উন্নয়ন কাজে ঠিকাদারের গাফিলতি
০১ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ১১:২৩ পিএম | আপডেট: ০২ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ১২:০০ এএম
প্রতিশ্রুতি ও অপেক্ষার পালা শেষ হয়েও হলো না শেষ। ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের গাফিলতির কারণে বছরের পর বছর ঝুলে আছে উত্তরা বিমানবন্দর মহাসড়ক বিএনএস সেন্টারের সামনের মুল সড়কের ফুটওভার ব্রিজের উন্নয়ন কাজ। এমনটা জানিয়েছেন উত্তরা এলাকায় বসবাসকারী স্থানীয় বাসিন্দারা।
নিরাপদ সড়ক নিশ্চিত করতে বর্তমান সরকার বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন এলাকায় পথচারীদের চলাচলে সুবিধার্থে সড়কে ফুটওভারব্রিজ স্থাপন করেছেন। এ কাজের দায়িত্বে রয়েছে সড়কও জনপদ এবং সিটি করপোরেশন কর্তৃপক্ষ। প্রায় ২০৫ ফিট লম্বা এবং ১৫ ফিট চওড়া স্টিলের তৈরি ফুটওভার ব্রিজের স্ট্রাকচার পিলারে উঠলেও দীর্ঘ দুই মাসেও এটি এ পর্যন্ত পথচারীদের চলাচলের উপযোগী হয়ে উঠেনি।
গত মার্চ মাসে পিলারেই সন্তুষ্ট সিটি করপোরেশন শিরোনাম সংবাদ প্রকাশের পর তড়িগড়ি করে কর্তৃপক্ষ স্ট্রাকচারটি পিলারে স্থাপন করেন। নান্দনিক এ ব্রিজটির রয়েছে ৩টি অংশ। ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের সবচেয়ে বড় এ ব্রিজটির ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান হিসেবে কাজ করছেন মাইসা কনস্ট্রাকশন কোম্পানি।
প্রায় পাঁচ মাস যাবৎ পিলারের উপর ব্রিজের স্ট্রাকচারটি ঝুলে আছে কেন? কতদিনের মধ্যে মানুষ চলাচল করতে পারবে? এ বিষয়ে জানতে চাইলে প্রকল্প পরিচালক ফরহাদ হোসেন বলেন, আমরা চেষ্টা করছি। সেপ্টেম্বরের মধ্যে এ প্রকল্পের কাজ শেষ হবে ইনশাআল্লাহ। বেশীর ভাগ কাজ শেষ, শুধুমাত্র ব্রিজের উপরের ছাউনি লাগানো বাকী রয়েছে। এতো সময় লাগার কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন, কাজের বিভিন্ন প্রসিডিওর রয়েছে, ব্রিজ এবং সিঁড়ি ঢালাই শেষ করে ২১ দিন পর রেলিং লাগালো হয়েছে। এভাবে একটা শেষ করে আরেকটার কাজ শুরু করতে হয়েছে। ছাউনী ও রং শেষ করে এটিকে এ মাসের মধ্যেই পথচারীদের জন্য উম্মুক্ত করা হবে। তিনি আরো বলেন, আমাদের কর্মকর্তারা প্রতিদিন কাজের অগ্রগতি তদারকি করছে। ব্রিজের দুই পাশে সিঁড়ি লাগানো হয়েছে। বিভিন্ন ফিটিংস সংযুক্ত করা হয়েছে। আশা করছি এক মাসের মধ্যে সকল ফিটিংস ব্রিজে সংযুক্ত হয়ে যাবে এবং চলাচলের উপযোগী হবে।
