ঢাকা   বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর ২০২৪ | ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১

হারিয়ে যাওয়া এক ইসলামিক লাইব্রেরি থেকে যেভাবে আধুনিক গণিতের জন্ম

Daily Inqilab অনলাইন ডেস্ক

৩১ মার্চ ২০২৪, ১১:৫৩ এএম | আপডেট: ৩১ মার্চ ২০২৪, ১১:৫৩ এএম

শত শত বছর আগে, এক প্রসিদ্ধ ইসলামিক লাইব্রেরি বিশ্বে আরবি সংখ্যা নিয়ে আসে। যদিও সেই লাইব্রেরি বহু আগেই বিলুপ্ত হয়ে গিয়েছে কিন্তু গণিতে এটি যে বিপ্লব ঘটিয়েছিল, তা আমাদের পৃথিবীকেই বদলে দিয়েছে।

 

বায়াত আল-হিকমাহ্ বা হাউজ অফ উইজডম - প্রাচীন এই লাইব্রেরির এখন আর কোন অস্তিত্বই নেই, সেটি ১৩ শতকেই ধ্বংস হয়ে গিয়েছে। তাই শুধুমাত্র কল্পনা করা ছাড়া আমাদের এখন আর নিশ্চিত হবার কোন উপায় নেই যে এটার অবস্থান ঠিক কোথায় ছিল এবং এটি দেখতে কেমন ছিল।

 

কিন্তু এই মর্যাদাপূর্ণ একাডেমি ইসলামের স্বর্ণযুগে ছিল বাগদাদের প্রথম বড় জ্ঞানচর্চার ক্ষেত্র। একইসাথে এটিকে বলা হয় আধুনিক ‘আরবি’ সংখ্যার জন্মভূমি, আর ‘শূন্য’ দিয়ে যে সংখ্যার রুপান্তর ঘটানো যায় সেটাও ছড়িয়ে দিতে সাহায্য করে এই লাইব্রেরি।

 

(প্রথম শূন্য সংখ্যাটি লেখার অস্তিত্ব পাওয়া যায় প্রাচীন মেসোপটমিয়ায়, কিন্তু পঞ্চম শতকের দিকে এটি ভারতের ব্যবহারের আগ পর্যন্ত এর কোন অর্থ ছিল না, আর এখান থেকেই শূন্য বাকি বিশ্বে ছড়িয়ে পড়ে – যদিও এরও কয়েকশ বছর আগে মায়ারা শূন্য ব্যবহার করেছিল বলে ধারণা করা হয়।)

 

এই লাইব্রেরির জন্ম অষ্টম শতকে খলিফা হারুন আল-রশীদের ব্যক্তিগত সংগ্রহশালা হিসেবে, কিন্তু প্রতিষ্ঠার ৩০ বছরের মাথায় একে সাধারণ জনগণের পড়াশোনার জন্য খুলে দেয়া হয়। এই হাউজ অফ উইজডম সারা দুনিয়ার বিজ্ঞানীদের বাগদাদে হাজির হতে উৎসাহিত করে, তারা শহরের জ্ঞান চর্চার আগ্রহের কেন্দ্রবিন্দুতে উঠে আসে এবং একই সাথে মত প্রকাশের স্বাধীনতার প্রতীকও হয়ে উঠে এটি (মুসলিম, ইহুদী এবং খ্রিস্টান সব ধর্মের বিদ্বানদেরই এখানে আসার ও পড়াশোনার অনুমতি ছিল)।

 

বর্তমান সময়ে লন্ডনের বৃটিশ লাইব্রেরি বা প্যারিসের বিবলিওতেক ন্যাসিওনালে যে পরিমাণ সংগ্রহ হাউজ অফ উইজডমেও তেমনই ছিল, ফলে এটি সময়ের সাথে হয়ে ওঠে সারা দুনিয়ার বিভিন্ন পড়াশোনার ক্ষেত্রে অপ্রতিদ্বন্দ্বী এক কেন্দ্র, যার মধ্যে মানবিক ও বিজ্ঞান, গণিত, জ্যোর্তিবিজ্ঞান, চিকিৎসা, রসায়ন, ভূগোল, দর্শন, সাহিত্য ও শিল্পকলা এমনকি আলকেমি ও জ্যোতিষশাস্ত্রের মতো বিষয়েরও চর্চা হতে থাকে।

