল ট্রাম্প প্রশাসন

এবার হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণা অনুদান বাতিল করল ট্রাম্প প্রশাসন

লক্ষ জনতার ভালোবাসায় সিক্ত হয়ে বাসার পথে খালেদা জিয়া

লক্ষ জনতার ভালোবাসায় সিক্ত হয়ে বাসার পথে খালেদা জিয়া

ধর্ষণের অভিযোগে মামলার মুখে হিরো আলম

ধর্ষণের অভিযোগে মামলার মুখে হিরো আলম

খালেদা-তারেককে হত্যার ষড়যন্ত্রকারীরা দেশ ছাড়তে বাধ্য হয়েছে: মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল

খালেদা-তারেককে হত্যার ষড়যন্ত্রকারীরা দেশ ছাড়তে বাধ্য হয়েছে: মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল

হজযাত্রীর ভিসা প্রক্রিয়া: এখনো ৪ হাজার ৩৬৫ জনের ভিসা বাকি

হজযাত্রীর ভিসা প্রক্রিয়া: এখনো ৪ হাজার ৩৬৫ জনের ভিসা বাকি

ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে বৈঠকে এনসিপি

ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে বৈঠকে এনসিপি

জোবাইদা রহমানকে বরণে প্রস্তুত ধানমন্ডির মাহবুব ভবন

জোবাইদা রহমানকে বরণে প্রস্তুত ধানমন্ডির মাহবুব ভবন

পোপ ফ্রান্সিসের শেষ ইচ্ছা: নিজের গাড়িকে গাজায় শিশুদের জন্য রূপান্তরিত ক্লিনিক

পোপ ফ্রান্সিসের শেষ ইচ্ছা: নিজের গাড়িকে গাজায় শিশুদের জন্য রূপান্তরিত ক্লিনিক

নিরাপত্তা পরিস্থিতি নিয়ে গুতেরেস-শাহবাজ শরিফের দ্বিতীয়বার ফোনালাপ

নিরাপত্তা পরিস্থিতি নিয়ে গুতেরেস-শাহবাজ শরিফের দ্বিতীয়বার ফোনালাপ

দেশে ফিরলেন খালেদা জিয়া

দেশে ফিরলেন খালেদা জিয়া

ফিরোজার সামনে নেতাকর্মীদের উপচেপড়া ভিড়

ফিরোজার সামনে নেতাকর্মীদের উপচেপড়া ভিড়