কৃষিজাত পণ্যের বাজার খুঁজতে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ
১৯ জুন ২০২৩, ১১:৩৩ পিএম | আপডেট: ২০ জুন ২০২৩, ১২:০০ এএম
কৃষিজাত পণ্যের জন্য বহির্বিশ্বে বাজার খুঁজতে নির্দেশনা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। গতকাল সোমবার মন্ত্রিসভার বৈঠকে তিনি এ নির্দেশনা দিয়েছেন। এদিকে ভূমি অপরাধ প্রতিরোধ ও প্রতিকার আইন, ২০২৩’ এবং ‘বালুমহাল ও মাটি ব্যবস্থাপনা (সংশোধন) আইন, ২০২৩’ বাংলাদেশ হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসা শিক্ষা আইন, ২০২৩ এর খসড়ার চূড়ান্ত অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা। বৈঠক শেষে সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব মো. মাহবুব হোসেন সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন,মন্ত্রিসভা বৈঠকে ‘কৃষি ও খাদ্য প্রক্রিয়াজাতকরণ শিল্প উন্নয়ন নীতিমালা-২০২৩’ এর অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। আমাদের যে কৃষিজাত পণ্য উৎপন্ন হয়, সেটার জন্য বহির্বিশ্বের বাজার খুঁজতে নির্দেশনা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। ইসলামি সহযোগিতা সংস্থার (ওআইসি) দেশগুলোতে যেখানে আমাদের দেশের মানুষ আছেন, তাদের মধ্যেও বাংলাদেশি পণ্য কেনার আগ্রহ দেখা দিয়েছে। বিশেষ করে ফল-শাক-সবজি কিনতে তারা আগ্রহী। সে জন্য এসব দেশগুলোতে বেশি নজর দিতে বলা হয়েছে। তিনি বলেন, ওআইসিভুক্ত দেশগুলোতে আমাদের কৃষিজাত পণ্য রপ্তানিতে সংশ্লিষ্ট সবাইকে উৎসাহ দিতে বলেছেন প্রধানমন্ত্রী। এ খাতে যাতে বেশি আলোকপাত করা হয়, তিনি সেই নির্দেশনা দিয়েছেন। সম্ভাব্য বাজার খুঁজতে নজর দিতে বলেছেন। যাতে এসব দেশ ভালো ক্রেতা হতে পারে। মাহবুব হোসেন বলেন, এ নীতিমালার আওতায় কৃষি ও খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ শিল্প উৎপাদনে সরকারের তরফ থেকে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। এ খাতে যেসব প্রণোদনা ও সহযোগিতা করা হবে, তার একটি প্রস্তাবনা বা নীতিমালা তৈরি করা হয়েছে। তিনি বলেন, আমরা কৃষি ও খাদ্যপণ্যে বিশেষ সফলতা অর্জন করেছি। এসব পণ্য প্রক্রিয়াজাত করে যারা উৎপাদনকারী তাদের সুলভমূল্য দেওয়া যাবে। নীতিমালায় বাজারজাতকরণের সুবিধা ছাড়াও রপ্তানির সুযোগ সৃষ্টি করতেও অনেকগুলো নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী আমাদের বলেছেন যে, সীমান্তবর্তী নদী দিয়ে যে বালু আসে, সেটা মোটা বালু। সেটা আসতে আসতে চিকন হয়ে যায়। সেক্ষেত্রে এসব উৎসে যদি ব্লক নির্মাণ করা যায়, তখন এ বালু বেশি কাজে লাগানো যাবে। এতে আমাদের ওপর ড্রেজিংয়ের চাপটা কমে যাবে। যা লাভজনক ও অর্থনৈতিকভাবেই সাশ্রয়ী হবে। এছাড়া ওই এলাকাগুলোতে এ জাতীয় শিল্প তৈরি করতে অনুদান ও সহযোগিতা করতে সংশ্লিষ্ট সবাইকে তিনি নির্দেশনা দিয়েছেন।
ভূমি নিয়ে প্রতারণায় ৭ বছরের জেল ॥
