মিথ্যা সংবাদ প্রচারে অনলাইন পোর্টাল বন্ধ করা হবে : সংসদে তথ্যমন্ত্রী
১৫ জুন ২০২৩, ১১:৩৫ পিএম | আপডেট: ১৬ জুন ২০২৩, ১২:০৯ এএম
স্বাধীনভাবে সংবাদ প্রচারের ক্ষেত্রে বর্তমান সরকার কোনো রকম হস্তক্ষেপ করছে না বলে সংসদকে জানিয়েছেন তথ্য ও স¤প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ। একই সঙ্গে তিনি জানান, কোনো অনলাইন সংবাদপত্রে বা অনলাইনভিত্তিক পোর্টালে দেশবিরোধী সংবাদ প্রচার বা মিথ্যা ও বানোয়াট সংবাদ প্রচারের অভিযোগ পাওয়া গেলে তা বন্ধের পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
গতকাল বৃহস্পতিবার সংসদের বৈঠকে প্রশ্নোত্তরে অংশ নিয়ে তিনি একথা বলেন। এর আগে স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে সংসদের বৈঠক শুরু হলে প্রশ্নোত্তর টেবিলে উত্থাপিত হয়। আওয়ামী লীগের সদস্য আহসানুল ইসলামের (টিটু) প্রশ্নের জবাবে একথা বলেন মন্ত্রী। জাতীয় পার্টির সৈয়দ আবু হোসেনের প্রশ্নের জবাবে তথ্য ও স¤প্রচারমন্ত্রী জানান, সরকার অনুমোদিত ১৮৭টি অনলাইন নিউজ পোর্টালের মধ্যে ১৭৯টি অনলাইন নিউজপোর্টাল ১৭৭টি দৈনিক পত্রিকার অনলাইন পোর্টালের মধ্যে ১৫৫টি দৈনিক পত্রিকার অনলাইন নিউজ পোর্টাল নিবন্ধন দেওয়া হয়েছে। একই সময়ে ১৫টির মধ্যে ১৪টি টিভি চ্যানেলের অনলাইন পোর্টালকে নিবন্ধনের সনদ দেওয়া হয়েছে। একই সদস্যের প্রশ্নের জবাবে তথ্যমন্ত্রী আরও বলেন, সংবাদপত্র এবং সাংবাদিকবান্ধব বর্তমান সরকার সংবাদপত্রের স্বাধীনতা রক্ষায় খুবই আন্তরিক। প্রিন্ট মিডিয়ায় স্বাধীনভাবে সংবাদ প্রচারের ক্ষেত্রে এ সরকার কোনো রকম হস্তক্ষেপ করছে না এবং এই সেক্টরের মান উন্নয়নের লক্ষ্যে নানামুখী কার্যক্রমগ্রহণ অব্যাহত রেখেছে।
বাংলাদেশ সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্ট হতে ২০১৫-১৬ অর্থ বছর থেকে মে ২০২৩ পর্যন্ত সারা দেশে অসুস্থ, অসচ্ছল ও দুর্ঘটনায় আহত ও মৃত তিন হাজার ২৩৯ জন সাংবাদিক ও পরিবারের সদস্যদের মাঝে ২৮ কোটি ৭৪ লাখ ৫০ হাজার টাকা অনুদান প্রদান করা হয়েছে বলেও মন্ত্রী জানান। এছাড়া করোনাকালীন বিশেষ সহায়তার অংশ হিসেবে ৯ হাজার ৪৩৩ জন সাংবাদিক ও পরিবারের মাঝে ৯ কোটি ৪৩ লাখ ৩০ হাজার টাকা বিতরণ করা হয়েছে। নজরুল ইসলাম বাবুর প্রশ্নের জবাবে ড. হাছান বলেন, গণমাধ্যমবান্ধব বর্তমান সরকারের উদার স¤প্রচার নীতিমালার কারণে বেসরকারি খাতে ৪৮টি টেলিভিশন চ্যানেল, ১৪টি আইপি টিভি এবং ৩৬৭টি নিউজ পোর্টলের অনুমতি দেয়া হয়েছে।