 

এই মহান ও বিশাল স্মৃতিচিহ্নকে বুঝতে আসলে কল্পনার চেয়েও বেশি কিছু থাকতে হবে। কিন্তু একটা জিনিস পরিষ্কার যে, এই একাডেমি থেকে এমন এক সাংস্কৃতিক বিপ্লব আসে যা সারা দুনিয়ার গণিতের ধারাই বদলে দেয়।

 

হাউজ অফ উইজডম ১২৫৮ সালে ধ্বংস করা হয় যখন মঙ্গোলীয়রা বাগদাদ দখল করে (কথিত আছে যে এত পরিমাণ পান্ডুলিপি টাইগ্রিস নদীতে ছুঁড়ে ফেলা হয় যে এর পানি কালো হয়ে যায়)। কিন্তু তার আগেই এখান থেকে যে আবিষ্কারগুলো হয়েছিল, তা এক শক্তিশালী ও বিমূর্ত গণিতের ভাষার সাথে পরিচয় ঘটায় যা পরবর্তীতে ইসলামিক বিশ্ব, ইউরোপ এবং একসময় সারা দুনিয়া অনুসরণ করে।

 

“হাউজ অফ উইজডম ঠিক কোথায় বা কবে প্রতিষ্ঠিত হয় তার পূঙ্খানুপূঙ্খ বিশ্লেষণ আসলে আমাদের জন্য জরুরি নয়,” বলছিলেন সারে বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিজিক্সের অধ্যাপক জিম আল খলিলি। “জরুরি হল এসব বৈজ্ঞানিক ধারণাগুলোর ইতিহাস এবং সেগুলো কীভাবে আজ এ পর্যায়ে আসলো।”

 

গণিতের ক্ষেত্রে হাউজ অফ উইজডমের যে অবদান সেটা বোঝার জন্য আমাদের একটু টাইম ট্রাভেল করতে হবে। ইতালিয়ান রেঁনেসার আগ পর্যন্ত শত শত বছর ধরে ইউরোপে গণিতের সাথে সমার্থক ছিল একটা নামই: লিওনার্দো দ্য পিসা, যিনি মৃত্যুর পরে ফিবোনাচ্চি নামে পরিচিত হন।

 

১১৭০ সালে সালে পিসায় জন্ম নেয়া এই ইতালিয়ান গণিতবিদ তার প্রাথমিক দীক্ষা লাভ করেন উত্তর আফ্রিকার উপকূলীয় বাণিজ্য অঞ্চল বুগিয়াতে।

 

বিশ বছর হবার আগেই ফিবোনাচ্চি মধ্যপ্রাচ্যে পাড়ি জমান, তিনি তখন ভারত থেকে পারস্য হয়ে পশ্চিমে যে ধ্যান ধারণাগুলো আসে সেগুলোতে মজে ছিলেন। এরপর যখন ইতালি ফেরত আসেন, ফিবোনাচ্চি হিন্দু-অ্যারাবিক গণনা পদ্ধতি নিয়ে প্রথম কোন পশ্চিমা কাজ হিসেবে তার বই লিবার আবাছি প্রকাশ করেন।

 

যখন এ বই প্রথম ১২০২ সালে সামনে আসে তখন অল্প সংখ্যক কিছু পন্ডিত হিন্দু-অ্যারাবিক গণনা সম্পর্কে অবগত ছিলেন; ইউরোপিয়ান পন্ডিত এবং ব্যবসায়ীরা তখনো রোমান গণনা পদ্ধতি অনুসরণ করে আসছিল, যে পদ্ধতিতে গুণ-ভাগ করা ছিল ভয়াবহ রকমের দুরুহ কাজ।

