বিএনপির ‘কথার টোন আ.লীগের সাথে মিলে যাচ্ছে’
২৫ জানুয়ারি ২০২৫, ০১:১৬ এএম | আপডেট: ২৫ জানুয়ারি ২০২৫, ০১:১৬ এএম
নির্বাচন প্রসঙ্গে বিএনপির সঙ্গে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের টানাপড়েনের মাঝে অন্তর্র্বতী সরকারের উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম বলেছেন, অন্তর্র্বতী সরকার নিয়ে বিএনপির ‘কথার টোন আওয়ামী লীগের সাথে মিলে যাচ্ছে’। গতকাল বিবিসি বাংলাকে জনাব ইসলাম বলেন, তিনি রাজনৈতিক দলে যোগ দিলে সরকার থেকে বের হয়ে যাবেন।
বুধবার বিবিসি বাংলার সাথে সাক্ষাৎকারে বিএনপির অবস্থান নিয়ে দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের বক্তব্য নিয়ে আলোচনার সূত্রপাত হয়। বিশেষত ‘বর্তমান সরকার নিরপেক্ষ থাকতে না পারলে নির্বাচন করতে নিরপেক্ষ সরকারের প্রয়োজন হবে এবং শিক্ষার্থীরা রাজনৈতিক দল গঠন করলে সরকার থেকে ‘বেরিয়ে আসা উচিত’ এমন বক্তব্যের প্রতিক্রিয়া আসে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের তরফ থেকে। সরকারের দুই তরুণ উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম ও আসিফ মাহমুদ ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক হাসনাত আব্দুল্লাহর প্রতিক্রিয়ার পরও পাল্টাপাল্টি প্রতিক্রিয়া অব্যাহত আছে।
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের নিরপেক্ষ সরকারের দাবিকে আরেকটা এক এগারো সরকার গঠনের ইঙ্গিত হিসেবে ফেসবুক পোস্টে উল্লেখ করেন তথ্য উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম। এ প্রসঙ্গে জনাব ইসলাম বিবিসি বাংলাকে বলেন, ‘এক এগারো এবং মাইনাস টু-এর আলাপটা কিন্তু সর্বপ্রথম বিএনপিই রাজনীতির মাঠে এনেছে কিছুদিন আগে’।
অভ্যুত্থান ও আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর বিএনপি ও অংশীজনদের সমর্থনেই সরকার গঠন হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বিএনপি মহাসচিবের ‘নিরপেক্ষতা’ নিয়ে বক্তব্য নিয়ে ‘সন্দেহ’ প্রকাশ করেন। এ সরকারকে অস্থিতিশীল করতে বা সরাতে তার ভাষায়, দেশি-বিদেশি চক্রান্তের পাশাপাশি আওয়ামী লীগের সাম্প্রতিক অবস্থানের সাথেও সাদৃশ্য দেখছেন তিনি।
তিনি বলেন, সম্প্রতি আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য মোহাম্মদ আলী আরাফাত ‘সে কিন্তু স্ট্যাটাস দিয়েছে যে, এটা অবৈধ ও অনির্বাচিত সরকার, একটা নিরপেক্ষ সরকার লাগবে, এর আন্ডারে সুষ্ঠু নির্বাচন হওয়া সম্ভব না। সো একই টোনে আমরা যখন কথা বলতে দেখছি, এটা কিন্তু একটা সন্দেহের তৈরি করে।
আওয়ামী লীগের ফেসবুক পেজ থেকে শুক্রবার ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে ‘অনির্বাচিত ও অসাংবিধানিক সরকার’ হিসেবে উল্লেখ করে এ সরকারের অধীনে আগামী নির্বাচন হবে না এবং পরবর্তী নির্বাচন ‘একটি নতুন (তত্ত্বাবধায়ক) সরকারের অধীনে হতে হবে’ জনাব আরাফাতকে উদ্ধৃত করে পোস্ট দেয়া হয়। ‘আমি মনে করি না যে, এটা তারা (বিএনপি) ঐ উদ্দেশ্য থেকে বলেছে, কিন্তু তাদের কথার টোনটা কিন্তু আওয়ামী লীগের সেই টোনের সাথে মিলে যাচ্ছে’ বিবিসিকে বলেন জনাব ইসলাম।
বিবিসির সাথে সাক্ষাৎকারে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছিলেন, নির্বাচনকালীন সরকারের নিরপেক্ষতা প্রসঙ্গে বিচার কার্যক্রম, সংস্কার, ও নির্বাচন এসবগুলোই বর্তমান সরকারের অগ্রাধিকার হলেও ‘বিএনপি কেন জানি মনে করে এ সরকারটা হয়েছে কেবল একটি নির্বাচন দেয়ার জন্য’ বিবিসিকে বলেন নাহিদ ইসলাম। আর নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন প্রসঙ্গে অবশ্য জনাব ইসলাম বলছেন, ‘অন্তর্বর্তী সরকারকে তো আমরা নিরপেক্ষই মনে করছি। বিএনপি কেন মনে করছে না নিরপেক্ষ আচরণ, বিএনপির এটা স্পষ্ট করা উচিৎ’।