এ বিষয়ে মাইসা কনস্ট্রাকশন কোম্পানির ইঞ্জিনিয়ার মেহেদী হাসান বলেন, ফুটওভারব্রিজের ৮০ ভাগ কাজ শেষ। এ কাজে তাদের কোন গাফিলতি নাই। আগামী সেপ্টেম্বর মাসের মধ্যে এটিকে তারা চলাচলের উপযোগী করে তুলবেন।
এই ফুটওভার ব্রিজ নিয়ে জনস্বার্থে পাঠক প্রিয় দৈনিক ইনকিলাব গত ২ মাস যাবত সিটি করপোরেশন কর্তৃপক্ষ, প্রকল্প পরিচালক, সংশ্লিষ্ট দফতরের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ও ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের সাথে কথা বলে কয়েক ধাপে বিভিন্ন শিরোনামে প্রতিবেদন প্রকাশ করার পর ১০ জুন শনিবার ভোর রাতে কর্তৃপক্ষ ব্রিজের ডেক সøাব উত্তোলন করে রাস্তায় দাঁড়িয়ে থাকা পিলারে স্থাপন করেছে।
সরেজমিনে দেখা যায়, এই ফুটওভার ব্রিজটি চালু হলে এই এলাকার লাখ লাখ মানুষ উপকৃত হবে, এরই সাথে সড়ক দুর্ঘটনা, প্রাণহানী ও জনদুর্ভোগ কমবে। গত ৮ জুন রাত ১২টা হইতে ভোর ৬টা ও ১০ জুন উত্তরা বিএনএস সেন্টার সংলগ্ন বিমানবন্দর মহাসড়কের নির্মাণাধীন ফুটওভারব্রিজের ডেক সøাব উত্তোলন করা হয়।
পথচারীরা জানান, প্রায় দেড় বছর রাস্তা দুই পাশে দাঁড়িয়ে ছিল পিলার, পুণরায় কাজ শুরু হয়েও তিন মাস যাবৎ এটি ঝুলে আছে। তারা আরো বলেন, এ প্রকল্পের ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান মাইসা কনস্ট্রাকশন কোম্পানি একটি অথর্ব প্রতিষ্ঠান। তারা মানুষের জীবন নিয়ে খেলা করছে। প্রতিদিন হাজার হাজার স্কুল, কলেজের কোমলমতি শিক্ষার্থী ও সাধারণ পথচারীরা এখানকার ফুটওভারব্রিজ দিয়ে আশা যাওয়া করতো। প্রায় দুই বছর যাবৎ জীবনের ঝুঁকি নিয়ে তাদেরকে রাস্তা পারাপার হতে হয়। স্থানীয় লোকজন, পথচারী ও ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা বলেন, এ এলাকাটি বর্তমানে মরণফাঁদে পরিনত হয়েছে। একদিকে গণপরিবহনের চাপ অপরদিকে টঙ্গী থেকে উড়ালসড়ক হয়ে আসা গাড়ির চাপে এলাকাটি বিপদজনক হয় উঠেছে।
এবিষয়ে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন ইঞ্জিনিয়ারিং ডিপার্টমেন্টের দায়িত্ব প্রাপ্ত কর্মকর্তারা উপ-সহকারী প্রকৌশলী মমিনুর জানান, অল্প কিছুদিনের মধ্যে কাজ শেষ হবে। ইতোমধ্যে ব্রিজের উঠা নামার জন্য দুইটি সিঁড়ি লাগানো হয়েছে। ব্রিজের ভিতর বাহিরের অনান্য প্রয়োজনীয় যন্ত্রাংশ সেট করা হয়েছে। এটিকে ত্রুটিমুক্ত করে নাট বল্টু চেক করে রং শেষে চলাচলের জন্য উম্মুক্ত করে দেওয়া হবে।
এদিকে উত্তরা বিএনএস সেন্টারের সামনে গুরুত্বপূর্ণ এই ফুটওভারব্রিজটি দীর্ঘদিন বন্ধ থাকায় এখানকার হাজার হাজার পথচারী, কোমলমতি শিশু শিক্ষার্থীসহ উত্তরা এলাকার ব্যবসায়ীরা নানান ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন।