মন্ত্রিপরিষদ সচিব জানান, ভূমি নিয়ে প্রতারণায় সর্বোচ্চ সাত বছর ও সর্বনি¤œ দুই বছরের কারাদ-ের বিধান রেখে ‘ভূমি অপরাধ প্রতিরোধ ও প্রতিকার আইন, ২০২৩’ এর খসড়ার নীতিগত অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা। মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, খসড়া আইনে ভূমির কতগুলো অপরাধকে চিহ্নিত করা হয়েছে। সেসব অপরাধের জন্য শাস্তির বিধান রাখা হয়েছে, যাতে করে নাগরিকরা নিজ-নিজ মালিকানাধীন ভূমির নিরবচ্ছিন্ন ভোগদখল প্রাপ্য অধিকার নিশ্চিত করতে পারেন। ভূমি বিষয়ক প্রতারণা ও জালিয়াতির ক্ষেত্রগুলো সুনির্দিষ্ট করা হয়েছে এবং প্রতিরোধ, দমন ও প্রয়োজনে প্রতিকারের ব্যবস্থা করা হয়েছে। সরকারি এবং সর্বসাধারণের ব্যবহার্য ভূমি সম্পর্কিত অপরাধগুলো প্রতিরোধ ও দমনে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। ভূমি সম্পর্কিত বিরোধ আদালতের বাইরে সালিশি বৈঠকের মাধ্যমে নিষ্পত্তি করার সুযোগ আইনে রাখা হয়েছে। তিনি বলেন,অন্যের মালিকানাধীন ভূমি নিজের মালিকানাধীন ভূমি হিসেবে প্রকাশ করা, কোনো ভূমি সম্পর্কে ইচ্ছাকৃতভাবে তথ্য গোপন করে তা অন্য ব্যক্তির কাছে হস্তান্তর বা সমর্পণ, নিজ মালিকানাধীন ভূমির অতিরিক্ত ভূমি বা অন্যের মালিকানাধীন ভূমি জেনেশুনে অন্য ব্যক্তির কাছে হস্তান্তর বা সমর্পণ, কোনো ব্যক্তি অপর কোনো ব্যক্তি বলে ভান করে বা জ্ঞাতসারে এক ব্যক্তিকে অপর ব্যক্তিরূপে প্রতিস্থাপিত করে কিংবা কোনো ব্যক্তি প্রকৃতপক্ষে যে ব্যক্তি সেই ব্যক্তি থেকে ভিন্ন কোনো ব্যক্তি বলে পরিচয় দিয়ে সম্পত্তি হস্তান্তর বা সমর্পণ- এসব কাজ করলে সাত বছর কারাদ- হতে পারে। জালিয়াতি সংক্রান্ত বিষয়ে বলা আছে, কোনো ব্যক্তির ক্ষতি বা অনিষ্টসাধন করার বা অন্য কোনো দাবি বা অধিকার সমর্থন করার বা অন্য কোনো ব্যক্তিকে কোনো সম্পত্তি পরিত্যাগ করতে বা চুক্তি সম্পাদন করতে বাধ্য করার ইচ্ছায় কিংবা প্রতারণা করা যেতে পারে এরকম মিথ্যা দলিল বা কোনো মিথ্যা দলিলের অংশবিশেষ প্রস্তুতকরণ, কোনো দলিল সম্পাদিত হওয়ার পর আইনানুগ কর্তৃত্ব ছাড়া অসাধু বা প্রতারণামূলকভাবে কর্তন করে বা অন্য কোনোভাবে তার গুরুত্বপূর্ণ অংশ পরিবর্তন করা ইত্যাদির জন্য সর্বোচ্চ সাত বছর কারাদ- হতে পারে। এসব অপরাধে সর্বনি¤œ দুই বছর কারাদ-। ভূমি অবৈধ দখল করলে সেটা দুই বছর, সরকারি স্বার্থযুক্ত এবং জনসাধারণের ব্যবহার্য ভূমি অবৈধভাবে ভরাট, শ্রেণি পরিবর্তন ইত্যাদি করলে দুই বছর কারাদ- দেওয়ার বিধান আইনে রাখা হয়েছে।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, আইনানুগ কর্তৃপক্ষের আদেশ অমান্য করে কোনো আইন প্রয়োগে বাধা দিলে সেখানে দুই বছর, অপরাধ সংগঠন বা সহায়তা করা বা প্ররোচনা করলে তাহলে একই পরিমাণ সাজা তারা পাবেন। এই ব্যবস্থা এখানে রাখা হয়েছে। ভূমি সংক্রান্ত নানা অপরাধের ভূমি অফিসের কর্মকর্তারা জড়িত থাকে। এ বিষয়ে আইনে কিছু বলা আছে কি না- জানতে চাইলে তিনি বলেন, ওই জন্যই ওই অংশটুকু যোগ করা হয়েছে। যদি সহযোগী হিসেবে কাউকে পাওয়া যায় একই পরিমাণ শাস্তি তিনিও পাবেন। এখানে আলাদা করা হয়নি কাউকে। এখানে বলা হয়নি সরকারি কর্মকর্তা হলে তিনি শাস্তি পাবেন না। ‘বলা হচ্ছে এ কাজ যদি কারও সহযোগিতা নিয়ে করা হয় সেখানে যদি তার সম্পৃক্ততা পাওয়া যায় তাহলে তিনিও ওই একই অপরাধে দ-িত হবেন একই মাত্রায়।
বালুমহাল ও মাটি ব্যবস্থাপনা (সংশোধন) আইন॥
