উদ্ধার হয়নি বাকি টাকা
১১ মার্চ ২০২৩, ১১:২৯ পিএম | আপডেট: ৩০ এপ্রিল ২০২৩, ০৩:০৮ পিএম
ডাচ-বাংলা ব্যাংকের সোয়া ১১ কোটি টাকা ডাকাতির ঘটনায় নতুন করে কাউকে গ্রেফতার বা টাকা উদ্ধার করতে পারেনি পুলিশ। ডিবি ও থানা পুলিশসহ বিভিন্ন সংস্থার কর্মকর্তারা জড়িতদের গ্রেফতার এবং লুণ্ঠিত অবশিষ্ট টাকা উদ্ধারে কাজ করছে। ডিবির একাধিক টিম অভিযানে মাঠে রয়েছে বলে ডিবি সূত্রে জানা গেছে। এদিকে ঘটনার তিনদিন পেরিয়ে গেলেও বাকি ৭ কোটি ৩৫ লাখ ৫০ হাজার টাকার হদিস পাওয়া যায়নি। লুট হওয়া বাকি টাকা কোথায় গেল। ৭২ ঘণ্টায়ও ঘটনার কুলকিনারা হয়নি। এছাড়া গাড়িটিতে সিকিউরিটি গার্ড অস্ত্র ছাড়াই কেন এতগুলো টাকা বহন করছিল তা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে।
এর আগে গত বৃহস্পতিবার সকালে রাজধানীর উত্তরা এলাকায় একটি সিকিউরিটি কোম্পানির গাড়ি থেকে ডাচ-বাংলা ব্যাংকের সোয়া ১১ কোটি টাকা ছিনতাই হয়। পরে ৩ কোটি ৮৯ লাখ ৫০ হাজার টাকা উদ্ধার করে ডিবি। এ সময় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করা হয় সাতজনকে। তবে গতকাল পর্যন্ত জড়িত অন্যান্যদের গ্রেফতার এবং টাকা উদ্ধার না হওয়ায় মানি প্ল্যান্ট সিকিউরিটি কোম্পানির কর্মকর্তারা জড়িত কিনা সেটাও সন্দেহের চোখে দেখছেন তদন্ত সংশ্লিষ্টরা। পুরো ঘটনা নিয়ে তৈরি হয়েছে রহস্য।
ডিবির একজন দায়িত্বশীল কর্মকর্তা গতকাল ইনকিলাবকে বলেন, ডাচ-বাংলা ব্যাংকের সোয়া ১১ কোটি টাকা ডাকাতির ঘটনায় জড়িতদের গ্রেফতার এবং টাকা উদ্ধারে ডিবির একাধিক টিম চিরুনী অভিযান চালাচ্ছে। দ্রুত সময়ের মধ্যেই জড়িতদের আইনের আওতায় আনা সম্ভব হবে।
ওদিকে তদন্তসংশ্লিষ্ট একটি সূত্র জানিয়েছে, ট্রাফিক পুলিশের এক সার্জেন্টের ভাইয়ের গাড়িচালকের কাছ থেকে মাইক্রোবাসটি ছিনিয়ে নিয়ে ডাচ-বাংলা ব্যাংকের টাকা লুট করে দুর্বৃত্তরা। ভাড়া নেয়ার নাম করে চালককে ডেকে নিয়ে মারধর করে হাত-পা বেঁধে গাড়ির পেছনেই ফেলে রাখা হয়। চক্রটি নতুন একটি সিমকার্ডও কিনেছিল।
তদন্তসংশ্লিষ্ট পুলিশ কর্মকর্তারা বলছেন, ডাকাতির সময় ঘটনাস্থলে ৮-১০ জন সদস্য উপস্থিত ছিল। তাদের কয়েকজনের ব্যাপারে এরই মধ্যে প্রয়োজনীয় তথ্য পাওয়া গেছে। শিগগির তাদের আইনের আওতায় আনা সম্ভব হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