অপর দিকে সচিবালয়ে বাংলাদেশ সংবাদপত্র পরিষদের (বিএসপি) নেতাদের সঙ্গে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে হাছান মাহমুদ বলেন, বাংলাদেশে নিউজপ্রিন্ট ব্যবসার একটা সিন্ডিকেট তৈরি হয়েছে। এই সিন্ডিকেট দাম বাড়ায় কমায়। এই সিন্ডিকেটের কারণেই সরকারের কয়েক দফা উদ্যোগের পরও খুলনা নিউজপ্রিন্ট মিল চালু করা সম্ভবপর হয়নি। আগে যখন বাংলাদেশে উৎপাদিত নিউজপ্রিন্ট দিয়ে পত্রিকা ছাপানো হতো, তখন বিজ্ঞাপন বাদে শুধু পত্রিকা বিক্রির অর্থ দিয়েই মোটামুটিভাবে পত্রিকা চালানো যেতো। কিন্তু এখন নিউজপ্রিন্টের একটা সিন্ডিকেট তৈরি হয়েছে। এটা ভাঙতে হবে। আমি এই বিষয়গুলো নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গেও কয়েক দফা আলোচনা করেছি। এ ব্যাপারে সবারই সোচ্চার হওয়া প্রয়োজন বলে আমি মনে করি। এ সময় বিএসপি সভাপতি এবং আওয়ামী লীগের উপদেষ্টামÐলীর সদস্য মোজাফফর হোসেন পল্টু এবং বিএসপির সাধারণ সম্পাদক জি এম কিবরিয়া তাদের বক্তৃতায় সংবাদপত্র পরিষদের পক্ষে নিউজপ্রিন্টের দামের অস্বাভাবিক বৃদ্ধি থেকে পরিত্রাণের ব্যবস্থা, বিগত অর্থবছরগুলোর ক্রোড়পত্রের বকেয়া বিল পরিশোধ, তথ্য মন্ত্রণালয়ের বিভিন্ন কমিটিতে বিএসপির সদস্য অন্তর্ভুক্তি, পত্রিকায় বিজ্ঞাপন প্রদান ব্যবস্থা কেন্দ্রীকরণসহ কয়েক দফা দাবি তুলে ধরেন।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, আর আপনারা জেনে খুশি হবেন, আমাদের মন্ত্রণালয়ের অব্যয়িত কয়েক কোটি টাকা আমরা চলচ্চিত্র ও প্রকাশনা অধিদপ্তরকে দেওয়ার প্রস্তাব করেছি, যাতে বকেয়া বিল পরিশোধ করতে পারে। আর দেশে যখন এক-দেড়শ’ পত্রিকা ছিলো তখন বিজ্ঞাপন কেন্দ্রীয়ভাবে ছিলো। এখন সাড়ে ১২শ’ পত্রিকা আর বিজ্ঞাপন এতো বেশি যে বাস্তবতার নিরিখে এগুলো কেন্দ্রীয়ভাবে ব্যবস্থাপনা সম্ভব নয়।
বিএনপি নেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্য নিয়ে বিএনপি মহাসচিবের বক্তব্য বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে ড. হাছান বলেন, মির্জা ফখরুল সাহেব যখন বক্তৃতা করে তখন মনে হয় ভেতরে ভেতরে উনি ‘এফআরসিএস’ পাস করেছেন, উনি এখন বিশেষজ্ঞ ডাক্তারও বটে। কারণ বিশেষজ্ঞ ডাক্তাররা বলছেন তার শারীরিক অবস্থা স্থিতিশীল, আর মির্জা ফখরুল সাহেব গলা ফাটিয়ে বলেন উনি জীবন-মরণ সন্ধিক্ষণে। এখন ডাক্তারদের কথা