আন্তর্জাতিক নিষ্ক্রিয়তা সম্পর্কে ফিলিস্তিনের সতর্কবার্তা
১১ অক্টোবর ২০২৩, ১২:০৪ এএম | আপডেট: ১১ অক্টোবর ২০২৩, ১২:০৪ এএম
ইসরাইলের সেনাবাহিনী এবং ধর্মান্ধ সন্ত্রাসবাদীরা ফিলিস্তিন দখল করার জন্য প্রজন্মের পর প্রজন্ম ধরে নির্বিচারে নিষ্ঠুরতার সাথে ফিলিস্তিনিদের ওপর হামলা চালিয়ে আসছে। তারা যুগের পর যুগ ধরে অগণিত অসহায় ফিলিস্তিনির বাড়িঘর ও জমি দখল করে নিয়েছে এবং দেশটির অর্থনীতি ও প্রাচীন ঐতিহ্য ধ্বংস করে দিয়েছে। ফলে, ফিলিস্তিনকে পুনর্র্নিমাণ করার ক্লান্তিকর চক্র, সমস্ত আন্তর্জাতিক প্রতিশ্রুতি এবং একটি স্বাধীন ফিলিস্তিন ফিরে পাওয়ার সম্ভাবনা সময়ের সাথে সাথে ধুলোয় পরিণত হয়েছে।
দেয়াল ও কাঁটাতারের বেড়ার ভেতর গবাদি পশুর মতো পাইকারী হারে বন্দী ফিলিস্তিনিরা পানি ও বিদ্যুৎ, খাদ্য ও জ্বালানী সরবরাহ চালু এবং বন্ধ হয় এখন পশ্চিমা ঔপনিবেশিক শক্তির ইচ্ছায়। কিন্তু, জাতিবিদ্বেষী বেশিরভাগ পশ্চিমা গণমাধ্যম এই সত্যকে স্বীকার করে না। তারা সর্বদা ইসরায়েল দ্বারা নির্দেশিত একটি ছকে ঘটনাগুলিকে ব্যাখ্যা করে। এই ছক অনুযায়ী ইসরাইল সর্বদাই অপরাধের শিকার, কখনই অপরাধী নয়।
আপিত্যবাদী ও বর্ণবাদী পশ্চিমা বিশে^র কাছে ইতিহাস সম্পর্কে ইসরায়েলের উপলব্ধি অতি গুরুত্বপূর্ণ। তাই তারা শুধুমাত্র ফিলিস্তিনিদের অতীতই নয়, বর্তমান ও ভবিষ্যৎও তোয়াক্কা করে না। তাদের কাছে ইসরায়েলিদের জীবন এবং মৃত্যু গুরুত্বপূর্ণ; ফিলিস্তিনিদের জীবন ও মৃত্যু নয়। জাতিসংঘে ফিলিস্তিনি রাষ্ট্রদূত রিয়াদ মানসুর আন্তর্জাতিক নিষ্ক্রিয়তা সম্পর্কে রবিবার বলেন, ‹কিছু গণমাধ্যম এবং রাজনীতিবিদদের জন্য ইতিহাস তখন কার্যকর হয়, যখন ইসরায়েলিরা নিহত হয়। আমাদের জনগণ তো একের পর এক মৃত্যুভরা বছর সহ্য করেছে।’
জেরুজালেম, লন্ডন এবং নিউ ইয়র্ক ভিত্তিক মানবাধিকার গোষ্ঠীগুলি প্রতিবেদনের পর প্রতিবেদন প্রকাশ করে আসছে, যা আন্তর্জাতিক আইন অনুসারে এটি প্রতিষ্ঠিত করেছে যে, ইসরাইল দীর্ঘকাল ধরে জাতিগত আধিপত্য চাপানোর জন্য ও জাতিবিদ্বেষের জন্য দোষী এবং ফিলিস্তিনিদের উপর নিষ্ঠুর ও বর্বর কৌশলে নিপিড়ন চালিয়ে আসছে।
ইসরায়েলের পরিকল্পিত ও সংগঠিত দফায় দফায় নিপীড়ন একটি স্থায়ী সহিংসতার জন্ম দিয়েছে। এটি ধামা চাপা দিতে অনেক পশ্চিমা সংবাদ মাধ্যম সরাসরি তথ্যগুলোকে অস্বীকার বা বিকৃত করেছে। অন্যরা ফিলিস্তিনি তরুণ ও বৃদ্ধদের ওপর নথিভুক্ত অপরাধ ও বঞ্চনার তথ্য পরিবশন করার পরিবর্তে খ্যাতনামাদের কুকুরের মৃত্যুর খবর পরিবেশনে মনোনিবেশ করেছে।
পশ্চিমা আধিপত্যবাদী শাসন ও তাদের এই ন্যাক্কারজনক আচরণ দেখায় যে, একজন ফিলিস্তিনি একটি অমানবীয় তুচ্ছ সত্তা, যা ইসরায়েলের স্বার্থে ব্যয়যোগ্য একটি উপজাত। তাই যখন-তখন, যেখানে সেখানে নির্বিচারে ইসরায়েলীদের দ্বারা ফিলিস্তিনিদের অস্তিত্ব মুছে ফেলার সমস্ত তথ্য-প্রমাণযোগ্য থাকা সত্ত্বেও পশ্চিমা বিশেষজ্ঞরা চোখ বন্ধ করে ইসরায়েণকে রক্ষা করে থাকে। এই বিকৃত বিচারে বেসামরিক ফিলিস্তিনিরা যুদ্ধের নির্দোষ হতাহত হিসাবে বিবেচিত হয় না, বরং তাদের মৃত্যু এবং বিরূপ ভাগ্যের জন্য মূলত তাদেরই দায়ী করা হয়ে থাকে।