তদন্ত সূত্র জানায়, ঢাকা মহানগর পুলিশের উত্তরা ট্রাফিক বিভাগের এক সার্জেন্ট তার ভাইয়ের মালিকানাধীন মাইক্রোবাসের দেখাশোনা করেন। সেটি একজন চালকের অধীনে ভাড়া দেয়া রয়েছে। ব্যাংকের টাকা লুটের আগের দিন সিলেটে যাওয়ার কথা বলে গাড়িটি ভাড়া নেয়া হয়। ঘটনার দিন সকালে চালককে কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে যেতে বলা হয়। তিনি সেখানে গাড়ি নিয়ে গেলে দুর্বৃত্তরা তাকে মারধর করে গাড়ির নিয়ন্ত্রণ নেয়। পরে তাকে বেঁধে গাড়িতে রেখেই ব্যাংকের টাকা লুট করে। পালানোর পথে তারা এক জায়গায় থেমে গাড়িতে তেল ভরে। পথের কোনো এক স্থানে তারা টাকা ভর্তি একটি ট্রাঙ্ক অন্য একটি গাড়িতে সরিয়ে নেয়।
সংশ্লিষ্ট এক পুলিশ কর্মকর্তা জানান, ঘটনার দিন মাইক্রোবাসের দেখাশোনার দায়িত্বে থাকা পুলিশ সার্জেন্ট ফোন করে চালককে পাচ্ছিলেন না। এতে তার সন্দেহ হয়, চালক গাড়ি নিয়ে পালালেন কিনা। ফলে তিনি এ বিষয়ে পুলিশের কাছে অভিযোগ করেন। পুলিশ তার খোয়া যাওয়া গাড়ি ও চালককে খুঁজছিল। এর মধ্যে ডাকাতির সময় গাড়িতে থাকা নিরাপত্তাকর্মীদের দেয়া তথ্য ও গাড়ির নম্বর অনুযায়ী, পুলিশ একটি সাদা রঙের গাড়ি শনাক্ত করে। তবে তারা সেটি দেখে জানায়, ডাকাতিতে ব্যবহৃত গাড়িটি ছিল কালো রঙের। প্রকৃতপক্ষে তাদের দেয়া নম্বরপ্লেটের একটি অঙ্ক ছিল ভুল। এ পর্যায়ে তদন্তকারীরা লক্ষ্য করেন, পুলিশ সার্জেন্টের হারানো গাড়িটির রং কালো এবং নম্বরপ্লেটের একটি অঙ্ক শুধু আলাদা। তখন তারা বুঝতে পারেন, এই গাড়িটি ডাকাতির কাজে ব্যবহার করা হয়েছে। চালকের কাছ থেকে এ ব্যাপারে বর্ণনাও পাওয়া যায়।
তদন্তসংশ্লিষ্টরা জানান, ডাকাতির ঘটনায় জড়িত চক্রটি পেশাদার অপরাধী বলে ধারণা করা হচ্ছে। তারা যে সিমকার্ড দিয়ে গাড়িচালককে কল করেছিল, সেটি সদ্য কেনা এবং মাত্র দু’টি কল করা হয়। ঘটনার পর কয়েকটি ভাগ করে বিভিন্ন স্থানে টাকা সরিয়ে ফেলা হয়। এ ঘটনার সঙ্গে টাকা বহনের দায়িত্বে থাকা প্রতিষ্ঠান মানি প্লান্ট লিংক সিকিউরিটিজ কোম্পানির কোনো কর্মীর যোগসাজশ থাকতে পারে।
মানি প্ল্যান্টের ব্যবস্থাপনা পরিচালক যশোদা জীবন দেবনাথ সাংবাদিকদের বলেন, ৩টি ট্রাংক থেকে গত বৃহস্পতিবার ৩ কোটি ৮৯ লাখ ৫০ হাজার টাকা উদ্ধার হয়েছে। বাকি টাকার এখনো সন্ধান মিলেনি। এ ঘটনায় তুরাগ থানায় মামলা হয়েছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তদন্ত করছে। আমাদের দুই গাড়িতে থাকা ৭/৮ জনকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে।
