বিএনপি আন্দোলন করুক আপত্তি নেই -প্রধানমন্ত্রী
২০ অক্টোবর ২০২৩, ১২:০১ এএম | আপডেট: ২০ অক্টোবর ২০২৩, ১২:০১ এএম
বিএনপি ক্ষমতায় আসতে চাইলে আন্দোলন করুক বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বিএনপির আন্দোলন নিয়ে ক্ষমতাশীন আওয়ামী লীগ প্রধান আরো বলেছেন, আন্দোলন করুক আপত্তি নেই। আমরাও সারাজীবন আন্দোলন করেই আজ ক্ষমতায় আসছি। তারা ক্ষমতায় আসতে চায়, আন্দোলন করুক। কিন্তু আন্দোলনের নামে মানুষের ক্ষতি যেন করতে না পারে সে ব্যাপারে সবাইকে সজাগ থাকতে হবে। বিএনপির গ্রহণযোগ্যতা নেই বলেও উল্লেখ করেছেন শেখ হাসিনা।
গতকাল বৃহস্পতিবার তেজগাঁও সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের আওতায় ১৫০টি সেতু, ১৪টি ওভার পাস, স্বয়ংক্রিয় মোটরযান ফিটনেস পরীক্ষা কেন্দ্র উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন। এ সময় ঢাকার মিরপুর বিআরটিএ এবং ময়মনসিংহ সার্কিট হাউস মাঠ থেকে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ ও সাধারণ মানুষ এ কর্মসূচিতে ভার্চুয়ালি যুক্ত হন প্রধানমন্ত্রী। যাদের সঙ্গে পরে মতবিনিময় করেন তিনি। শেখ হাসিনা বলেন, বিএনপি-জামায়াত আন্দোলন করছে ঠিক আছে। যদি তারা বাসে আগুন দিতে চায়, আমি বলে দিয়েছি, যারা বাসে আগুন দেবে, সঙ্গে সঙ্গে যে ব্যবস্থা নেওয়ার তাই নেবে। যেন মানুষের ক্ষতি করতে না পারে, যেন অগ্নি সন্ত্রাস করতে না পারে।
বিএনপির সমালোচনা করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিএনপি সন্ত্রাসীদল। মানুষ খুন করা দল। তারা প্রতিদিন আমাদের পদত্যাগ চায়। সে দাবিতে প্রতিদিন আন্দোলন করছে, করুক। আমার আছে জনগণ। আমার তো আর কেউ নেই। বাবা-মা ভাইবোন সবই তো হারিয়েছি।
শেখ হাসিনা বলেন, ২৯ বছর যারা ক্ষমতায় ছিল দেশকে তারা (বিএনপি) কি দিয়েছে? বিএনপির শাসনামলে দেশে অত্যাচার-নির্যাতন হয়েছে মানুষের ওপর। তারা জঙ্গিবাদ ও বাংলা ভাই সৃষ্টি করে। আগুন দিয়ে মানুষ পুড়িয়ে মেরেছে, আন্দোলনের নামে সম্পদ ধ্বংস করেছে। অগ্নিসন্ত্রাসে অনেকে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, আমরা তাদের সহযোগিতা করেছি। বাংলাদেশের মানুষের জীবনে যেন এ ধরনের অগ্নিসন্ত্রাসের পরিস্থিতি আর না আসে। তিনি আরো বলেন, এ ধরনের কোন কর্মসূচি নেয়া হলে আইন শৃংখলা রক্ষাকারি বাহিনীকে নির্দেশ দেয়া রয়েছে তারা তৎক্ষনাৎ আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।
শেখ হাসিনা বলেন, এখন তারা নির্বাচন নিয়ে কথা বলে। অবাধ-নিরপেক্ষ নির্বাচন, নানান কথা বলে। সেটা নিয়ে আমি এখন সমালোচনা করতে চাই না। কারণ, অনেকগুলো ভালো কাজ করেছি। তাই ভালো কথাগুলো বলে যেতে চাই। কিন্তু এদের কথা ও কাজ সবই ধ্বংসাত্মক। এ ব্যাপারে দেশবাসীকে আমি সতর্ক করতে চাই। আজকের উন্নয়নগুলো ধ্বংস করুক সেটা আমরা চাই না।
তিনি বলেন, ২০০১ সালে সরকারে আসতে পারিনি। কারণ আমাদের গ্যাস অন্য দেশ কিনবে, আমি রাজি হইনি। খেসারত দিতে হয়েছে, ক্ষমতায় আসতে পারিনি। জনগণের ভোট পেয়েছিলাম। কিন্তু চক্রান্তের শিকার হয়েছি। তখন দেশের অবস্থা কী হয়েছিল? বিএনপি-জামায়াতের দুঃশাসন, জঙ্গিবাদ, সন্ত্রাস, দুর্নীতি-অপশাসনের কারণে এ দেশে ইমার্জেন্সি ঘোষণা হয়। তার পর আসে সেনা সমর্থিত তত্ত¡াবধায়ক সরকার।
বিএনপির গ্রহণযোগ্যতা নেই উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, ২০০৮ এর নির্বাচন এবং পরের উপনির্বাচন মিলিয়ে বিএনপি-জামায়াত ২০ দলীয় ঐক্যজোট ৩শ’ সিটের মধ্যে মাত্র ৩০টি সিট পেয়েছিল। এই হলো তাদের শক্তি, জনগণের কাছে গ্রহণযোগ্যতা।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ১৫ বছর আগের বাংলাদেশ কী ছিল, তা এখনকার তরুণরা জানে না। তাদের কাছে বাংলাদেশের উন্নয়ন তুলে ধরতে হবে। ঘরে ঘরে সরকার বিদ্যুৎ পৌঁছে দিয়েছে। দেশের অধিকাংশ মানুষ সুপেয় পানির নিশ্চয়তা পেয়েছে, যে জন্য এক সময় হাহাকার ছিল। তিনি বিদ্যুৎ ও পানি ব্যবহারে সকলকে সাশ্রয়ী হবারও আহবান জানান।
