উত্তরায় ছাত্র হত্যা মামলার পলাতক আসামি সোবহান গ্রেফতার

Daily Inqilab উত্তরা সংবাদ দাতা

১৬ মার্চ ২০২৫, ০৫:৩৮ পিএম | আপডেট: ১৬ মার্চ ২০২৫, ০৫:৩৮ পিএম

বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে গুলি করে ছাত্র-জনতা  হত্যা মামলার আসামি আব্দুস সোবহানকে গ্রেফতার করেছে উত্তরা পশ্চিম থানা পুলিশ, র‍্যাবও যৌথবাহীনি। 
 
 
জানা যায়, মোঃ আব্দুস সোবহান পিতা : আব্দুল মজিদ মাতবর ছাত্র হত্যার ২৬/৩৩০ নং মামলার ৩৬ নং আসামি। মামলাটি গত ১৯শে সেপ্টেম্বর উত্তরা পশ্চিম থানায় রুজু করা হয়। এ মামলার বাদি মোঃ কবির হোসেন মৃধা পিতা : মৃত বেলায়েত মৃধা। সে গাজীপুর জেলার সদর থানার টঙ্গী বর্ষণ হল রোড এরশাদ নগরের বাসিন্দা। 
সুত্রে জানা যায়, মোঃ আব্দুস সোবহান সরকারি চাকুরিতে কোটা সংস্কার আন্দোলন চলাকালীন সময়ে জুলাই ২৪-এ উত্তরা আজমপুর আমির কমপ্লেক্স এলাকায় শিক্ষার্থীদের উপর তার দলবল নিয়ে নির্বিচারে লাঠি চার্জ ও গুলি চালায়। এতে সেখানে কয়েকজন শিক্ষার্থী নিহত হয়। এ ছাড়াও গ্রেফতার কৃত আব্দুস সোবহান একজন স্বর্ণ ব্যাবসায়ী হওয়ার কারণে তিনি ছাত্র আন্দোলন দমাতে কোটি কোটি টাকা জোগান দেন। তার এ সব অবৈধ টাকার বিনিময়ে নিরীহ শিক্ষার্থীরা অকারণে প্রাণ হায়ার। 
 
 
এ সময় প্রশাসনের লোক পরিচয়ে মামলার এজাহারভুক্ত আসামি সোবহানকে গ্রেপ্তারে বাঁধা দেওয়ার অভিযোগে সাবেক এক সেনা কর্মকর্তাকে আটক করেছে র‍্যাব-১। আটক মোঃ শাহিন আলম (৩০) সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত ল্যান্স কর্পোরাল। উত্তরা ১৩ নম্বর সেক্টরের ১৫ নং সড়কের ১৫ নং বাসা থেকে গতকাল শনিবার দিবাগত রাত সোয়া ১টায় তাঁকে আটক করে র‍্যাব-১।
 
 
জানা যায়, আটক শাহিন নিরাপত্তারক্ষীর কাজ করেন। তিনি চুয়াডাঙ্গার আলমডাঙ্গা উপজেলার কয়রা ডাঙ্গা গ্রামের বদরুল ইসলামের ছেলে। তিনি উত্তরার ওই বাসাতেই থাকেন।গতকাল ১৫ই মার্চউত্তরা ১৩ নং সেক্টরের ১৫ নং  বাড়িতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে হত্যা মামলার আসামি আওয়ামী লীগ নেতা  আব্দুস সোবাহান রয়েছেন এমন তথ্যের ভিত্তিতে ছাত্ররা বাড়িটির সামনে জড়ো হয়। খবর পেয়ে সেখানে উত্তরা পশ্চিম থানার পুলিশ, র‍্যাব ও সেনাবাহিনীর সদস্যরা উপস্থিত হোন।
 
 
রাত ১২টার দিকে ঘটনাস্থলে  পুলিশ যাওয়ার পর জনৈক শাহিন আলম উপস্থিত  শিক্ষার্থী ও পুলিশকে ঐ বাড়িতে প্রবেশ করতে বাধা দেয়। এক পর্যায়ে তিনি শিক্ষার্থীদের সঙ্গে তর্ক–বিতর্কে জড়ান।উত্তরা পশ্চিম থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) আবু সাঈদকে ও সে বাধা দেয়। এ সময় তিনি  ঊর্ধ্বতন সেনা কর্মকর্তাদের সঙ্গে তার যোগাযোগ আছে বলে ও দাপট দেখান।
 
 
শিক্ষার্থীদের সাথে তর্কবিতর্কের ভিডিও ফুটেজ প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের নজরে গেলে র‍্যাবের একটি টিম তাঁকে আটক করে নিয়ে যায়।
 
