যত বড় নেতাই হোক দুর্নীতির অভিযোগ পেলে সাথে সাথেই বহিষ্কার করুন
২০ জানুয়ারি ২০২৫, ১২:০১ এএম | আপডেট: ২০ জানুয়ারি ২০২৫, ১২:০১ এএম
বিএনপি নেতাকর্মীদের শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের আদর্শ অনুসরণ করার আহ্বান জানিয়েছে দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমেদ বলেছেন, আমাদের এই মুহূর্তে করণীয় শহীদ জিয়ার আদর্শকে অনুসরণ করা।
তার মতো সৎ, দেশপ্রেমিক হওয়া। আমাদের দলের ওপরে কোন ধরণের কলঙ্ক যাতে না আসে, প্রত্যেকটি কর্মীকে, নেতাকে সেজন্য সজাগ থাকতে হবে। তিনি বিএনপির ভারপাপ্ত চেয়ারম্যানের উদ্দেশ্যে বলেন, ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানকে বলতে চাই যত বড় নেতাই হোক, দুর্নীতির অভিযোগ পেলে তাকে সাথে সাথেই বহিষ্কার করে দিবেন। আমরা একজন-দুইজন ব্যক্তির জন্য দেশ ও দলের ভাগ্য বিপর্যয়ে ফেলতে পারি না। কারণ শহীদ জিয়ার আদর্শ ছিল সততা। তিনি একজন প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন। তার প্রমাণ হলো- তার মৃত্যুর পর তার ব্যাংকে এক হাজার টাকাও ছিল না। এই বিশাল দেশে তার কোন জমি নেই। সকল ধরণের লোভ-লালসার উর্ধ্বে তিনি ছিলেন। আমাদেরকে সেই আদর্শ অনুসরণ করতে হবে।
গতকাল রোববার রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইন্সটিটিউশন মিলনায়তনে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের ৮৯তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা তিনি এসব কথা বলেন।
আওয়ামী লীগের লোকজন এখন বিএনপিতে ভিড় করছে উল্লেখ করে হাফিজ উদ্দিন আহমেদ বলেন, আজকে বিএনপির বিরুদ্ধে অনেকেই অপপ্রচার চালাচ্ছে। আমি ভোলায় গিয়েছিলাম, আমার গাড়ীর সামনে দেখি প্রায় ৫০০ মোটরসাইকেল এবং এদের অধিকাংশকে আমি চিনি না। ৪০ বছর রাজনীতি করি এবং আমার সফরসঙ্গীকে জিজ্ঞেস করলাম এরা কারা? উনি বললেন, এরা আগে আওয়ামী লীগ করতো। এখন এসে আমাদের গাড়ীবহরে শামিল হয়ে গেছে। তাদেরকে দূরে রাখুন। আমরা যেহেতু হাসিনার পতন ঘটাতে পেরেছি, এই দেশকেও সমৃদ্ধির উচ্চ শিখরে নিতে পারবে বিএনপি এবং শহীদ জিয়ার অনুসারিগণ। আমাদের শুধু প্রয়োজন আমাদের নেতার ওপর অবিচল আস্থা।
বিএনপি ক্ষমতায় গেলে তরুণদের সামরিক প্রশিক্ষণ দেয়া হবে জানিয়ে সাবেক এই সেনা কর্মকতা বলেন, সীমান্তে গ-গোল শুরু হয়ে গেছে, সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) সহায়তা নিয়ে ভারতীয়রা আমাদের দেশের মানুষের গাছ কেটে নিয়ে যায়, ফসল কেটে নিয়ে যায়। মনে হচ্ছে মুক্তিযুদ্ধ শেষ হয়নি। একটি দীর্ঘস্থায়ী সংগ্রামের প্রস্তুতি আপনারা নেবেন। বিএনপি যদি দায়িত্ব পায়, তাহলে আমরা আমাদের ছাত্রদের ট্রেনিং দিয়ে যোদ্ধায় পরিণত করবো। বাধ্যতামূলক মিলিটারি ট্রেনিং দেয়া হবে। কারণ এদেশ থেকে স্বৈরাচার পালিয়ে গিয়ে পাশের দেশে আশ্রয় নেবে, দেশে বিশৃঙ্খলা করবে, অস্ত্র নিয়ে ঢুকে অপতৎপরতা চালাবে, তাদেরকে বলিষ্ঠভাবে রূখে দাঁড়াবার জন্য জিয়ার সৈনিকদের প্রয়োজন।
তিনি বলেন, জিয়াউর রহমান দেশের এক দুঃসময়ে রাজপথে পাদপ্রদীপের আলোয় এসেছিলেন জনগণের জান-মাল-ইজ্জত রক্ষা করার জন্য। আজকে জিয়াউর রহমান নেই, তার দল বিএনপি এখনো আছে, জাতীয়তাবাদের পতাকা আমরা বহন করে চলেছি, আপনারা প্রস্তুত হোন, এই দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব রক্ষা করার জন্য জিয়াউর রহমান যেভাবে জীবন বিপন্ন করেছেন, আমরা জীবন বিপন্ন করে হলেও এদেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্বকে অক্ষুণœ রাখবো, ইনশাআল্লাহ।
