৫৩ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগের অনুমোদন

গাজা শাসন করবে একটি স্বাধীন ফিলিস্তিনি সংস্থা

Daily Inqilab ইনকিলাব ডেস্ক :

০৬ মার্চ ২০২৫, ১২:০২ এএম | আপডেট: ০৬ মার্চ ২০২৫, ১২:০২ এএম

যুদ্ধ পরবর্তী ফিলিস্তিনের গাজা শাসন নিয়ে জটিলতা তৈরি হয়েছে। বিশেষ করে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের গাজার বাসিন্দাদের স্থানান্তর নিয়ে বক্তব্য রাখার পর সংকট আরও বেড়েছে। এদিকে মিসরের প্রেসিডেন্ট আবদেল ফাত্তাহ আল-সিসি মঙ্গলবার ঘোষণা করেছেন, মিসরের পরিকল্পনা অনুসারে গাজা একটি স্বাধীন ফিলিস্তিনি সংস্থা দ্বারা পরিচালিত হবে, যা গাজাবাসীদের তাদের ভূমিতে থাকার অধিকার নিশ্চিত করবে। আরব দেশগুলোর নেতারা গাজার ভবিষ্যত নিয়ে আলোচনা করতে কায়রোতে একত্রিত হওয়ার পর এই মন্তব্য করেন তিনি। মঙ্গলবার এক প্রতিবেদনে এ খবর দিয়েছে আল-আরাবিয়াহ। কায়রোতে আরব লীগ সম্মেলনে ট্রাম্পের গাজার বাসিন্দাদের স্থানান্তরের প্রস্তাবের বিরুদ্ধে বক্তব্য রাখার সময় সিসি বলেন, মিসরের পরিকল্পনা অনুযায়ী, ফিলিস্তিনিরা তাদের ভূমিতে থাকবে এবং গাজার তত্ত্বাবধান করবে ফিলিস্তিনি প্রযুক্তিবিদদের একটি কমিটি। ফিলিস্তিনির প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাস গাজা পুনর্গঠনের পরিকল্পনাকে স্বাগত জানান এবং বলেন, তিনি তার সরকারের জন্য একটি ভাইস প্রেসিডেন্ট পদ সৃষ্টি করবেন। এছাড়া, তিনি কায়রো সম্মেলনে ফাতাহ পার্টির বহিষ্কৃত সদস্যদের জন্য ক্ষমার ঘোষণা দেন। আন্তর্জাতিক পৃষ্ঠপোষকদের দীর্ঘদিনের অনুরোধের পর আব্বাস এই পদটি সৃষ্টির ঘোষণা দেন, যা বহিষ্কৃত ফাতাহ সদস্য মুহাম্মদ দাহলানকে ভাইস প্রেসিডেন্টের জন্য মনোনীত করার পথ প্রশস্ত করতে পারে। এছাড়া সম্মেলনে আব্বাস বলেন, যদি পরিস্থিতি অনুমোদন করে, তিনি প্রেসিডেন্ট ও সংসদীয় নির্বাচন আয়োজনের জন্য প্রস্তুত। তিনি আরও বলেন, তার ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষই একমাত্র বৈধ শাসন ও সামরিক শক্তি ফিলিস্তিনি অঞ্চলগুলোতে। মিসর ৫৩ বিলিয়ন মূল্যের পাঁচ বছরের পুনর্গঠন পরিকল্পনা প্রস্তাব করেছে, যা গাজার অবরুদ্ধ এলাকায় ফিলিস্তিনিদের স্থানান্তরের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে। একটি ডকুমেন্টে দেখা গেছে, ধ্বংসাবশেষ অপসারণ এবং প্রায় ৬০,০০০ আংশিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত ঘরের পুনর্র্নিমাণে প্রয়োজন ৩ বিলিয়ন ডলার এবং ছয় মাসের সময়। পরিকল্পনার অধীনে, ২০৩০ সালের মধ্যে ৩ মিলিয়ন মানুষের বসবাসের জন্য নতুন ঘর তৈরি হবে, সঙ্গে বিমানবন্দর, বন্দর, শিল্প এলাকা, হোটেল ও পার্কও নির্মাণ হবে। পুনর্গঠন প্রক্রিয়া শুরু করতে হলে অন্তর্র্বতীকালীন শাসন ব্যবস্থা, নিরাপত্তা এবং দুই রাষ্ট্র সমাধানের দৃষ্টিভঙ্গি রক্ষা নিশ্চিত করতে হবে। এছাড়াও, মিসর ও জর্ডান ফিলিস্তিনি পুলিশ বাহিনীর প্রশিক্ষণ দেয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে, যাতে তারা গাজার নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পারে। সম্মেলনের চূড়ান্ত বিবৃতিতে মিশরের পরিকল্পনা পুরোপুরি সমর্থন পেয়েছে এবং গাজার পুনর্গঠন কার্যক্রম শুরু করার জন্য আন্তর্জাতিক সমর্থনের আবেদন জানানো হয়েছে। আরব সম্মেলন ফিলিস্তিনিদের তাদের ভূমি থেকে বিতাড়ন না করার নীতি পুনর্ব্যক্ত করেছে এবং ইসরাইলের মানবিক সহায়তা প্রবাহ বন্ধ করার সিদ্ধান্তের নিন্দা জানিয়েছে, যা তারা যুদ্ধবিরতি চুক্তি, আন্তর্জাতিক আইন এবং মানবাধিকার আইন লঙ্ঘন হিসেবে বিবেচনা করছে। ফিলিস্তিনি প্রতিরোধ গোষ্ঠী হামাস গাজার পুনর্গঠন পরিকল্পনাকে স্বাগত জানিয়েছে এবং ইসরাইলের বিরুদ্ধে রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক বয়কটের আহ্বান জানিয়েছে। হামাস সম্মেলন শেষে এক বিবৃতিতে বলেছে, এই সম্মেলনটি ফিলিস্তিনিদের জন্য আরব ও ইসলামিক সমর্থনের একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ, বিশেষ করে গাজা, পশ্চিম তীর এবং জেরুজালেমে ইসরাইলি আক্রমণ এবং বিতাড়ন প্রচেষ্টার বিরুদ্ধে। গোষ্ঠীটি আরব নেতাদের প্রশংসা করেছে যারা ফিলিস্তিনিদের বিতাড়িত করার বা তাদের জাতীয় সত্তাক্ষুন্ন করার চেষ্টা প্রত্যাখ্যান করেছে, এবং বলেছে এটি একটি ঐতিহাসিক বার্তা যে, দ্বিতীয় নাকবা (বিপর্যয়) ঘটতে দেওয়া হবে না। আল-আরাবিয়াহ।