তিনি বলেন, বালু পরিবহনের কারণে রাস্তার বা স্থাপনার ক্ষতি হলে সেটি (ক্ষতিপূরণ) সংশ্লিষ্ট ইজারাদারকে পরিশোধ করার বিধান রেখে ‘বালুমহাল ও মাটি ব্যবস্থাপনা (সংশোধন) আইন, ২০২৩’ এর খসড়ার চূড়ান্ত অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা। মাহবুব হোসেন বলেন, বালুমহাল ও মাটি ব্যবস্থাপনায় ২০১০ সালের একটি আইন আছে। ২০১১ সালে এ সংক্রান্ত একটি বিধিমালাও করা হয়। এখন আগের আইনের কিছু সংশোধন করা হচ্ছে। যেসব এলাকা থেকে বালু বা মাটি উত্তোলন নিষিদ্ধ ছিল সেখানে ফসলি জমি অন্তর্ভুক্ত ছিল না। এখন ফসলি জমি অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব মো. মাহবুব হোসেন বলেন, কৃষি ও খাদ্য প্রক্রিয়াজাতকরণ শিল্প উন্নয়ন নীতিমালা ২০২৩’ এর অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা। তিনি বলেন, এটি এ জাতীয় প্রথম কোনো নীতিমালা। এর আওতায় কৃষি ও খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ শিল্প উৎপাদনে সরকারের তরফ থেকে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। এ খাতে যেসব প্রণোদনা ও সহযোগিতা করা হবে, তার একটি প্রস্তাবনা বা নীতিমালা তৈরি করা হয়েছে। সভায় প্রস্তাবটি তুলেছিল শিল্প মন্ত্রণালয়। মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, কৃষি ও খাদ্য-পণ্যে আমরা বিশেষ সফলতা অর্জন করেছি। এসব পণ্য প্রক্রিয়াজাত করে যারা উৎপাদনকারী তাদের সুলভমূল্য দেওয়া যাবে। বাজারজাতকরণের সুবিধা ছাড়াও রপ্তানির সুযোগ সৃষ্টি করতেও অনেকগুলো নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে এই নীতিমালায়।
তিনি বলেন, হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসা ব্যবস্থাকে শৃঙ্খলায় আনতে ‘বাংলাদেশ হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসা শিক্ষা আইন, ২০২৩› এর খসড়ার চূড়ান্ত অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা। ২০২১ সালের ৩১ মে আইনের খসড়া নীতিগত অনুমোদন দেওয়া হয়েছিল। আইন মন্ত্রণালয়ের ভেটিংয়ের পর আজকে চূড়ান্ত অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। দেশে একটি হোমিওপ্যাথিক বোর্ড আছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, সেটি প্রতিস্থাপন করে একটি কাউন্সিল গঠন করা হবে। সেই কাউন্সিল পরিচালনা পর্ষদের মাধ্যমে পরিচালিত হবে।
বিভাগ : জাতীয়
মন্তব্য করুন
এই বিভাগের আরও
আরও পড়ুন
যুক্তরাষ্ট্র ও লন্ডনে ৩শ’ কোটি টাকা পাচারের অভিযোগে হাসিনা-জয়ের বিরুদ্ধে দুদকের অনুসন্ধান শুরু
রাজশাহী মহানগরীতে ঘন কুয়াশা
আবারও ভানুয়াতুতে দ্বীপপুঞ্জে ৬.২ মাত্রার ভূমিকম্প
হাজীগঞ্জে ভরাট মিঠানিয়া খালের মুখ, হুমকিতে ফসলি জমি
রাহাতের সুরের মুর্ছনায় বিমোহিত দর্শক, বাংলায় বললেন 'আমরা তোমাদের ভালোবাসি'
‘প্রশাসন ক্যাডার নিয়ে ষড়যন্ত্র চলছে’
যুক্তরাজ্যে ট্রাম্পের বিশেষ দূত হিসেবে মার্ক বার্নেট নিযুক্ত
ফাইনালে ভারতের কাছে বাংলাদেশের হার
ফ্রেন্ডলি ফায়ার দুর্ঘটনায় লোহিত সাগরে মার্কিন যুদ্ধবিমান ধ্বংস
ইরানে যাত্রীবাহী বাস খাদে পড়ে নিহত ১০
বর্তমানে বিশ্বের সবচেয়ে ধনী নারী কে, জানেন?
বাংলাদেশি রোগী পেতে সীমান্ত পর্যন্ত মেট্রো চালু করবে ভারত
হাত ফসকে আইফোন পড়ে গেল মন্দিরের দানবাক্সে, ফেরত দিতে অস্বীকৃতি
কুয়াশায় ঢাকা-মাওয়া এক্সপ্রেসওয়েতে একাধিক দুর্ঘটনা: নিহত ১, আহত ১৫
ঢাকার বায়ুমানে উন্নতির কোনো লক্ষণ নেই, বিপজ্জনকের কাছাকাছি
উগ্রবাদী সন্ত্রাসী 'সাদ' পন্থীদের কর্মকান্ডের বিরুদ্ধে সাতক্ষীরায় মানববন্ধন
বাংলাদেশ সীমান্তে অত্যাধুনিক ড্রোন মোতায়েন ভারতের
নরসিংদীতে দুর্বৃত্তের গুলিতে ছাত্রদলকর্মী নিহত
সিনেটে প্রার্থী হতে সরে দাঁড়ালেন লারা ট্রাম্প
আমাদেরকে আর স্বৈরাচার হতে দিয়েন না : পার্থ