ভোটের অধিকার প্রতিষ্ঠায় আওয়ামী লীগকে তাড়াতেই হবে
১৬ জুন ২০২৩, ১১:৪৮ পিএম | আপডেট: ১৭ জুন ২০২৩, ১২:০০ এএম
আওয়ামী লীগ সরকার তথা শেখ হাসিনার অধীনে নির্বাচন হলে জনগণ ভোটের অধিকার ফিরে পাবে না মন্তব্য করেছেন প্রখ্যাত বামপন্থী রাজনীতিক, গবেষক বদরুদ্দীন উমর। তিনি বলেছেন, এখনো আওয়ামী লীগের অধীন নির্বাচন হলে যেভাবে আমলা-পুলিশের ওপর তাদের নিয়ন্ত্রণ রয়েছে, এতে কোনোভাবেই নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে হবে না। আওয়ামী লীগকে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা থেকে তাড়াতে হবে। বিএনপি বলছে, আওয়ামী লীগের অধীন নির্বাচনে যাব না। বিএনপিকে বলতে হবে, পাতানো নির্বাচন করতে দেব না। ‘গণতন্ত্রের সংগ্রাম ও সংবাদপত্র’ শীর্ষক এক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন। গতকাল শুক্রবার জাতীয় প্রেসক্লাবে এই সভার আয়োজন করে গণসংস্কৃতি ফ্রন্ট।
বদরুদ্দীন উমর বলেন, এখনো আওয়ামী লীগের অধীন নির্বাচন হলে যেভাবে আমলা-পুলিশের ওপর তাদের নিয়ন্ত্রণ রয়েছে, এতে কোনোভাবেই এখানে নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে হবে না। নিজেদের ইচ্ছামতো তারা মাঠ সাজিয়েছেন। তাদের (আওয়ামী লীগ) ক্ষমতা থেকে যেতে হবে, তাদের তাড়াতে হবে। তাদের অধীন কোনো নির্বাচন করা যাবে না। তাদের অধীনে ভোট হলে জনগণ ভোটের অধিকার ফিরে পাবে না।
আওয়ামী লীগের অধীন নির্বাচনে যাবে না বিএনপি এবং তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীন নির্বাচন করতে হবে বিএনপির এই দাবি যথার্থ বলে মনে করেন বদরুদ্দীন উমর। তিনি বলেন, বিএনপি নির্বাচন করবো না, এটা বলছে। নির্বাচন করতে দেওয়া হবে না, এ কথা বলছে না। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে ছাড়া আওয়ামী লীগের অধীনে নির্বাচন করতে দেওয়া হবে না, এই আওয়াজ তুলতে হবে। বলতে হবে যে আওয়ামী লীগের অধীনে কোনো নির্বাচন করতে দেব না। নির্বাচনের আগে থেকে আওয়াজ তুলব, জনগণকে সংগঠিত করবো এবং জনগণ নিয়ে সব নির্বাচনী কেন্দ্র ঘেরাও করবো, নির্বাচন হতে দেব না। এভাবে বলতে হবে। না হলে নির্বাচন করবো না বলে বসে থাকলে আওয়ামী লীগ আগের মতোই নির্বাচন করে বসে যাবে।
‘আওয়ামী লীগ বলছে, বিরোধীরা নির্বাচন বানচাল করতে চায়’ উল্লেখ করে বদরুদ্দীন উমর বলেন, অবশ্যই নির্বাচন বানচাল করতে হবে। তোমরা নির্বাচন বানচাল করোনি ১৯৯৬ সালে? তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবিতে তোমরা তো আন্দোলন করেছিলে। এমন আন্দোলন হলো যে সেখানে শুধু নির্বাচন বাতিল হলো তা-ই না, বিএনপির মন্ত্রিসভার সবাইকে পদত্যাগ করতে হলো। তারপর তত্ত্বাবধায়ক সরকার হলো। এখনো তা-ই করতে হবে। এখন আর তোমাদের পাতানো নির্বাচন করতে দেয়া হবে না।
বিএনপি নেতাকর্মীদের দমনের মতোই সংবাদপত্র দমন করা হচ্ছে বলেও মনে করেন বদরুদ্দীন উমর। তিনি বলেন, শুধু সংবাদপত্র নয়, এ সরকার টিকে থাকতে সবকিছুই দমন করা হচ্ছে। পরস্পরের সঙ্গে সব কটিই যুক্ত। আজকে সংবাদপত্রের স্বাধীনতা রক্ষার যে আন্দোলন, তা জনগণের মতপ্রকাশের স্বাধীনতার সংগ্রামের সঙ্গে যুক্ত, তার থেকে আলাদা করা যাবে না। সবাইকে এক সঙ্গে নামতে হবে। আওয়ামী লীগ রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা ব্যবহার করছে নিজেদের ইচ্ছামতো। গত এক দশক থেকে সামগ্রিকভাবে জনগণের ওপর যে আক্রমণ হচ্ছে, এর বিরুদ্ধে যদি লড়াই না করা যায়, এই পুরো পরিস্থিতি যদি বোঝা না যায়, তা হলে এই সংগ্রাম করে লাভ হবে না।
