বাজারে নানা ফর্মুলা
১৮ জুন ২০২৩, ১১:৩৫ পিএম | আপডেট: ১৯ জুন ২০২৩, ১২:০০ এএম
তত্ত্বাবধায়ক সরকারের নানা তত্ত্ব এখন হাওয়ায় ভাসছে। সামনে নির্বাচনের মৌসুম। মৌসুমি ফল আম-জাম-কাঁঠালের মতোই বাজারে আসতে শুরু করেছে ‘তত্ত্বাবধায়ক সরকার’ কিংবা ‘নির্বাচনকালিন সরকার’র নানা ফর্মূলা। যদিও তত্ত্বাবধায়ক ইস্যুতে সরকারি দল বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ অবাহ্যত: ‘না’র মধ্যেই আছে। কিন্তু বিরাজমান পরিস্থিতি অনেক দূর এগিয়ে দিয়েছে বিষয়টিকে। এই ‘এগিয়ে’ আনার কাজটি শুরু হয়েছে সরকারি দলের তরফ থেকেই। সাম্প্রতিক সময়ে সরকারদলীয় নেতাদের বক্তব্য , বিবৃতি আপাত: বিচ্ছিন্ন (নাকি পরিকল্পিত) মনে হলেও পরক্ষণেই ‘ব্যক্তিগত’ বলে সেটি প্রত্যাহার করে নেয়ার মধ্য দিয়ে আলোচনার বলটি অন্তত: মাঠে গড়িয়েছে। সেই সঙ্গে দেশবাসী তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সম্ভাব্য আকার-আকৃতি-ধরণ, নেতৃত্ব নিয়ে প্রচ্ছন্ন ধারণাও পাচ্ছে। ফলে আগামি দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে করবো না-সরকারের এমন দাবির মাঝে মানুষ ‘হ্যাঁ’ এর ইঙ্গিতই খুঁজছে। বিশ্লেষকরা মনে করছেন, নির্বাচনকালিন সরকার ইস্যুর উপসংহার দৃশ্যমান হবে সর্বজনগ্রাহ্য একটি ফর্মূলার চূড়ান্ত উন্মোচনের পর।
গত ৪ জুনের ঘটনা। সরকারের প্রভাবশালী মন্ত্রী আইন,বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে থাকা আনিসুল হক খোলাসাই করলেন যে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যখন মনে করবেন তখন নির্বাচনকালিন একটি ছোট সরকার গঠন করবেন। সংসদে প্রতিনিধিত্বকারী জনপ্রতিনিধিদের নিয়ে ‘নির্বাচনকালিন সরকার’ হবে। সেটি কবে হবে-ঠিক করবেন প্রধানমন্ত্রী। যদিও পরক্ষণেই আইনমন্ত্রীকে সংশোধনী দিতে হয়েছে। সংশোধনীতে আইনমন্ত্রী আবার বলেছেন, সংবিধান অনুযায়ী ওয়েস্টমিনিস্টার স্টাইল পার্লামেন্টারি সিস্টেম অব গভর্ণমেন্টে আমাদের রাষ্ট্র পরিচালনা করা হয়। সেই ক্ষেত্রে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী যখন মনে করেন যে, তিনি একটি ছোট সরকার গঠন করতে চান বা নির্বাচনকালিন সরকার করতে চান, তখন তিনি তা করবেন। আমার মনে হয় এই ব্যাপারে কোনো অস্পষ্টতা নেই। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ইতিমধ্যে বলে দিয়েছেন, নির্বাচনকালিন সরকারে কারা কারা থাকতে পারেন, সে ব্যাপারে একটি রূপরেখা তিনি দিয়েই দিয়েছেন। মন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তা দাবি করেন, ‘শব্দ চয়নে ভুল’ করায় এই বিভ্রান্তির সৃষ্টি হয়েছে।
