মোবাইল টাওয়ার রেডিয়েশন ভীতি টাওয়ার নির্মাণের জায়গা পাচ্ছে না অপারেটর
২০ মে ২০২৩, ০৭:০৬ পিএম | আপডেট: ২১ মে ২০২৩, ১২:০২ এএম
উচ্চমানের মোবাইল ফোন সেবা চাইলেও টাওয়ার নির্মাণের জন্য কেউ জায়গা দিতে চাচ্ছে না বলে জানিয়েছেন টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ সংস্থার (বিটিআরসি) চেয়ারম্যান শ্যাম সুন্দর শিকদার। তিনি বলেন, মোবাইল ফোনের টাওয়ারের রেডিয়েশন নিয়ে এক ধরণের অপপ্রচার রয়েছে যে, এতে মানবদেহ কিংবা অন্যান্য জীবজন্তু বা উদ্ভিদের ক্ষতি করে। যদিও এমন কোন প্রমাণ নেই। কিছু কিছু মানুষের মধ্যে এক ধরনের কাল্পনিক ভীতি আছে যে মোবাইল টাওয়ারের কারণে ক্যন্সারের মত নানা ধরনের সমস্যা হয়। এসব মোটেও বৈজ্ঞানিক নয়। এসব মানুষের কল্পনাপ্রসূত। আর এসব অপপ্রচারে ভীত হয়ে কোথাও কোথাও মানুষ মোবাইল ফোন টাওয়ার নির্মাণে বাধা দিচ্ছে, জায়গা খুঁজে পাওয়া যায় না। শনিবার রাজধানীর মহাখালীতে ব্র্যাক সেন্টারন ইনে টেলিকম অ্যান্ড টেকনোলজি রিপোর্টার্স নেটওয়ার্ক বাংলাদেশ (টিআরএনবি) আয়োজিত এক গোলটেবিল আলোচনায় তিনি এসব কথা বলেন। এতে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বিটিআরসির উপ-পরিচালক ডক্টর সামসুজ্জোহা। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন টিআরএনবির সভাপতি রাশেদ মেহেদী।
বিটিআরসি চেয়ারম্যান শ্যাম সুন্দর শিকদার বলেন, সরকারি অনেক ভবনে, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো স্থানে টাওয়ার বসাতে দিচ্ছে না। আমরা সারাদেশে বিটিআরসির টিম পাঠিয়ে রেডিয়েশন পরিমাপ করেছি, কোথাও ক্ষতিকর মাত্রা পাওয়া যায়নি। ক্ষতিকর যে মাত্রা তার ৫০ ভাগের ১ ভাগ নির্ধারণ করা হয়েছে। অথচ মোবাইল টাওয়ারের চেয়ে এক্সরে’র রেডিয়েশন মারাত্মক ক্ষতিকর।
তিনি বলেন, মোবাইল টাওয়ার নির্মাণের জন্য যন্ত্রপাতি আমদানির সময়ই পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে এনওসি দেয়া হয়।
গ্রামীণফোনের নেটওয়ার্কের সমস্যার কথা উল্লেখ করে বিটিআরসি চেয়ারম্যান বলেন, আমি মৌলভীবাজারে গিয়েছিলাম, গাড়িতে চলন্ত অবস্থায় নেটওয়ার্ক পায়নি। পরে অপারেটরটির প্রতিনিধিকে ডেকে জানিয়েছি। শুধু আমার জন্য না, ওই এলাকার মানুষ যারা ভুক্তভোগী তাদের কথা চিন্তা করে।
নেটওয়ার্ক উন্নয়নে অপারেটরগুলো সর্বশেষ কেনা স্পেকট্রাম কাজে লাগাতে পারছে না জানিয়ে তিনি বলেন, এলসি খোলা বন্ধ থাকায় স্পেকট্রাম সম্প্রচারণে যেসব যন্ত্রপাতি প্রয়োজন তা অপারেটরগুলো আমদানি করতে পারছে না। এটি করা গেলে নেটওয়ার্কের অনেক উন্নতি হবে বলে আশা প্রকাশ করেন বিটিআরসি চেয়ারম্যান।
ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব মাহবুবুল আলম বলেন, রেডিয়েশন নিয়ে এক ধরণের ভীতি ছাড়ানো হচ্ছে। শারীরিক ক্ষতি হোক বা না হোক এটা নিয়ে মানসিক এক ধরণের ভীতি আছে। এটা দূর করতে হবে। তিনি বলেন, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) এবং আন্তর্জাতিক টেলিকমিউনিকেশন ইউনিয়ন (আইটিইউ) থেকে এবিষয়ে অনেকগুলো জার্নালে লেখা হয়েছে। এসবের কোথাও বলা হয়নি টাওয়ার রেডিয়েশন ক্ষতিকর।
বিটিআরসির ইঞ্জিনিয়ারিং এন্ড অপারেশন্স বিভাগের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এহসানুল কবির, বাংলাদেশে যে ধরনের মোবাইল টাওয়ার ইকুইপমেন্ট ব্যবহার করা হয় দুনিয়ার আর সব দেশেও ঠিক একই ধরনের যন্ত্রই ব্যবহার করা হয়। তাছাড়া মোবাইল টাওয়ার বসানোর ক্ষেত্রে যেসব আন্তর্জাতিক নীতিমালা মেনে চলা হয় বাংলাদেশের সব অপারেটর তা মেনে চলে। বিটিআরসি সময়ে সময়ে দেশ জুড়ে এসব টাওয়ারের রেডিয়েশনের পরিমাণ পরিবীক্ষণ করে এবং যে ফল পেয়েছে তাতে দেখা গেছে যে তা সহনীয় মাত্রার নিচে। ফলে ভয় পাওয়ার কিছু নেই।