নির্বাচনের সময় এগিয়ে এলে এসব বিষয়ে সুস্পষ্টভাবে বলা সম্ভব বা কোনো অভিযোগ থাকলে নিরপেক্ষতার স্বার্থে কী পদক্ষেপ নেয়া যেতে পারে সেটা তখন সরকার বিবেচনায় নিতে পারবে এমনটাও বলেন তিনি। একই সাথে ‘প্রশাসনের বিভিন্ন স্তরে বা সাংবিধানিক পদে যদি বিএনপিপন্থী লোকজন থাকে সেটাও নিরপেক্ষতা লাগবে কিনা, তাহলে সেটাও বিবেচনা করতে হবে। কিন্তু এখন তো এটার সময় আসেনি’ উল্লেখ করেন জনাব ইসলাম।
অবশ্য মির্জা ফখরুল ইসলাম অবশ্য বিবিসির সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন, ‘যদি সরকার পূর্ণ নিরপেক্ষতা পালন করে, তাহলেই তারা নির্বাচন কনডাক্ট করা পর্যন্ত থাকবেন। তা না হলে তো নিরপেক্ষ সরকারের প্রয়োজন হবে’। নিরপেক্ষতার প্রশ্ন সামনে আসতে পারে উল্লেখ করেছেন সরকারে থাকা অবস্থায় ছাত্রদের রাজনৈতিক দল গঠনের বিষয়ে। এখনকার পরিস্থিতিতে সরকারের নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন তৈরি হয়েছে কিনা জানতে চাইলে তিনি এর উত্তরে ‘না’ বলেছিলেন। বিএনপির দিক থেকে যদিও এসব নিয়ে আরো নানা ধরনের বক্তব্য আসছে।
গতকাল পৃথক অনুষ্ঠানে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী ও বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাসের বক্তব্য এবং বিবিসিকে দেয়া মির্জা ফখরুলের বক্তব্য প্রসঙ্গে অবশ্য নাহিদ ইসলাম বলছেন, এ বছরের শেষ থেকে আগামী বছরের জুনের মধ্যে নির্বাচনের যে সম্ভাব্য সময়সীমা প্রধান উপদেষ্টা দিয়েছেন তাতে অন্তর্র্বতী সরকারের মেয়াদকাল এবং নির্বাচনের একটি সম্ভাব্য সময়সীমা দেয়া হয়েছে, সে পর্যন্ত ধৈর্য্য রেখে ঐক্যমত্যের ভিত্তিতে সামনে এগোনো প্রয়োজন।
যখন গুম বা জুলাই গণহত্যার বিচার কার্যক্রম এগোনো হচ্ছে এবং সংস্কার কার্যক্রম এগিয়ে যাচ্ছে, ‘হয়তো সামনের মাসেই হয়তো আলোচনা, নেগোসিয়েশন, বারগেনিং (দরাদরি) শুরু হবে, বিএনপির বা অন্যান্য রাজনৈতিক দলগুলোর সংস্কারের আলাপগুলোতে মনোযোগী হওয়া উচিৎ, বিচার কার্যক্রমে সহযোগিতা করা উচিৎ, সেসময় তারা বলছে এ সরকারের চেয়ে নিরপেক্ষ একটা সরকার প্রয়োজন’।
নানা বাদানুবাদ থাকলেও নাহিদ ইসলাম এবং মির্জা আব্বাস, দু’জনই দেশ গঠনে সংঘাত বা বিভেদ সৃষ্টি না করার কথা বলেছেন। সূত্র : বিবিসি বাংলা।
বিভাগ : জাতীয়
মন্তব্য করুন
আরও পড়ুন
২০২৮ ইউরো পর্যন্ত জার্মানির কোচ নাগালসম্যান
পাকিস্তানে সরকার ও বিরোধী দলের মধ্যে আলোচনা স্থগিত
সাবেক ২৪ এমপি’র গাড়ি নিলামে উঠছে রোববার
মিরপুরের আন্ডারওয়ার্ল্ড নিয়ন্ত্রণ ফিরে পেতে মরিয়া
অ্যালাউন্স ছাড়া কোনো ভাতা পাবেন না রেলকর্মীরা
ড. ইউনূসের পরিবার সম্পর্কে ইন্ডিয়া ডটকম-এর প্রতিবেদন মিথ্যা : প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং
ছাত্রদল নেতা মিথুন রিমান্ডে, ছয় সমর্থক কারাগারে
বাংলাদেশ কনস্যুলেট জেনারেল কুনমিংয়ে ই-পাসপোর্ট সেবা চালু
নাইক্ষ্যংছড়ি সীমান্তে মাইন বিস্ফোরণে তিনজন আহত
বাংলাদেশের সংস্কার উদ্যোগকে সমর্থন আল গোরের
২০২৪ সালে জলবায়ু সঙ্কটে দেশের সোয়া ৩ কোটি শিশুর শিক্ষা ব্যাহত
মাদারীপুরে মানবপাচারকারীকে গণপিটুনির ভিডিও ভাইরাল
জাতীয় ঐক্য বিনষ্ট হলে ফিরে আসবে ফ্যাসিস্টরা : কুড়িগ্রামে ডা. শফিকুর রহমান
মোরেলগঞ্জে পল্লী বিদ্যুৎতের মিটার সংকট মিলছে না সংযোগ : গ্রাহকদের ভোগান্তি
রাউজানে জুমার নামাজে যাওয়ার পথে ব্যবসায়ীকে গুলি করে হত্যা
বাজারে পলিথিন কেন সেটা না ভেবে ভাবুন কেন ব্যবহার করছেন : পরিবেশ উপদেষ্টা
আড়াইহাজারে পুলিশ কনস্টেবলকে আটক করলো জনতা
টিকটকারদের যন্ত্রণায় বিব্রত মেট্রোরেল যাত্রীরা
কুষ্টিয়ার মিরপুরে হত্যা চেষ্টা মামলায় আটক ২
পেঁয়াজ চাষিদের মাথায় হাত