 

ফিবোনাচ্চির বই পাটিগণিতের ক্ষেত্রে এই সংখ্যাপদ্ধতির ব্যবহার দেখায় – বিভিন্ন কৌশল দেখায় যা দৈনন্দিন সমস্যা যেমন মুনাফা, অর্থ বিনিময়, ওজন, পণ্য বিনিময় ও সুদ ইত্যাদি ক্ষেত্রে কাজে আসে।

 

“যারা গণণার শিল্প সম্পর্কে জানতে চায়, এর সূক্ষ্ণ ও নির্ভুল দিক বুঝতে চায়, তাদের অবশ্যই আগে হাতে গণনা শিখতে হবে,” ফিবোনাচ্চি তার এনসাইক্লোপিডিয়া আকারের বইয়ের প্রথম চ্যাপ্টারেই লেখেন। একইসাথে সেসব সংখ্যার সাথে পরিচয় করান যা এখন বাচ্চাদের স্কুলে শেখানো হয়।

 

“নয়টি সংখ্যার সাথে ০ প্রতীক, যেটাকে বলা হয় জেফির, এগুলো দিয়েই যেকোনো সংখ্যা লেখা যায়।” এরপর হঠাৎ করেই গণিত যেন সবার ব্যবহার উপযোগি হয়ে উঠে।

 

ফিবোনাচ্চির এই বিশেষ প্রতিভা শুধুমাত্র গণিতেই সীমাবদ্ধ থাকেনি, বরং তিনি কয়েক শতাব্দীর মুসলিম বিজ্ঞানীদের গণনা সূত্র, তাদের দশমিকের হিসাব, তাদের বীজগণিত, এসবকিছু দারুণভাবে অনুধাবনে সক্ষম ছিলেন।

 

আর প্রকৃতপক্ষে লিবার আবাছি, নবম শতকের গণিতবিদ আল খারিজমির অ্যালগরিদমের উপর ভীষণভাবে নির্ভরশীল ছিল। তিনি যেভাবে তার বইয়ে সমাধানগুলো হাজির করেন, তাতে পদ্ধতিগত উপায়ে প্রথমবারের মতো চতুষ্কোণের সমাধানের সূত্রও উঠে আসে।

 

গণিতে অসাধারণ অবদানের জন্য আল খারিজমিকে প্রায়ই বলা হয় “ফাদার অফ অ্যালজেবরা” - ৮২১ সালে তিনি জ্যোর্তিবিদ এবং প্রধান লাইব্রেরিয়ান হিসেবে হাউজ অফ উইজডমে নিয়োগ পান।

 

“আল খারিজমির লেখা প্রথমবারের মতো মুসলিম বিশ্বকে দশমিক সংখ্যা পদ্ধতির সাথে পরিচয় করায়,” বলেন আল-খালিলি। “লিওনার্দো দ্য পিসার মতো অন্যরা এটাকে ইউরোপ জুড়ে ছড়িয়ে দিতে সাহায্য করেছে।”

 

আধুনিক গণিতে ফিবোনাচ্চির যে প্রভাব তার একটা বড় অংশের কৃতিত্ব আসলে আল-খারিজমির। আর এভাবেই ৪০০ বছর আগে-পরের এই দুই পন্ডিত সংযুক্ত হন এক প্রাচীন লাইব্রেরি দ্বারা: মধ্যযুগের সবচেয়ে আলোচিত গণিতবিদ কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে আছেন আরেক দূরদর্শী চিন্তাবিদের সাথে, যার এই আবির্ভাব ঘটে ইসলামের স্বর্ণ যুগের এক প্রখ্যাত প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে।

 

তবে সম্ভবত হাউজ অফ উইজডম সম্পর্কে খুব জানা যায় বলেই, মাঝে মধ্যে ইতিহাসবিদরা এর উদ্দেশ্য ও সম্ভাবনা সম্পর্কে একটু বাড়িয়ে বলেন, যা অনেক সময় এটাকে একটা পৌরাণিক চেহারা দেয় যা ইতিহাস ঘেঁটে যতটুকু পাওয়া যায় তার সাথে মেলে না।

