মহাজগতে বাড়ছে প্রকাণ্ড কৃষ্ণগহ্বরের সংখ্যা
১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ১১:০২ পিএম | আপডেট: ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ১২:০৬ এএম
জ্যোতির্বিজ্ঞানের সবচেয়ে আশ্চর্যজনক সাম্প্রতিক আবিষ্কারগুলির মধ্যে একটি হল আমাদের ছায়পথের কেন্দ্রে ‘ধনু এ*’ নামক একটি প্রকান্ড ব্ল্যাক হোল (এসএমবিএইচ) বা কৃষ্ণগহ্বর, যার ভর আমাদের সূর্যের চেয়ে ১০লাখ গুণ বেশি। যখন আমাদের ছায়পথ কেন্দ্রের কৃষ্ণগহ্বরের কথা প্রথম প্রকাশিত বিবিসির চিত্রটি অতি সম্প্রতি খবরের শিরোনাম হয়েছিল, জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা তখন থেকে বলছেন যে, মহাবিশ্বের আরও অনেক দূরবর্তী ছায়াপথগুলির কেন্দ্রেও এই ধরণের সুবিশাল কৃষ্ণগহ্বরের রয়েছে।
কৃষ্ণগহ্বর বা কৃষ্ণ বিবর মহাবিশ্বের অস্তিত্ব ও প্রকৃতি বিষয়ক একটি বহুল প্রচলিত ধারণা। এই ধারণা অনুযায়ী কৃষ্ণগহ্বর মহাবিশ্বের এমন একটি বস্তু, যা এত ঘনভাবে সন্নিবিষ্ট বা অতিক্ষুদ্র আয়তনেও এর ভর এত বেশি যে, এর মহাকর্ষীয় শক্তি কোন কিছুকেই তার ভিতর থেকে বের হতে দেয় না, এমনকি তড়িৎচুম্বকীয় বিকিরণকেও (যেমন: আলো) নয়। প্রকৃতপক্ষে এই স্থানে সাধারণ মহাকর্ষীয় বলের মান এত বেশি হয়ে যায় যে এটি মহাবিশ্বের অন্য সকল বলকে অতিক্রম করে। ফলে এ থেকে কোন কিছুই পালাতে পারে না। কৃষ্ণগহ্বর শব্দের অর্থ কালো গর্ত। একে এই নামকরণের কারণ হল, এটি এর নিজের দিকে আসা সকল আলোক রশ্মিকে শুষে নেয়। কৃষ্ণগহ্বর থেকে কোন আলোক বিন্দুই ফিরে আসতে পারে না।
স্বাভাবিকভাবে কোনো একটি নক্ষত্র চুপসে গেলে কৃষ্ণগহ্বরে পরিণত হয়। তবে নক্ষত্রগুলোর ভর হয় অনেক। এবং এগুলির অস্বাভাবিক ভরের জন্য এদের মধ্যাকর্ষণও অনেক বেশি। তবে, অনেকদিন পর্যন্ত কৃষ্ণগহ্বরের কোন প্রত্যক্ষ দর্শন পাওয়া যায়নি। এ থেকে আলো বিচ্ছুরিত হয় না বলে একে দেখা সম্ভব নয়, কিন্ত কৃষ্ণগহ্বরের অস্তিতের প্রমাণ ছায়াপথ কেন্দ্রের কাছে নক্ষত্রের গতি এবং দিক দেখে পাওয়া যায়, যা অতিকায় ব্ল্যাক হোল দ্বারা বিচ্ছুরিত তীব্র মহাকর্ষীয় শক্তির ইঙ্গিত দেয়। আরও দূরবর্তী ছায়াপথগুলিতে আরও বিশাল কৃষ্ণগহ্বর সক্রিয় থাকতে পারে, যেখানে আশেপাশের উপাদানগুলি এত দ্রুত গতিতে চলে যে, সেগুলি গামা রশ্মি থেকে রেডিও পর্যন্ত সম্পূর্ণ ইলেক্ট্রোম্যাগনেটিক বলয় জুড়ে উজ্জ্বল আলো বিচ্ছুরণের জন্য যথেষ্ট উত্তপ্ত থাকে। এবং কৃষ্ণগহ্বর যত বেশি বড়, তত বেশি রশ্মির বিকিরণ হতে থাকে।
