সাজা দিয়ে আন্দোলন দমানো যাবে না
১০ অক্টোবর ২০২৩, ১২:০৫ এএম | আপডেট: ১০ অক্টোবর ২০২৩, ১২:০৫ এএম
নেতাকর্মীদের সাজা দিয়ে চলমান গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার আন্দোলন দমন করা যাবে না বলে হুঁশিয়ারী দিয়েছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে বলেন, সাজা দিয়ে আমাদের কি রুখে দেওয়া যাবে, তখন নেতাকর্মীরা বলেন- না। তখন মহাসচিব বলেন, এই সরকারকে পরাজিত না করে এবং দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্ত না করে কেউ ক্ষান্ত হবে না।
গতকাল সোমবার বিএনপি চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি ও সুচিকিৎসার জন্য বিদেশে পাঠানোর দাবিতে নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে ঢাকা মহানগর উত্তর-দক্ষিণ বিএনপি আয়োজিত সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, বেগম খালেদা জিয়াকে দেশের বাইরে সুচিকিৎসার জন্য তার পরিবারের সদস্যরা প্রধানমন্ত্রীর সাথে দেখা করেছিল। কিন্তু এখন প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, তার হাতে কিছু নেই! আদালতের কথা বলেন। বেগম খালেদা জিয়ার কিছু হলে এ দেশের মানুষের এই ফ্যাসিস্টদের কাউকে ছাড়বে না। এই আওয়ামী এখন কোনো রাজনৈতিক দল নয়, তারা ফ্যাসিস্ট। এরা সম্পূর্ণভাবে দেউলিয়া হয়ে গেছে। এরা আর মানুষের দল নয়। বেগম খালেদা জিয়ার জীবনে কোনো ‘হুমকি’ আসলে পরিণতি ‘শুভ হবে না’ বলেও সরকারকে সতর্ক করে দেন তিনি।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, বাংলাদেশের মানুষ পরিষ্কার করে জানিয়ে দিতে চায়, দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার জীবনের কোনো হুমকি আসে, তাহলে এ দেশের মানুষ কখনো এই ঘৃণ্য লুটেরা সরকারকে ক্ষমা করবে না।
বিএনপি নেত্রীর অসুস্থতার পেছনে সরকারের দায় আছে অভিযোগ করে তিনি বলেন, বেগম খালেদা জিয়াকে যদি জেলে পাঠানো যায়, তাকে যদি রাজনীতি থেকে দূরে সরিয়ে নেয়া যায়, তাহলে আর কোনো প্রতিপক্ষ থাকবে না। এভাবেই অত্যন্ত পরিকল্পিভাবে কারাগারের মধ্যে তাকে একটা বসবাসের অনুপযোগী ঘরের মধ্যে রেখে.. তাকে আজকে মৃত্যুর মুখে ঠেলে দিয়েছে।
আওয়ামী লীগ আর জনগণের দল নেই মন্তব্য করে মির্জা ফখরুল বলেন, আওয়ামী লীগ সম্পূর্ণভাবে গণবিচ্ছিন্ন একটি রাজনৈতিক দলে পরিণত হয়েছে। এখন আর জনগণের দল নেই, তারা এখন পুরোপুরিভাবে ফ্যাসিবাদের ধারক-বাহকে পরিণত হয়েছে। কিছু সংখ্যক ‘অত্যাচারী আমলা’ ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য, আর কিছু সংখ্যক ‘লুটেরা ব্যবসায়ী’ এখন আওয়ামী লীগের প্রতিনিধিত্ব করে।
বিএনপি ও সমমনা দলগুলোর বেশ কয়েকজন নেতার সাজা নিয়েও কথা বলেন মির্জা ফখরুল। তিনি বলেন, একটা মামলার সাজা দিয়েছে। আমাদের ভাইস চেয়ারম্যান মোহাম্মদ শাহজাহান, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা হাবিবুর রহমান হাবিব, সহপ্রচার সম্পাদক শামীমুর রহমান শামীম, গণশিক্ষা বিষয়ক সহসম্পাদক বেলাল আহমেদ, জাতীয় পার্টি (কাজী জাফর) মহাসচিব আহসান হাবিব লিংকনসহ ১৫জনকে সাজা দিয়েছে। রোববার আরেকটার আদালতে ১৫জনকে সাজা দিয়েছে। এরা (সরকার) মনে করেছে, এসব সাজা দিলে বিএনপিকে প্রতিরোধ করতে সক্ষম হবে। হয়েছে কি? প্রতিরোধ করা যাবে না। প্রতিদিন একেকটা সাজা হাজার হাজার জিয়ার সৈনিক তৈরি করছে।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, একেকটা সাজায় একেকটা নেতা বের হয়ে আসছে। বিএনপি একটি ফিনিক্স পাখির মতো। এই সরকারকে পরাজিত না করে এবং দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্ত না করে কেউ ক্ষান্ত হবে না। বিএনপি হচ্ছে ফিনিক্স পাখির মত। যতই তোমরা চেষ্টা কর যে, ধ্বংস করবে, সেই ধ্বংসস্তূপ থেকে বিএনপি জেগে উঠবে। ওরা ভেবেছিল দেশনেত্রীকে (খালেদা জিয়া) জেলে নিয়ে গেলে বিএনপি আর থাকবে না। কিন্তু বিএনপি আরো শক্তিশালী হয়েছে। বিএনপি এখন জেগে উঠেছে, এই সরকারের পতনের মরণপণ আন্দোলন শুরু করেছে।
দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান, স্থায়ী কমিটির সদস্য ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু, ভাইস চেয়ারম্যান আবদুস সালাম পিন্টু, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য আমান উল্লাহ আমান, সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবরসহ নেতাদের সাজার দেয়ার কথা তুলে ধরে বিএনপি মহাসচিব বলেন, পরিষ্কার করে বলে দিতে চাই, জনগণকে সঙ্গে নিয়ে এই সরকারকে পরাজিত করা না পর্যন্ত দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া ও জিয়ার সৈনিকরা ক্ষান্ত হবে না, তারা অবশ্যই পরাজিত করবে।
আমদানি করার অর্থ আর থাকবে না মন্তব্য করে বিএনপির অর্থনীতির সাবেক এই শিক্ষক বলেন, এই সরকার রিজার্ভের পরিমাণ কমাতে কমাতে এমন জায়গায় নিয়ে গেছে যে, আর কয়েকদিন পরে আমদানি করার আর অর্থ থাকবে না।
তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী খুব ধমক দিয়ে বলেছেন যে, তাহলে বন্ধ করে দেই, বন্ধ করে দেই বিদ্যুৎ, বন্ধ করে দেই পানি। কথা শুনলে মনে হয় আমরা রাজতন্ত্রে বাস করছি। আমাদের মালিক একজন, সেই মালিক হচ্ছেন শেখ হাসিনা। এটা কোনো রাজতন্ত্রের দেশ নয়। এর মালিক জনগণ। দেয়ালের লিখন পড়েন। এখনো বুঝতে পারছেন না আপনাদের জন্য কী অপেক্ষা করছে। ইতিহাস ভুলে যাবেন না। এভাবে দেশ কেউ চালাতে পারে না। হিটলার পারেনি, মুসোলিনি পারেনি, এ দেশে আইয়ুব খান পারেনি, ইয়াহিয়া খান পারেনি। এ দেশে আমাদের হুসেইন মুহম্মদ এরশাদও পারে নাই, মঈন উদ্দিন, ফখরুদ্দীনের সরকারও পারে নাই, আপনারাও পারেন নাই একদলীয় শাসনব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করতে।
ঢাকা মহানগর উত্তরের ভারপ্রাপ্ত আহ্বায়ক ফরহাদ হালিম ডোনারের সভাপতিত্বে ও উত্তরের সদস্যসচিব আমিনুল হক, দক্ষিণের ভারপ্রাপ্ত সদস্য সচিব লিটন মাহমুদের সঞ্চালনায় সমাবেশে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, আবদুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, সেলিমা রহমান, ভাইস চেয়ারম্যান বরকত উল্লাহ বুলু, শামুসজ্জামান দুদু, আহমেদ আজম খান, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আবদুস সালাম, জয়নুল আবদিন ফারুক, আবুল খায়ের ভুঁইয়া, কেন্দ্রীয় নেতা সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, খায়রুল কবির খোকন, নাসির উদ্দিন অসীম, আবদুল মালেক রতন, মীর সরাফত আলী সপু, রাকিবুল ইসলাম বকুলও সমাবেশে বক্তব্য রাখেন।###
বিভাগ : জাতীয়
মন্তব্য করুন
এই বিভাগের আরও
আরও পড়ুন
এমবাপ্পের জোড়া গোলে জিতে শীর্ষে রিয়াল
ব্রাইটনের বিপক্ষেও বিপর্যস্ত ইউনাইটেড
‘ন্যায়বিচারকে হত্যা’ করা হয়েছে: পিটিআই
নতুন ভূগর্ভস্থ নৌ ঘাঁটি উন্মোচন ইরানের
রাশিয়ার পক্ষে যুদ্ধ করছে অনেক আফ্রিকান সেনা
পাওয়ার প্ল্যান্টের ৩৬০ মেট্রিকটন তেল ডাকাতি
বাংলাদেশি কর্মী নিতে প্রস্তুত রাশিয়া: রাষ্ট্রদূত
রাজনৈতিক দলগুলো বেশি কিছু সংস্কার না চাইলে ডিসেম্বরের মধ্যেই নির্বাচন: প্রেস সচিব
এবার ওলমোর ইনজুরি দুঃসংবাদ বার্সার
কুড়িগ্রাম স্টুডেন্টস ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের নেতৃত্বে ইমন ও আলামিন
এসএমই ফাউন্ডেশনের নতুন চেয়ারপার্সন মো. মুশফিকুর রহমান
বিয়ের ওপর কর বাতিলের দাবি
শহীদ জিয়ার নাম মুছে ফেলার অপচেষ্টায় ব্যর্থ হয়েছে আ.লীগ : মির্জা ফখরুল
নামাজের প্রথম কাতারে জামাত পড়াবস্থায় অজু ভেঙ্গে যাওয়া প্রসঙ্গে।
কয়েক মিনিটে বাংলাদেশ দখল করে নিতে পারে ভারত: শুভেন্দু অধিকারী
নরসিংদীতে নিখোঁজের ৫ দিন পর নদীতে পাওয়া গেল স্কুল ছাত্রের লাশ
বিএনপি : দেশবাদ যার রাজনীতির মূল কথা
পাহাড়ি উপজাতিরা আদিবাসী নয়
সংস্কার প্রতিবেদন : জাতির নতুন অধ্যায়ে অভিযাত্রা
অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় বিনিয়োগে জোর দিতে হবে