তবে সরকার-ঘনিষ্ট সূত্রগুলো জানাচ্ছে, এ বিষয়ে সত্যিকারার্থেই কোনো অস্পষ্টতা নেই। সরকার যা বোঝাতে চেয়েছে-আইনমন্ত্রী সেটি বুঝিয়ে দিয়েছেন। আইনমন্ত্রীর আগে গণভবনে প্রধানমন্ত্রী নিজেই সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বলেছেন, সংসদীয় দলগুলোকে নিয়ে আগামি নির্বাচনে ‘নির্বাচনকলীন সরকার’ গঠন করা যেতে পারে। যদিও ব্রিটেনের ওয়েস্ট মিনিস্টারের গণতন্ত্র অনুসরণ করে দেশে আগামি নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। তিনি বলেছেন যে, আমরা আমাদের উদারতা দেখাতে পারি যে, সংসদে যেসব দল রয়েছে তাদের সংসদ সদস্যদের মধ্য থেকে কেউ নির্বাচনকালীন সরকারে যোগদানের ইচ্ছা প্রকাশ করলে, আমরা তাদের স্বাগত জানাতে প্রস্তুত। সরকার প্রধানের এ বক্তব্য একটি ‘নির্বাচনকালিন সরকার’র প্রয়োজনীয়তাকেই নির্দেশ করে। যা কি না সরকারবিরোধী পক্ষগুলোর দাবিকৃত ‘নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকার’র প্রয়োজনীয়তাকে সরাসরি নাকচ করে দেয়া নয়। অর্থাৎ, বিষয় এসে ঠেকেছে ‘তত্ত্বাবধায়ক সরকার’ এ নয়। ঠেকেছে ‘দলীয়’ এবং ‘নির্দলীয়’ প্রশ্নে। দলীয় ‘নির্বাচনকালিন সরকার’র অধীনে নির্বাচন ‘সুষ্ঠু’ করতে চায় আওয়ামীলীগ। সরকারবিরোধী পক্ষগুলোর দাবি যে কোনো নামে নির্বাচনকালিন ‘নির্দলীয়’ সরকার গঠন। তার আগে বর্তমান সরকারকে পদত্যাগ করতে হবে। প্রধামন্ত্রীর পদ ছাড়তে হবে আওয়ামীলীগ সভাপতি শেখ হাসিনাকে। উভয়পক্ষ স্ব স্ব দাবিতে অটল থেকে নির্বাচনী মুহূর্তের দিকে এগিয়ে চলেছে সমান্তরাল রেললাইনের মতো। রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, এই চলা সমান্তরাল থাকবে না। দু’টো লাইন একটি জংশনে এসে নিশ্চয়ই মিলিত হবে। ক্রমাগত বৈদেশিক চাপের মুখে গলবে পারদও। আন্তর্জাতিক মহল গ্রহণযোগ্য, শান্তিপূর্ণ, সুষ্ঠু ও অন্তর্ভুক্তিমূলক নির্বাচন চায়। রাজপথের প্রধান দল বিএনপি নির্বাচনে না এলে সেটি অন্তর্ভুক্তিমূলক নির্বাচনের স্বীকৃতি পাবে না। আওয়ামীলীগের সিনিয়র নেতারা বলছেন, বর্তমান সঙ্কটের যেকোনো সমাধান আসতে হবে বিদ্যমান সংবিধানের আলোকেই। কিন্তু বিদ্যমান সংবিধানে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের কোনো বিধান নেই। সংবিধানের ত্রয়োদশ সংশোধনী বাতিলকরণের মধ্য দিয়ে ২০১১ সালে তত্ত্বাবধায়ক প্রথা ছেটে ফেলেন তৎকালিন প্রধান বিচারপতি