বদরুদ্দীন ওমর বলেন, বর্তমানে আইনের কাঠামোর মধ্যেই খুন-অপকর্ম হচ্ছে। সাগর-রুনি হত্যাকা-ের ১০ বছরের বেশি হয়ে গেছে। র্যাব এতদিনেও আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করতে পারেনি। কারা খুন করেছে সবাই জানে। এ নিয়ে সাংবাদিকদের মধ্যেও সামান্য চাঞ্চল্য দেখা গেলেও কোন প্রতিবাদ দেখা গেলো না।
আওয়ামীলীগ নির্বাচন ও গণতন্ত্রকে শেষ করে দিয়েছে মন্তব্য করে প্রখ্যাত এই লেখক বলেন, ২০১৪ সালে নির্বাচনের আগেই ১৫৩ জন নির্বাচিত হয়ে গেলো। ২০১৮ সালের নির্বাচনের আগে প্রধানমন্ত্রীর অফিসে মিটিং ডাকা হলো। সব ডিসি এসপি ছিলে সেই মিটিংয়ে। সেই মিটিংয়ে এইচ টি ইমামও ছিলেন। তিনি ডিসি এসপিদের কাছে জানতে চাইলেন, নির্বাচন হলে কী হবে? তখন ডিসি- এসপিরা বললেন, আওয়ামী লীগ ৩০টা সিটও পাবে না। তখন ইমাম সাহেব বললেন, আপনাদের ধারনা ঠিক, বলুন ২৫০টা সিট পেতে হলে কী করতে হবে? পরে যা করার তাই হয়েছে। সেটা এদেশের জনগণ জানেন।
যুক্তরাষ্ট্রের ভিসানীতি প্রসঙ্গে বদরুদ্দীন ওমর বলেন, এখন দেশে মিছিল মিটিং করতে পুলিশের অনুমতি লাগবে। সভা সমাবেশ করতে দিচ্ছে না। এই অবস্থায় আমেরিকা বলছে ভিসা দেবে না। এ কথা বলার জোর হলো এই দেশের চোর-দুর্নীতিবাজ সবাই আমেরিকায় আছে। তাদের যেতে হবে। তাই আমেরিকা এই ভিসা নীতি দিতে পারছে। ফলে চোরেরা ভয় পেয়ে গেছে।
বদরুদ্দীন ওমর বলেছেন, এখন যারা (আওয়ামী লীগ) ক্ষমতায় আছে তারা নিজেরা কিছু করে না। আমলাদের মাধ্যমে চুরি দুর্নীতি করছে। ফলে তাদের ধরার কোনো উপায় নেই। উদাহরণস্বরূপ বলা যায়, ওয়াসার এমডির কথা। তার বিরুদ্ধে অনেকদিন ধরে খবরের কাগজে লেখালেখি হচ্ছে। কিন্তু তার কিছুই হয় না। ওয়াসার এমডির চুরি, দুর্নীতির ভাগ আওয়ামী লীগের নেতারাও পাচ্ছেন। শুধু ওয়াসার এমডি নন, হাজার হাজার আমলাদের মাধ্যমে আওয়ামী লীগ এ রকম লুটপাট করছে।
গণসংস্কৃতি ফ্রন্টের সমন্বয়ক ইফতেখার আহমেদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন বাংলাদেশ লেখক শিবিরের সভাপতি হাসিবুর রহমান। এ সময় অন্যান্যের মধ্যে বক্তৃতা করেন অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী, সাংবাদিক সোহরাব হাসান, নিউ এজের সম্পাদক নূরুল কবীর।
বিভাগ : জাতীয়
মন্তব্য করুন
আরও পড়ুন
প্রোটিয়াদের হোয়াইট ওয়াশ করে পাকিস্তানের ইতিহাস
৯ গোলের উৎসবে লিভারপুলের বড় জয়
বড়দিনের ছুটির আগে রিয়ালের বড় জয়
ঘরের মাঠেই বিধ্বস্ত ইউনাইটেড
গোলশূন্য ড্রয়ে থামল চেলসির জয়রথ
এনার্জিপ্যাকের বার্ষিক সাধারণ সভায় ব্যবসায়িক প্রবৃদ্ধির সম্ভাবনার ওপর গুরুত্বারোপ
আমার খাবার কি ফর্টিফায়েড?
হাসিনা পরিবারের নামে ১৩ বিশ্ববিদ্যালয়, ইউজিসি তাকিয়ে আছে সরকারের দিকে
ব্র্যাক ব্যাংকের রেমিটেন্স অ্যাওয়ার্ড অর্জন
দিনাজপুর জেলা শিক্ষা অফিসারের বিদায়ী সংবর্ধনা
নরসিংদীর শিবপুরে প্লাস্টিক কারখানা আগুনে পুড়ে ছাই
ডিসেম্বরে রেমিট্যান্স শূন্য যে ১০ ব্যাংকে
বিএনপি নির্বাচন ছাড়া ক্ষমতায় আসতে চায় না: আব্দুস সালাম
সরকারের আশ্বাসে শাহবাগ থেকে সরে গেলেন বিএসএমএমইউ ট্রেইনি চিকিৎসকরা
সাকাকে হারিয়ে চিন্তিত আর্সেনাল কোচ
৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কারের প্রস্তাব জমা হবে : বদিউল আলম মজুমদার
সিনিয়র সচিব ড. নাসিমুল গনিকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বদলী
মানিকগঞ্জের ঘিওরে ছাত্রদল নেতা লাভলু হত্যাকারীদের ফাঁসির দাবিতে মানববন্ধন
বঙ্গবাজার পুড়ে যাওয়া মামলায় একজন গ্রেফতার
জনগণের প্রত্যাশা পূরণে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ধীর গতিতে চলছে: আমিনুল হক