ঢাকা   রোববার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪ | ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১
বিতর্কিত বিচারবিভাগীয় সংস্কারের পথে ইসরাইল

সেনাদের গুলিতে ৩ ফিলিস্তিনি নিহত

Daily Inqilab ইনকিলাব ডেস্ক

২৫ জুলাই ২০২৩, ০৮:১২ পিএম | আপডেট: ২৬ জুলাই ২০২৩, ১২:০৪ এএম

অধিকৃত পশ্চিম তীরে ইসরাইলি সেনাদের গুলিতে ৩ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। আজ মঙ্গলবার ফিলিস্তিনের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের এ তথ্য জানিয়েছে। খবর বার্তাসংস্থা এএফপির। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানায়, ‘ইসরাইলিদের ছোঁড়া বুলেটে নাবলুসে ৩ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন।’ মন্ত্রণালয় আরও জানায়, নিহত ৩ ব্যক্তির পরিচয় এখনো জানা যায়নি। ইসরাইলি সেনাবাহিনীর মতে, পশ্চিম তীরের উত্তরাঞ্চলীয় শহর নাবলুসের এক মহল্লায় ৩ ‘সশস্ত্র জঙ্গি’ তাদের সেনাদের ওপর গাড়ি থেকে গুলি ছুঁড়ে। এরপর সেনারা তাদেরকে ‘নিষ্ক্রিয়’ করতে পাল্টা গুলি ছুঁড়ে। ইসরাইলি সেনাবাহিনী এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, তারা ঘটনাস্থল থেকে ৩টি এম-১৬ রাইফেল, একটি বন্দুক, কার্তুজ ও অন্যান্য সামরিক উপকরণ উদ্ধার করেছে। গত বছরের শুরু থেকে ইসরাইল-ফিলিস্তিন সংঘাত বেড়েছে। এ বছর সংঘাতে অন্তত ২০১ ফিলিস্তিনি ও ২৭ ইসরাইলি নিহত হয়েছেন। নিহতদের মধ্যে অসংখ্য বেসামরিক ব্যক্তি রয়েছেন। এদিকে, ইসরাইলের পার্লামেন্টে পাস হয়েছে বিচারবিভাগীয় সংস্কারের প্রস্তাব। দেশজুড়ে শুরু হয়েছে প্রতিবাদ। প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহুর নেতৃত্বে ইসরেইলে এখন অতি দক্ষিণপন্থী এবং রক্ষণশীলদের সরকার চলছে। সম্প্রতি তারা স্থির করেছে, বিচারবিভাগের ক্ষমতা কমাতে হবে এবং সেই মতো পার্লামেন্টে একটি প্রস্তাব পেশ করা হয়েছে। পার্লামেন্টে প্রাথমিকভাবে যে ভোটাভুটি হয়েছে, তাতে আদালতের ক্ষমতা কমবে। কিন্তু নেতানিয়াহু সরকারের এই প্রস্তাবের বিরুদ্ধে দেশজুড়ে আন্দোলন শুরু হয়েছে। লাখ লাখ মানুষ রাস্তায় নেমে প্রতিবাদ দেখাচ্ছেন। বস্তুত, সোমবার পার্লামেন্টে এই প্রস্তাব গৃহীত হওয়ার পরেও নতুন করে আন্দোলন শুরু হয়েছে। নেতানিয়াহু ও তার অনুগামীদের বক্তব্য, ইসরাইলের আদালত আইনের ফাঁক দেখিয়ে পার্লামেন্টের সিদ্ধান্তের উপর স্থগিতাদেশ দিতে পারে। জনপ্রতিনিধিদের সেখানেই আপত্তি। তাদের দাবি, পার্লামেন্টের প্রতিনিধি হওয়ার জন্য জনগণের ভোটে নির্বাচিত হতে হয়। অর্থাৎ, তারা জনপ্রতিনিধি। পার্লামেন্টে তারা যে সিদ্ধান্ত নিচ্ছেন, তা জনগণের কণ্ঠস্বর। অনির্বাচিত বিচারপতিরা সেই সিদ্ধান্তে স্থগিতাদেশ দিতে পারেন না। বস্তুত, ইসরাইলে কোনো সংবিধান নেই। সবটাই প্রথা ও নীতির উপর চলে। সেই প্রথাতেই এবার বদল ঘটানোর কথা বলছে পার্লামেন্ট। সোমবারের প্রাথমিক ভোটাভুটিতে ১২০ জন এমপি-র ৬৪ জন এর পক্ষে ভোট দিয়েছে। ফলে কিছুদিনের মধ্যেই এই সিদ্ধান্ত যে বহাল হবে, তা নিয়ে আর কোনো সন্দেহ নেই। আন্দোলনকারীদের বক্তব্য, ইসরাইলে সরকার চালায় দক্ষিণপন্থী এবং রক্ষণশীলরা। ফলে বহু প্রগতিশীল বিষয় তারা আটকাতে চাইবে। আগে সরকারের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আদালতে যাওয়া যেত। এবার সেই রাস্তা বন্ধ হতে চলেছে। এলজিবিটিকিউ-য়ের মতো বিষয় এই সিদ্ধান্তের ফলে সমস্যার মুখে পড়বে বলে মনে করছেন তারা। বস্তুত, নরওয়ে এবং হাঙ্গেরির সাথে এই সিদ্ধান্তকে তুলনা করছেন তারা। সেখানেও রক্ষণশীল সরকার বিচারবিভাগের অধিকার খর্ব করেছে। ইউরোপের ভেতরেও এ বিষয়টি নিয়ে যথেষ্ট সমালোচনা হয়। ইসরাইলও সেই পথে হাঁটছে বলে বিক্ষোভকারীদের দাবি। প্রতিবাদে দেশজুড়ে আরো বড় আন্দোলন গড়ে তোলার কথা বলছেন তারা। ইসরাইলে সমস্ত ব্যক্তিকে পড়াশোনা শেষ করার পর কিছুদিন বাধ্যতামূলকভাবে সেনা বাহিনীতে কাজ করতে হয়। কিন্তু রক্ষণশীল চার্চের কিছু ব্যক্তি এই নিয়ম থেকে অব্যাহতি পান। আদালত এর বিরোধিতা করেছিল। কিন্তু নতুন আইনে ওই ব্যক্তিরা ছাড় পাবেন। এর প্রতিবাদে বিমান বাহিনীর একটি অংশ চিঠি দিয়ে প্রতিবাদ জানিয়েছেন। প্রায় এক হাজার সেনা সদস্যের ওই চিঠিতে বলা হয়েছে, নতুন নিয়ম বহাল হলে তারা কাজ থেকে ইস্তফা দেবেন। সেনা বাহিনীর অন্য অংশগুলোর মধ্যেও প্রতিবাদের ঝড় উঠেছে। ফলে সব মিলিয়ে পরিস্থিতি ক্রমশ অগ্নিগর্ভ হচ্ছে। নেতানিয়াহু বিষয়টিকে কিভাবে সামলান, সেটাই এখন দেখার। এএফপি, ডয়চে ভেলে।