গাড়িচালকদের প্রশিক্ষণের বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, যারা বাস-ট্রাক-গাড়ি চালায় তাদের অস্বাভাবিক যে প্রতিযোগিতা, ওভারটেক করার যে প্রতিযোগিতা, এটা বন্ধ করতে হবে। এ জন্য ড্রাইভারদের ভালোভাবে প্রশিক্ষণ দিতে হবে। এ প্রসঙ্গে তিনি আরো বলেন, মহাসড়কের কয়েক কিলোমিটার পর পর বাস ও ট্রাকের ড্রাইভার ও যাত্রীরা যাতে একটু বিশ্রাম নিতে পারে, সেই বিশ্রামাগার করে দিতে বলেছি। এর মধ্যে কয়েকটা জায়গায় হয়েছে, পর্যায়ক্রমে আমরা আরও করে দেবো।
গাড়িচালকদের প্রতি গাড়ির মালিকদের সচেতন হওয়ার আহŸান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, সে (গাড়িচালক) কিন্তু একজন মানুষ, তারও বিশ্রামের প্রয়োজন আছে। ড্রাইভার খাবার ঠিকমতো খেতে পারল কি না সেটাও দেখতে হবে। গাড়ি চালাতে পেট্রোল লাগবে কিন্তু যাকে দিয়ে চালাবেন তারও তো পেট্রোলের দরকার আছে। সেটাতেও নজর দিতে হবে। তিনি বলেন, এখন সরকারে আছি, সরকারের গাড়িতে চলি। যখন আমি নিজের গাড়িতে চড়তাম, আমি সবার আগে ড্রাইভারের খাবার, ড্রাইভারের বিশ্রামের ব্যবস্থা করতাম। নির্বাচনের সময় কোনোকিছু ঠিক থাকতো না। আমি সামনের সিটে বসতাম, নিজের হাতে কমলা বা বিস্কুট, যা কিছু ছিল আমি ড্রাইভারকে দিতাম। বলতাম, তুমি খেতে থাকো, তোমার পেট্রোল যেন ঠিক থাকে, তোমার মাথা যেন ঠিক থাকে। এভাবে তাদেরও যতœ নিতে হয়। ড্রাইভার-মালিকদের বলব, নিয়মগুলো মেনে চললে নিজের জীবন সুন্দর থাকবে, আর আমাদের পথচারীরাও সুরক্ষিত থাকবে।
অনুষ্ঠানে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান এবং সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির চেয়ারম্যান রওশন আরা মান্নান বিশেষ অতিথি হিসেবে অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন। আরো বক্তব্য রাখেন সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের (আরএইচডি) সচিব এবিএম আমিন উল্লাহ নূরী এবং এর প্রধান প্রকৌশলী সৈয়দ মঈনুল হাসান।
বিভাগ : জাতীয়
মন্তব্য করুন
এই বিভাগের আরও
আরও পড়ুন
ট্রাম্পের শপথ অনুষ্ঠানে অংশ নিলেন প্রিন্সেস রিমা
মানবতাবিরোধী অপরাধীরা যেন নির্বাচন করতে না পারে : বদিউল আলম মজুমদার
মাগুরায় ৬ ইটভাটায় অভিযান: ১৩ লাখ টাকা জরিমানা, ২টি ভাঙ্গচুর
ট্রাম্পের শপথ অনুষ্ঠানে মাস্কের বিতর্কিত ইশারা নিয়ে তীব্র সমালোচনা
লাখ লাখ ভারতীয় হারাতে যাচ্ছেন মার্কিন নাগরিকত্ব
শরীয়তপুর পৌরসভার খাল উদ্ধার অভিযান শুরু
কলাপাড়ায় গভীর রাতে বসত ঘরে প্রবেশ করে গৃহবধূকে হত্যা করে দুর্ধর্ষ ডাকাতি
নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কারে ‘সুপারিশ’ নিয়ে যা বললেন বদিউল আলম মজুমদার
আমাদের একমাত্র লক্ষ্য আমেরিকার শত্রুদের পরাজিত করা: ট্রাম্প
সড়ক থেকে সরেছেন প্রবাসীরা, স্বাভাবিক হয়েছে যান চলাচল
হিজাববিহীন তাওয়াফ! কে এই পাকিস্তানি নারী?
চীনের যে অস্ত্রের ভয়ে কাঁপছে ভারত আমেরিকা
প্রথম সামাজিক অনুষ্ঠানে নাচলেন ট্রাম্প-মেলানিয়া
ফেসবুকে যা লিখলেন আলোচিত অভিনেতা জয়
শিল্পী সমিতি থেকে ফ্যাসিস্ট নিপুণের স্থায়ী বহিষ্কার
অভিবাসন নিয়ন্ত্রণে ট্রাম্পের কঠোর পদক্ষেপ, সিবিপি ওয়ান অ্যাপ বাতিল
টিকা না পেয়ে সড়ক অবরোধ করেছেন প্রবাসীরা
তারাকান্দায় সড়ক দুর্ঘটনায় মানসিক অপ্রকৃতস্থ যুবকের মৃত্যু
সরকারী চাকুরীর প্রলোভনে টাকা আত্মসাৎ, ভুক্তভোগীকে মামলায় হেনস্থার অভিযোগ
ট্রাম্প বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা থেকে যুক্তরাষ্ট্রকে প্রত্যাহার করে নিলেন