ঠিক না ফখরুল সাহেবের কথা ঠিক, এটাই হচ্ছে প্রশ্ন। বেগম জিয়ার স্বাস্থ্য নিয়ে বিএনপি নেতাদের বক্তব্য একজন মানুষের স্বাস্থ্যকে রাজনীতিকরণ করার উদাহরণ উল্লেখ করে হাছান মাহমুদ বলেন, তারা বেগম জিয়াকে রাজনীতির পণ্য বানিয়েছে। এটা তার জন্য প্রচন্ড অবমাননাকর। বেগম জিয়ার প্রতি যথাযথ শ্রদ্ধা এবং সম্মান রেখে আমি তাদেরকে অনুরোধ জানাবো, দয়া করে বেগম জিয়াকে বা বেগম জিয়ার স্বাস্থ্যকে রাজনৈতিক পণ্য বানাবেন না। ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, ‘মির্জা ফখরুল সাহেবসহ বিএনপি নেতারা তরুণদেরকে দেশের ইতিহাস, ঐতিহ্য, সংস্কৃতি, কৃষ্টি ধ্বংসের শিক্ষা দিচ্ছেন, অগ্নিসন্ত্রাসের শিক্ষা দিচ্ছেন।
বিভাগ : জাতীয়
মন্তব্য করুন
এই বিভাগের আরও
আরও পড়ুন
হাসিনাকে ফেরত আনতে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে চিঠি দেওয়া হয়েছে : স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা
বিডিআর বিদ্রোহের ঘটনা তদন্তে কমিশন গঠন
আসাদের পতন, নিজের বেঁচে থাকার গল্প বললেন এক সিরিয়ান শরণার্থী
গভীর রাতে শীতার্ত মানুষের পাশে বিএনপি নেতা আমিনুল হক
বঙ্গতে আসছে 'ফ্যামিলি ফিউড বাংলাদেশ'
সিলেট অনলাইন প্রেসক্লাবের অভ্যন্তরীণ ক্রীড়া প্রতিযোগিতার পুরস্কার বিতরণ সম্পন্ন
পানামা খাল দখলের হুমকি ট্রাম্পের, ভর্ৎসনা পানামার প্রেসিডেন্টের
কুমিল্লায় বীর মুক্তিযোদ্ধাকে হেনস্তার ঘটনায় প্রধান উপদেষ্টার নিন্দা
পাবনা-৩ এলাকায় অ্যাডভোকেট রবিউলের গণসংযোগ ও কম্বল বিতরণ
পান্থকুঞ্জ ও আনোয়ারা পার্ক নিয়ে নতুন করে ভাবা হচ্ছে: সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান
নারী পুলিশের দিকে তাকিয়ে আসামির হাসি, নেটদুনিয়ায় তোলপাড়
জার্মানির ক্রিসমাস মার্কেটে হামলায় ৯ বছরের শিশুর মৃত্যুতে শোকের ছায়া
স্ত্রী-কন্যাসহ সাবেক ডেপুটি গভর্নর এসকে সুরের বিরুদ্ধে দুদকের মামলা
গ্রেপ্তারের ভয়ে পোল্যান্ড সফর বাতিল করলেন নেতানিয়াহু
নাটোরে ৬ ট্রাকের সংঘর্ষে চালকসহ নিহত ২, আহত ৭
রাখাইনের অস্থিরতায় টেকনাফ স্থলবন্দরে পণ্য আমদানি কমেছে ৯০ ভাগ
ক্রিসমাস মার্কেট হামলা, জার্মান কর্তৃপক্ষের কাছে গত বছরেই এসেছিল সতর্কবার্তা
উপদেষ্টা হাসান আরিফকে বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে দাফন
ডলার বাজারে অস্থিরতা, দাম বেড়ে ১২৯ টাকা
উত্তরার বিপ্লবী জনতাকে যে কঠিন মূল্য দিতে হয়েছিল