 

“অনেকে তর্ক করেন যে হাউজ অফ উইজডমকে অনেকে যেভাবে দেখে থাকে এটা আসলে অত মহান কিছু নয়,” বলছিলেন আল-খলিলি। “কিন্তু আল-খারিজমির মতো মানুষদের সাথে এর সম্পর্ক, গণিত, জ্যোর্তিবিদ্যা ও ভূগোলে তার অবদান, এসব আমার কাছে প্রমাণ হিসেবে যথেষ্ট যে হাউজ অফ উইজডম আসলে সত্যিকার একটা একাডেমির মতোই ছিল, এটা শুধু অনুবাদ বইয়ের সংগ্রহশালা ছিল না।”

 

লাইব্রেরির অনুবাদক ও পন্ডিতরা কঠোর পরিশ্রমের মাধ্যমে নিশ্চিত করেন যাতে তাদের কাজ সাধারণ মানুষ সহজেই পড়তে পারে।

 

“হাউজ অফ উইজডম ভিত্তিগতভাবেই গুরুত্বপূর্ণ, আর যেহেতু অনুবাদ ছিল – আরবি পন্ডিতরা গ্রীক ধারণাগুলো আঞ্চলিক ভাষায় অনুবাদ করেন – সেসবই আমাদের গণিত সম্পর্কে জানার ভিত্তি,”বলেন যুক্তরাজ্যের ওপেন বিশ্ববিদ্যালয়ের গণিত ইতিহাসের অধ্যাপক জুন ব্যারো-গ্রিন। রাজকীয় এই লাইব্রেরি একদিকে যেমন সংখ্যাতত্ত্ব সম্পর্কে জানার সুযোগ করে দেয়, তেমনি অন্যদিকে বৈজ্ঞানিক উদ্ভাবনেরও ক্ষেত্র হয়ে ওঠে এটি।

 

আমাদের বর্তমান যে দশমিকের হিসাব এর বহু আগে যখন বাইনারি প্রোগ্রাম দ্বারা আমাদের কম্পিউটার সিস্টেম আসেনি, এমনকি প্রাচীন মেসোপটমিয়ানরা যে পদ্ধতি ব্যবহার করতো বা রোমান সংখ্যাও প্রচলনের আগে, মানুষ টালি পদ্ধতিতে তাদের হিসাবপত্র লিপিবদ্ধ করতো।

 

এসবই হয়তো এখন আমাদের কাছে খুব প্রাচীন বা সনাতন মনে হতে পারে, কিন্তু এই সংখ্যার নানান রকম প্রকাশ আসলে আমাদের কাঠামো সম্পর্কে গুরুত্বপূর্ণ শিক্ষা দেয়, সম্পর্ক এবং ইতিহাস ও সংস্কৃতি কোথা থেকে এসেছে সে ব্যাপারেও ধারণা দেয়।

 

একইসাথে এ থেকে মান ও বিমূর্ততার ধারণা পোক্ত হয়, আমাদের বুঝতে সাহায্য করে যে সংখ্যা কীভাবে কাজ করে। ব্যারো-গ্রিন বলেন এটি দেখা যে “পশ্চিমা পদ্ধতিই একমাত্র পদ্ধতি নয়, বিভিন্ন এই সংখ্যাপদ্ধতি বোঝাটার সত্যিকারের গুরুত্ব আছে।”

 

যদি প্রাচীন কোন বণিক ‘দুটি ভেড়া’ লিখতে চাইতেন, তাহলে তাকে আসলে দুটি ভেড়া এঁকে দেখাতে হতো। কিন্তু ২০টি ভেড়ার ক্ষেত্রে সেটা আসলে অসম্ভব। কিন্তু এ দুটিরই দরকার আছে।

 