এবিএম খায়রুল হক। বিচারিক প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে সংবিধান থেকে তত্ত্বাবধায়ক সরকার বিলোপ করা হলেও এটি ছিলো আওয়ামীলীগ নেতৃত্বাধীন সরকারের আকাঙ্খারই প্রতিফলন। এ কারণে সংশোধিত বর্তমান সংবিধান বর্তমান সরকারের অত্যন্ত মনপুত। তারা তত্ত্বাবধায়ক সরকারকে ‘মৃত ইস্যু’ বলে উল্লেখ করছে। একই কারণে এ সংবিধান পরিত্যয্য বিরোধী জোটের কাছে। তত্ত্বাবধায়ক ইস্যুতে দুই মেরুতে অবস্থানরত বিবদমান পক্ষদ্বয় দেশের অনিশ্চিত ভবিষ্যৎকেই অনিবার্য করে তুলেছে। যা উদ্বেগের কারণ সৃষ্টি করেছে বাংলাদেশের উন্নয়ন অংশীদার, বিনিয়োগকারী ও উন্নয়ন সহযোগী দেশগুলোকে। এই উদ্বেগ থেকে পশ্চিমাদূতাবাসগুলো একটি গ্রহণযোগ্য ফুর্মলার জন্য কাজ করছে। বিভিন্ন মাধ্যমে বাজারে ছাড়া হচ্ছে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের নানা ফর্মূলা।
বিশ্লেষকরা মনে করছেন, প্রায় সবকিছুই ‘ঠিকঠাক’ করা আছে। নির্বাচনকালিন সরকারের যৌক্তিকতা নির্ধারণের লক্ষ্যে কিছু আইডিয়া বাজারে ছাড়া হচ্ছে। আইডিয়াগুলো আপাত: মনে হতে পারে বায়বীয়। রাজনৈতিক সব ঘটনাই ঘটছে সুনির্দিষ্ট লক্ষ্য নিয়ে । ছক এবং পরিকল্পনার আওতায়।
সম্প্রতি সুইডেনভিত্তিক একটি বাংলা অনলাইন পোর্টালে রিলিজড হয়েছে সম্ভাব্য নির্বাচনকালিন সরকারের একটি ফর্মূলা। তাতে বলা হয়, এমন একটি নিরপেক্ষ নির্বাচনকালীন সরকার ব্যবস্থা, যা কিছুটা আনকোরা হলেও সংবিধান-সম্মত। এই ব্যবস্থায় একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচন আয়োজনে বিএনপির দাবি যেমন পূরণ হবে, তেমনি ওয়ান-ইলেভেন’র মতো একটি দুর্বৃত্ত সরকার আসার বিষয়ে আওয়ামী লীগের যে আশঙ্কা, সেটিও দূরীভূত হবে। এই ফুর্মলায় প্রধানমন্ত্রী নয়-প্রেসিডেন্টকে রাষ্ট্রের প্রধান নির্বাহী গণ্য করা হবে। বর্তমান সংবিধানে প্রেসিডেন্ট’র পদটি অলঙ্কারিক। তবে প্রেসিডেন্টের নামেই নির্বাহী বিভাগের সব সিদ্ধান্ত গৃহিত হয়। সংবিানের ৫৫.৪ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী, সরকারের সকল নির্বাহী ব্যবস্থা রাষ্ট্রপতির নামে গৃহিত ইয়াছে বলিয়া প্রকাশ করা হইবে।’