প্রকান্ড ব্ল্যাক হোল নিয়ে গবেষণা করতে জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা কাছাকাছি ছায়াপথগুলিতে নক্ষত্রের কক্ষপথের মানচিত্র তৈরি করেন। তারা ১৬ বছর ধরে আশে-পাশের তারামন্ডলীর গতি-বিধি পর্যবেক্ষণ করে গত ২০০৮ সালে অতিমাত্রার ভর বিশিষ্ট একটি কৃষ্ণগহ্বরের প্রমাণ পান, যার ভর আমাদের সূর্য থেকে ৪০ লাখ গুন বেশি এবং এটি আমাদের ছায়াপথের মাঝখানে এবং এটি ২৬হাজার আলোকবর্ষ দূরে অবস্থিত। জ্যোতির্বিজ্ঞানীদের কাছে প্রমাণ রয়েছে যে কিছু ছায়াপথ তাদের কেন্দ্রে থাকা অতিকায় কৃষ্ণগহ্বরকে প্রদক্ষিণ করে এবং প্রায় প্রতিটি বড় ছায়াপথের কেন্দ্রে একটি অতিকায় কৃষ্ণগহ্বর রয়েছে।
সবচেয়ে বড় ছায়াপথগুলি, যেগুলি বৃহত্তম মহাবিশ্বের সব থেকে বড় কৃষ্ণগহ্বরের সন্ধান পেয়েছেন বিজ্ঞানীরা। এই কৃষ্ণগহ্বর এতটাই বড় যে এর মধ্যে ৩০০০ হাজারটি সূর্য জায়গা করে নিতে পারবে। কৃষ্ণগহ্বরকে খুঁজে পেতে নতুন একটি পদ্ধতি ব্যবহার করতে হয়েছে। এটি ‘অ্যাবেল ১২০১’ নামক একটি গুচ্ছ ছায়াপথের কেন্দ্রে অবস্থিত এবং পৃথিবী থেকে এর দূরত্ব কয়েক লাখ আলোকবর্ষ। এর আকৃতি এত বড় যে একে বলা হয় ‘আল্ট্রাম্যাসিভ ব্ল্যাক হোল’। গ্রাভিট্যাশনাল লেন্সিং নামের এক নতুন পদ্ধতি ব্যবহার করে এটি আবিষ্কার করা হয়। সূত্র: বিবিসি স্কাই এট নাইট ম্যাগাজিন, ইন্টারনেট।
বিভাগ : জাতীয়
মন্তব্য করুন
আরও পড়ুন
লস অ্যাঞ্জেলেসে এবার ‘আগুন টর্নেডোর’ আশঙ্কা
দেশে এইচএমপিভিতে আক্রান্ত নারীর মৃত্যু
মোংলায় ভটভটি উল্টে ২ জন নিহত, আহত ২
রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞপ্তিতে ‘শিক্ষা নিয়ে গড়ব দেশ, শেখ হাসিনার বাংলাদেশ’ প্রকাশ
নাম ভাঙিয়ে তদবির-টেন্ডারবাজি: সতর্ক করলেন সারজিস
গুলশান থেকে ওবায়দুল কাদেরের ‘পালিত ছেলে’ গ্রেফতার
আখাউড়ায় মর্টার সেল উদ্ধার
বায়ুদূষণে আজ সবার শীর্ষে ঢাকা
শৈলকুপায় মোটরসাইকেলের ধাক্কায় বৃদ্ধ নিহত
বাবরের মুক্তির অপেক্ষায় কারাগারের সামনে নেতাকর্মীদের ভিড়
ব্যাংক খাত নিপুন কারিগরের মতো যেভাবে ধ্বংস করেন এসকে সুর
প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে আজকের বৈঠক বর্জন করবে লেবার পার্টি
দেশে ফিরতে চান মডেল তিন্নি হত্যা মামলায় খালাস পাওয়া অভি
দুর্নীতির মাধ্যমে পুতুলের ডব্লিউএইচও'র পদ পাওয়ার অভিযোগ: দুদকের অনুসন্ধান শুরু
বাড়িতে ঢুকে সাইফ আলিকে ৬ বার ছুরিকাঘাত, হাসপাতালে ভর্তি
রাজশাহী জেলা ছাত্রদল নেতার পিতা বাচ্চু সরকারের দাফন সম্পন্ন
মোংলায় সড়কের ওপর রাখা পাথরের ধাক্কায় যাত্রীবাহী ভটভটিতে থাকা দুই যাত্রীর মৃত্যু, আহত ৪
গাজায় ঐতিহাসিক পরাজয় ইসরাইলের
১৭ বছর পর আজ দুপুরে কারামুক্ত হচ্ছেন বাবর
দীর্ঘ এক যুগ পর কারামুক্ত হলেন ডেসটিনির চেয়ারম্যান