 
এ সময় ছাত্র প্রতিনিধি নোমান রেজা ইনকিলাবকে বলেন, ছাত্র হত্যা মামলার এজাহারভুক্ত আসামিকে গ্রেপ্তার করতে উত্তরা পশ্চিম থানার এসআই  আবু সাঈদ ও ছাত্র প্রতিনিধি ১৫ নং বাসাটিতে ঢুকতে চাইলে প্রশাসনের লোক পরিচয় দিয়ে এক ব্যাক্তি সকলকে আধা ঘণ্টা গেইটের বাইরে দাঁড় করিয়ে রাখে। পরে ওই আসামি অন্য ফ্ল্যাটে পালানোর পর পুলিশকে ঢুকতে দেয়। পরবর্তীতে পুলিশ গিয়ে অনেক খুঁজাখুঁজি পরও  তাকে তার বাসায় পায়নি। অথচ ওই ব্যক্তিই তাদেরকে  বলেছিল, আমি তাকে (অভিযুক্ত) কল দিচ্ছি, নিচে আসার জন্য।
 
 
ছাত্র প্রতিনিধি নোমান আরো বলেন, পরবর্তীতে ঘটনাস্থলে আরও র‍্যাব ও সেনাবাহিনীসহ আশপাশের জনতা জড়ো হয়। এরপর রাত দেড়টার দিকে ওই বাড়িটি পুরো তল্লাশি চালিয়ে আওয়ামী লীগ নেতা  আব্দুস সোবাহানকে ভবনের ৫ম তলা থেকে  গ্রেপ্তার করে আইন শৃঙ্খলা বাহিনী। 
 
 
শাহিন আলমকে আটকের বিষয়ে র‍্যাব–১–এর সিপিসি–২–এর কোম্পানি কমান্ডার মেজর মুহাম্মদ আহনাফ রাসিফ বিন হালিম বলেন, প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা পরিচয়ে দাপট দেখানো এবং সরকারি কাজে বাঁধা দেওয়ার অভিযোগে সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত ল্যান্স কর্পোরাল মো. শাহিন আলমকে আটক করে যাচাই বাছাই চলছে। যাচাই বাছাই শেষে তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
 
 
উত্তরা পশ্চিম থানার অফিসার ইনচার্জ ওসি হাফিজুর রহমান বলেন, ছাত্র হত্যা মামলায় আব্দুস সোবাহানকে তার বাসা থোকে গ্রেফতার করা হয়েছে। গোপন সংবাদের মাধ্যমে  গতকাল রাতে ছাত্র- জনতার সহযোগিতায় তাকে গ্রেফতার করা হয়। তিনি আরো বলেন, আব্দুস  সোবহান উত্তরা ১৩ নং সেক্টর ইউনিট আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ছিল। এ ছাড়াও সে আওয়ামী লীগের একজন সক্রিয় কর্মী।তাকে আজ  আদালতে পাঠিয়ে  পাঁচ দিনের রিমান্ড চাওয়া হলে আদালত  তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছে।

বিভাগ : মহানগর


মন্তব্য করুন

HTML Comment Box is loading comments...

এই বিভাগের আরও

‘গাজা ও রাফা ইসরায়েলের নৃশংস গণহত্যা’র প্রতিবাদে গণসংহতি আন্দোলনের বিক্ষোভ সমাবেশ কাল
মানবাধিকার নিয়ে ইউসিবিডি আয়োজিত সেমিনারে মত প্রকাশের স্বাধীনতার ওপর গুরুত্বারোপ
সংস্কার কমিশনে ইসলামী আন্দোলনের প্রস্তাব- বাংলাদেশ জনকল্যাণ রাষ্ট্র
জমিয়াতুল মোদার্রেছীনের স্ট্যান্ডিং ও জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ড. মাওলানা এমরানুল হকের ইন্তেকালে জমিয়াত পরিবারের শোক
রামপুরাবাসিকে স্বস্তির নিঃশ্বাস দিয়েছে ট্রাফিক বিভাগ
আরও
X

আরও পড়ুন

সান্দা বিশ্বকাপে স্বর্ণপদক জিতেছেন ইরানের দারিয়াই

সান্দা বিশ্বকাপে স্বর্ণপদক জিতেছেন ইরানের দারিয়াই

সবুজ প্রবৃদ্ধির জন্য অংশগ্রহণমূলক বাণিজ্য ও কৌশলগত অংশীদারিত্বে জোর দিলেন সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান

সবুজ প্রবৃদ্ধির জন্য অংশগ্রহণমূলক বাণিজ্য ও কৌশলগত অংশীদারিত্বে জোর দিলেন সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান

ট্রাম্প প্রশাসনের বিরুদ্ধে শুল্কের মাধ্যমে শেয়ার বাজারে ‘কারসাজির’ অভিযোগ

ট্রাম্প প্রশাসনের বিরুদ্ধে শুল্কের মাধ্যমে শেয়ার বাজারে ‘কারসাজির’ অভিযোগ

ট্রাম্পের শুল্ক নীতি স্থগিতের পরে ঘুরে দাঁড়াল এশিয়ার শেয়ার বাজার

ট্রাম্পের শুল্ক নীতি স্থগিতের পরে ঘুরে দাঁড়াল এশিয়ার শেয়ার বাজার

বিদ্যমান বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক আরও জোরদার করতে চায় ঢাকা-মস্কো