এ দু’টি অনুচ্ছেদ একত্রে পড়লে এটিই দাঁড়ায় যে, নির্বাহী বিভাগের বিধিসম্মত প্রধান হলেন প্রধানমন্ত্রী। কিন্তু প্রেসিডেন্ট হরেন রাষ্ট্রের বিধিসম্মত প্রধান। প্রধানমন্ত্রীর অসুস্থতা, অনুপস্থিতি বা অন্য কোনো কারণে তার কর্তব্য পালন করতে না পারেন, সেই বিষয়ে কোনো সাংবিধানিক কোনো পরিত্রাণ নেই। যার অর্থ দাঁড়ায় বাংলাদেশের সংবিধান অনুযায়ী, প্রেসিডেন্ট পদে সবসময়ই কাউকে না কাউকে অবশ্যই থাকতে হবে। কিন্তু প্রধানমন্ত্রীর পদ খালি না রাখার বিষয়ে কোনো সুস্পষ্ট সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতা নেই। নির্বাচনকালিন সরকারে প্রধানমন্ত্রী থাকার সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতা নেই। সংবিধানের ৫৬.১ অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, বাংলাদেশের একজন প্রধানমন্ত্রী থাকবেন। ৫৫.১ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী, একটি মন্ত্রীসভাও থাকবে, যার প্রধান হবেন প্রধানমন্ত্রী। একইসঙ্গে ৪৮.৩ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী, গুটিকয়েক ব্যতিক্রম ছাড়া প্রেসিডেন্টকে সকল ক্ষেত্রেই প্রধানমন্ত্রীর পরামর্শ অনুযায়ী কাজ করবেন: ‘রাষ্ট্রপতি তাঁহার [...] দায়িত্ব পালনে প্রধানমন্ত্রীর পরামর্শ অনুযায়ী কার্য করিবেন।’
৫৬.৩ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী, প্রজাতন্ত্রের রাষ্ট্রপতি অবশ্যই একজন প্রধানমন্ত্রী নিয়োগ করবেন, যিনি হবেন সংসদের একজন সদস্য, যার পেছনে সংসদের বেশির ভাগ সদস্যের সমর্থন থাকবে। কিন্তু প্রধানমন্ত্রীর পদ যদি কোনো কারণে শূন্য হয়ে যায়, সেই পদে নতুন কাউকে নিয়োগ দেয়ার বিষয়ে প্রেসিডেন্টের ওপর কোনো সময়সীমা আরোপ করা হয়নি।
ওই নিউজ পোর্টালটি দাবি করছে, বিদ্যমান সংবিধানকে অক্ষুন্ন রেখে এবং প্রধানমন্ত্রীকে বাদ দিয়ে একটি নির্বাচনকালিন নিরপেক্ষ সরকার গঠন সম্ভব। এ ক্ষেত্রে টেকনোক্র্যাট কোটায় একজন ‘নির্বাচনকালিন মন্ত্রী’ নিয়োগ করতে হবে। কিন্তু আওয়ামীলীগ এবং বিরোধীপক্ষের মধ্যে সম্পর্কটা হচ্ছে ভয়াবহ রকম অবিশ্বাসের। তাই এ ধরণের সরকার গঠনের আগে সংলাপের মাধ্যমে উভয়পক্ষকেই ঐকমত্যে পৌঁছাতে হবে। অর্থাৎ, নির্বাচনকালিন সরকারের নাগাল মিলবে আলোচনার সিঁড়ি অতিক্রমের পর। জাতিসংঘের মধ্যস্থতায় আলোচনা বা সংলাপের সম্ভাব্যতার কথা আওয়ামীলীগ নেতৃত্বাধীন ১৪ দলের সমন্বয়ক আমির হোসেন আমুর কণ্ঠে নি:সৃত হয়েছে। এ বিষয়ে বিএনপি’র প্রতিক্রিয়া বোঝার জন্যই তাকে দিয়ে কথাটি বাজারে ছাড়া হয়। বিএনপির বিরূপ প্রতিক্রিয়ার প্রেক্ষিতে কথাটি পরে তুলে নেয়া হয়।
অবশ্য সুইডেনভিত্তিক এই পোর্টালে আগেই দেশের প্রথিতযশা সংবিধান বিশেষজ্ঞ ব্যারিস্টার এম.আমীর-উল-ইসলাম সংবিধানের মধ্যে থেকেই তত্ত্বাবধায়ক সরকার পুন:জীবনের সম্ভাব্যতার কথা বলেছেন। তবে এই বক্তব্যের পর তাঁকে আর এ বিষয়ে কথা বাড়াতে দেয়া হয়নি।
জাতিরজনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের মন্ত্রীসভার অন্যতম সদস্য ব্যারিস্টার এম.আমীর উল-ইসলাম নিজেই এক সময় তত্ত্বাবধায়ক সরকার প্রতিষ্ঠার আন্দোলনে সম্পৃক্ত ছিলেন। এমনকি সংবিধানের ত্রয়োদশ সংশোধনী মামলায় অ্যামিকাস কিউরি (আদালত সহায়ক বিশেষজ্ঞ আইনজীবী) হিসেবেও তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা সংবিধানে রাখার পক্ষে মতামত দেন। সেই তিনি এখন বলেছেন, সংবিধানের ত্রয়োদশ সংশোধনী মামলায় অ্যামিকাস কিউরিগণ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের পক্ষে যে মতামত দিয়েছিলেন সেটিকে পুন:জীবীত করা দরকার। সেটি ‘রিভাইব’ করে একটি তত্ত্বাবধায়ক সরকার করা যেতে পারে। দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনকে তিনি ‘প্রশ্নবোধক’ আখ্যা দেন।
‘সংবিধানের ত্রয়োদশ সংশোধনী বাতিল আদেশের মাধ্যমে তত্ত্বাবধায়ক সরকার পদ্ধতি বাতিল করা হয়েছে। তাহলে কিভাবে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ফিরিয়ে আনা যাবে ?’ এমন প্রশ্নের জবাবে ব্যারিস্টার এম.আমীর উল ইসলাম বলেন, তত্ত্বাবধায়ক সরকার করতে হলে এর একটি ফ্রেম ওয়ার্ক থাকতে হবে। সেটিতো আমাদের নেই। সাধারণ মানুষ এটিকে (তত্ত্বাবধায়ক সরকার) অভিনন্দন জানিয়েছিলো। পরবর্তী পর্যায়ে এটি (তত্ত্বাবধায়ক সরকার) আর সেভাবে চলেনি। সে জন্য এখন আমাদের ওই সময়কার যে অ্যামিকাস কিউরি হিসেবে যে মতামত দিয়েছিলেন সেগুলোকে রিভাইব করা দরকার। সেটি করে একটি কেয়ারটেকার সরকার করা যেতে পারে। সেটি করলে জনগণের জন্য একটি সুষ্ঠু নির্বাচন হতে পারে। ‘দলীয় সরকারের অধীনে বাংলাদেশে কি একটি সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব কিনা’-প্রশ্নে তিনি বলেন, (নির্বাচন) প্রশ্নবোধক থেকে যায়। এটি সম্ভব-অসম্ভবের বিষয় নয়। প্রশ্ন থাকতে পারে। জনগণ যদি একটি পাবলিক ওপেনিয়ন সৃষ্টি করে এর (তত্ত্বাবধায়ক সরকার) পক্ষে তাহলে পরে এটি নিয়ে আলোচনার সুযোগ, সম্ভব হতে পারে। যদি ভোট চুরি করে, এটি অপরাধমূলক। দলীয় সরকারের বিষয় থাকাতে নির্বাচনটা সেভাবে স্বচ্ছ নাও হতে পারে। এখানে যারা সাধারণ, ভোটদাতা, যারা ভোট দেবেন তাদের সম্পর্কে একটি জরিপ করা যায় কি না। মানুষের জরিপ বা ওপেনিয়নটা দরকার। ‘সংবিধানের আলোকে কি কোনো সমাধান আছে?’ জানতে চাইলে তিনি বলেন, জরিপটা করা দরকার। ভোটাররা কি চাইছে সেটির একটি জরিপ করা দরকার। জরিপের জন্য একটি টিম করার দরকার।