বিভাগ : ইসলামী বিশ্ব


মন্তব্য করুন

HTML Comment Box is loading comments...

এই বিভাগের আরও

মাওলানা সাদ কান্ধলভীকে ভিসা দেওয়ার দাবি হেফাজতের নায়েবে আমিরের
ইসরাইলকে স্বীকৃতি নয়, ফিলিস্তিনকে সহায়তা দেবে মালয়েশিয়া
কারাগারেই বসেই কোরআনের হাফেজ হলেন ১৩ হাজার কারাবন্দি
রাসূল (সা.)-এর রওজা শরিফ জিয়ারতে নতুন নির্দেশনা
ইসরাইল গাজায় মানবিক সাহায্য অবরোধের আইন লংঘন করেনি : যুক্তরাষ্ট্র
আরও

আরও পড়ুন

রাজার বোলিংয়ে অলআউট বরিশাল

রাজার বোলিংয়ে অলআউট বরিশাল

দেশের টাকা পাচার করে হাসিনা ও তাঁর দোসররা দেশকে দেউলিয়া করে গেছে পাচারকৃত টাকা উদ্ধারে কাজ করতে হবে -মাওলানা ইমতিয়াজ আলম

দেশের টাকা পাচার করে হাসিনা ও তাঁর দোসররা দেশকে দেউলিয়া করে গেছে পাচারকৃত টাকা উদ্ধারে কাজ করতে হবে -মাওলানা ইমতিয়াজ আলম

এসডিজি কার্যক্রমে যুক্ত হচ্ছে প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূসের ‘থ্রি জিরো তত্ত্ব’

এসডিজি কার্যক্রমে যুক্ত হচ্ছে প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূসের ‘থ্রি জিরো তত্ত্ব’