গত বৃহস্পতিবার সকালে মানি প্লান্টের একটি গাড়িতে সোয়া ১১ কোটি টাকা সাভার ইপিজেডে ডাচ-বাংলার বুথে নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল। সকাল ৭টার দিকে উত্তরা ১৬ নম্বর সেক্টরের ১১ নম্বর ব্রিজ এলাকায় একটি মাইক্রোবাস দিয়ে ব্যারিকেড সৃষ্টি করে গাড়িটি থামানো হয়। পরক্ষণে সেই মাইক্রোবাস থেকে ১০-১২ জন নেমে টাকা বহন করা গাড়ির দরজা ভেঙে ফেলে। নিরাপত্তাকর্মীদের টানাহেঁচড়া শুরু করে, চড়-থাপ্পড় দেয়। অল্প সময়ের মধ্যেই টাকাভর্তি চারটি ট্রাঙ্ক লুট করে পালিয়ে যায় ডাকাতরা। তাদের হাতে কোনো অস্ত্র ছিল না।
বিভাগ : জাতীয়
মন্তব্য করুন
আরও পড়ুন
ছাগলনাইয়া স্পোর্টস এরিনার যাত্রা শুরু
তেঁতুলিয়া সাব-রেজিস্ট্রি অফিসে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ
ফরিদপুরে সাংবাদিকের 'বাবা-মা' সহ তিনজনকে কুঁপিয়ে জখম
সেনা নয়, পিটিআই শুধুমাত্র সরকারের সাথে কথা বলছে: ব্যারিস্টার গহর
প্রায় ১৪ লাখ টন খাদ্য উদ্বৃত্ত বরিশালের দিগন্ত বিস্তৃত ফসলের মাঠে মাঠে আমন কাটার ধুম চলছে
ফেনীতে হত্যা মামলার আসামী তাঁতীলীগ নেতার বিরুদ্ধে বালু লুটের অভিযোগ
মির্জাপুর উপজেলা জামায়াতের সেক্রেটারির মায়ের ইন্তেকাল
সিরিয়ার নেতার সঙ্গে ফরাসি ও জার্মান পররাষ্ট্রমন্ত্রীর বৈঠক
মতলবে ২শতাধিক দরিদ্র ও মেধাবী শিক্ষার্থীর মাঝে মজুমদার ফাউন্ডেশনের বৃত্তি প্রদান
ভৈরবে মধু সংগ্রহে ব্যস্ত খামারি মৌয়ালরা
নোয়াখালীতে টানা ৪০ দিন জামাতে নামাজ পড়ে সাইকেল পেল ২৫ শিশু-কিশোর
আদমদীঘিতে সবজির বাজারে ধস কৃষকের কপালে পরেছে দুশ্চিন্তার ভাঁজ
সরে দাঁড়ানো মানে অবসর নয়: রোহিত
জাতীয় সমবায় ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক জসিম উদ্দিন শেখ
চট্টগ্রামে মাসব্যাপী ফুল উৎসব শুরু
স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে ১৮০ বিদেশিসহ ছয় হাজার বন্দীকে মুক্তি দিচ্ছে মিয়ানমার
শ্রীপুরে মাদক ব্যবসায়ী মায়ের সাথে জেলে গেল ৭ মাসের শিশু সাওদা
আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের মূল ভবন মঙ্গলবার উদ্বোধন করবেন প্রধান বিচারপতি
রূপপুরে ভবন থেকে লাফিয়ে রুশ নারীর মৃত্যু
সিডনিতে বোলারদের দিনে বুমরাহকে নিয়ে শঙ্কা