প্রসঙ্গত: সংবিধানের ত্রয়োদশ সংশোধনী বাতিল করেছে ২০১১ সালের ১০ মে রায় দেন সুপ্রিমকোর্ট। এর ফলে তত্ত্বাবাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিল হয়ে যায়। তৎকালিন প্রধান বিচারপতি এবিএম খায়ররুল হকের নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগীয় বেঞ্চ এ রায় দেন। সংক্ষিপ্ত মৌখিক রায়ে আদালত তখন তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিল করলেও তত্ত্ব্বাবধায়ক সরকারের অধীনে আরও অন্তত: ২টি সংসদ নির্বাচন হতে পারে-মর্মে উল্লেখ করা হয়। সে সময়কার বিদায়ী প্রধান বিচারপতি (এবিএম খায়রুল হক) এবং আপিল বিভাগের বিচারপতিদের বাদ রেখে সংসদ এ সরকার পদ্ধতি সংস্কার করতে পারে-মর্মে অভিমত দেন আদালত। প্রধান বিচারপতি এবিএম, খায়রুল হকের নেতৃত্বে আপিল বিভাগের ৬ বিচারপতির বেঞ্চ আলোচিত এ রায় দেন। বেঞ্চে সংখ্যাগরিষ্ঠ বিচারপতির মতামতের ভিত্তিতে এই রায় দেয়া হয়েছে-মর্মে জানান সংশ্লিষ্ট আইনজীবীরা।
বিভাগ : জাতীয়
মন্তব্য করুন
এই বিভাগের আরও
আরও পড়ুন
যুক্তরাষ্ট্র ও লন্ডনে ৩শ’ কোটি টাকা পাচারের অভিযোগে হাসিনা-জয়ের বিরুদ্ধে দুদকের অনুসন্ধান শুরু
রাজশাহী মহানগরীতে ঘন কুয়াশা
আবারও ভানুয়াতুতে দ্বীপপুঞ্জে ৬.২ মাত্রার ভূমিকম্প
হাজীগঞ্জে ভরাট মিঠানিয়া খালের মুখ, হুমকিতে ফসলি জমি
রাহাতের সুরের মুর্ছনায় বিমোহিত দর্শক, বাংলায় বললেন 'আমরা তোমাদের ভালোবাসি'
‘প্রশাসন ক্যাডার নিয়ে ষড়যন্ত্র চলছে’
যুক্তরাজ্যে ট্রাম্পের বিশেষ দূত হিসেবে মার্ক বার্নেট নিযুক্ত
ফাইনালে ভারতের কাছে বাংলাদেশের হার
ফ্রেন্ডলি ফায়ার দুর্ঘটনায় লোহিত সাগরে মার্কিন যুদ্ধবিমান ধ্বংস
ইরানে যাত্রীবাহী বাস খাদে পড়ে নিহত ১০
বর্তমানে বিশ্বের সবচেয়ে ধনী নারী কে, জানেন?
বাংলাদেশি রোগী পেতে সীমান্ত পর্যন্ত মেট্রো চালু করবে ভারত
হাত ফসকে আইফোন পড়ে গেল মন্দিরের দানবাক্সে, ফেরত দিতে অস্বীকৃতি
কুয়াশায় ঢাকা-মাওয়া এক্সপ্রেসওয়েতে একাধিক দুর্ঘটনা: নিহত ১, আহত ১৫
ঢাকার বায়ুমানে উন্নতির কোনো লক্ষণ নেই, বিপজ্জনকের কাছাকাছি
উগ্রবাদী সন্ত্রাসী 'সাদ' পন্থীদের কর্মকান্ডের বিরুদ্ধে সাতক্ষীরায় মানববন্ধন
বাংলাদেশ সীমান্তে অত্যাধুনিক ড্রোন মোতায়েন ভারতের
নরসিংদীতে দুর্বৃত্তের গুলিতে ছাত্রদলকর্মী নিহত
সিনেটে প্রার্থী হতে সরে দাঁড়ালেন লারা ট্রাম্প
আমাদেরকে আর স্বৈরাচার হতে দিয়েন না : পার্থ