বিভাগ : ইসলামী বিশ্ব


মন্তব্য করুন

HTML Comment Box is loading comments...

এই বিভাগের আরও

এবছর একাধিক উপগ্রহ উৎক্ষেপণ করবে ইরান
নতুন পারমাণবিক সাফল্য উন্মোচন করতে যাচ্ছে ইরান
বিশাল ভূগর্ভস্থ ক্ষেপণাস্ত্র শহর উন্মোচন করলো ইরানের আইআরজিসি
প্যাসিফিকা ইনস্টিটিউটের বার্ষিক ইফতারে শরিক অন্য ধর্মাবলম্বীরাও
তাকওয়াভিত্তিক সমাজ গঠনে শান্তি প্রতিষ্ঠা সম্ভব
আরও
X

আরও পড়ুন

তারেক রহমান ঘোষিত ৩১দফা সংস্কার কর্মসূচি বাস্তবায়নের লক্ষ্যে ঈশ্বরগঞ্জে বিএনপি'র জনসভা

তারেক রহমান ঘোষিত ৩১দফা সংস্কার কর্মসূচি বাস্তবায়নের লক্ষ্যে ঈশ্বরগঞ্জে বিএনপি'র জনসভা

বড়োদের শরীরে পা লাগলে কি করনীয় প্রসঙ্গে?

বড়োদের শরীরে পা লাগলে কি করনীয় প্রসঙ্গে?

গ্রেফতারকৃত ক্রীম আপা কেন এত ভাইরাল?

গ্রেফতারকৃত ক্রীম আপা কেন এত ভাইরাল?