প্রতীক-মানের পথ ধরে আসা রোমান সংখ্যা আল খারিজমির সংখ্যা পদ্ধতি চালুর পরও টিকে যায়, এটি সংখ্যার অবস্থানের উপর নির্ভর করে পরিমাণ বোঝাতো। তারা যেখান থেকে এসেছে সেই রোমান সাম্রাজ্য পতনের পরও রোমান হরফ টিকে যায় – সেটা কি দুর্ঘটনাবশত তার আবেগের বশে বা প্রয়োজনেই, তা এখন নিশ্চিত করে কেউই বলতে পারে না।

 

ফিবোনাচ্চির জন্মের ৮৫০ বছর পেরিয়ে গিয়েছে। রোমান সংখ্যার চলমান যাত্রাও এখন হুমকিতে। যুক্তরাজ্যে যেমন ঐতিহ্যগতভাবে যেভাবে সময় দেখা হত সে জায়গায় স্কুল শ্রেণীকক্ষে ডিজিটাল ঘড়ি দেয়া হচ্ছে, ফলে শঙ্কা আছে যে শিক্ষার্থীরা হয়তো আর কখনোই ঠিকভাবে অ্যানালগ সময় বলতে পারবে না।

 

বিশ্বের অনেক অঞ্চলে সরকার রোমান সংখ্যাগুলো পথনির্দেশক বা সরকারি নথিপত্র থেকে সরিয়ে নিচ্ছে, হলিউডেও যেমন সিনেমার সিক্যুয়েলে এখন আর রোমান হরফ ব্যবহৃত হয় না।

 

এই যে রোমান সংখ্যা থেকে বৈশ্বিক পালাবদল তা কিন্তু জীবনের অনেক ক্ষেত্রেই আমাদের সংখ্যাহীনতার দিকে নিয়ে যেতে পারে। তার চেয়েও বড় কথা রোমান সংখ্যার হারিয়ে যাওয়া আসলে গণিতের সাথে রাজনৈতিক আলোচনার জন্ম দেয়।

 

“প্রশ্ন হল আমরা কার গল্প বলবো, কার সংস্কৃতি আমরা ধারণ করবো এবং জ্ঞানের কোন ধারাকে আমরা অমর করবো আমাদের প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষার মাধ্যমে সেটা অবশ্যই পশ্চিমা উপনিবেশবাদী ঐতিহ্য দ্বারা প্রভাবিত,” বলেন কেমব্রিজ ম্যাথমেটিক্সের এডিটর ও ডেভেলপার লুসি রেক্রফট স্মিথ।

 

সাবেক এই গণিতের শিক্ষক এখন গণিত শিক্ষার এক বড় কণ্ঠস্বর, তিনি বিশ্বজুড়ে বিভিন্ন কারিকুলাম নিয়ে গবেষণা করেন। ওয়েলস, স্কটল্যান্ড ও আয়ারল্যান্ডে পড়াশোনায় রোমান হরফ অন্তর্ভুক্ত নয়, যুক্তরাষ্ট্রেও এ নিয়ে কোন বাধ্যবাধকতা নেই, কিন্তু ইংল্যান্ডে বিশেষ নির্দেশনা আছে যে শিক্ষার্থীদের অবশ্যই অন্তত ১০০ পর্যন্ত রোমান সংখ্যা পড়তে পারতে হবে।

 

আমরা অনেকেই ফিবোনাচ্চির বিখ্যাত হিসাব যেটা তিনি নিজের নামে করেন: অর্থাৎ ১ দিয়ে শুরু করে সামনে এগুনো ও আগের দুই সংখ্যার যোগ করা; সেটার কৃতিত্ব তাকে দেই না।

 