সামনের ভয়ঙ্কর দিন, সপ্তাহ এবং সম্ভাব্য মাসগুলিতে, হামাসের পাল্টা আক্রমণের পরিপ্রেক্ষিতে বিশে^র বুদ্ধিজীবিদের একটি অংশ নি:সন্দেহে গাজার উপর সম্পূর্ণ অবরোধ আরোপ করার এবং এটিকে বধ্যভূমিতে পরিণত করার ভয়ঙ্কর আহ্বানে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর সাথে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে দাঁড়িয়ে থাকবে।
প্রকৃতপক্ষে, ২০ লাখ ফিলিস্তিনি, যারা এই সংকীর্ণ হয়ে আসা ভূমিটিতে বসবাস করে, তাদেরকে মাতৃভূমি থেকে বিতাড়িত করার এবং গাজাকে নির্মূল করার নেতানিয়াহুর দৃঢ় প্রতিশ্রুতি হল জাতিগত বিদ্বেষের অনিবার্য অভিব্যক্তি, যা ফিলিস্তিনের সমগ্র জনগণের ওপর মানবিক বিপর্যয় নামিয়ে আনার জন্য সহজেই অনুমেয়।
তবে, ইসরায়েলি দায়মুক্তি এবং আন্তর্জাতিক নিষ্ক্রিয়তা সম্পর্কে সতর্কবার্তা জারি করে মানসুর স্পষ্টভাবে বলেছেন, ‹আমরা (ফিলিস্তিনিরা) উপ-মানব নই। আমি আবারও বলতে চাই: আমরা উপ-মানব নই। আমাদের ভূমি দখল এবং আমাদের জনগণের নিপীড়নকে উপেক্ষা করে এমন কোনও ঔদ্ধত্যপূর্ণ বক্তৃতা, আমরা কখনই এমন বাগাড়ম্বরকে মেনে নেব না, যা আমাদের মানবস্বত্তাকে হেয় করে এবং আমাদের অধিকার খর্ব করে।›
মানসুর ফিলিস্তিনিদের বিরুদ্ধে ইসরায়েলের দীর্ঘস্থায়ী যুদ্ধের বোধগম্য প্রতিক্রিয়া হিসাবে বলেন, ‹ইসরায়েল একটি রাষ্ট্র, তার জনগণ, তার ভূমি এর পবিত্র স্থানগুলোর ওপর পূর্ণ মাত্রার যুদ্ধ চালাতে পারে না এবং বিনিময়ে শান্তি আশা করতে পারে না।› তিনি বলেন, ‘ফিলিস্তিনিরা এবং শুধুমাত্র ফিলিস্তিনিরাই তাদের ভাগ্য নির্ধারণ করবে। ফিলিস্তিনি জনগণ একদিন না একদিন, কোনো না কোনোভাবে মুক্ত হবেই।› সূত্র: আল জাজিরা।
বিভাগ : জাতীয়
মন্তব্য করুন
আরও পড়ুন
পঞ্চগড় হাসপাতালে বেড়েছে শীতজনিত রোগী
মেডিকেলের ফল পুনঃপ্রকাশের দাবি বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের
প্রথম দিনেই একগুচ্ছ নির্বাহী আদেশের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন ট্রাম্প
ড. ইউনূস সরকারের সমালোচনা করা রিপোর্ট প্রত্যাহার ব্রিটিশ এমপিদের
প্যারিসে জুলাই জার্নাল অব ডিক্টেটরশিপ প্রদর্শনী, যা সবার আয়োজন করা উচিত
বিরতির প্রথম দিন : গাজায় ঢুকলো সাড়ে ৫ শতাধিক ত্রাণবাহী ট্রাক
ব্রাহ্মণপাড়ায় অগ্নিদগ্ধে গৃহবধূর মৃত্যু
আল-কাসসাম মুখপাত্র গাজা যুদ্ধবিরতি চুক্তি রক্ষার প্রতিশ্রুতি দিলেন
ঢাকার বাতাস ‘খুবই অস্বাস্থ্যকর’ নিঃশ্বাসে ঢুকছে বিষ
মিরপুরে বাটা শো-রুমে লাগা আগুন নিভেছে
মিত্রদের জড়ো করুন, শত্রুদের চিহ্নিত করুন : মাহফুজ আলম
জয়া ও তার কুকুর একই অসুখে ভুগছে
বিদ্যুতের বকেয়া পরিশোধে জুন পর্যন্ত সময় দিলো আদানি
যুদ্ধবিরতির পর ধ্বংসস্তূপে গাজাবাসীর মলিন প্রত্যাবর্তন
ভাঙ্গা - পুখুরিয়া মধুমতি এক্সপ্রেস ট্রেন আটঁকিয়ে বিক্ষোভ মিছিল ও অবরোধ পুরো রেললাইন মিছিলের নগরী
যে কারণে সাইফকে ছুরিকাঘাতের ঘটনা বাংলাদেশের দিকে ঘুরিয়ে দেওয়া হচ্ছে
শান্তি আলোচনা ব্যর্থ : কলম্বিয়ায় বিদ্রোহী হামলায় নিহত অন্তত ৮০
নাইজেরিয়ায় ট্যাংকার ট্রাক বিস্ফোরণে নিহত অন্তত ৮৬,আহত আরও ৫৫
ভারত থেকে পালিয়ে আসা প্রেমিক-প্রেমিকা আটক
কোটা না মেধা স্লোগানে উত্তাল ঢাবি-ঢামেক ও ঢাকা কলেজ