মাগুরায় ছেলের মোটর সাইকেল থেকে পড়ে মায়ের মৃত্যু

মাগুরায় ছেলের মোটর সাইকেল থেকে পড়ে মায়ের মৃত্যু

চাঁদাবাজদের আর ক্ষমতায় আনা যাবে না : মুফতি ফয়জুল করীম

চাঁদাবাজদের আর ক্ষমতায় আনা যাবে না : মুফতি ফয়জুল করীম

কিডনির পাথর অপসারণ বিষয়ে ডা. রফিকের আধুনিক চিকিৎসার প্রেজেন্টেশন উপস্থাপন

কিডনির পাথর অপসারণ বিষয়ে ডা. রফিকের আধুনিক চিকিৎসার প্রেজেন্টেশন উপস্থাপন

জিম্বাবুয়েকে হালকাভাবে নিতে নারাজ শান্ত

জিম্বাবুয়েকে হালকাভাবে নিতে নারাজ শান্ত

পাঁচ লাখ কোটি টাকা আত্মসাৎ হয়েছে ব্যাংকিং খাতে: গর্ভনর

পাঁচ লাখ কোটি টাকা আত্মসাৎ হয়েছে ব্যাংকিং খাতে: গর্ভনর

নোয়াখালীতে "প্যালেস্টাইন সলিডারিটি মুভমেন্ট"* এর গণ মিছিল সম্মেলন

নোয়াখালীতে "প্যালেস্টাইন সলিডারিটি মুভমেন্ট"* এর গণ মিছিল সম্মেলন

ভারতে হনুমান জয়ন্তীতে মসজিদে লাউডস্পিকার নিষিদ্ধ

ভারতে হনুমান জয়ন্তীতে মসজিদে লাউডস্পিকার নিষিদ্ধ

ময়মনসিংহে ভালুকের শরীলে পচন আওয়ামী লীগ নেতার চিড়িয়াখানা সিলগালা

ময়মনসিংহে ভালুকের শরীলে পচন আওয়ামী লীগ নেতার চিড়িয়াখানা সিলগালা

আলোর পথে যাত্রার আহ্বান থাকবে পয়লা বৈশাখে: ছায়ানট

আলোর পথে যাত্রার আহ্বান থাকবে পয়লা বৈশাখে: ছায়ানট

ইসরাইলির গণহত্যার প্রতিবাদে ফুঁসে উঠেছে সারাদেশ

ইসরাইলির গণহত্যার প্রতিবাদে ফুঁসে উঠেছে সারাদেশ

লক্ষ্মীপুরে কুপিয়ে জখমের ছয়দিন পর যুবকের মৃত্যু

লক্ষ্মীপুরে কুপিয়ে জখমের ছয়দিন পর যুবকের মৃত্যু

রাজবাড়ীতে যুবদল নেতার হাতে লাঞ্ছিত নির্বাচন কর্মকর্তা ফোন ভাংচুর

রাজবাড়ীতে যুবদল নেতার হাতে লাঞ্ছিত নির্বাচন কর্মকর্তা ফোন ভাংচুর

রেল হাসপাতালে চিকিৎসা পাবেন সাধারণ মানুষও  : উপদেষ্টা ফাওজুল

রেল হাসপাতালে চিকিৎসা পাবেন সাধারণ মানুষও : উপদেষ্টা ফাওজুল

কালীগঞ্জে অপরাধীকে সনাক্ত করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে মানববন্ধন

কালীগঞ্জে অপরাধীকে সনাক্ত করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে মানববন্ধন

তারাকান্দায় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার থেকে হকার উচ্ছেদে প্রশাসনের অভিযান

তারাকান্দায় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার থেকে হকার উচ্ছেদে প্রশাসনের অভিযান

আমার স্ত্রীর অবস্থা ভালো : মির্জা ফখরুল

আমার স্ত্রীর অবস্থা ভালো : মির্জা ফখরুল

লবণের মূল্য কমে যাওয়ায় চাষিরা হতাশ, মাঠেই গর্তে ফেলে রাখছে লবণ

লবণের মূল্য কমে যাওয়ায় চাষিরা হতাশ, মাঠেই গর্তে ফেলে রাখছে লবণ