বিএনপি’র প্রতিনিধি দলের সাথে ঢাকায় নিযুক্ত তুরস্কের রাষ্ট্রদূত রামিস সেনের বৈঠক

বিএনপি’র প্রতিনিধি দলের সাথে ঢাকায় নিযুক্ত তুরস্কের রাষ্ট্রদূত রামিস সেনের বৈঠক

৫ বছর পর আয়োজিত হতে যাচ্ছে আন্তঃবিভাগ ফুটবল টুর্নামেন্ট-২০২৪

৫ বছর পর আয়োজিত হতে যাচ্ছে আন্তঃবিভাগ ফুটবল টুর্নামেন্ট-২০২৪

থিতু হয়েও ইনিংস লম্বা করতে পারলেন না শাহাদাত

থিতু হয়েও ইনিংস লম্বা করতে পারলেন না শাহাদাত

গণ-অভ্যুত্থানে ঢাবি ভিসির ভূমিকা কী ছিল? জানতে চান ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক

গণ-অভ্যুত্থানে ঢাবি ভিসির ভূমিকা কী ছিল? জানতে চান ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক

নির্বাচন কমিশনের প্রধান কাজ হওয়া উচিত অবাধ-সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য সাধারণ জনগণের আস্থা অর্জন করা : রিজভী

নির্বাচন কমিশনের প্রধান কাজ হওয়া উচিত অবাধ-সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য সাধারণ জনগণের আস্থা অর্জন করা : রিজভী

ইংরেজিতে দক্ষতা অর্জনে দেশে এলো অ্যাপ ‘পারলো’

ইংরেজিতে দক্ষতা অর্জনে দেশে এলো অ্যাপ ‘পারলো’

সীমান্তর লক্ষ্য এসএ গেমসের হ্যাটট্রিক স্বর্ণ জয়

সীমান্তর লক্ষ্য এসএ গেমসের হ্যাটট্রিক স্বর্ণ জয়

বিপিএলের প্রথম দিনই মাঠে নামছে বসুন্ধরা-মোহামেডান

বিপিএলের প্রথম দিনই মাঠে নামছে বসুন্ধরা-মোহামেডান

নির্বাচিত সরকারই দেশকে পুনর্গঠন করতে পারে : তারেক রহমান

নির্বাচিত সরকারই দেশকে পুনর্গঠন করতে পারে : তারেক রহমান

লক্ষ্মীপুরে ১২০ টাকায় পুলিশে চাকরি পেলেন ৫০ জন

লক্ষ্মীপুরে ১২০ টাকায় পুলিশে চাকরি পেলেন ৫০ জন

১৫ দিন রিমান্ড শেষে কারাগারে আব্দুর রাজ্জাক

১৫ দিন রিমান্ড শেষে কারাগারে আব্দুর রাজ্জাক

পাকিস্তানকে উড়িয়ে দিল জিম্বাবুয়ে

পাকিস্তানকে উড়িয়ে দিল জিম্বাবুয়ে

মানিকগঞ্জে সড়ক দুর্ঘটনায় সিকিউরিটি গার্ড নিহত

মানিকগঞ্জে সড়ক দুর্ঘটনায় সিকিউরিটি গার্ড নিহত

শরীয়তপুরে যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল ও ছাত্রদলের যৌথ কর্মী সভা

শরীয়তপুরে যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল ও ছাত্রদলের যৌথ কর্মী সভা

হাজীদের সর্বোত্তম স্বার্থ রক্ষায় সরকার প্রতিশ্রুতিবদ্ধ ধর্ম উপদেষ্টা ড. খালিদ হোসেন

হাজীদের সর্বোত্তম স্বার্থ রক্ষায় সরকার প্রতিশ্রুতিবদ্ধ ধর্ম উপদেষ্টা ড. খালিদ হোসেন

ইসলামকে রাষ্ট্রের মূলনীতি হিসেবে সংবিধানে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে গোলটেবিল বৈঠকে নেতৃবৃন্দ

ইসলামকে রাষ্ট্রের মূলনীতি হিসেবে সংবিধানে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে গোলটেবিল বৈঠকে নেতৃবৃন্দ

ময়মনসিংহে বৈষম্যবিরোধী শিক্ষার্থীদের দুপক্ষের সংঘর্ষ, আহত ২

ময়মনসিংহে বৈষম্যবিরোধী শিক্ষার্থীদের দুপক্ষের সংঘর্ষ, আহত ২