বিদ্যমান বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক আরও জোরদার করতে চায় ঢাকা-মস্কো

ইসরাইলী বর্বরতার বিরেদ্ধে বরিশালে বিএনপি’র বিক্ষোভ

ইসরাইলী বর্বরতার বিরেদ্ধে বরিশালে বিএনপি’র বিক্ষোভ

‘গাজা ও রাফা ইসরায়েলের নৃশংস গণহত্যা’র প্রতিবাদে গণসংহতি আন্দোলনের বিক্ষোভ সমাবেশ কাল

‘গাজা ও রাফা ইসরায়েলের নৃশংস গণহত্যা’র প্রতিবাদে গণসংহতি আন্দোলনের বিক্ষোভ সমাবেশ কাল

পোল্যান্ডে বাংলাদেশের দূত সাবেক আইজিপি ময়নুল ইসলাম

পোল্যান্ডে বাংলাদেশের দূত সাবেক আইজিপি ময়নুল ইসলাম

নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জে যুবলীগ নেতাসহ গ্রেফতার ৮

নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জে যুবলীগ নেতাসহ গ্রেফতার ৮

মানবাধিকার নিয়ে ইউসিবিডি আয়োজিত সেমিনারে মত প্রকাশের স্বাধীনতার ওপর গুরুত্বারোপ

মানবাধিকার নিয়ে ইউসিবিডি আয়োজিত সেমিনারে মত প্রকাশের স্বাধীনতার ওপর গুরুত্বারোপ

ইসরাইলি নৃশংস গণহত্যার  প্রতিবাদে গাজীপুরে বিএনপির বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ

ইসরাইলি নৃশংস গণহত্যার  প্রতিবাদে গাজীপুরে বিএনপির বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ

ফিলিস্তিনি মুসলমানদের হত্যাকাণ্ডের বিরুদ্ধে যারা রুখে দাঁড়াচ্ছে না, তাদের ধ্বংস অনিবার্য : মির্জা আব্বাস

ফিলিস্তিনি মুসলমানদের হত্যাকাণ্ডের বিরুদ্ধে যারা রুখে দাঁড়াচ্ছে না, তাদের ধ্বংস অনিবার্য : মির্জা আব্বাস

বোয়ালমারীতে প্রতিপক্ষের হামলায় আহত দেলোয়ার হোসেন মারা গেছেন

বোয়ালমারীতে প্রতিপক্ষের হামলায় আহত দেলোয়ার হোসেন মারা গেছেন

ট্রান্সশিপমেন্ট বাতিল হলেও স্বাভাবিক বাংলাবান্ধা, নেপালে গেল ১৪৭ টন আলু

ট্রান্সশিপমেন্ট বাতিল হলেও স্বাভাবিক বাংলাবান্ধা, নেপালে গেল ১৪৭ টন আলু

‘এনসিপি বাংলাদেশকে বিনিয়োগের স্বর্গরাজ্য বানাতে চায়’

‘এনসিপি বাংলাদেশকে বিনিয়োগের স্বর্গরাজ্য বানাতে চায়’

সংস্কার কমিশনে ইসলামী আন্দোলনের প্রস্তাব-   বাংলাদেশ জনকল্যাণ রাষ্ট্র

সংস্কার কমিশনে ইসলামী আন্দোলনের প্রস্তাব- বাংলাদেশ জনকল্যাণ রাষ্ট্র

চা বাগানে ছিল ১৫ ফুট লম্বা অজগর, লাউয়াছড়া উদ্যানে অবমুক্ত

চা বাগানে ছিল ১৫ ফুট লম্বা অজগর, লাউয়াছড়া উদ্যানে অবমুক্ত

ট্রান্সশিপমেন্ট ইস্যুতে নিজেদের পায়ে কুড়াল মারলো ভারত! বাংলাদেশ পাল্টা যে ব্যবস্থা নিচ্ছে

ট্রান্সশিপমেন্ট ইস্যুতে নিজেদের পায়ে কুড়াল মারলো ভারত! বাংলাদেশ পাল্টা যে ব্যবস্থা নিচ্ছে

মেয়ে দেখতে এসে দেওয়া টাকা না নেওয়া প্রসঙ্গে।

মেয়ে দেখতে এসে দেওয়া টাকা না নেওয়া প্রসঙ্গে।

মুসলিম শাসকরা কি ইহুদিদের দাসে পরিণত হয়েছেন?

মুসলিম শাসকরা কি ইহুদিদের দাসে পরিণত হয়েছেন?