যবিপ্রবিতে শিক্ষার্থীদের আন্দোলন বিক্ষোভ অব্যাহত

Daily Inqilab যশোর ব্যুরো

১৮ জুন ২০২৩, ১০:৫৮ পিএম | আপডেট: ১৯ জুন ২০২৩, ১২:০১ এএম

লিফটে আটকে থাকা লিফট দ্রুত স্থাপন, দুর্নীতিগ্রস্ত শিক্ষক-কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণসহ ১২ দফা দাবিতে যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (যবিপ্রবি) বিক্ষোভ কর্মসূচি অব্যাহত রয়েছে। গতকাল রোববার সকাল থেকে শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের সামনে অবস্থান নিয়ে এই কর্মসূচি পালন করছেন। এর আগে শনিবার দুপুর থেকে বিকেল পর্যন্ত পাঁচঘণ্টা ভিসি প্রফেসর ড. আনোয়ার হোসেনকে অবরুদ্ধ করে রাখেন সাধারণ শিক্ষার্থীরা। পরে যবিপ্রবি ছাত্রলীগও এই আন্দোলন কর্মসূচিতে যোগ দেয়।
যবিপ্রবি শিক্ষার্থীরা জানান, লিফটে আটকে থাকা লিফট দ্রুত স্থাপন, দুর্নীতিগ্রস্ত শিক্ষক-কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ, সেমিস্টার ফি কমানো, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ছবি বিকৃতি মামলায় চূড়ান্ত অভিযুক্তদের বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অব্যাহতিসহ ১২ দফা দাবিতে শনিবার দুপুর ১২টার দিকে তারা বিক্ষোভ প্রদর্শন করেন। এ সময় যবিপ্রবি ছাত্রলীগও আন্দোলনে এসে যুক্ত হয়। বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা যবিপ্রবি ভিসির কার্যালয়ের বিদুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে ভিসি অধ্যাপক ড. মো. আনোয়ার হোসেনকে প্রায় ৫ ঘণ্টা অবরুদ্ধ করে রাখে। পরবর্তীতে আন্দোলনকারীরা ভিসির কার্যালয়ের সামনে অবস্থান নেন। শনিবার বিকেল ৫টা পর্যন্ত অবস্থান বিক্ষোভ কর্মসূচি চালিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে কোন সমাধান মেলেনি। এজন্য রোববার সকাল থেকে আবারও বিক্ষোভ শুরু করেন শিক্ষার্থীরা। তারা বলছেন, দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত তাদের আন্দোলন চলবে।
শিক্ষার্থীদের ১২ দফা দাবিগুলোর মধ্যে রয়েছে- শিক্ষার্থীদের ক্লাস পরীক্ষার সুবিধার্থে অনতিবিলম্বে স্যার জগদীশ চন্দ্র বসু একাডেমিক দশতলা ভবনের লিফট লাগনো, বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যালেন্ডারে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছবি বিকৃত মামলায় অভিযুক্তদের চূড়ান্ত রায় না হওয়া পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রবেশ নিষিদ্ধ করা, সুষ্ঠু তদন্ত ব্যতীত কোনো শিক্ষার্থীর উপর শাস্তি আরোপ বা সরাসরি বহিষ্কার না করা ও বহিষ্কৃত সকল শিক্ষার্থী উপর আরোপিত বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার, বিশ্ববিদ্যায়ের যেসকল উন্নয়নমূলক কাজে দুর্নীতি রিপোর্ট এসেছে তা তদন্তে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উচ্চতর তদন্ত কমিটি গঠন, দুর্নীতির দায়ে অভিযুক্ত ও দুর্নীতি দমন কমিশনে তদন্তাধীন সকল শিক্ষক, কমকর্তা ও কর্মচারীকে সাময়িক বহিষ্কার এবং তদন্ত শেষ না হওয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রবেশ নিষিদ্ধ করা, ফায়ার ফাইটার স্থাপনের কাজ দ্রুত শেষ করা এবং উক্ত কাজে আর্থিক লেনদেনের দুর্নীতির অভিযোগ খতিয়ে দেখা। এছাড়াও সেমিস্টার ফি কমানো, প্রথমবার রিকেট (অকৃতকার্য) ফি মওকুফ এবং দ্বিতীয় রিটেক (অকৃতকার্য) ফি প্রতি ক্রেডিট বাবদ সর্বোচ্চ ২৫ টাকা নির্ধারণ, বিভাগ উন্নয়নের নামে অবৈধ টাকা নেওয়া বন্ধ, শিক্ষকদের স্বেচ্ছাচারিতা বন্ধে কিউআরকোড সম্পর্কিত খাতা প্রদান ও ইমপ্রুভমেন্ট সিস্টেম চালু করার দাবি জানানো হয়।
এ প্রসঙ্গে যবিপ্রবি ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক তানভীর ফয়সাল বলেন, লিফট স্থাপনসহ ১২ দফা দাবিতে সাধারণ শিক্ষার্থীরা আন্দোলন শুরু করলে ছাত্রলীগ নেতৃবৃন্দ একাত্মতা ঘোষণা করে আন্দোলনে শামিল হন। ১২ দফা দাবি নিয়ে শনিবার ভিসির সঙ্গে দেখা করলে তিনি শিক্ষার্থীদের সাথে দুর্ব্যবহার করেছেন। এই দাবি আদায়ে প্রয়োজনে তারা বৃহত্তর আন্দোলন কর্মসূচি ঘোষণা করবেন বলে জানান।
যবিপ্রবি ছাত্রলীগের সভাপতি সোহেল রানা বলেন, ১২ দফা দাবিতে সাধারণ শিক্ষার্থীরা আন্দোলন করছে। সাধারণ শিক্ষার্থীদের যৌক্তিক দাবির সঙ্গে সংহতি প্রকাশ করেছে ছাত্রলীগ। দাবি আদায় না হওয়ায় পর্যন্ত শান্তিপূর্ণ আন্দোলন চলবে।
এ বিষয়ে যবিপ্রবি উপাচার্য ড. মো. আনোয়ার হোসেন বলেন, শিক্ষার্থীদের ১২ দফা দাবির মধ্যে যেগুলো যৌক্তিক সেগুলো মেনে নেয়া হয়েছে। আর কিছু দাবি আছে, যেগুলো আমার এখতিয়ারে নাই। আদালতে বিচারাধীন বিষয়ে আমার কোন ব্যবস্থা নেয়ার সুযোগ নেই। এ বিষয়ে কথা বলাও ঠিক না। কিছু দাবি মহামান্য রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর এখতিয়ারাধীন। সেই দাবি শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে পাঠিয়ে দেয়া হবে। আর লিফট স্থাপনের বিষয়টি টেন্ডারপ্রক্রিয়ার মধ্যে রয়েছে। লিফট বুঝে নেয়া কমিটি সেটি বুঝে নেয়ার পর স্থাপনের নির্দেশ দেয়া যেতে পারে। তার আগে কিছু করার নেই।