আলোচনায় বক্তারা বলেন, আমাদের বাড়িতে নিত্য ব্যবহার্য মোবাইল ফোন, রাউটার, রেডিও, মাইক্রোয়েভ ওভেন ইত্যাদিতে যে ধরনের বৈদ্যুতিক তরঙ্গ ব্যবহার করা হয় মোবাইল টাওয়ারেও তেমন তরঙ্গই ব্যবহার করা হয়।
অপারেটরদের পক্ষ থেকে জানানো হয়, রাজধানীর অন্তত তিনশটিরও বেশি স্থানে মোবাইল সাইট স্থাপন করা যাচ্ছে না যেগুলো জরুরি। এই ভীতি কাটিয়ে উঠানোর জন্য সচেতনতা বাড়ানো দরকার। আমরা উচ্চমানের মোবাইল সেবা চাইব কিন্তু সাইট বসাতে দিচ্ছি না। সরকারি ও বেসরকারি উভয় ধরনের প্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রেই এমন অভিজ্ঞতা হচ্ছে। উন্নতমানের সেবা প্রাপ্তির জন্য বক্তারা মোবাইল সাইট বিস্তারে সহযোগিতা করার জন্য জনগণের প্রতি আহবান জানান।
বক্তারা আরও বলেন, যে অনেকেই অবৈধভাবে মোবাইল নেটওয়ার্কে জ্যামার, রিপিটার, বুস্টার লাগাচ্ছেন। এসব স্থাপন করা যাবে না। এগুলো অবৈধ। এসবের কারণেও নেটওয়ার্কের ক্ষতি হচ্ছে। গ্রাহকেরা নিজেরাই ঠিকমত সেবা পাচ্ছেন না। অপারেটরদের হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে কেনা তরঙ্গ ব্যবহারে বাধা প্রাপ্ত হচ্ছে।
গোলটেবিল আলোচনায় আরো অংশ নেন গ্রামীণফোনের কর্পোরেট অ্যাফেয়ার্স বিভাগের সিনিয়র ডিরেক্টর হোসেন সাদাত, রবির চিফ কর্পোরেট এন্ড রেগুলেটরি অফিসার সাহেদ আলম, বাংলালিংকের চিফ কর্পোরেট এন্ড রেগুলেটরি অ্যাফেয়ার্স অফিসার তাইমুর রহমান, হেড অফ নেটওয়ার্ক সলিউশন্স মালয়েশিয়া, বাংলাদেশ, শ্রীলংকা এবং এরিকশন বাংলাদেশের কান্ট্রি ম্যানেজার আবদুস সালাম, নকিয়া বাংলাদেশের কান্ট্রি হেড আরিফ ইসলাম, হুয়াওয়ে লিমিটেড বাংলাদেশের প্রিন্সিপাল মার্কেটিং ম্যানেজার এসএম নাজমুল হাসান, টাওয়ার কোম্পানি ইডটকোর হেড অফ রেগুলেটরি এফেয়ারস মাসুদা হোসেন, অ্যাসোসিয়েশন অব মোবাইল টেলিকম অপারেটরস বাংলাদেশ-এমটবের মহাসচিব ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) এসএম ফরহাদ, টিআরএনবির সাধারণ সম্পাদক এসএম মাসুদুজ্জামান রবিন প্রমুখ।
বিভাগ : মহানগর
মন্তব্য করুন
এই বিভাগের আরও
আরও পড়ুন
'দুর্বল' দলের বিপক্ষে পয়েন্ট হারাল ইউনাইটেড
সালাহর জোড়া গোলে লিভারপুলের জয়
গুমের দায়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ২২ সদস্য চাকরিচ্যুত
কুরস্ক অঞ্চলের ৪০ ভাগ খোয়ানোর স্বীকারোক্তি ইউক্রেনের
মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি নিয়ে বাংলাদেশ চীনের সাথে কাজ করতে আগ্রহী: বাণিজ্য উপদেষ্টা
হাজীদের সর্বোত্তম স্বার্থ রক্ষায় সরকার প্রতিশ্রুতিবদ্ধ ধর্ম উপদেষ্টা ড. খালিদ হোসেন
শরীয়তপুরে যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল ও ছাত্রদলের যৌথ কর্মী সভা
মানিকগঞ্জে সড়ক দুর্ঘটনায় সিকিউরিটি গার্ড নিহত
পাকিস্তানকে উড়িয়ে দিল জিম্বাবুয়ে
১৫ দিন রিমান্ড শেষে কারাগারে আব্দুর রাজ্জাক
লক্ষ্মীপুরে ১২০ টাকায় পুলিশে চাকরি পেলেন ৫০ জন
নির্বাচিত সরকারই দেশকে পুনর্গঠন করতে পারে : তারেক রহমান
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন জেলা কমিটিতে অচেনা ৭ জন
মৌলভীবাজারে কৃষি ও প্রযুক্তি মেলা শুরু
দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণের মডেল উদ্ভাবন
ব্রহ্মপুত্রে অবৈধ ড্রেজার বসিয়ে চলছে বালু ব্যবসা
বাঘায় কৃষি শ্রমিককে গলা কেটে হত্যা
কেশবপুরে অবৈধ ইটভাটা বন্ধে বিভিন্ন দফতরে অভিযোগ
হামলার শিকার হয়েও মুখ খুলতে পারছে না বোয়ালমারীর বহু পরিবার
ইসলামী আন্দোলনের গণসমাবেশে আ.লীগ নিষিদ্ধের দাবি