কিন্তু ফিবোনাচ্চির এই প্যাটার্ন বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ, প্রকৃতিতেও আমরা এমন প্যাটার্ন দেখতে পাই – সমুদ্রের ঝিনুক বা আগাছা লতা, সূর্যমুখীর চুড়া, পশুর শিং ও পাতার যে শিরা উপশিরা থাকে, এবং একই সাথে ডিজিটাল দুনিয়াতে (কম্পিউটার সায়েন্স ও সিকুয়েন্সিং) এই প্যাটার্ন দেখা যায়। এছাড়া জনপ্রিয় সব শাখা: চলচ্চিত্র, সাহিত্য ও ভিজ্যুয়াল আর্ট; গানের ছন্দ বা অর্কের্স্ট্রা, এমনকি আধুনিক আর্কিটেকচারেও এর দেখা মেলে।

 

কিন্তু লিওনার্দো দ্য পিসার গণিতে এমন আলোচিত অবদানের বিষয়টা স্কুলে সচরাচর শেখানো হয় না। যে গল্পটা সেই রাজকীয় লাইব্রেরিতে হাজার বছর আগে শুরু হয়, যখন বেশিরভাগ পশ্চিমা খ্রিস্টিয় অঞ্চলে অজ্ঞানতার অন্ধকারে ডুবে ছিল।

 

এই গল্প আমাদের গণিতে যে ইউরোপ কেন্দ্রিক ভাবনা আছে সেখান থেকে সরিয়ে আনে, বরং ইসলামিক বিশ্বের বিজ্ঞানীদের অজর্নে আলো ফেলে এবং অনেক আগে থেকেই সংখ্যা রহস্যের সমাধানে তাদের ক্রমাগত অবদানের বিষয়টির আলোচনা উস্কে দেয়। সূত্র: বিবিসি।

 


বিভাগ : ইসলামী বিশ্ব


মন্তব্য করুন

HTML Comment Box is loading comments...

এই বিভাগের আরও

মাওলানা সাদ কান্ধলভীকে ভিসা দেওয়ার দাবি হেফাজতের নায়েবে আমিরের
ইসরাইলকে স্বীকৃতি নয়, ফিলিস্তিনকে সহায়তা দেবে মালয়েশিয়া
কারাগারেই বসেই কোরআনের হাফেজ হলেন ১৩ হাজার কারাবন্দি
রাসূল (সা.)-এর রওজা শরিফ জিয়ারতে নতুন নির্দেশনা
ইসরাইল গাজায় মানবিক সাহায্য অবরোধের আইন লংঘন করেনি : যুক্তরাষ্ট্র
আরও

আরও পড়ুন

ডিসেম্বরে বাংলাদেশ ও ভারতের পররাষ্ট্র বৈঠক, হাসিনাকে ফেরানো নিয়ে আলোচনা থাকবে

ডিসেম্বরে বাংলাদেশ ও ভারতের পররাষ্ট্র বৈঠক, হাসিনাকে ফেরানো নিয়ে আলোচনা থাকবে

রামু সেনানিবাসে সশস্ত্র বাহিনী দিবস পালিত

রামু সেনানিবাসে সশস্ত্র বাহিনী দিবস পালিত

এক সপ্তাহে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ বাড়ল ৬ কোটি ১০ লাখ ডলার

এক সপ্তাহে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ বাড়ল ৬ কোটি ১০ লাখ ডলার

প্রবাসীদের যে জন্য সুখবর দিলো মালয়েশিয়া

প্রবাসীদের যে জন্য সুখবর দিলো মালয়েশিয়া

জাবি শিক্ষার্থী মৃত্যুর ঘটনায় মামলা, তদন্ত কমিটি গঠন, ফটকে তালা, মশাল মিছিল

জাবি শিক্ষার্থী মৃত্যুর ঘটনায় মামলা, তদন্ত কমিটি গঠন, ফটকে তালা, মশাল মিছিল

মাদকের বিরুদ্ধে শক্ত অবস্থানে থাকবে জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল

মাদকের বিরুদ্ধে শক্ত অবস্থানে থাকবে জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল

"নতুন সিনেমা নিয়ে ফিরছেন গ্লোবাল তারকা অ্যাঞ্জেলিনা জোলি"