বিভাগ : জাতীয়


মন্তব্য করুন

HTML Comment Box is loading comments...

আরও পড়ুন

যুক্তরাষ্ট্র ও লন্ডনে ৩শ’ কোটি টাকা পাচারের অভিযোগে হাসিনা-জয়ের বিরুদ্ধে দুদকের অনুসন্ধান শুরু

যুক্তরাষ্ট্র ও লন্ডনে ৩শ’ কোটি টাকা পাচারের অভিযোগে হাসিনা-জয়ের বিরুদ্ধে দুদকের অনুসন্ধান শুরু

রাজশাহী মহানগরীতে ঘন কুয়াশা

রাজশাহী মহানগরীতে ঘন কুয়াশা

আবারও  ভানুয়াতুতে  দ্বীপপুঞ্জে ৬.২ মাত্রার ভূমিকম্প

আবারও ভানুয়াতুতে দ্বীপপুঞ্জে ৬.২ মাত্রার ভূমিকম্প

হাজীগঞ্জে ভরাট মিঠানিয়া খালের মুখ, হুমকিতে ফসলি জমি

হাজীগঞ্জে ভরাট মিঠানিয়া খালের মুখ, হুমকিতে ফসলি জমি

রাহাতের সুরের মুর্ছনায় বিমোহিত দর্শক, বাংলায় বললেন 'আমরা তোমাদের ভালোবাসি'