বিএনএস সেন্টার দশ তলা ভবনের ব্যবসায়ীরা জানান, দীর্ঘদিন যাবত এখানকার ফুটওভার ব্রিজটি সচল না থাকায় মার্কেটে লোকজন আসতে পারে না, এর ফলে প্রতিমাসে তাদেরকে লোকসান গুণতে হচ্ছে। উত্তরার বিভিন্ন স্কুল কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রী ও অভিভাবকেরা জানান, কর্তৃপক্ষ তাদের এবং বাচ্চাদের জীবন নিয়ে খেলা করছেন। অভিবাবকেরা বাচ্চাদের নিয়ে দীর্ঘদিন যাবৎ জীবনের ঝুঁকি নিয়ে সড়কের মাঝখানে যানবাহনের সামনেই দৌড়ে দৌড়ে রাস্তা পারাপার হন। ফুটওভার ব্রিজের কার্যক্রম দেখে তারা খুশি হয়েছিল কিন্তু কাজের ধীর গতি দেখে তারা হতবাক।
গার্মেন্টস ব্যবসায়ী মো. সেলিম বলেন, ছয় মাস যাবৎ রাস্তার পাশে পড়ে ছিল ফুটওভারব্রিজের দুটি অংশবিশেষ। গত জুন মাসে সেটিকে পিলারে স্থাপন হয়েছে। কাজের গতি এতোটাই সেøা ভাবাই যায় না, তার ধারণা ঠিকাদারের কারণেই দীর্ঘদিন যাবৎ পথচারীদের এই ভোগান্তি।
বিভাগ : জাতীয়
মন্তব্য করুন
আরও পড়ুন
মিজানুর রহমান আজহারীর ব্যাখ্যা
বিতর্কিত চিন্ময় কাণ্ড: আত্মসমর্পণের পর জামিন পেলেন ৬৩ আইনজীবী
শরীয়তপুরে ১০ বছরেও নির্মাণ হয়নি আদালত ভবন
শুভেন্দুর হুঙ্কার : ‘বাংলাদেশকে জবাব দিতে পাঁচ-সাতটি ড্রোনই যথেষ্ট’
ষড়যন্ত্র ও হয়রানির বিরুদ্ধে ন্যায়বিচারের আবেদন বঞ্চিত বিধবার
মার্কিন মুদ্রার বিপরীতে ভারতীয় রুপির সর্বনিম্ন রেকর্ড
দোয়ারাবাজারে অভিযুক্ত বাঁধে বালু অপসারণ!
তালেবান শাসনকে বৈধতা না দেওয়ার আহ্বান নোবেলজয়ী মালালার
ফের সচিবালয়ের সামনে অবস্থান অব্যাহতি পাওয়া এসআইদের
ঢাকার বাইরে প্রথম নরসিংদীতে রয়েল এনফিল্ড লঞ্চ
ধর্মীয় শিক্ষার মাধ্যমেই দেশ ও জাতির কল্যাণ সাধিত করা সম্ভব
অন্তর্বর্তী সরকার নিয়ে বিতর্ক থাকতে পারে না : হাইকোর্ট
বিদ্যুৎ প্লান্টের পাঁচ লাখ টাকার লোহা তামা স্টিল সামগ্রী চুরির দায়ে ৫০ জনের নামে মামলা
নেত্রকোনা গত ১ বছরে ২৩২টি অস্বাভাবিক মৃত্যু
মেহেরপুর শহরে অবৈধ গাড়ির দৌরাত্ম ফুটপথ দখল, সরু সড়ক, যানজট লেগেই থাকে
অ্যাপলের ডাইভার্সিটি নীতি , বৈচিত্র্য রক্ষার লড়াইয়ে বোর্ডের বার্তা
ঢাবি,ভিকি,এনএসইউ ওয়েটিং লিস্টে থাকে,বান্নাহ খাওয়া মাল খায় না'
দ্রুত জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ব্যবস্থা না করলে আন্দোলনে নামার ঘোষণা কর্নেল অলির
আশুলিয়া থানা জমিয়তের কমিটি গঠন
বাংলাদেশের সীমান্তে ১৬০ জায়গায় কাটাতারের বেড়া দিয়েছে ভারত : রিজভী