"নতুন সিনেমা নিয়ে ফিরছেন গ্লোবাল তারকা অ্যাঞ্জেলিনা জোলি"

ড. ইউনূসকে নিয়ে খালেদা জিয়ার পুরোনো যে বক্তব্য ভাইরাল

ড. ইউনূসকে নিয়ে খালেদা জিয়ার পুরোনো যে বক্তব্য ভাইরাল

নতুন নির্বাচন কমিশনের প্রতি ইসলামী আন্দোলনের শুভ কামনা

নতুন নির্বাচন কমিশনের প্রতি ইসলামী আন্দোলনের শুভ কামনা

আলোচনায় ফ্যাসিস্ট হাসিনার ‘টুস করে ফেলে দেয়ার’ হুমকি

আলোচনায় ফ্যাসিস্ট হাসিনার ‘টুস করে ফেলে দেয়ার’ হুমকি

দীর্ঘ ১৫ বছর সাংবাদিকরা বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ পরিবেশন করতে পারেনি: খোকন

দীর্ঘ ১৫ বছর সাংবাদিকরা বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ পরিবেশন করতে পারেনি: খোকন

'ইউটিউব ট্রেন্ডিংয়ে রয়েছে অভিনেতা তারিক আনাম খানের নাটক'

'ইউটিউব ট্রেন্ডিংয়ে রয়েছে অভিনেতা তারিক আনাম খানের নাটক'

বাংলাদেশ, নেপাল ও ভুটানের মধ্যে আঞ্চলিক সহযোগিতার আহ্বান

বাংলাদেশ, নেপাল ও ভুটানের মধ্যে আঞ্চলিক সহযোগিতার আহ্বান

ইসলামিক ফাউন্ডেশন এর বোর্ড অব গভর্নর সৈয়দ মোসাদ্দেক বিল্লাহ আল মাদানীকে জমিয়াতুল মোদার্রেসীন ও দারুননাজাত মাদরাসা’র সম্বর্ধনা

ইসলামিক ফাউন্ডেশন এর বোর্ড অব গভর্নর সৈয়দ মোসাদ্দেক বিল্লাহ আল মাদানীকে জমিয়াতুল মোদার্রেসীন ও দারুননাজাত মাদরাসা’র সম্বর্ধনা

সৈয়দ মোসাদ্দেক বিল্লাহ আল মাদানীকে জমিয়াতুল মোদার্রেসীন ও দারুননাজাত মাদরাসা’র সংবর্ধনা

সৈয়দ মোসাদ্দেক বিল্লাহ আল মাদানীকে জমিয়াতুল মোদার্রেসীন ও দারুননাজাত মাদরাসা’র সংবর্ধনা

লালমোহনে দুই গ্রুপের সংঘর্ষে আহত যুবদল নেতা চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু

লালমোহনে দুই গ্রুপের সংঘর্ষে আহত যুবদল নেতা চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু

চকরিয়ার বিএনপি নেতা আবু তাহের চৌধুরীর মৃত্যুতে সালাহউদ্দিন আহমদ ও হাসিনা আহমদের শোক

চকরিয়ার বিএনপি নেতা আবু তাহের চৌধুরীর মৃত্যুতে সালাহউদ্দিন আহমদ ও হাসিনা আহমদের শোক

উইন্ডিজের বিপক্ষে মাঠে নামছে বাংলাদেশ

উইন্ডিজের বিপক্ষে মাঠে নামছে বাংলাদেশ

বেইজিং সংস্কৃতি ও পর্যটন ব্যুরো ও আটাবের মধ্যে চুক্তি স্বাক্ষরিত

বেইজিং সংস্কৃতি ও পর্যটন ব্যুরো ও আটাবের মধ্যে চুক্তি স্বাক্ষরিত

প্রেসিডেন্টের সঙ্গে তিন বাহিনীর প্রধানের সাক্ষাৎ

প্রেসিডেন্টের সঙ্গে তিন বাহিনীর প্রধানের সাক্ষাৎ