মেজর হাফিজ বলেন, একটি অন্তর্বর্তী সরকার ক্ষমতায় আসছে, আমরা আশা করি তারা নিরপেক্ষ থাকবেন। কিন্তু দেখা গেল যে, তারা একটি কিংস পার্টি গঠন করার উদ্যোগ নিয়েছেন। ২১ বছরের ছেলে কিভাবে প্রেসিডেন্ট হবে? ২১ বছর বয়ে কিভাবে প্রধানমন্ত্রী হবে? জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহণ করার জন্য এই যে বয়সসীমা কমিয়ে দেয়া হয়েছে, এটি একটি দলকে সুযোগ-সুবিধা দেওয়ার জন্য করা হয়েছে। কোন আপত্তি নেই, জনগণ যদি এদেরকে বেছে নেয় ১২ বছরের প্রেসিডেন্টকেও আমরা মেনে নেব। কিন্তু তাকে জনগণের মাধ্যমে নির্বাচিত হতে হবে। আমরা আশা করবো, কোন ধরণের বৈষম্য যাতে এই সরকার না করে। প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূস আমাদের গর্ব, সারাবিশ্বে তার ব্যাপক পরিচিতি রয়েছে। আমরা তাকে সম্মান করি, তাকে সহযোগিতা করতে আমরা সকলে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ। কিন্তু আপনি নিরপেক্ষ থাকবেন। জিয়াউর রহমানের দল অতীতে সকল সংগ্রামে এবং বিগত ১৬ বছর সংগ্রামের মাধ্যমে অপশক্তিকে বিদায় করেছে এটি সব সময় মনে রাখবেন। আপনাদের প্রধান কাজ হলো একটি নির্বাচিত সরকারের কাছে দায়িত্ব হস্তান্তর করা। এই কাজে আত্মনিয়োগ করুন। যারা আমাদের অনেক মায়ের কোল খালি করেছে তাদের বিচার করুন, আর যারা এদেশের অর্থ-সম্পদ বিদেশে পাচার করেছে, সেটি দেশি ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করুন। এই প্রক্লেমেশন, সেই প্রক্লেমেশন-এগুলো জনগণের কোন লাগবে না। বরং যদি পাচার হওয়া অর্থ দেশে ফিরিয়ে আনতে পারেন সেটি বাংলাদেশের জনগণের কাজে লাগবে।
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের সভাপতিত্বে ও প্রচার সম্পাদক সুলতান সালাউদ্দিন টুকুর সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে লন্ডন থেকে ভার্চুয়ালি বক্তব্য রাখেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। আরো বক্তব্য রাখেন- দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, ড. আবদুল মঈন খান, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, সালাহউদ্দিন আহমেদ, সেলিমা রহমান, মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমেদ, ভাইস চেয়ারম্যান আহমেদ আজম খান, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য আমান উল্লাহ আমান, যুগ্ম মহাসচিব শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি, মহানগর দক্ষিণ বিএনপির আহ্বায়ক রফিকুল আলম মজনু, উত্তরের আহ্বায়ক আমিনুল হক, যুবদলের সাধারণ সম্পাদক নুরুল ইসলাম নয়ন, ছাত্রদলের সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিব বক্তব্য রাখেন। এছাড়া কবি আবদুল হাই শিকদার, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি প্রফেসর ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রো-ভিসি প্রফেসর মামুন আহমেদ আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন।###
বিভাগ : জাতীয়
মন্তব্য করুন
এই বিভাগের আরও
আরও পড়ুন
ব্রাইটনের বিপক্ষেও বিপর্যস্ত ইউনাইটেড
‘ন্যায়বিচারকে হত্যা’ করা হয়েছে: পিটিআই
নতুন ভূগর্ভস্থ নৌ ঘাঁটি উন্মোচন ইরানের
রাশিয়ার পক্ষে যুদ্ধ করছে অনেক আফ্রিকান সেনা
পাওয়ার প্ল্যান্টের ৩৬০ মেট্রিকটন তেল ডাকাতি
বাংলাদেশি কর্মী নিতে প্রস্তুত রাশিয়া: রাষ্ট্রদূত
রাজনৈতিক দলগুলো বেশি কিছু সংস্কার না চাইলে ডিসেম্বরের মধ্যেই নির্বাচন: প্রেস সচিব
এবার ওলমোর ইনজুরি দুঃসংবাদ বার্সার
কুড়িগ্রাম স্টুডেন্টস ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের নেতৃত্বে ইমন ও আলামিন
এসএমই ফাউন্ডেশনের নতুন চেয়ারপার্সন মো. মুশফিকুর রহমান
বিয়ের ওপর কর বাতিলের দাবি
শহীদ জিয়ার নাম মুছে ফেলার অপচেষ্টায় ব্যর্থ হয়েছে আ.লীগ : মির্জা ফখরুল
নামাজের প্রথম কাতারে জামাত পড়াবস্থায় অজু ভেঙ্গে যাওয়া প্রসঙ্গে।
কয়েক মিনিটে বাংলাদেশ দখল করে নিতে পারে ভারত: শুভেন্দু অধিকারী
নরসিংদীতে নিখোঁজের ৫ দিন পর নদীতে পাওয়া গেল স্কুল ছাত্রের লাশ
বিএনপি : দেশবাদ যার রাজনীতির মূল কথা
পাহাড়ি উপজাতিরা আদিবাসী নয়
সংস্কার প্রতিবেদন : জাতির নতুন অধ্যায়ে অভিযাত্রা
অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় বিনিয়োগে জোর দিতে হবে
ভারতে ৫ বছর সাজাভোগ করে দেশে ফিরলেন স্বামী-স্ত্রী