রাহাতের সুরের মুর্ছনায় বিমোহিত দর্শক, বাংলায় বললেন 'আমরা তোমাদের ভালোবাসি'

‘প্রশাসন ক্যাডার নিয়ে ষড়যন্ত্র চলছে’

‘প্রশাসন ক্যাডার নিয়ে ষড়যন্ত্র চলছে’

যুক্তরাজ্যে ট্রাম্পের বিশেষ দূত হিসেবে মার্ক বার্নেট নিযুক্ত

যুক্তরাজ্যে ট্রাম্পের বিশেষ দূত হিসেবে মার্ক বার্নেট নিযুক্ত

ফাইনালে ভারতের কাছে বাংলাদেশের হার

ফাইনালে ভারতের কাছে বাংলাদেশের হার

ফ্রেন্ডলি ফায়ার দুর্ঘটনায় লোহিত সাগরে মার্কিন যুদ্ধবিমান ধ্বংস

ফ্রেন্ডলি ফায়ার দুর্ঘটনায় লোহিত সাগরে মার্কিন যুদ্ধবিমান ধ্বংস

ইরানে যাত্রীবাহী বাস খাদে পড়ে নিহত ১০

ইরানে যাত্রীবাহী বাস খাদে পড়ে নিহত ১০

বর্তমানে বিশ্বের সবচেয়ে ধনী নারী কে, জানেন?

বর্তমানে বিশ্বের সবচেয়ে ধনী নারী কে, জানেন?

বাংলাদেশি রোগী পেতে সীমান্ত পর্যন্ত মেট্রো চালু করবে ভারত

বাংলাদেশি রোগী পেতে সীমান্ত পর্যন্ত মেট্রো চালু করবে ভারত

হাত ফসকে আইফোন পড়ে গেল মন্দিরের দানবাক্সে, ফেরত দিতে অস্বীকৃতি

হাত ফসকে আইফোন পড়ে গেল মন্দিরের দানবাক্সে, ফেরত দিতে অস্বীকৃতি

কুয়াশায় ঢাকা-মাওয়া এক্সপ্রেসওয়েতে একাধিক দুর্ঘটনা: নিহত ১, আহত ১৫

কুয়াশায় ঢাকা-মাওয়া এক্সপ্রেসওয়েতে একাধিক দুর্ঘটনা: নিহত ১, আহত ১৫

ঢাকার বায়ুমানে উন্নতির কোনো লক্ষণ নেই, বিপজ্জনকের কাছাকাছি

ঢাকার বায়ুমানে উন্নতির কোনো লক্ষণ নেই, বিপজ্জনকের কাছাকাছি

উগ্রবাদী সন্ত্রাসী 'সাদ' পন্থীদের কর্মকান্ডের বিরুদ্ধে সাতক্ষীরায় মানববন্ধন

উগ্রবাদী সন্ত্রাসী 'সাদ' পন্থীদের কর্মকান্ডের বিরুদ্ধে সাতক্ষীরায় মানববন্ধন

বাংলাদেশ সীমান্তে অত্যাধুনিক ড্রোন মোতায়েন ভারতের

বাংলাদেশ সীমান্তে অত্যাধুনিক ড্রোন মোতায়েন ভারতের

নরসিংদীতে দুর্বৃত্তের গুলিতে ছাত্রদলকর্মী নিহত

নরসিংদীতে দুর্বৃত্তের গুলিতে ছাত্রদলকর্মী নিহত

সিনেটে প্রার্থী হতে সরে দাঁড়ালেন লারা ট্রাম্প

সিনেটে প্রার্থী হতে সরে দাঁড়ালেন লারা ট্রাম্প

আমাদেরকে আর স্বৈরাচার হতে দিয়েন না : পার্থ

আমাদেরকে আর স্বৈরাচার হতে দিয়েন না : পার্থ